খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১০ পৌষ, ১৪৩২

ফরিদপুরে উৎসবমুখর পরিবেশে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বড়দিন উদযাপন

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১:৫১ পিএম
ফরিদপুরে উৎসবমুখর পরিবেশে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বড়দিন উদযাপন

ফরিদপুরে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বড়দিন যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হচ্ছে। যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন চার্চে নেওয়া হয়েছে দিনব্যাপী বিশেষ কর্মসূচি। শীতের কনকনে ঠান্ডা উপেক্ষা করে সকাল থেকেই চার্চগুলোতে ভিড় জমাতে দেখা যায় খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ ও শিশুদের।

বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে ফরিদপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চ মিশনে প্রধান উপাসনার মধ্য দিয়ে বড়দিনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।

সকাল ৯টা থেকে অনুষ্ঠিত উপাসনায় যিশু খ্রিস্টের জীবন, ত্যাগ ও মানবপ্রেমের বাণী তুলে ধরা হয়। প্রার্থনা শেষে আয়োজন করা হয় সম্মিলিত প্রীতিভোজ। এ সময় ধর্মপ্রাণ মানুষ একে অপরের সঙ্গে শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা বিনিময় করেন। পাশাপাশি পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের নিয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করতে দেখা যায় সবাইকে।

এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় বড়দিন উপলক্ষে চার্চ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় নানা আয়োজন। ধর্মীয় আলোচনা ও প্রার্থনার পাশাপাশি শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও কেক কাটার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল শান্তা ক্লজের উপস্থিতি। শান্তা ক্লজ শিশুদের মধ্যে উপহার সামগ্রী বিতরণ করলে শিশুদের মুখে আনন্দের ঝিলিক ফুটে ওঠে। গান, নাচ ও অভিনয়ের মাধ্যমে বড়দিনের আনন্দ আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।

চার্চ সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুর জেলায় মোট সাতটি চার্চে বড়দিনের উৎসব একযোগে পালিত হচ্ছে। প্রতিটি চার্চেই স্থানীয় খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সদস্যদের সক্রিয় অংশগ্রহণে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এদিকে বড়দিন উপলক্ষে আগামী কয়েকদিন পরবর্তীতে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। এসব আয়োজনের মাধ্যমে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্ম ও শ্রেণিপেশার মানুষের অংশগ্রহণে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হয়েছে।

সার্বিকভাবে ফরিদপুরে বড়দিন উদযাপন পরিণত হয়েছে ধর্মীয় বিশ্বাস, আনন্দ ও মানবিকতার এক মিলনমেলায়।

ক্ষমতার পালাবদলে দল বদল : সালথায় আ.লীগ ছাড়লেন দুই নেতা

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৮:০৬ পিএম
ক্ষমতার পালাবদলে দল বদল : সালথায় আ.লীগ ছাড়লেন দুই নেতা

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আ.লীগের দুই নেতা দলীয় পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে সালথা উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের ফুকরা গ্রামে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে তারা তাদের সিদ্ধান্তের কথা জানান।

পদত্যাগকারী নেতারা হলেন— সালথা উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফজলু মাতুব্বর এবং আওয়ামী লীগের সোনাপুর ইউনিয়ন কমিটির সদস্য জালাল মোল্লা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ফজলু মাতুব্বর বলেন, “আওয়ামী লীগে আমার যে পদ ছিল, আজ থেকে তা থেকে পদত্যাগ করলাম। ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকব না। আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর আদর্শ ধারণ করে রাজনীতি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

অপরদিকে জালাল মোল্লা বলেন, “আমি মূলত মহল্লাভিত্তিক রাজনীতি করি। আওয়ামী লীগের কোনো পদে আমি আছি কিনা তা পরিষ্কারভাবে জানা ছিল না। তবে শুনেছি ইউনিয়ন কমিটিতে আমাকে সাধারণ সদস্য করা হয়েছে। আজ থেকে আওয়ামী লীগের সব পদ থেকে আমি পদত্যাগ করলাম। ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকব না। বিএনপির আদর্শ আমাকে মুগ্ধ করেছে, তাই আমি বিএনপির রাজনীতি করতে ইচ্ছুক।”

তিনি আরও জানান, এদিন আনুষ্ঠানিকভাবে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতির হাত ধরে বিএনপিতে যোগদান করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- সোনাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাওলানা আজিজুল হক, বিএনপির সাবেক নেতা তারা মিয়া, যুবদল নেতা লিয়াকত হোসেন, শহিদুল ইসলাম, সাব্বির হোসেনসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা।

