খুঁজুন
শনিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৫, ১ ভাদ্র, ১৪৩২

শৃঙ্খলাভঙ্গে জিরো টলারেন্স বিএনপির, শুদ্ধি অভিযান অব্যাহত

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ২ মার্চ, ২০২৫, ১১:২১ এএম
শৃঙ্খলাভঙ্গে জিরো টলারেন্স বিএনপির, শুদ্ধি অভিযান অব্যাহত

নেতা-কর্মীদের দলীয় শৃঙ্খলায় রাখতে কঠোর থেকে কঠোরতর অবস্থানে বিএনপি। কোনো ধরনের অনিয়ম বা অভিযোগই বরদাশত করছে না হাইকমান্ড।

সাংগঠনিক প্রতিযোগিতার জেরে অভ্যন্তরীণ বিরোধ থেকে যেন কোনো ধরনের মারামারি না হয় সেদিকে যেমন নজর রাখছে শীর্ষ নেতৃত্ব, তেমনি আর্থিক কোনো ঝামেলা বা কেলেঙ্কারিতে যেন কেউ না জড়ায় সে বিষয়েও দিয়ে দেওয়া হচ্ছে কড়া বার্তা।

 

রাজনৈতিক বক্তব্য-বিবৃতিতে কেউ যেন কোনো উসকানি না ছড়ান বা বেফাঁস কিছু না বলেন, সেজন্য করা হচ্ছে হুঁশিয়ারি। এক্ষেত্রে ব্যত্যয় ঘটলে দেওয়া হচ্ছে শোকজ (কারণ দর্শানোর) নোটিশ। প্রয়োজনে অভিযুক্তদের দল থেকে করা হচ্ছে বহিষ্কারও। ফলে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক যে পালাবাদল ঘটেছে, তাতে দেশজুড়ে বড় রকমের বিশৃঙ্খলার শঙ্কা দেখা দিলেও বিএনপির হাইকমান্ড কঠোর অবস্থান নিয়ে সে জায়গায় যেন লাগাম টেনে ধরেছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের রাজনীতির মূল প্রেক্ষাপটে চলে আসে কয়েকবার সরকার গঠন করা অন্যতম বৃহৎ দল বিএনপি। এর আগে ১৬টি বছর দলটির নেতাকর্মীরা প্রতিনিয়ত দমন-পীড়ন, গুম-খুনের শিকার হয়েছেন। তাদের শীর্ষ নেতারাও আওয়ামী লীগের চক্ষুশূল হয়েছিলেন টানা আন্দোলনের কারণে। কিন্তু পট পরিবর্তনের পর কতিপয় নেতা-কর্মীর কারণে দলটি নেতিবাচকভাবে আলোচনায় আসে। জনরোষ থেকে বাঁচতে শেখ হাসিনার ভারতে পালানোর সঙ্গে সঙ্গে দেশের অপরাধ সাম্রাজ্যের অনেক মাফিয়া বা গডফাদার ও তাদের দোসররা পালিয়ে যায়। কিন্তু তাদের দখল, চাঁদাবাজিসহ নানা সিন্ডিকেটে জড়িয়ে পড়ে কতিপয় লোক। এদের অনেকে বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী বলে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রচার হতে থাকে।

অভিযোগ পৌঁছে যায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছেও। তিনি একাধিকবার হুঁশিয়ারি দেন। কিন্তু তারপরও জেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে নেতাকর্মীদের নিবৃত করা যাচ্ছিল না বিধায় শোকজ ও বহিষ্কারের মতো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হতে থাকে হাইকমান্ড থেকে। এতেই থেমে থাকছেন না বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। সাম্প্রতিক এক ভার্চুয়াল সভায় ‘কঠোর সতর্ক বার্তা’ দিয়েছেন তিনি। তারেক রহমান জানিয়েছেন, শৃঙ্খলার স্বার্থে স্বার্থপর হবে বিএনপি।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে দলের ভাবমূর্তি রক্ষায় কঠোর হয় কেন্দ্র। সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জেলা, মহানগর ও উপজেলা পর্যায়েও অনেক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনসহ দলের শত শত নেতাকর্মীকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন অভিযোগ আমলে নিয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে বহিষ্কার ও অব্যাহতি দেওয়া হয় এক হাজার ৩১ নেতাকে। শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছে এক হাজার ২০৩ নেতাকর্মীকে। যারা শাস্তির মুখে পড়েছেন, তাদের অধিকাংশের বিরুদ্ধেই দখল ও চাঁদাবাজির অভিযোগ ছিল। যারা শোকজ পেয়েছেন, তাদের বেশিরভাগ বেফাঁস মন্তব্য বা উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে পড়েছেন শাস্তির খড়গে।

