খুঁজুন
সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫, ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

চিঠি হারিয়ে গেলেও ঐতিহ্যের সাক্ষী লাল ডাকবাক্স

দেলোয়ার হোসেন বাদল, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৫, ২:২৭ পিএম
চিঠি হারিয়ে গেলেও ঐতিহ্যের সাক্ষী লাল ডাকবাক্স

সময় বদলেছে, বদলেছে যোগাযোগের ধরনও। একসময় যার অপেক্ষায় প্রহর গুনতেন প্রিয়জনরা, সেই ডাকপিয়নের ডাক এখন আর শোনা যায় না।

প্রযুক্তির স্পর্শে বদলে গেছে মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা। হাতে-কলমে লেখা চিঠির জায়গা করে নিয়েছে মোবাইল, ইন্টারনেট আর সোশ্যাল মিডিয়া।

 

একটা সময় ছিল, চিঠি পৌঁছাতে লাগত সপ্তাহ কিংবা মাস। প্রিয়জনের খবর জানতে অপেক্ষার প্রহর গুনতে হতো। এখন পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে মুহূর্তেই পৌঁছে যাচ্ছে বার্তা। এক ক্লিকে পাঠানো যাচ্ছে অর্থ, ছবি, শুভেচ্ছা।

চিঠিপত্র আদান-প্রদানের মাধ্যম হিসেবে ডাক বিভাগ একসময় ছিল অপরিহার্য। অফিস-আদালত, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এমনকি ব্যক্তিগত যোগাযোগেও ডাকপিয়নের পদধ্বনি ছিল খবরের প্রতীক। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় এনালগ থেকে ডিজিটাল যুগে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে ডাকবিভাগের সেই জৌলুস ক্রমেই ম্লান হয়ে গেছে। এখন আর দেখা মেলে না রাস্তার মোড়ে মোড়ে রাখা সেই লাল রঙের ডাকবাক্স। জিপিওর সামনে কয়েকটা রয়েছে তাও ফুটপাতের ভাসমান দোকানের কারণে ভেতরে পড়ে আছে। দেখা যায় না কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে আসা চেনা মুখের সেই ডাকপিয়নদের।

তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নে দ্রুত যোগাযোগের নতুন যুগ শুরু হয়েছে। চিঠির জায়গা দখল করেছে ই-মেইল, ফেসবুক, টুইটারসহ নানা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। এমনকি ফ্যাক্স ব্যবস্থাও হারিয়ে যাচ্ছে ই-মেইলের দাপটে। মানুষের আর্থিক লেনদেনও এখন সহজ। ডাক মানিঅর্ডারের জায়গা নিয়েছে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা। একইসঙ্গে দেশজুড়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছে কুরিয়ার সার্ভিস, যা ডাকবিভাগের বিকল্প হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যদিও তা তুলনামূলক ব্যয়বহুল।

ডাকবিভাগের কার্যক্রম আজও পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। অফিসিয়াল নথি, সরকারি চিঠি, নিয়োগপত্র কিংবা নোটিশ পাঠানোয় আজও ডাক বিভাগের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করা যায় না। আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে ২০০০ সালে চালু হয় ই-পোস্ট সার্ভিস, এর মাধ্যমে দেশের তৃণমূল জনগণ পাচ্ছে ইন্টারনেটভিত্তিক ডাকসেবা। এ ছাড়া অনেক জেলা শহরে রয়েছে নাইট পোস্ট অফিস। যেখানে সারারাত চিঠি ও পার্সেল আদান-প্রদান হয়।

বিশ্বব্যাপী ডাক সেবাকে সমন্বিত ও আধুনিক করার লক্ষ্যেই ১৮৭৪ সালের ৯ অক্টোবর সুইজারল্যান্ডের বার্ন শহরে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘জেনারেল পোস্টাল ইউনিয়ন’। ১৯৬৯ সালে টোকিও সম্মেলনে দিনটি ‘বিশ্ব ডাক দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশ ১৯৭৩ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি এ সংগঠনের সদস্য হয় এবং তখন থেকেই ৯ অক্টোবর বিশ্ব ডাক দিবস পালন করে আসছে।