ফরিদপুর মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কয়েদীর মৃত্যু, ময়নাতদন্তের প্রস্তুতি

পান্না বালা, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৫:৪৩ পিএম
ফরিদপুর মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কয়েদীর মৃত্যু, ময়নাতদন্তের প্রস্তুতি

ফরিদপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক কয়েদীর মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে তিনি মারা যান।

মৃত কয়েদীর নাম বিমল কুমার দাস (৬২)। তাঁর কয়েদী নম্বর ২৫২৫। তিনি মাদারীপুর সদর উপজেলার কদমতলী আমিরাবাদ গ্রামের গৌরাঙ্গ চন্দ্র দাসের ছেলে।

কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মাদারীপুর কারাগারে থাকা অবস্থায় তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে মাদারীপুর কারাগার থেকে ফরিদপুর কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। ফরিদপুরে পৌঁছানোর পরপরই তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে ভর্তি করা হয়।

ফরিদপুর কোতয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম জানান, মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে লাশের সুরতহাল সম্পন্ন করা হয়েছে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে তিনি জানান।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুর জেলা কারাগারের জেল সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, নিহত বিমল কুমার দাস একটি চেক ডিজঅনার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাভোগ করছিলেন। তিনি ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। অসুস্থতার কারণে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে রাখা হয়েছিল।

তিনি আরও জানান, শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে ময়নাতদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মরদেহটি নিহতের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

এ ঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।

স্মৃতি আবেগ আর মিলনে রঙিন ফরিদপুর জিলা স্কুলের ১৮৫ বছর পুনর্মিলনী উৎসব

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২:১২ পিএম
স্মৃতি আবেগ আর মিলনে রঙিন ফরিদপুর জিলা স্কুলের ১৮৫ বছর পুনর্মিলনী উৎসব

উৎসাহ-উদ্দীপনা, স্মৃতিচারণা আর আবেগঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে ফরিদপুর জিলা স্কুলের ১৮৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী পুনর্মিলনী উৎসব শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ও আগামীকাল শুক্রবার (দুই দিন) নানা আয়োজনের মাধ্যমে এই ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গৌরবময় পথচলা উদযাপন করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে ফরিদপুর জিলা স্কুল প্রাঙ্গণে নবীন ও প্রবীণ শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা বসে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সাবেক শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষাজীবনের স্মৃতি রোমন্থন করেন। বহুদিন পর পুরনো সহপাঠীদের সঙ্গে দেখা হওয়ায় অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। ১৯৬২ সালের এক সাবেক শিক্ষার্থী জানান, তার অনেক সমবয়সী বন্ধু আজ আর বেঁচে নেই, তবুও স্কুলের প্রতি ভালোবাসার টানেই তিনি এই পুনর্মিলনীতে অংশ নিতে এসেছেন।

অনুষ্ঠানের সূচনা হয় পবিত্র ধর্মীয় গ্রন্থ থেকে পাঠের মাধ্যমে। এরপর এসেম্বলি, জাতীয় সংগীত পরিবেশনা, জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে বেলুন, ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করা হয়।

আয়োজিত অনুষ্ঠানে আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও বিশিষ্ট চিকিৎসক মোস্তাফিজুর রহমান শামীমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ কামরুল হাসান মোল্যা। বিশেষ অতিথি ছিলেন- ফরিদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. নজরুল ইসলাম।

এছাড়া বক্তব্য দেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা প্রীতিলতা সরকার এবং আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব ওয়াহিদ মিয়া কুটি।

বক্তারা বলেন, ফরিদপুর জিলা স্কুল শুধু একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, এটি এ অঞ্চলের শিক্ষা ও সংস্কৃতির বাতিঘর। এখান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে অসংখ্য গুণীজন দেশ ও সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

অনুষ্ঠান শেষে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। সংবাদ লেখা পর্যন্ত উৎসব চলমান ছিল। আয়োজক কমিটি জানায়, পরবর্তী পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্মৃতিচারণ, বিনোদনমূলক আয়োজন ও আতশবাজি অনুষ্ঠিত হবে। সন্ধ্যায় স্কুলের ইতিহাস ও ঐতিহ্য তুলে ধরে আলোচনা সভা এবং রাতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন রাখা হয়েছে।

পুরনো স্মৃতি আর নতুন প্রজন্মের স্বপ্ন—সব মিলিয়ে ফরিদপুর জিলা স্কুলের ১৮৫ বছরের এই পুনর্মিলনী উৎসব পরিণত হয়েছে এক আবেগঘন ও আনন্দঘন