যেসব অভিযোগের খবর পাওয়া যায়

হাসিনার ষোল বছরের শাসনকালে জমি, ফ্ল্যাট, মার্কেট দখল থেকে শুরু করে চাঁদাবাজি, মামলা বাণিজ্যসহ সব অপরাধ সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে ছিলেন তার আশ্রিত গডফাদার ও মাফিয়া এবং দলের নেতা-কর্মীরা। হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলে এরাও দেশ ছেড়ে বিদেশে আশ্রয় নেন।

তারপর অপরাধের এসব সিন্ডিকেট দখলে মরিয়া হয়ে ওঠে একটি চক্র। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ ওঠে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে অন্যান্য বিভাগ, জেলা, উপজেলা ইউনিয়নের বাজার, বাসস্ট্যান্ড, বিভিন্ন নির্মাণাধীন স্থাপনা, সড়কে বিএনপির নেতাকর্মীরা চাঁদা নিচ্ছেন—এমন খবর পাওয়া যায়।

যেমন ৫ আগস্টের আগে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজি করতেন আওয়ামী লীগ নেতা লোকমান হোসেন। ৮ আগস্ট থেকে বিএনপি নেতা সাইফুল আলম নীরব কারওয়ান বাজারসহ তেজগাঁও এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রচার হয়।

জানা যায়, পদধারী ও মাঠ পর্যায়ের শীর্ষ নেতাদের কেউ কেউ তাদের কর্মী বাহিনী দিয়ে মাটি ভরাট করে নদীর জমি দখল করেছেন। একই পর্যায়ের বেশ কিছু নেতার বিরুদ্ধে মামলা বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে। আবার কেউ কেউ ব্যবসায়ীদের হুমকি-ধমকি দিয়ে অর্থ আদায় করছেন এমন অভিযোগও পাওয়া যায়। এসব অভিযোগ বিভিন্ন মাধ্যমে কেন্দ্রে গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

যদিও শোনা গেছে, ‘সিন্ডিকেটের’ আশীর্বাদপুষ্ট হওয়ায় অনেক নেতা শাস্তি থেকে বেঁচে যাচ্ছেন। শীর্ষ নেতারা বলেছেন, দলের হাইকমান্ড চায় না নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অপকর্মের অভিযোগ তুলে বিএনপিবিরোধী কেউ কোনো ফায়দা নিক।

বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ের কয়েকজন নেতা বলেছেন, কারও বিরুদ্ধে অভিযুক্ত উঠলে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অবশ্য মনোনয়ন কোন্দলেও নেতারা একে অপরকে নানা কারণে অপবাদ দিচ্ছেন। তাই ঢালাও ব্যবস্থা নেওয়ার আগে তদন্ত হচ্ছে, সে হিসেবে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

অভিযোগ শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধেও

আওয়ামী লীগ আমলে ২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাজধানীর উত্তরা থেকে গুমের শিকার হয়েছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। পরে তার হদিস মেলে ভারতে। ৯ বছর ধরে মেঘালয়ের শিলং অবস্থান করছিলেন তিনি। আওয়ামী লীগ উৎখাত হওয়ার পর দেশে ফেরেন। তার বিরুদ্ধে আলোচিত ব্যবসায়ী এস আলমের বিলাসবহুল গাড়ি সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় তাকে শোকজ করে বিএনপি। একই ঘটনায় চট্টগ্রামে বিএনপির দক্ষিণ জেলা শাখার আহবায়কসহ স্থানীয় তিন নেতার বিরুদ্ধেও অভিযোগ ওঠে। সেই কমিটিও বাতিল করে দেয় বিএনপি।

