খুঁজুন
শনিবার, ১ নভেম্বর, ২০২৫, ১৬ কার্তিক, ১৪৩২

দেশের রাজনীতিতে ঘটনাবহুল ৫ তারিখ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১১:৩৬ পিএম
দেশের রাজনীতিতে ঘটনাবহুল ৫ তারিখ

বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের পর গত ৫০ বছরে এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে, যেগুলো দেশের রাজনীতি ও সমাজে গুরুত্বপূর্ণ বাঁক বদল এনে দিয়েছে। রাষ্ট্র গঠনের পর রাজনৈতিক হত্যা, সামরিক অভ্যুত্থান, ক্ষমতা দখল, নির্বাচনি সহিংসতাসহ ঘটে যাওয়া নানা ঘটনার ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুই ধরনের প্রভাবই রয়েছে।

তবে ২০১৩ থেকে ২০২৫ সাল অবধি দেশে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনার মধ্যে একটা জায়গায় কাকতালীয় মিল খুঁজে পাওয়া যায়। আর তা হলো ক্যালেন্ডারের ৫ তারিখ।

জেনে নেওয়া যাক এই সময়ের মধ্যে যেসব ঘটনা গভীর দাগ কেটেছে—

৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ : গণজাগরণ মঞ্চ

বাংলাদেশে যেসব আন্দোলন হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে শাহবাগের ‘গণজাগরণ মঞ্চ’ আলোচিত, সমালোচিত এবং বিতর্কিত একটি নাম। ২০১৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে ওই আন্দোলন শুরু হয়েছিল। কিছু অনলাইন অ্যাকিভিস্ট এ আন্দোলন শুরু করলেও খুব দ্রুত এটি রাজনৈতিক মাত্রা পায়।

২০১৩ সালের ৫ ফ্রেব্রুয়ারি সকালে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জামায়াতে ইসলামীর নেতা আবদুল কাদের মোল্লাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এই রায়ে সন্তুষ্ট না হয়ে কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে সেদিন বিকেলে ডা. ইমরান এইচ সরকারের নেতৃত্বে অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরা শাহবাগে জড়ো হয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলেন। যদিও সে আন্দোলনের নেতৃত্ব নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার সমর্থন দিলেও পরে তাদের সঙ্গেও মতবিরোধ তৈরি হয়।

৫ মে ২০১৩ : শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচি

ঢাকার শাপলা চত্বরে অবস্থান নিয়ে আলোচনায় এসেছিল কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। কয়েকজন ব্লগারের বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগ এবং নারী নীতির বিরোধিতা করাসহ ১৩ দফা দাবি তুলে হেফাজতে ইসলাম ওই কর্মসূচি নিয়েছিল। ২০১৩ সালের ৫ মে দিনভর উত্তেজনা ও সহিংসতা ছড়িয়েছিল সংগঠনটির ওই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে। সেই রাতে রাজধানীর অন্যতম বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিলের শাপলা চত্বর ঘিরে তৈরি হয়েছিল এক ভীতিকর পরিবেশ। শেষ পর্যন্ত পুলিশ–র‍্যাব ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির অভিযানে খালি করা হয়েছিল শাপলা চত্বর।

২০১৩ সালের ৫ মে দিনের সহিংসতা এবং পরদিন ৬ মে দুই দিনে সারা দেশে সহিংসতায় সরকারের পক্ষ থেকে নিহতের সংখ্যা ১৩ বলে জানানো হয়। অন্যদিকে মানবাধিকার সংগঠন অধিকার নিরাপত্তা বাহিনী দ্বারা সংঘটিত সেই নির্বিচার হত্যাযজ্ঞের একটি তথ্যানুসন্ধান মিশন পরিচালনা করে এবং ৬১ জন নিহত উল্লেখ করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

৫ জানুয়ারি ২০১৪ : একতরফা সংসদ নির্বাচন

বাংলাদেশের ইতিহাসে একতরফা নির্বাচনের যেসব নজির রয়েছে তার মধ্যে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অন্যতম। সে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি। অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক বিএনপি ও তাদের রাজনৈতিক মিত্র জামায়াতে ইসলামী সে নির্বাচন বয়কটের প্রেক্ষাপটে অর্ধেকের বেশি আসনে ভোট গ্রহণের প্রয়োজন হয়নি। জাতীয় সংসদের ৩০০টি আসনের মধ্যে ১৫৪ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিল। নির্বাচনের দিন ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৪৬টি আসনে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার যখন নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল, তখন দেশের পরিস্থিতি বেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। একদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দণ্ডিতদের ফাঁসি কার্যকর করা এবং অন্যদিকে বিরোধী দলের ডাকা হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি।

