খুঁজুন
সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫, ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

বিলুপ্তির পথে ফরিদপুরের গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য ধানের গোলা

এন কে বি নয়ন, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বুধবার, ২৫ জুন, ২০২৫, ৭:৫১ এএম
বিলুপ্তির পথে ফরিদপুরের গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য ধানের গোলা

বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে ফরিদপুরের ধানের গোলা। একসময় গ্রামাঞ্চলে কৃষকদের বাড়িতে এরকম ধানের গোলার প্রচলন ছিল। গোলাভরা ধান ও পুকুর ভরা মাছ ছিল। জমিদারি প্রথা ও কৃষক পরিবারের বিভিন্ন ঐতিহ্যের মধ্যে ছিল এই ধানের গোলা।

 

এখন মাঠের পর মাঠ ধানক্ষেত থাকলেও কৃষকের বাড়িতে নেই ধান মজুদ করার জন্য বাঁশ-বেত দিয়ে তৈরি ঐতিহ্যবাহী ধানের গোলা। অথচ একসময় সমাজে মানুষের আভিজাত্য নির্ভর করতো কার কয়টি ধানের গোলা আছে এ হিসাব কষে। শুধু তাই নয়, কন্যা পাত্রস্থ করতেও বরপক্ষের লোকজন আগে দেখতো ধানের গোলা। নতুন প্রজন্মের কাছে এটা একটা ইতিহাস। শুধু রূপকথার গল্পের মতো। প্রবীণ ও পুরোনোদের কাছে এটি শুধু হারিয়ে যাওয়া একটি ঐতিহ্য।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রামবাংলার কৃষক পরিবারের সমৃদ্ধির প্রতীক ধানের গোলা এখন আর ফরিদপুরে কোথাও চোখে পড়ে না। তবে পুরো জেলার মধ্যে একটি মাত্র ধানের গোলা এখনও ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামে কৃষক অধীর কুমার বিশ্বাসের বাড়িতে এটি রয়েছে। তার মাঠের সব ধান এই গোলায়ই তিনি সংরক্ষণ করেন। পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে বাড়ির উঠানে এখনো তিনি এই ধানের গোলাটি যত্ন করে রেখেছেন। আগেকার দিনের মতো ব্যবহার করছেন।

অধীর কুমার বিশ্বাস বলেন, একসময় এ রকমের ধানের গোলা কৃষক ও সাধারণ পরিবারে ছিল। কিন্তু এখন আর কোথাও দেখা যায় না। ফরিদপুর জেলার মধ্যে আমার বাড়িতে একটি মাত্র ধানের গোলা আছে। এখন এর বয়স হয়েছে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ বছর। গোলাটিতে একশত মণেরও বেশি ধান রাখা যায়। আমার নিজের জমির যতো ধান হয়, রাখার উপযোগী করে তা এ গোলায়ই রাখি।বাপ-দাদার আমল থেকে দেখে এসেছি। অনেক যত্ন করে ব্যবহার করা হয় এবং মাঝে মাঝে সংস্কার করে পুরোনো ঐতিহ্য টিকিয়ে রেখেছি। ধানের মৌসুমে ধান কেটে শুকিয়ে গোলায় রাখা হয়। প্রয়োজনের সময় গোলা থেকে ধান বের করে পুনরায় রোদে শুকিয়ে ভাঙানো হয়।

অধীর কুমার বলেন, আগেরকার সময় নামকরা গৃহস্থ বলতে মাঠভরা বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত, গোয়াল ভরা গরু, পুকুর ভরা মাছ আর কৃষকের গোলা ভরা ধানকেই বোঝাত। এখন আর আগের মতো কেউ এভাবে ধান রাখে না। বস্তায় করে গোডাউন অথবা ঘরের মধ্যে রেখে দেন।

তিনি আরও বলেন, প্রথমে বাঁশ-কঞ্চি দিয়ে গোল আকৃতির কাঠামো তৈরি করা হয়। এঁটেল মাটির কাদা তৈরি করে ভেতরে ও বাইরে আস্তরণ লাগিয়ে উপরে টিনের চালা দিয়ে বিশেষ উপায়ে তৈরি করা এই ধানের গোলা। প্রবেশপথ বেশ উপরে, যেন চোর বা ডাকাত সহজে ধান নিতে না পারে। এ ধরনের ধানের গোলায় ইঁদুর ঢুকেও ক্ষতি করতে পারে না। গোলায় শুকানো ভেজা ধানের চাল শক্ত হয়। তখনকার কৃষকদের কাছে এটিই ছিল ধান রাখার আদর্শ পদ্ধতি।