২০২৪ সালের ১৫ আগস্ট নাটোরে দলীয় আদর্শের পরিপন্থী বক্তব্যের অভিযোগ ওঠে রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর বিরুদ্ধে। তাকে দল থেকে শোকজ করা হয়। এ অভিযোগের জন্য শাস্তিও পান দুলু। তিনি ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদে। পরে তাকে সরিয়ে নির্বাহী কমিটির সদস্য করা হয়।

এছাড়া শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে শোকজ করা হয় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনের মতো নেতাদেরও। বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম, যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্নার বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগের খবর প্রকাশ হয় গণমাধ্যমে।

এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জে রপ্তানিমুখী পোশাক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ফকির গ্রুপের কাছে সুবিধা দাবির অভিযোগ মেলে নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। বায়রা ভবনে ভাঙচুরের ঘটনায় আবু আশফাক, শান্তিনগরের ইস্টার্ন প্লাস মার্কেটের কমিটি দখল; ঢাকা ও ফেনীতে চাঁদাবাজির ঘটনায় রফিকুল আলম এবং আবদুল মোনায়েমের বিরুদ্ধে পরিবহন ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ ওঠে।

হাসিনার পতনের পরপরই মতিঝিলে ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় দখল নিতে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে একটি চক্রের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় ইসলামী ব্যাংকের অন্তত ছয় কর্মী গুলিবিদ্ধ হন। সেসময় ঘটনাটিতে বিতর্কিত গ্রুপ এস আলমের পক্ষে ভূমিকা নেওয়ার অভিযোগ ওঠে যুবদলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম ওরফে নয়নের বিরুদ্ধে।

ফরিদপুরের নগরকান্দায় বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলে কবির ভূঁইয়া নামে এক ব্যক্তি নিহত। এ ঘটনার পেছনের কারণ ছিল বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ও কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের অনুসারীদের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ। পরে শামা ও বাবুলের দলীয় পদ স্থগিত করে দল।

ময়মনসিংহের ভালুকায় ব্যবসার সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করায় দক্ষিণ জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক ও ভালুকা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফখরুদ্দিন আহমেদ বাচ্চুকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরে দল থেকে তার বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়।

বরিশাল নগরের ব্রাউন কম্পাউন্ড এলাকায় বিরোধ, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সুযোগে পুকুর দখল ও ট্রাক দিয়ে বালু এনে সেটি ভরাটের অভিযোগ ওঠে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহানের (শিরিন) বিরুদ্ধে। পরে তার পদ স্থগিত করা হয়। যদিও বিলকিস দাবি করেছেন, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার।

এ ছাড়া বাগেরহাটে দলের কেন্দ্রীয় নেতা শামীমুর রহমান শামীম, কয়রা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন বাবুল, পাইকগাছা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক, তেরখাদা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক বাবু মোল্লা, সদস্য ফেরদৌস মেম্বার, গাউস মোল্লা ও রবিউল ইসলাম লাকু, ফুলতলায় উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ আবুল বাশার ও সদস্য সচিব মনির হাসান টিটো, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলা সভাপতি রুহুল আমিন দুলাল, আগৈলঝাড়ার ছাত্রদলের আহ্বায়ক মফিদুল মোল্লা, মেহেন্দীগঞ্জ ছাত্রদলের সদস্য সচিব জুবায়ের মাহমুদ, জেলা ছাত্রদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মাহমুদ হাসান, সুনামগঞ্জ তাহিরপুরের বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন, সিলেট জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলাম শাহপরান, মৌলভীবাজার যুবদল সভাপতি জাকির হোসেন উজ্জল, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল হাশিম, বগুড়ার ১৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সাজেদুর রহমান সাজু, ১২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর বিএনপি নেতা এনামুল হক সুমন, জেলা বিএনপির সহকোষাধ্যক্ষ আব্দুল জলিল বাকি, নাটোর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দাউদার মাহমুদ, বদলগাছীর উপজেলা বিএনপি নেতা বেলাল হোসেন এবং চট্টগ্রাম বিভাগে বিএনপির ১০ সাংগঠনিক জেলায় দুই শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় হাইকমান্ড।