যদিও সময়ের পরিবর্তনে ডাক ব্যবস্থা তার উজ্জ্বলতা অনেকটাই হারিয়েছে, তবুও এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটি এখনও জনগণের পাশে আছে। ডাকবাক্সে কেউ চিঠি না ফেললেও, এগুলোকে সংরক্ষণ ও সংস্কার করা দরকার— অতীত ঐতিহ্য হিসেবে নয়, বরং ইতিহাসের অংশ হিসেবে। কারণ এই ডাক ব্যবস্থা একসময় ছিল মানুষের হৃদয়ের সঙ্গে যুক্ত একটি আবেগময় অধ্যায়।

বিশ্ব ডাক দিবস উপলক্ষে রাজধানীর গুলিস্থান এলাকার জিপিওর সিনিয়র পোস্টমাস্টার মো. মনিরুজ্জামানের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বিরক্তবোধ করেন ও জানান কথা বলতে রাজি নন।

গুলিস্তান জেনারেল পোস্ট অফিসের ডাকপিয়ন আবদুল মতিন বলেন, আমরা যেদিন চিঠি হাতে নিয়ে মানুষের দোরগোড়ায় যেতাম, সেদিন ওদের মুখে যে হাসি দেখতাম, সেটা আজ আর দেখি না। তখন মানুষ চিঠির অপেক্ষায় থাকত।  এখন অপেক্ষায় থাকে মোবাইলের নোটিফিকেশনের। তবে সব সরকারি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আমাদেরকেই জাগায়মতো পৌঁছাতে হয়।

মুরাদপুর হাই স্কুলের শিক্ষিকা সোনিয়া আক্তার বলেন, আমাদের স্কুলজীবনে বন্ধুরা একে অপরকে চিঠি লিখতাম। খামে করে একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে ঈদ কার্ডের শুভেচ্ছা পাঠাতাম। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে এখন সবকিছু ভার্চ্যুয়াল। চিঠির মতো মমতা আর ভালোবাসা আর কোথাও নেই।

গণমাধ্যমকর্মী আকাশমনি বলেন, সময়ের সাথে সাথে আমাদের ভালোবাসা হারিয়েছে। আমাদের আবেগ অনুভূতি শেষ হয়ে গেছে। আগে আমরা আবেগ দিয়ে একটি চিঠি লিখতে গিয়ে কত কাগজ নষ্ট করতাম। রাতের পর রাত জাগতাম। সেই সময়ের গভীর যে টান, এখন সেই গভীর টান আর নাই। আমাদের মা, খালারাদের দেখতাম তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষার থাকতো কখন ডাকপিয়ন সন্তানের চিঠি নিয়ে বাসায় আসবে।

 

কাপড় ব্যবসায়ী আব্দুল জলিল মিয়া বলেন, আগে মানিঅর্ডারেই টাকা পাঠাতাম। এখন মোবাইল ব্যাংকিংয়ে মুহূর্তেই চলে যায়। তবে ডাক বিভাগের নির্ভরযোগ্যতা আজও মনে পড়ে। চিঠি ছিল সম্পর্কের এক মধুর মাধ্যম। আমি চাই, পোস্ট অফিসগুলোকে অন্তত ঐতিহ্যবাহী স্মৃতি হিসেবে সংরক্ষণ করা হোক।

ফরিদপুর মহানগর যুবদলের সভাপতি তাবরীজের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫, ৯:৪৮ পিএম
ফরিদপুর মহানগর যুবদলের সভাপতি তাবরীজের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও দলের নীতি-আদর্শ পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ফরিদপুর মহানগর যুবদলের সভাপতি বেনজীর আহমেদ তাবরীজকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। পরবর্তীতে তার আবেদনের প্রেক্ষিতে পুনর্বিবেচনা শেষে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফলে তিনি পুনরায় স্বীয় পদে বহাল হলেন।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না এবং সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন যৌথভাবে ব*হি*ষ্কা*রাদেশ প্র-ত্যা-হারের সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছেন।

কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশক্রমে প্রেরিত এই বার্তায় আরও উল্লেখ করেন যুবদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূইয়া।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংগঠনের স্বাভাবিক কার্যক্রম আরও সুদৃঢ় করতে এবং ভবিষ্যৎ সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে ভূমিকা রাখার সুযোগ সৃষ্টি করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ফরিদপুরে মন্দিরের জমির বিরোধকে ঘিরে অপপ্রচার, যা বলছে পুলিশ

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫, ৯:০৩ পিএম
ফরিদপুরে মন্দিরের জমির বিরোধকে ঘিরে অপপ্রচার, যা বলছে পুলিশ

সম্প্রতি ফরিদপুরের সদরপুরে মন্দিরের জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া গুজব ও অপপ্রচারের অভিযোগে এক প্রেসবিজ্ঞপ্তি দিয়েছে পুলিশ।

রবিবার (২৩ নভেম্বর) রাতে ফরিদপুর জেলা পুলিশ এ প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেন, ‘সম্প্রতি “HINDUS NEWS” নামক একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে এবং ফেসবুক পেইজে “ফরিদপুরের সদরপুরে মন্দিরের জমি নিয়ে সংঘর্ষ- পালিয়ে যাচ্ছে হিন্দু পরিবার, টহলে পুলিশ” শিরোনাম একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। উক্ত সংবাদে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ঢেউখালী ইউনিয়নের হরিনা গ্রামে রাধা গোবিন্দ মন্দিরের জমি নিয়ে সৃষ্ট বিরোধের বিষয়কে কেন্দ্র করে স্থানীয়ভাবে পরিস্থিতি উত্তেজনাকর সহ হামলার পর ভয়-আতঙ্কে গ্রাম ছাড়ছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এবং চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন অন্তত পাঁচ শতাধিক হিন্দু পরিবার বলে দাবী করা হয়। বিষয়টি ফরিদপুর জেলা পুলিশের নজরে এসেছে। উক্ত ঘটনাটি সম্পর্কে সরেজমিনে তদন্ত এবং প্রকৃত তথ্যের ভিত্তিতে জেলা পুলিশ নিশ্চিত করছে যে, ছড়িয়ে পড়া ওই তথ্যটি অতিরঞ্জিত, অসত্য এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে পারে।

প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘হরিনা মৌজার ৫৮৪ নং খতিয়ানের ৪১২/৪১৩ দাগে ৪৬ শতাংশ জমির মালিক ছিলেন মহাদেব ঘোষ। আনুমানিক ৬/৭ মাস পূর্বে মহাদেব ঘোষ উক্ত জমি স্থানীয় বাবুল বেপারী ও সনাতন ধর্মাবলম্বী সুশান্ত মালো গং-এর নিকট সাব কবলা দলিল মূলে বিক্রি করেন।’

জেলা পুলিশ জানায়, ‘জমি বিক্রির বিষয়টি মহাদেব ঘোষের প্রতিপক্ষ মানিক ঘোষ গং জানতে পারলে তারা দাবি করেন যে, ওই জমিটি সার্বজনীন মন্দিরের। এ নিয়ে বিক্রেতা মহাদেব ঘোষ এবং ক্রেতা সুশান্ত মালো ও বাবুল বেপারী পক্ষের সাথে প্রতিপক্ষ মানিক ঘোষ পক্ষের বিরোধ সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ, বিরোধটি মূলত ‘জমির মালিক/বিক্রেতা ও ক্রেতা’ বনাম ‘প্রতিপক্ষ দাবিদার’-এর মধ্যে, যেখানে উভয় পক্ষেই সনাতন ধর্মাবলম্বী ও মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন জড়িত রয়েছেন।

মারামারি ও পুলিশি পদক্ষেপ:

‘গত ১৬ নভেম্বর ভোরে জমি দখলকে কেন্দ্র করে দু-পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকজন আহত হন। খবর পাওয়া মাত্রই সদরপুর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। উক্ত ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সুশান্ত মালো নামের একজনকে আটক করে এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে। পরবর্তীতে থানা পুলিশ কর্তৃক বাবুল বেপারীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমানে সেখানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’