উপজেলা সদরের সদরদি গ্রামের বাসিন্দা মো. সজীব মোল্লা। তিনি ফরিদপুর সিটি পেজের মডারেটর হিসেবে জেলার বিভিন্ন স্থানে বিচরণ করেন। কিন্তু এর আগে কখনো তিনি ধানের গোলা দেখেননি। তিনি বলেন, আমার গ্রামের পাশেই কৃষ্ণনগর গ্রামে পুরোনো ঐতিহ্যবাহী একটি মাত্র ধানের গোলা আছে। কিন্তু এর আগে এটি সম্পর্কে জানিনি।

মধুখালী উপজেলার মেকচামী ইউনিয়নের বামুন্দী গ্রামের বাসিন্দা ও প্রবীণ শিক্ষক প্রভাষ মণ্ডল জানান, এখন আর গোলার প্রচলন বা কদর কোনোটাই নেই। এখন এটি চোখেও পড়ে না। ড্রাম কিংবা বস্তায়ই ধান রাখা হয়।

বোয়ালমারী উপজেলা সদর এলাকার বাসিন্দা, সাংস্কৃতিক কর্মী আমীর চারু, সুমন খানসহ অনেকেই জানান, এখন আর এসব চোখে পড়ে না। একেবারেই বিলুপ্তির পথে। গোলা নির্মাণ করার জন্য বিভিন্ন এলাকায় আগে দক্ষ শ্রমিক ছিল। এখন এই পেশাটিও হরিয়ে গেছে।

কবি ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কাজী হাসান ফিরোজ ও সমর চক্রবর্তী বলেন, বাপ-দাদার আমল থেকে দেখেছি ও শুনেছি গোলায় ধান রাখা কৃষকের জন্য খুবই ভালো। কিন্তু এগুলো আমাদের সমাজ থেকে হারিয়ে গেছে। অন্য জেলায় কিছু কিছু দেখা গেলেও আমার জানা মতে ফরিদপুরে নেই। গোলাগুলো একসময় আমাদের পরিবারের ঐতিহ্য বহন করতো।

সালথা উপজেলা যদুনন্দীর গোপীনাথপুর গ্রামের নরেন্দ্র নাথ মজুমদার ও সদরপুর, নগরকান্দা, ভাঙ্গা এলাকার প্রবীণরা জানান, আগেরকার দিনে প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই এ ধরনের ধানের গোলা থাকত। নাতি-নাতনিদের কাছে বললে তারা এখন বিশ্বাসও করতে চায় না। কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে গ্রামীণ ঐতিহ্য ধানের গোলা।বর্তমানে রাসায়নিক সার, কীটনাশক ও আধুনিক কালের কলের নাঙলে ওলট-পালট করে দিয়েছে গ্রামাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী সেসব চালচ্চিত্র। শুধু ধানের গোলা নয়, ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য, কৃষ্টি, সভ্যতা ও সংস্কৃতি।

এ প্রসঙ্গে ফরিদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শাহেদুজ্জামান বলেন, কালের বিবর্তনে আজ বিলুপ্ত। আশির দশকের দিকে ওইসব ধানের গোলা কৃষক ও সাধারণ মানুষ ব্যবহার করতো। আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে মানুষের পারিবারিক ব্যবহার্য উপকরণে।ফলে ঐতিহ্যবাহী এসব ধানের গোলার জায়গা দখল করে নিয়েছে পাটের বস্তা। এগুলো তৈরি ঝামেলামুক্ত ও সহজে বাজারে পাওয়া যায় বলে মানুষ বাঁশের গোলার পরিবর্তে এসব আধুনিক উপকরণ ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। ফলে হারিয়ে গেছে বাঁশের গোলার কদর। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তালিকায় এর অবস্থান শূন্য বলে তিনি জানান।