বিএনপির একটি সূত্র বলেছে, চাঁদাবাজি, দখল, হুমকি, দুর্নীতি ও অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দলের ভাবমূর্তি রক্ষা ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কঠোর অবস্থানে থাকবে দলটি। অবশ্য কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার পর সেটি প্রমাণিত না হলে ওই নেতা বা কর্মীর শাস্তি বাতিল হবে। এক্ষেত্রে যাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগের প্রমাণ নেই, কিন্তু প্রাথমিকভাবে তাকে বহিষ্কার বা পদ স্থগিত করা হয়েছিল সেগুলো ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা কী বলছেন

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, শৃঙ্খলা রক্ষায় বিএনপির অবস্থান সাধুবাদযোগ্য। কারণ এহেন সব অভিযোগের পরও হাইকমান্ড যদি কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে এসব বিষয় দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করবে। কারণ এরই মধ্যে যেসব কর্মকাণ্ড ঘটেছে, তাতে ১৬ বছর ধরে নির্যাতনের শিকার বিএনপির নেতা-কর্মীরাই উল্টো জনতার প্রশ্নের মুখে পড়ছেন। এর প্রভাব পড়তে পারে ব্যালট বাক্সে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেছেন, বিএনপির এখনই সময় নিজেদের ক্লিন ইমেজকে জনগণের সামনে তুলে ধরা। তবে এ সময়েই দলটির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কিছু কিছু অভিযোগ আসছে যা দুঃখজনক। বিএনপির উচিৎ, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে গুরুত্ব দিয়ে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়া। জনগণ এখন অনেক স্মার্ট। এ বিষয়টিকে ভালোভাবে বোঝা ও জনগণের পালস বোঝা দরকার। নয়ত, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মতো বিষয়গুলো বিএনপিকে বড় বিপদে ফেলে দেবে।

শৃঙ্খলাভঙ্গে ‘জিরো টলারেন্স’

যাদের বিষয়ে অভিযোগ, মিলছে তাদের ক্ষেত্রে বিএনপি জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করছে। শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমনটিই নিশ্চিত হওয়া গেছে। নেতারা বলেছেন, দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে যারা নিজস্ব সিদ্ধান্ত-স্বার্থ নিয়ে কাজ করবেন, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে বহিষ্কার করা হবে। কোনো অপরাধের জন্য ছাড় দেওয়া হবে না।

নেতারা এও বলছেন, অভ্যুত্থানের আগে বিএনপিকে নিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা ছিল। তবে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আপসহীন আদর্শ ধরে রেখে গত ১৬ বছর পার করেছে দল। সেদিক থেকে দলের ভেতরে-বাইরে কারও কোনো অপরাধের বিষয়ে আপস হবে না।

বিষয়গুলো নিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে কথা বলে বাংলানিউজ। রিজভী বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিরুদ্ধে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে দলের পক্ষ থেকে। তবে নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অপকর্মের অভিযোগ অনেক ক্ষেত্রেই অতিরঞ্জিত। যেসব ঘটনায় সত্যতা পাওয়া গেছে, শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, দলের নীতি নির্ধারণী পর্যায় থেকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। কোনো ঘটনায় কারও নাম এলেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কোনো অবস্থাতেই অন্যায়কারীদের প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। বিএনপি হাইকমান্ড কোনো অন্যায়ে জড়িত কাউকেই ছাড় দিচ্ছে না।

 

Source : Banglanews24

ফরিদপুরে ফুল সজ্জিত গাড়িতে শিক্ষকদের রাজসিক বিদায়

মধুখালী প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৫ আগস্ট, ২০২৫, ৮:১০ পিএম
ফরিদপুরে ফুল সজ্জিত গাড়িতে শিক্ষকদের রাজসিক বিদায়

ফরিদপুরের মধুখালীতে নানা আয়োজনে ও ফুল সজ্জিত গাড়িতে দুই শিক্ষক ও এক অফিস সহকারীকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার মেগচামী স্কুল অ্যান্ড কলেজে এ আয়োজন হয়।

এসময় বিদায়ী শিক্ষকদের গলায় গাঁদা ফুলের মালা পরিয়ে মঞ্চ থেকে গাড়িতে নেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা গাড়ির দুই পাশে দাঁড়িয়ে করতালির দিয়ে অভিবাদন জানান। পরে ফুল সজ্জিত গাড়িতে শিক্ষকদের স্কুল থেকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়। এর আগে স্কুল অ্যান্ড কলেজ স্কাউট দল গার্ড অব অনার প্রদান করে।