গুজব নিরসন:

‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত “হামলার ভয়ে ৫ শতাধিক হিন্দু পরিবার গ্রাম ছেড়ে পালাচ্ছে” এবং “চরম নিরাপত্তাহীনতা”—এই তথ্যগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন । সরেজমিনে তদন্তে দেখা গেছে, কোনো পরিবার গ্রাম ছেড়ে যায়নি এবং বর্তমানে এলাকাটি পুলিশের সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রয়েছে।’

সতর্কবার্তা:

একটি স্বার্থান্বেষী মহল সাধারণ জমি সংক্রান্ত বিরোধকে ‘সাম্প্রদায়িক হামলা’ হিসেবে চালিয়ে দিয়ে জনমনে ভীতি ও বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এ ধরনের উসকানিমূলক পোস্ট শেয়ার করা থেকে বিরত থাকার জন্য সর্বসাধারণকে অনুরোধ করা হলো। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী যেকোনো অপতৎপরতার বিরুদ্ধে ফরিদপুর জেলা পুলিশ কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

উক্ত ঘটনায় আতঙ্কিত না হয়ে পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করার জন্য এবং শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে।

চরভদ্রাসনের পদ্মা নদীতে অভিযান: ৬ বাঁধ, ২ ভেসাল অপসারণ

আসলাম বেপারী, চরভদ্রাসন:
প্রকাশিত: রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫, ৮:২৩ পিএম
চরভদ্রাসনের পদ্মা নদীতে অভিযান: ৬ বাঁধ, ২ ভেসাল অপসারণ

ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলায় পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে নির্মিত ৬টি আড়াআড়ি বাঁধ এবং ২টি ভেসাল অপসারণসহ ১০টি চায়না দুয়ারি ও ১০ কেজি মাছ জব্দ করেছে উপজেলা প্রশাসন।

রবিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালিত হয়।

উপজেলা মৎস্য দপ্তর জানায়, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল দীর্ঘদিন ধরে পদ্মা নদীতে আড়াআড়ি বাঁধ বসিয়ে অবৈধভাবে মাছ শিকার করছে—এমন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা খাতুনের নির্দেশনায় উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাঈম হোসেন বিপ্লবের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে সহযোগিতায় ছিল চরভদ্রাসন থানার চৌকস পুলিশ টিম এবং উপজেলা মৎস্য দপ্তরের সকল কর্মকর্তা–কর্মচারী।

স্থানীয় সূত্র জানায়, দুটি প্রভাবশালী মহলসহ কয়েকটি জেলে গোষ্ঠী নদীতে এসব বাঁধ নির্মাণ করে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে মাছ শিকার করছে। এতে নদীর প্রাকৃতিক প্রজনন ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি লক্ষ লক্ষ টাকা অবৈধ আয় করার অভিযোগ উঠেছে।

অভিযানে পদ্মা নদী থেকে ৬টি আড়াআড়ি বাঁধ ও ২টি ভেসাল অপসারণ করা হয়। এর মধ্যে একটি বাঁধের প্রস্থ ছিল প্রায় ১ কিলোমিটার এবং বাকি ৫টি ছিল ৫০০ মিটার করে, মোট ৩.৫ কিলোমিটার। এছাড়া জব্দ করা হয় ১০টি চায়না দুয়ারি ও ১০ কেজি মাছ। নিষিদ্ধ জাল ও দুয়ারি জনসম্মুখে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয় এবং উদ্ধার করা মাছ বাদুল্লা মাতুব্বরের ডাঙ্গী মাদ্রাসায় বিতরণ করা হয়।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাঈম হোসেন বিপ্লব বলেন, পদ্মা নদীর মৎস্য সম্পদ ও প্রজনন রক্ষায় এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। নদীতে মাছের অবাধ চলাচল ও প্রজনন নিশ্চিত করতে ভবিষ্যতেও নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হবে।