খুঁজুন
শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১২ আশ্বিন, ১৪৩২

বিলুপ্তির পথে ফরিদপুরের গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য ধানের গোলা

এন কে বি নয়ন, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বুধবার, ২৫ জুন, ২০২৫, ৭:৫১ এএম
বিলুপ্তির পথে ফরিদপুরের গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য ধানের গোলা

বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে ফরিদপুরের ধানের গোলা। একসময় গ্রামাঞ্চলে কৃষকদের বাড়িতে এরকম ধানের গোলার প্রচলন ছিল। গোলাভরা ধান ও পুকুর ভরা মাছ ছিল। জমিদারি প্রথা ও কৃষক পরিবারের বিভিন্ন ঐতিহ্যের মধ্যে ছিল এই ধানের গোলা।

 

এখন মাঠের পর মাঠ ধানক্ষেত থাকলেও কৃষকের বাড়িতে নেই ধান মজুদ করার জন্য বাঁশ-বেত দিয়ে তৈরি ঐতিহ্যবাহী ধানের গোলা। অথচ একসময় সমাজে মানুষের আভিজাত্য নির্ভর করতো কার কয়টি ধানের গোলা আছে এ হিসাব কষে। শুধু তাই নয়, কন্যা পাত্রস্থ করতেও বরপক্ষের লোকজন আগে দেখতো ধানের গোলা। নতুন প্রজন্মের কাছে এটা একটা ইতিহাস। শুধু রূপকথার গল্পের মতো। প্রবীণ ও পুরোনোদের কাছে এটি শুধু হারিয়ে যাওয়া একটি ঐতিহ্য।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রামবাংলার কৃষক পরিবারের সমৃদ্ধির প্রতীক ধানের গোলা এখন আর ফরিদপুরে কোথাও চোখে পড়ে না। তবে পুরো জেলার মধ্যে একটি মাত্র ধানের গোলা এখনও ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামে কৃষক অধীর কুমার বিশ্বাসের বাড়িতে এটি রয়েছে। তার মাঠের সব ধান এই গোলায়ই তিনি সংরক্ষণ করেন। পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে বাড়ির উঠানে এখনো তিনি এই ধানের গোলাটি যত্ন করে রেখেছেন। আগেকার দিনের মতো ব্যবহার করছেন।

অধীর কুমার বিশ্বাস বলেন, একসময় এ রকমের ধানের গোলা কৃষক ও সাধারণ পরিবারে ছিল। কিন্তু এখন আর কোথাও দেখা যায় না। ফরিদপুর জেলার মধ্যে আমার বাড়িতে একটি মাত্র ধানের গোলা আছে। এখন এর বয়স হয়েছে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ বছর। গোলাটিতে একশত মণেরও বেশি ধান রাখা যায়। আমার নিজের জমির যতো ধান হয়, রাখার উপযোগী করে তা এ গোলায়ই রাখি।বাপ-দাদার আমল থেকে দেখে এসেছি। অনেক যত্ন করে ব্যবহার করা হয় এবং মাঝে মাঝে সংস্কার করে পুরোনো ঐতিহ্য টিকিয়ে রেখেছি। ধানের মৌসুমে ধান কেটে শুকিয়ে গোলায় রাখা হয়। প্রয়োজনের সময় গোলা থেকে ধান বের করে পুনরায় রোদে শুকিয়ে ভাঙানো হয়।

অধীর কুমার বলেন, আগেরকার সময় নামকরা গৃহস্থ বলতে মাঠভরা বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত, গোয়াল ভরা গরু, পুকুর ভরা মাছ আর কৃষকের গোলা ভরা ধানকেই বোঝাত। এখন আর আগের মতো কেউ এভাবে ধান রাখে না। বস্তায় করে গোডাউন অথবা ঘরের মধ্যে রেখে দেন।

তিনি আরও বলেন, প্রথমে বাঁশ-কঞ্চি দিয়ে গোল আকৃতির কাঠামো তৈরি করা হয়। এঁটেল মাটির কাদা তৈরি করে ভেতরে ও বাইরে আস্তরণ লাগিয়ে উপরে টিনের চালা দিয়ে বিশেষ উপায়ে তৈরি করা এই ধানের গোলা। প্রবেশপথ বেশ উপরে, যেন চোর বা ডাকাত সহজে ধান নিতে না পারে। এ ধরনের ধানের গোলায় ইঁদুর ঢুকেও ক্ষতি করতে পারে না। গোলায় শুকানো ভেজা ধানের চাল শক্ত হয়। তখনকার কৃষকদের কাছে এটিই ছিল ধান রাখার আদর্শ পদ্ধতি।