বিদায়ীরা হলেন- সিনিয়র শিক্ষক ক্ষিতিশ চন্দ্র দাস, সরজিৎ চক্রবর্তী ও অফিস সহকারী মহিউদ্দিন মৃধা। তাদের প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-কর্মচারী, বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা এ সংবর্ধনা দেয়। বিদায় বেলায় এমন আয়োজনে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন বিদায়ী শিক্ষক-কর্মচারী।

বিদ্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক ক্ষিতিশ চন্দ্র দাস ১৯৮৭ সালে স্কুলে যোগদান করেন, সিনিয়র শিক্ষক সরজিৎ চক্রবর্তী ১৯৮৪ সালে স্কুলে যোগদান করেন। তারা দীর্ঘ কর্মজীবনের ইতি টেনে অবসরে গেছেন। তাই প্রিয় শিক্ষকদের বিদায় জানাতে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীরা এসব আয়োজন করেন। দীর্ঘদিনের সহকর্মী ও ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে এমন সম্মান পেয়ে গর্ববোধ করেন তারা।

বিদায় অনুষ্ঠানে মেগচামী স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলম মৃধা সভাপতিত্ব করেন।

সিনিয়র শিক্ষক কৃষ্ণ চন্দ্র কুন্ডুর সঞ্চালনায় বিদায়ী শিক্ষকরাসহ অন্যান্য শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন। এসময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিদায়ী শিক্ষকদের উপহার প্রদান করেন।

মেগচামী স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলম মৃধা বলেন, দীর্ঘদিনের কর্মজীবন শেষ করে গুণী শিক্ষক ও একজন অফিস সহকারী অবসরে গেছেন। তাই প্রিয় শিক্ষকদের বিদায় জানাতে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এসব আয়োজন করেন।

ফরিদপুরে চোর সন্দেহে আড়ায় ঝুলিয়ে যুবককে পিটুনি, গ্রেপ্তার-৩

নুর ইসলাম, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৫ আগস্ট, ২০২৫, ৭:৫৮ পিএম
ফরিদপুরে চোর সন্দেহে আড়ায় ঝুলিয়ে যুবককে পিটুনি, গ্রেপ্তার-৩

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে গত ১২ আগস্ট চোর সন্দেহে এক যুবককে ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে পিটুনির ঘটনায় স্থানীয় থানায় মামলা হয়েছে। মামলার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে শুক্রবার ফরিদপুর আদালতে পাঠিয়েছে।

শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সকালে স্থানীয় থানায় মামলাটি দায়ের করেন চোর সন্ধেহে পিটুনি দেওয়া যুবক আহাদ শিকদার (৩০)। তাকে ঝুলিয়ে পিটুনির ঘটনার একটি ভিডিও বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

থানা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত ১২ আগস্ট চোর সন্দেহে বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের ডোবরা গ্রামের সালাম সিকদারের ছেলে আহাদ সিকদারকে (৩০) আড়ার সাথে ঝুলিয়ে পিটুনি দেয় স্থানীয়রা। এর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় বিভিন্ন আলোচনা ও উত্তেজনা শুরু হয়। পরে শুক্রবার দুপুরে আহাদ শিকদার বাদি হয়ে বোয়ালমারী থানায় ১২জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ১০-১২জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলার পর আসামি সাদ্দাম শেখ (৩০), সুৃরুজ শেখ (২১) ও ইসমাইল শেখকে (২১) গ্রেপ্তার আদালতে পাঠায় পুলিশ। এ মামলায় উপজেলা যুবদলের সদস্য কালাম শেখের নামও আসামির তালিকায় রয়েছে বলে জানা গেছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বোয়ালমারী থানার উপপরিদর্শক শিমুল মোল্যা বলেন, আসামি সাদ্দাম ও সুরুজ দুই ভাইকে ডোবরা গ্রামের বাড়ি থেকে আর ইসমাইল শেখকে ডোবরা জনতা জুটমিল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইসমাইল শেখ আলফাডাঙ্গা উপজেলার পাচুড়িয়া ইউনিয়নের যোগিবরাট গ্রামের ওসমান শেখের ছেলে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান বলেন, আহাদ সিকদার থানায় হাজির হয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়। তিনি একজন পেশাদার চোর। তার বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা রয়েছে। তবে সে চোর হোক আর যাই হোক তাকে তো অমানবিকভাবে পিটানো যাবেনা। তার জন্য আইন-আদালত আছে। এ ঘটনায় তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