নির্বাচনের ১০দিন আগে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল ১৫ দিনের জন্য সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করা হয়। নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছিল, ততই সহিংসতাও বাড়তে থাকে। নির্বাচনের আগে ৩৮টি জেলায় প্রায় দেড়শর মতো কেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ করা হয়। বিভিন্ন জায়গায় ব্যালট পেপার ও নির্বাচন সরঞ্জাম পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এবং অনেকে হতাহত হন।

৫ জুন ২০২৪ : কোটা নিয়ে আদালতের রায়

সর্বপ্রথম বড় ধরনের কোটা সংস্কার আন্দোলন হয় ২০১৩ সালে। এরপর ২০১৮ সালে আন্দোলনের পর আন্দোলনকারীদের পক্ষে পরিপত্র ঘোষণা করা হয়। কিন্তু হাইকোর্ট কর্তৃক এই পরিপত্রটি অবৈধ ঘোষণা করায় ২০২৪ সালে পুনরায় আন্দোলন শুরু হয়। প্রতিবার আন্দোলনের সময় বাংলাদেশ পুলিশ ও ছাত্রলীগ কর্তৃক শিক্ষার্থীদের ওপর প্রাণঘাতী হামলা চালানো হয়।

এবার আন্দোলন শুরু হয় গত ৫ জুন। মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে, হাইকোর্ট সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন করপোরেশনের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে (নবম থেকে ১৩তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। এর প্রতিক্রিয়ায় ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করে। ঢাকায় শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হন এবং শহীদ মিনারে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।

২ থেকে ৬ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র ব্যানারে সংগঠিত হয় এবং সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে ২০১৮ সালের সরকারি বিজ্ঞপ্তি পুনর্বহালের দাবিতে টিএসসি এলাকায় একটি বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।

পরের কয়েক দিন দেশের অন্যান্য অংশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা তাদের ক্যাম্পাস ও এর আশপাশে মিছিল-সমাবেশ করে।

পরে ৪ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ৫ জুন দেওয়া হাইকোর্টের রায় বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নেন। পরদিন ৬ জুলাই শিক্ষার্থীরা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির ডাক দেন।

৭ জুলাই শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ কর্মসূচির কারণে ঢাকা শহর স্থবির হয়ে যায়। এদিন ছয়টির বেশি ব্যস্ত সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। এ বিক্ষোভকে ‘অযৌক্তিক’ উল্লেখ করে বিষয়টি সর্বোচ্চ আদালতে নিষ্পত্তি হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা। এরপর অবরোধ ও বিক্ষোভ জোরালো হতে থাকে।

১৪ জুলাই সব গ্রেডে কোটার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে গণপদযাত্রা করে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দেন আন্দোলনকারীরা। সেদিন সন্ধ্যায় একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বিতর্কিত মন্তব্য করেন, মন্তব্যে তিনি আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকার’র সঙ্গে তুলনা করেন। এই মন্তব্যের পরই শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শুরু হয়। বিভিন্ন ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন ‘তুমি কে, আমি কে, রাজাকার রাজাকার; কে বলেছে, কে বলেছে, স্বৈরাচার স্বৈরাচার’।

১৬ জুলাই ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুরে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে অন্তত ছয়জন নিহত হয়। সব বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয় এবং শিক্ষার্থীদের হল খালি করতে বলা হয়েছে। সরকার ছয়টি জেলায় বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) মোতায়েন করে। সেদিন শিক্ষার্থীরা ঢাবি ও রাবির অধিকাংশ হলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের কক্ষ ভাঙচুর করে। এদিকে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরস্ত্র শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনার একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। মূলত এই মৃত্যু এবং মুগ্ধসহ আরও কয়েকটি মৃত্যুর ঘটনায় আন্দোলনের গতিপথ ভিন্ন দিকে মোড় নিলে সরকার বেকায়দায় পড়ে যায়। পরে ছাত্ররা ১ দফা দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবিতে অনড় থাকেন।

৫ আগস্ট ২০২৪ : শেখ হাসিনার পতন

সরকারের পদত্যাগের দাবিতে চলমান অসহযোগ আন্দোলন সফল করতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লং মার্চ টু ঢাকা ছিল সোমবার (৫ আগস্ট)। এদিন সারা দেশ থেকে ছাত্র-জনতা রাজধানী ঘিরে ফেললে এক দফা দাবির মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। পদত্যাগ করে বেলা আড়াইটার দিকে থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টার শেখ হাসিনাকে নিয়ে যাত্রা করে। তার সঙ্গে ছোট বোন শেখ রেহানা ছিলেন। হেলিকপ্টারটি ভারতের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬ বছরের ক্ষমতার অবসান হয়। এদিন ছাত্র-জনতা রাস্তায় নেমে উল্লাস করে।

৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ : ধানমন্ডি ৩২

সম্প্রতি ভারতে পালিয়ে থাকা শেখ হাসিনার অনলাইন ভাষণের ঘোষণা দেন। এর পাল্টা জবাবে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর অভিমুখে ‘বুলডোজার মিছিলের’ ডাক দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। পূর্বঘোষিত ‘লং মার্চ টু ধানমন্ডি-৩২’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা থেকেই শাহবাগ থেকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর অভিমুখে ছাত্র-জনতার জমায়েত শুরু হয়।

রাত ৮টার দিকে ৩২ নম্বর এলাকায় বিক্ষোভ শুরু হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর শুরু করেন। ভাঙচুর চালানোর এক পর্যায়ে আগুন ধরিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা।

এ সময় ওই এলাকায় বিপুলসংখ্যক বিক্ষোভকারী জড়ো হতে থাকেন। তারা মিছিল করেন এবং স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদ ও আওয়ামী লীগবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। রাত থেকে বুলডোজার দিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের তিনতলা বাড়িটির সামনের অংশ অনেকটাই গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।

‘নভেম্বরের মধ্যেই দেশে গণভোট দিতে হবে’ — খেলাফত আন্দোলন মহাসচিব

সালথা প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শনিবার, ১ নভেম্বর, ২০২৫, ৩:১৫ পিএম
‘নভেম্বরের মধ্যেই দেশে গণভোট দিতে হবে’   — খেলাফত আন্দোলন মহাসচিব

বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউসুফ সাদিক হাক্কানী বলেন, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনে জনগণের মতামতই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই নভেম্বরের মধ্যেই দেশে গণভোট দিতে হবে। এতে জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক চর্চাকে শক্তিশালী করবে।

শনিবার (০১ নভেম্বর) সকালে ফরিদপুরের সালথায় দলটির ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা-সালথা) আসনের মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বকুল মিয়ার সাথে নির্বাচনী মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মাওলানা ইউসুফ সাদিক হাক্কানী বলেন, ‘যুগোপযোগী একটি ইসলামিক আন্দোলন গড়ে তুলতে আমরা একাধিক ইসলামি দল ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। দেশের অবস্থা অনুকূল হলে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে আমরা আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

এর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ফরিদপুরের সালথা উপজেলার যোগারদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক মোহাম্মদ ইব্রাহিম হোসেনের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান মাওলানা ইউসুফ সাদিক হাক্কানী। পরে কবর জিয়ারত করেন। এ সময় তিনি শোকসন্তপ্ত পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

ফরিদপুরে দিনদুপুরে পিস্তল ঠেকিয়ে গৃহবধূর কানের দুল ছিনতাই, ২ ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শনিবার, ১ নভেম্বর, ২০২৫, ২:৪৮ পিএম
ফরিদপুরে দিনদুপুরে পিস্তল ঠেকিয়ে গৃহবধূর কানের দুল ছিনতাই, ২ ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার

ফরিদপুরে দিনদুপুরে পিস্তল ঠেকিয়ে মঞ্জু রানী দাস (৩৬) নামের এক গৃহবধূর কানের দুল ছিনতাইয়ের চাঞ্চল্যকর ঘটনার মূল হোতাসহ তার এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-১০।

শনিবার (০১ নভেম্বর) সকাল ১১টার দিকে সিপিসি-৩ ফরিদপুর ক্যাম্প, র‍্যাব-১০-এ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য নিশ্চিত করেন ঢাকা কেরানীগঞ্জের র‍্যাব-১০ এর অধিনায়ক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।

এর আগে শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে ফরিদপুরের সালথা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, প্রধান আসামি মো. শরীফুল ইসলাম ডন শরীফ (৩৮) ও তার সহযোগী মো. রায়হান মোল্লা (২৫)।

শরীফুল ইসলাম ডন শরীফ ফরিদপুরের কোতয়ালী থানার কবিরপুর এলাকার মৃত ফারুক শেখের ছেলে ও রায়হান মোল্লা একই এলাকার আলতাফ মোল্লার ছেলে।

গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে খেলনা পিস্তল, সুইচ গিয়ার, চোরাই মোটরসাইকেল ও ১.৫ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা কেরানীগঞ্জের র‍্যাব-১০ এর অধিনায়ক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, সম্প্রতি ফরিদপুরে এক গৃহবধূর কানের দুল ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। দুর্বৃত্তরা অস্ত্রের মুখে ভয় দেখিয়ে ওই গৃহবধূর কাছ থেকে স্বর্ণের কানের দুল ছিনিয়ে নেয়। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। র‍্যাব-১০ এর বিশেষ দল অভিযান চালিয়ে এই ঘটনার প্রধান আসামী এবং তার এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

র‍্যাব জানায়, গ্রেপ্তার হওয়া ডন শরীফের বিরুদ্ধে ডাকাতি, খুন, চুরি ও মাদকসহ ১০টি মামলা রয়েছে। তিনি ২০১৮ সালে ফরিদপুরের ঝিলটুলি এলাকায় এক স্টাফ নার্স অরুণিমা ভৌমিক হত্যা মামলারও প্রধান আসামি ছিলেন।

মোহাম্মদ কামরুজ্জামান আরও বলেন, অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে র‍্যাবের এই অভিযান চলমান থাকবে। কেউ আইন হাতে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছে র‍্যাব-১০। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। তাদের কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হবে।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার (২১ অক্টোবর) সকালে ফরিদপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর শোভারামপুর এলাকায় দিনদুপুরে পিস্তল ঠেকিয়ে ওই এলাকার বিষু দাসের স্ত্রী মঞ্জু রানী দাস (৩৬) নামের এক গৃহবধূর কানের দুল ছিনিয়ে নেয় দুই যুবক। ছিনতাইয়ের পুরো ঘটনাটি পাশে থাকা একটি সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ে। পড়ে এটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।

 

চরভদ্রাসনে পদ্মার ভাঙনে ৩০ মিটার জিওব্যাগের বাঁধ বিলীন

মুস্তাফিজুর রহমান শিমুল, চরভদ্রাসন:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:৫২ পিএম
চরভদ্রাসনে পদ্মার ভাঙনে ৩০ মিটার জিওব্যাগের বাঁধ বিলীন

oplus_0

ফরিদপুরের চরভদ্রাসনের সদর ইউনিয়নের টিলারচর গ্রামে হঠাৎ করে দেখা দিয়েছে পদ্মা নদীর ভাঙ্গন।

গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকালে এ ভাঙনে ওই এলাকার নদী পাড়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জিওব্যাগের ডাম্পিং করা প্রায় ত্রিশ মিটার বাঁধ ও ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

ভাঙন এলাকা হতে প্রায় ৯০ মিটার দূরে রয়েছে এমপি ডাঙ্গী ও জাকেরেরশুরা হয়ে জেলা শহর ফরিদপুরের যাতায়াতের পাকাসড়ক, শতশত বসত বাড়ি ও সরকারী স্কুল।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পদ্মা নদীর পানি কমতে থাকা অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে হঠাৎ করে নদী ভাঙন দেখা দেওয়ায় আতঙ্কে রয়েছে নদী পাড়ের মানুষ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সরজমিনে ভাঙন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এখানে নদীর তীর রক্ষা স্থায়ী বাঁধের সাথে আপদকালীন সময়ে জিওব্যাগের ডাম্পিং করা বাঁধের বড় একটা অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া কয়েকটি অংশের মাটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে।

ভাঙনের বিষয়ে নদী পাড়ের বসতি শেক মেতালেব (৫৩) ও মো. ইমারত হোসেন (২৫) জানায়, বুধবার সকাল থেকে ওই এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। কিছু সময় পর পর মাটির বড় বড় অংশ পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে।

তারা বলেন, দ্রুত ভাঙন রোধে কাজ না করলে বিলীন হয়ে যাবে ফসলি জমি, পাকা সড়ক সহ স্থানীয় শত শত বসত বাড়ি।

ভাঙনের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনিরা খাতুন বলেন, “আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার নিকট থেকে ওই এলাকায় নদী ভাঙনের খবর পেয়েছি। জায়গাটি পরিদর্শন করে দ্রুত ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলব।

ভাঙনের বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন বলেন, “ টিলারচর গ্রামের কয়েকটি পয়েন্টে আপদকালীন ভাঙন রোধে বর্ষা মৌসুমে জিওব্যাগের ডাম্পিং করা হয়েছিল। ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া ভাঙন রোধে চরভদ্রাসন উপজেলার কয়েকটি পয়েন্ট মিলে ৩.১৫ কি.মি. জায়গায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে রয়েছে বলেও জানান পাউবোর এই নির্বাহী প্রকৌশলী।