উপজেলা সদরের সদরদি গ্রামের বাসিন্দা মো. সজীব মোল্লা। তিনি ফরিদপুর সিটি পেজের মডারেটর হিসেবে জেলার বিভিন্ন স্থানে বিচরণ করেন। কিন্তু এর আগে কখনো তিনি ধানের গোলা দেখেননি। তিনি বলেন, আমার গ্রামের পাশেই কৃষ্ণনগর গ্রামে পুরোনো ঐতিহ্যবাহী একটি মাত্র ধানের গোলা আছে। কিন্তু এর আগে এটি সম্পর্কে জানিনি।

মধুখালী উপজেলার মেকচামী ইউনিয়নের বামুন্দী গ্রামের বাসিন্দা ও প্রবীণ শিক্ষক প্রভাষ মণ্ডল জানান, এখন আর গোলার প্রচলন বা কদর কোনোটাই নেই। এখন এটি চোখেও পড়ে না। ড্রাম কিংবা বস্তায়ই ধান রাখা হয়।

বোয়ালমারী উপজেলা সদর এলাকার বাসিন্দা, সাংস্কৃতিক কর্মী আমীর চারু, সুমন খানসহ অনেকেই জানান, এখন আর এসব চোখে পড়ে না। একেবারেই বিলুপ্তির পথে। গোলা নির্মাণ করার জন্য বিভিন্ন এলাকায় আগে দক্ষ শ্রমিক ছিল। এখন এই পেশাটিও হরিয়ে গেছে।

কবি ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কাজী হাসান ফিরোজ ও সমর চক্রবর্তী বলেন, বাপ-দাদার আমল থেকে দেখেছি ও শুনেছি গোলায় ধান রাখা কৃষকের জন্য খুবই ভালো। কিন্তু এগুলো আমাদের সমাজ থেকে হারিয়ে গেছে। অন্য জেলায় কিছু কিছু দেখা গেলেও আমার জানা মতে ফরিদপুরে নেই। গোলাগুলো একসময় আমাদের পরিবারের ঐতিহ্য বহন করতো।

সালথা উপজেলা যদুনন্দীর গোপীনাথপুর গ্রামের নরেন্দ্র নাথ মজুমদার ও সদরপুর, নগরকান্দা, ভাঙ্গা এলাকার প্রবীণরা জানান, আগেরকার দিনে প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই এ ধরনের ধানের গোলা থাকত। নাতি-নাতনিদের কাছে বললে তারা এখন বিশ্বাসও করতে চায় না। কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে গ্রামীণ ঐতিহ্য ধানের গোলা।বর্তমানে রাসায়নিক সার, কীটনাশক ও আধুনিক কালের কলের নাঙলে ওলট-পালট করে দিয়েছে গ্রামাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী সেসব চালচ্চিত্র। শুধু ধানের গোলা নয়, ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য, কৃষ্টি, সভ্যতা ও সংস্কৃতি।

এ প্রসঙ্গে ফরিদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শাহেদুজ্জামান বলেন, কালের বিবর্তনে আজ বিলুপ্ত। আশির দশকের দিকে ওইসব ধানের গোলা কৃষক ও সাধারণ মানুষ ব্যবহার করতো। আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে মানুষের পারিবারিক ব্যবহার্য উপকরণে।ফলে ঐতিহ্যবাহী এসব ধানের গোলার জায়গা দখল করে নিয়েছে পাটের বস্তা। এগুলো তৈরি ঝামেলামুক্ত ও সহজে বাজারে পাওয়া যায় বলে মানুষ বাঁশের গোলার পরিবর্তে এসব আধুনিক উপকরণ ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। ফলে হারিয়ে গেছে বাঁশের গোলার কদর। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তালিকায় এর অবস্থান শূন্য বলে তিনি জানান।

চরভদ্রাসনে স্পীডবোট ডুবে প্রাণ গেল ১ জনের, আহত ৮

মুস্তাফিজুর রহমান শিমুল, চরভদ্রাসন:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১০:৫২ পিএম
চরভদ্রাসনে স্পীডবোট ডুবে প্রাণ গেল ১ জনের, আহত ৮

ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে স্পীডবোট ডুবে দূর্গা রানী (৫৬) নামে এক নারী নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া এই ঘটনায় শিশু সহ আরও ৮ জন আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে চরভদ্রাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ সেপ্টেমম্বর) বিকেল ৫টার দিকে চরভদ্রাসন গোপালপুর ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত দূর্গা রানী উপজেলার গাজিরটেক ইউনিয়নের জয়দেব সরকারের ডাঙ্গী গ্রামের বিমল রায়ের স্ত্রী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শুক্রবার বিকেল ৫ টার দিকে চরভদ্রাসন গোপালপুর ঘাট হতে ঢাকার দোহার মৈনুট ঘাটের উদ্দেশ্যে ১৮ জন যাত্রী নিয়ে একটি স্পীডবোট ছেড়ে যায়। স্পীডবোটটি মৈনুট ঘাটের কাছাকাছি যাওয়ার পূর্বে প্রচন্ড ঢেউয়ের তোরে তলা ফেটে গিয়ে ডুবে যায়। যাত্রীরা বোটটি ভাসমান অবস্থায় প্রায় এক ঘন্টা ধরে রাখে। পরে খবর পেয়ে অন্যান্য স্পীডবোড গিয়ে সকল যাত্রীদের উদ্ধার করে পাড়ে নিয়ে আসেন। এদের মধ্যে দূর্গারানীকে চরভদ্রাসন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ননী গোপাল হালদার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে, খবর পেয়ে চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরা খাতুন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) যায়েদ হোছাইন ও থানা অফিসার ইনচার্জ রজিউল্লাহ খান নিহত ও আহতদের সার্বিক খোঁজ খবর রাখছেন।

এই ঘটনার বিষয়ে চরভদ্রাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রজিউল্লাহ খান বলেন, খবর পেয়ে আমরা হাসপাতালে এসে একজনকে মৃত পাই। আহতদের সার্বিক খোঁজখবর নেওয়ার পাশাপাশি দুর্ঘটনার বিষয়টি নৌ পুলিশকে জানানো হয়েছে।

পিআর পদ্ধতিসহ ৫ দফা দাবিতে মধুখালীতে জামায়াতে ইসলামীর বিক্ষোভ

মো. ইনামুল খন্দকার, মধুখালী:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৮:২৬ পিএম
পিআর পদ্ধতিসহ ৫ দফা দাবিতে মধুখালীতে জামায়াতে ইসলামীর বিক্ষোভ

পিআর পদ্ধতিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ পাঁচ দফা দাবিতে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে জামায়াতে ইসলামী।

শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর)বিকাল ৪ টার দিকে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে মধুখালী মডেল সরকারী প্রা. বিদ্যালয় মাঠ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে ঢাকা – খুলনা মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে মধুখালী মরিচ বাজার গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচন আয়োজন, নির্বাচনে সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করা, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি নিশ্চিত, ফ্যাসিস্ট সরকারের গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচারসহ ৫ দফা দাবি জানায় নেতাকর্মীরা।

এসময় মধুখালী উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা আলীমুজ্জামানের সভাপতিত্বে ও উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি আমির আলীর সঞ্চলনায় এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মধুখালী পৌর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা রেজাউল ইসলাম, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি নওসের আলী চৌধুরী, উপজেলার জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি কামালউদ্দিন, পৌর জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি খলিলুর রহমান, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মাওলানা হেমায়েতুল ইসলাম, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি কামালউদ্দিন, পৌর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি ইমরান খাঁন, উপজেলা যুব জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি রাজিবুল হাসানসহ জামায়াতে ইসলামীর উপজেলা ও বিভিন্ন ইউনিয়ন, ওয়ার্ড পর্যায়ে দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ।

ফরিদপুরের কুমার নদে ১২৬ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ

এন কে বি নয়ন, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৮:১৯ পিএম
ফরিদপুরের কুমার নদে ১২৬ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের তেলজুড়ী এলাকায় কুমার নদে ১২৬ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল পাঁচটার দিকে নৌকা বাইচের আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধান অতিথি হিসেবে উদ্বোধন করেন আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-১ আসন থেকে সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী ও আরডিডি গ্রুপের কর্নধার আজিজুল আকিল ডেভিড শিকদার। ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচকে ঘিরে গ্রামীণ মেলা অনুষ্ঠিত হয়।