‘ফরিদপুরে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি আওয়ামী লীগ রক্ষা করতে পারে নাই’  –ফরিদপুরে রাশেদ খাঁন

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৫, ৭:২৪ পিএম
‘ফরিদপুরে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি আওয়ামী লীগ রক্ষা করতে পারে নাই’    –ফরিদপুরে রাশেদ খাঁন

গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে গত এক বছরে কোন পরিবর্তন হয়নি উল্লেখ করে বলেছেন, ‘যার নিজেরই স্বাস্থের ঠিক নাই, যিনি ক্যানসারের রোগী এবং বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী। তাকে বানানো হয়েছে ডাক্তার, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ। যার যেখানে অভিজ্ঞতা, তাকে সেখানে দায়িত্ব দেওয়া উচিত ছিল। তাহলে আমরা গত এক বছরে অনেক সংস্কার দেখতে পেতাম। ড. মুহাম্মদ ইউনুসের  স্বজনপ্রীতির উদাহরণ স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। আজকে শিক্ষাখাত ও চিকিৎসা খাতে সরকারের কি ভূমিকা? এই ফরিদপুর মেডিক্যালে আগেও যা ছিল, এখনো সেই অবস্থায় চলছে। কোন পরিবর্তন হয়নি।’

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ‌দুপুর দেড়টার দিকে‌ ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সাংবাদিক লিয়াকত হোসেন মিলনায়তনে ‌‌জেলা গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় ‌তিনি এসব কথা বলেন।

রাশেদ খাঁন বলেন, ‘ফরিদপুরে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি আওয়ামী লীগ রক্ষা করতে পারে নাই। জুলাই-আগস্টে ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে বিএনপি, জামায়াত, গণঅধিকার পরিষদসহ সবাই মিলে এক সঙ্গে লড়াই করেছি। সেইদিন ফরিদপুরের মানুষ ঝাঁকে ঝাঁকে রাস্তায় নেমেছিল, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের গুন্ডাদের ঝাঁটা দিয়ে বিতাড়িত করেছিল। তার ফল হিসেবে আমরা পেয়েছি একটি গণঅভ্যুত্থান।’

তিনি গত সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘ফরিদপুর আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হলেও শেখ হাসিনা এখানে উন্নয়ন করেনি, উন্নয়ন হয়েছে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের ক্যাডারদের। উন্নয়ন হয়েছে তাঁর বিয়াই সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের। সাধারণ মানুষের কোন উন্নয়ন হয়নি। উন্নয়ন কি করেছিলেন তা ফরিদপুর-ভাঙ্গা ৩২ কিলোমিটার খানাখন্দে ভরা মহাসড়ক দেখলে বোঝা যায়।’

রাশেদ খাঁন অন্তবর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের সমালোচনা করে বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের পর বর্তমান সরকারের উপদেষ্টাদের কাছে আমাদের অনেক আশা ছিল। উপদেষ্টারা তাদের সম্পদের হিসাব দিতে চেয়েছিল, সেটা জনসম্মুখে দেয় নাই। সরকারের এক বছরে দেশে কোন রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন হয় নাই, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব বন্ধ হয় নাই, দৃশ্যমান কোন সংস্কার হয় নাই।’

তিনি বলেন, আমরা গত এক বছর ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সমালোচনা করি নাই। তিনি ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা বন্দোবস্ত টিকিয়ে রেখে কার্যক্রম চালাচ্ছেন। পুলিশে আওয়ামী লীগ, বিভিন্ন দপ্তরে-সেক্টরে আওয়ামী লীগ। সুবিধাভোগী আওয়ামী লীগকেই বহাল তবিয়তে রাখা হয়েছে। এর জন্য কি আমরা সংগ্রাম করেছি, এ জন্য কি ছাত্র-জনতা রক্ত দিয়েছে?