ফরিদপুর মহানগর যুবদলের সভাপতি তাবরীজের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫, ৯:৪৮ পিএম
ফরিদপুর মহানগর যুবদলের সভাপতি তাবরীজের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও দলের নীতি-আদর্শ পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ফরিদপুর মহানগর যুবদলের সভাপতি বেনজীর আহমেদ তাবরীজকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। পরবর্তীতে তার আবেদনের প্রেক্ষিতে পুনর্বিবেচনা শেষে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফলে তিনি পুনরায় স্বীয় পদে বহাল হলেন।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না এবং সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন যৌথভাবে ব*হি*ষ্কা*রাদেশ প্র-ত্যা-হারের সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছেন।

কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশক্রমে প্রেরিত এই বার্তায় আরও উল্লেখ করেন যুবদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূইয়া।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংগঠনের স্বাভাবিক কার্যক্রম আরও সুদৃঢ় করতে এবং ভবিষ্যৎ সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে ভূমিকা রাখার সুযোগ সৃষ্টি করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ফরিদপুরে মন্দিরের জমির বিরোধকে ঘিরে অপপ্রচার, যা বলছে পুলিশ

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫, ৯:০৩ পিএম
ফরিদপুরে মন্দিরের জমির বিরোধকে ঘিরে অপপ্রচার, যা বলছে পুলিশ

সম্প্রতি ফরিদপুরের সদরপুরে মন্দিরের জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া গুজব ও অপপ্রচারের অভিযোগে এক প্রেসবিজ্ঞপ্তি দিয়েছে পুলিশ।

রবিবার (২৩ নভেম্বর) রাতে ফরিদপুর জেলা পুলিশ এ প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেন, ‘সম্প্রতি “HINDUS NEWS” নামক একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে এবং ফেসবুক পেইজে “ফরিদপুরের সদরপুরে মন্দিরের জমি নিয়ে সংঘর্ষ- পালিয়ে যাচ্ছে হিন্দু পরিবার, টহলে পুলিশ” শিরোনাম একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। উক্ত সংবাদে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ঢেউখালী ইউনিয়নের হরিনা গ্রামে রাধা গোবিন্দ মন্দিরের জমি নিয়ে সৃষ্ট বিরোধের বিষয়কে কেন্দ্র করে স্থানীয়ভাবে পরিস্থিতি উত্তেজনাকর সহ হামলার পর ভয়-আতঙ্কে গ্রাম ছাড়ছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এবং চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন অন্তত পাঁচ শতাধিক হিন্দু পরিবার বলে দাবী করা হয়। বিষয়টি ফরিদপুর জেলা পুলিশের নজরে এসেছে। উক্ত ঘটনাটি সম্পর্কে সরেজমিনে তদন্ত এবং প্রকৃত তথ্যের ভিত্তিতে জেলা পুলিশ নিশ্চিত করছে যে, ছড়িয়ে পড়া ওই তথ্যটি অতিরঞ্জিত, অসত্য এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে পারে।

প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘হরিনা মৌজার ৫৮৪ নং খতিয়ানের ৪১২/৪১৩ দাগে ৪৬ শতাংশ জমির মালিক ছিলেন মহাদেব ঘোষ। আনুমানিক ৬/৭ মাস পূর্বে মহাদেব ঘোষ উক্ত জমি স্থানীয় বাবুল বেপারী ও সনাতন ধর্মাবলম্বী সুশান্ত মালো গং-এর নিকট সাব কবলা দলিল মূলে বিক্রি করেন।’

জেলা পুলিশ জানায়, ‘জমি বিক্রির বিষয়টি মহাদেব ঘোষের প্রতিপক্ষ মানিক ঘোষ গং জানতে পারলে তারা দাবি করেন যে, ওই জমিটি সার্বজনীন মন্দিরের। এ নিয়ে বিক্রেতা মহাদেব ঘোষ এবং ক্রেতা সুশান্ত মালো ও বাবুল বেপারী পক্ষের সাথে প্রতিপক্ষ মানিক ঘোষ পক্ষের বিরোধ সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ, বিরোধটি মূলত ‘জমির মালিক/বিক্রেতা ও ক্রেতা’ বনাম ‘প্রতিপক্ষ দাবিদার’-এর মধ্যে, যেখানে উভয় পক্ষেই সনাতন ধর্মাবলম্বী ও মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন জড়িত রয়েছেন।

মারামারি ও পুলিশি পদক্ষেপ:

‘গত ১৬ নভেম্বর ভোরে জমি দখলকে কেন্দ্র করে দু-পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকজন আহত হন। খবর পাওয়া মাত্রই সদরপুর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। উক্ত ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সুশান্ত মালো নামের একজনকে আটক করে এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে। পরবর্তীতে থানা পুলিশ কর্তৃক বাবুল বেপারীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমানে সেখানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’

গুজব নিরসন:

‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত “হামলার ভয়ে ৫ শতাধিক হিন্দু পরিবার গ্রাম ছেড়ে পালাচ্ছে” এবং “চরম নিরাপত্তাহীনতা”—এই তথ্যগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন । সরেজমিনে তদন্তে দেখা গেছে, কোনো পরিবার গ্রাম ছেড়ে যায়নি এবং বর্তমানে এলাকাটি পুলিশের সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রয়েছে।’

সতর্কবার্তা:

একটি স্বার্থান্বেষী মহল সাধারণ জমি সংক্রান্ত বিরোধকে ‘সাম্প্রদায়িক হামলা’ হিসেবে চালিয়ে দিয়ে জনমনে ভীতি ও বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এ ধরনের উসকানিমূলক পোস্ট শেয়ার করা থেকে বিরত থাকার জন্য সর্বসাধারণকে অনুরোধ করা হলো। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী যেকোনো অপতৎপরতার বিরুদ্ধে ফরিদপুর জেলা পুলিশ কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

উক্ত ঘটনায় আতঙ্কিত না হয়ে পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করার জন্য এবং শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে।

চরভদ্রাসনের পদ্মা নদীতে অভিযান: ৬ বাঁধ, ২ ভেসাল অপসারণ

আসলাম বেপারী, চরভদ্রাসন:
প্রকাশিত: রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫, ৮:২৩ পিএম
চরভদ্রাসনের পদ্মা নদীতে অভিযান: ৬ বাঁধ, ২ ভেসাল অপসারণ

ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলায় পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে নির্মিত ৬টি আড়াআড়ি বাঁধ এবং ২টি ভেসাল অপসারণসহ ১০টি চায়না দুয়ারি ও ১০ কেজি মাছ জব্দ করেছে উপজেলা প্রশাসন।

রবিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালিত হয়।

উপজেলা মৎস্য দপ্তর জানায়, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল দীর্ঘদিন ধরে পদ্মা নদীতে আড়াআড়ি বাঁধ বসিয়ে অবৈধভাবে মাছ শিকার করছে—এমন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা খাতুনের নির্দেশনায় উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাঈম হোসেন বিপ্লবের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে সহযোগিতায় ছিল চরভদ্রাসন থানার চৌকস পুলিশ টিম এবং উপজেলা মৎস্য দপ্তরের সকল কর্মকর্তা–কর্মচারী।

স্থানীয় সূত্র জানায়, দুটি প্রভাবশালী মহলসহ কয়েকটি জেলে গোষ্ঠী নদীতে এসব বাঁধ নির্মাণ করে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে মাছ শিকার করছে। এতে নদীর প্রাকৃতিক প্রজনন ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি লক্ষ লক্ষ টাকা অবৈধ আয় করার অভিযোগ উঠেছে।

অভিযানে পদ্মা নদী থেকে ৬টি আড়াআড়ি বাঁধ ও ২টি ভেসাল অপসারণ করা হয়। এর মধ্যে একটি বাঁধের প্রস্থ ছিল প্রায় ১ কিলোমিটার এবং বাকি ৫টি ছিল ৫০০ মিটার করে, মোট ৩.৫ কিলোমিটার। এছাড়া জব্দ করা হয় ১০টি চায়না দুয়ারি ও ১০ কেজি মাছ। নিষিদ্ধ জাল ও দুয়ারি জনসম্মুখে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয় এবং উদ্ধার করা মাছ বাদুল্লা মাতুব্বরের ডাঙ্গী মাদ্রাসায় বিতরণ করা হয়।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাঈম হোসেন বিপ্লব বলেন, পদ্মা নদীর মৎস্য সম্পদ ও প্রজনন রক্ষায় এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। নদীতে মাছের অবাধ চলাচল ও প্রজনন নিশ্চিত করতে ভবিষ্যতেও নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হবে।