স্থানীয় ছাড়াও দূর-দূরান্ত থেকে আগত নদের দুই পাড়ে ও নৌকায় চড়ে নদে বিভিন্ন শ্রেণির পেশার নারী-পুরুষ ভিড় জমায়। নৌকা বাইচ ও গ্রামীণ মেলায় কমপক্ষে চল্লিশ হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। সকাল থেকেই সারাদিন ব্যাপী চলে গ্রামীণ মেলা। বিকালে অনুষ্ঠিত হয় নৌকা বাইচ। সব মিলিয়ে এই উৎসব ঘিরে অত্র অঞ্চলের মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হয়।

নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত ছোটবড় মিলিয়ে বাইচে অন্তত ১৫ টি নৌকা অংশ নেয়। এছাড়াও ট্রলার ও ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের কমপক্ষে এক হাজারের মতো নৌকায় চড়ে মানুষ এ উৎসব উপভোগ করেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার তেলজুড়ি বাজার সংলগ্ন কুমার নদের দুই পাড়ে অসংখ্যক নারী-পুরুষ বিভিন্ন সাজে দাঁড়িয়ে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা উপভোগ করছেন। অনেকেই স্থানীয়ভাবে নৌকা ও ট্রলার ভাড়া করে এই উৎসবে মেতে ওঠেন। কয়েকদিন আগে থেকে আগত দোকানীরা গ্রামীণ মেলায় বিভিন্ন ধরনের মিষ্টির দোকান, ইলিশের দোকান, খেলনা ও বিভিন্ন খাবার দোকানের পসরা সাজিয়েছে। অত্র অঞ্চলের কমপক্ষে দশ গ্রামের মেয়েদের জামাইরা বউ,ছেলে-মেয়েদের নিয়ে শ্বশুরবাড়ি এসেছেন। আত্মীয়-স্বজন, পরিবার-পরিজন নিয়ে মেতে ওঠেন পুরনো ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ ও গ্রামীণ মেলার উৎসব-আনন্দে।

নৌকা বাইচ ও মেলায় আগত চতুল ইউনিয়নের বাইখীর গ্রামের সুইট মন্ডল বলেন, ছোটকাল থেকে এই নৌকা বাইচ ও মেলায় আসি। গেন্ডারী কুশর (আখ) জিলাপি, আমিত্তি এ মেলার খুব জনপ্রিয় খাবার। এবারও ছেলে-মেয়েদের নিয়ে এসেছি। নৌকা বাইচ দেখে মেলা থেকে কেনাকাটা করছি।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. সজল শরীফ বলেন, নৌকা বাইচ ও মেলা উপলক্ষে অত্র অঞ্চলের কমপক্ষে দশ গ্রামের মেয়েদের জামাইরা বউ,ছেলে-মেয়েদের নিয়ে শ্বশুরবাড়ি এসেছেন। আত্মীয়-স্বজন, পরিবার-পরিজন নিয়ে মেতে ওঠেন। এটা অত্র অঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহীতে রুপ নিয়েছে। এবার মেলায় প্রায় ছোট-বড় মিলিয়ে ১৫ টি বাইচের নৌকা ছাড়াও ট্রলার ও বিভিন্ন ধরনের কমপক্ষে এক হাজারের মতো নৌকায় চড়ে মানুষ এ উৎসব উপভোগ করেন। মেলায় এবার কমপক্ষে চল্লিশ হাজারের মতো মানুষের সমাগম ঘটেছে।

মিষ্টি ব্যবসায়ী জব্বার মোল্লা বলেন, কয়েক যুগ ধরে এ নৌকা বাইচের মেলায় মিষ্টি বিক্রি করতে আসি। এবারও দোকান দিয়েছি। দোকানে জিলাপি, রসগোল্লা, আমৃত্তি, সন্দেশ, চমচমসহ বিভিন্ন মিষ্টি সামগ্রী রয়েছে। তবে আমিত্তি বেচাকেনাও বেশি হয়।

নৌকাবাইচ-মেলা আয়োজন কমিটির সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রইসুল ইসলাম পলাশ মিয়ার সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন, আজিজুল আকিল ডেভিড সিকদার। নৌকা বাইচে অংশ নেওয়া বিজয়ীদের মাঝে ফ্রিজ এবং এলইডি টেলিভিশন পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এছাড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া সকল নৌকাকে সান্ত্বনা পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।