রাশেদ খান ড. মুহাম্মদ ইউনুসের স্বজনপ্রীতির কথা উল্লেখ করে বলেন, তাঁর স্বজনপ্রীতির উদাহরণ স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। যার নিজেরই স্বাস্থের ঠিক নাই, যিনি ক্যানসারের রোগি এবং বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী। তাকে বানানো হয়েছে ডাক্তার, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ। যার যেখানে অভিজ্ঞতা, তাকে সেখানে দায়িত্ব দেওয়া উচিত ছিল (বিষয়টি হাসানত আব্দুল্লাহ বলেছিল)। তাহলে আমরা গত এক বছরে অনেক সংস্কার দেখতে পেতাম। আজকে শিক্ষাখাত ও চিকিৎসা খাতে সরকারের কি ভূমিকা? এই ফরিদপুর মেডিক্যালে আগেও যা ছিল, এখনো সেই অবস্থায় চলছে। কোন পরিবর্তন হয়নি।

তিনি আরও বলেন, পৌরসভা দুর্নীতি বন্ধ হয়েছে? থানায় দুর্নীতি বন্ধ হয়েছে? কোন সেক্টরেই ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধ হয় নাই। তাহলে কি সংস্কার হলো, মুলা ঝুলিয়ে দিয়েছে। ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সরকার অভ্যুত্থানে যারা সংগ্রাম করেছে, রক্ত দিয়েছে তাদেরকে মুলা ঝুলিয়ে দিয়েছে।

তিনি বলেন, এখন যারা বলতেছেন, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের আগে নির্বাচন নয়; ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নয়। নির্বাচন না দিয়ে সরকার কি করবে? এই সরকারের কি ক্ষমতা ধরে রাখার সক্ষমতা আছে, নাই। এই জন্যই আগামী ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন হবে।

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ছাত্র সমন্বয়কদের সমালোচনা করে বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতাদের সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এরপরে সেই ছাত্র প্রতিনিধিরা চাঁদাবাজি ও ট্রেন্ডারবাজিসহ দুর্নীতিতে জড়িত হয়ে পড়লো। এর দায় কার? এর দায় উপদেষ্টা পরিষদের, এর দায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের। কারণ তিনি কখনোই বলেন নাই; তোমার দেশের গর্ব, তোমরা আমাদের গণঅভ্যুত্থান এনে দিয়েছো। তোমরা এখন ক্লাসে ফিরে যাও। তা না করে তিনি ছাত্রদের দল করার পরামর্শ দিয়ে মাথায় তুলেছেন।

তিনি বলেন, ডিসি-এসপি-রা সমন্বয়কদের নাম শুনলে, তাদেরকে (ছাত্রদের) আসেন আসেন ডেকে নিয়ে পাশের চেয়ারে বসিয়েছেন। পারলে সমন্বয়কদের খুুঁশি করতে নিজের চেয়ারটা ছেড়ে দিতে পারলে বাঁচে। এইভাবে অতি ভক্তি, তেলামি করে ছাত্রদের বিভ্রান্তিতে ফেলানো হয়েছে। আমি সকল ছাত্রদের কথা বলছি না, যারা করেছে, তাদের বলছি। আজকে ছাত্ররা ডিসি অফিস ও এসপি অফিসে গিয়ে তারা খবরদারি করছে। আমরা গণঅভ্যুত্থানের পর দেশে এইটা আশা করিনি। দেশে যা শুরু হয়েছে, এভাবে দেশ চলতে পারে না। তিনি সর্বশষে ১৪ দলের সহযোগী জাতীয় পার্টির জি.এম কাদের ও চুন্নুর গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

গণ অধিকার পরিষদের ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি ‌মো. ফরহাদ হোসেনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ‌ফরিদপুর জেলা গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. ফরহাদ মিয়া, বোয়ালমারী উপজেলা সভাপতি‌ লাবলু শরীফ, ফরিদপুর সদর উপজেলা সভাপতি রাজু আহমেদ, ভাঙ্গা উপজেলার আহ্বায়ক আনিসুর রহমান, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি ‌হৃদয় আহমেদ, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি সাইদুর রহমান, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি ‌জুয়েল ভান্ডারী ও সালথা উপজেলা সভাপতি ‌ফারুক ফকির প্রমুখ।

মতবিনিময় সভায় জেলার নেতৃবৃন্দ রাশেদ খাঁনের মাধ্যমে ফরিদপুর নামেই বিভাগ ঘোষণা করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।