খুঁজুন
রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৫, ১৭ কার্তিক, ১৪৩২

ফরিদপুরে কৃষকের বরাদ্দের সার বিক্রির চেষ্টা, সার ফেলে পালালেন চেয়ারম্যানের সহযোগী

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫, ১০:৩৫ এএম
ফরিদপুরে কৃষকের বরাদ্দের সার বিক্রির চেষ্টা, সার ফেলে পালালেন চেয়ারম্যানের সহযোগী
ফরিদপুরে বিনামূল্যে কৃষকদের মাঝে বরাদ্দকৃত সরকারী সার বিক্রির চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। এ সময় স্থানীয়রা হাতেনাতে আটক করলে চেয়াম্যানের এক সহযোগী ও ভ্যান চালক সার ফেলে পালিয়ে যান। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ও কৃষি কর্মকর্তারা এসে ঘটনাস্থল থেকে ৩ বস্তা ইউরিয়া সার ও ৩ বস্তা ডিএপি সার জব্দ করে নিয়ে যায়।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) দুপুর ৩ টার দিকে ফরিদপুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের কানাইপুর বাজারের খুচরা সার বিক্রেতা মনোরমা এন্টারপ্রাইজের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ওই দোকানে সারগুলো বিক্রির চেষ্টা করা হয়েছিলো।
স্থানীয় বাবু সরদার নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ইউনুস নামে এক ব্যক্তি একটি ভ্যানে করে সারগুলো নিয়ে আসেন এবং মনোরমা এন্টারপ্রাইজের সন্টুর দোকানে বিক্রির চেষ্টা করেন। এ সময় দোকানদার সার ক্রয় করতে অস্বীকার করলে আমি গিয়ে দেখি সরকারী সার। এ সময় ইউনুস দৌড়ে পালিয়ে যায়। এই ইউনুসকে চেয়ারম্যানের ডানহাত হিসেবে সবাই চিনে। তার মাধ্যমে চেয়ারম্যান সার বিক্রি করছিল। পরে আমি পুলিশকে খবর দেই। পরে পুলিশ ও কৃষি কর্মকর্তারা সার নিয়ে যান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সম্প্রতি জেলা পাট অধিদপ্তর কর্তৃক প্রতিটি ইউনিয়নে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার বরাদ্দ দেয়া হয়। এর মধ্যে কানাইপুর ইউনিয়নে ২৪০ জন কৃষকের মাঝে বিতরণের তালিকা করা হয়। সম্প্রতি বরাদ্দকৃত সার ইউনিয়ন পরিষদে পাঠানো হয়। তবে এসব সার বিতরণ করা হয়েছে কি-না সে বিষয়ে কিছুই জানেননা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা লতিফা আক্তার।
এসব সার বিতরণের দায়িত্বরত কর্মকর্তা জেলা পাট অধিদপ্তরের উপ-সহকারী পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম দাবি করেন, গত ৬ এপ্রিল কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ২৪০ জনের মধ্যে ২০০ জনের মাঝে সার বিতরণ করা হয়েছে। প্রত্যেক কৃষকের মাঝে ৬ কেজি ইউরিয়া, ৩ টিএসপি, ৩ কেজি ডিএপি সার বিতরণ করা হয়। এছাড়া বাকি ৪০ জন কৃষক না আসায় সারগুলো পরিষদে রাখা হয়। পরবর্তীতে সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করার কথা রয়েছে। তবে এই সার বিক্রি করতে গিয়েছিল কিনা আমি সঠিক জানি না, তবে শুনেছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ মো. আলতাভ হুসাইন বলেন, আজ বন্ধের দিন থাকায় বলা যাচ্ছে না, আমার পরিষদের সার কি-না। কারণ, চাবি রয়েছে সচিবের কাছে। পরিষদ খুললে গুডাউন দেখে বলতে পারব।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত জাহান জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে কৃষি কর্মকর্তা ও প্রশাসনকে পাঠানো হয়েছে এবং সারগুলো জব্দ করে নিয়ে আসা হয়েছে। তদন্ত করে দেখা হবে এবং পরবর্তীতে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিরল রোগে আক্রান্ত ফরিদপুরের নাঈম, টাকার অভাবে বন্ধ চিকিৎসা!

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৫, ৩:৪৪ পিএম
বিরল রোগে আক্রান্ত ফরিদপুরের নাঈম, টাকার অভাবে বন্ধ চিকিৎসা!

আমরা সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন করলেও আমাদের কারো কারো জীবন নিয়ে অভিযোগের শেষ থাকে না। কিন্তু জন্ম থেকে বিরল চর্ম রোগে (lamellar Ichthyosis) আক্রান্ত হয়ে মারাত্মক শারারিক কষ্টে থেকেও জীবন নিয়ে কোন অভিযোগ নেই আবির হুসাইন নাঈমের। দুঃসহ যন্ত্রণা আর অসুস্থতার মধ্য দিয়েও নিজেকে গড়ে তুলছেন নাঈম।

তিনি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার আলফাডাঙ্গা সদর ইউনিয়নের শুকুরহাটা গ্রামে হাবিবুর রহমান ও রাবেয়া বেগম দম্পত্তির বড় ছেলে। তার বর্তমান বয়স ১৬ বছর। তার ৬ বছরের ছোট ভাই নূর হোসেনেরও একই অবস্থা।

আলফাডাঙ্গা সদর ইউনিয়নের শুকুরহাটা গ্রামের বিস্ময় বালক আবির হুসাইন নাঈমকে শারীরিক অসুস্থতা দমিয়ে রাখতে পারেনি। জীবনের সাথে যুদ্ধ করে চলছে লেখাপড়াও। তিনি এখন ২৭ পাড়া কুরআনের হাফেজ। আগামী বছরের মধ্যে পূর্ণ ৩০ পাড়ার হাফেজ হবেন বলে আশা তার শিক্ষকের।

নাঈম ইছাপাশা কাদিরিয়া হাফিজিয়া নূরানী মাদ্রাসা ও এতিমখানা হেফজ বিভাগের ছাত্র। স্কুলে পঞ্চম শ্রেনিতে জিপিএ ৫ ও বৃত্তি পেয়েছিল সে।

নাঈম বলেন, ‘শরীরে অনেক কষ্ট, ঠিক মতো হাঁটতে পারিনা। চোখে সব সময় পানি পড়ে। রাতে ঘুমাতে পাড়ি না। আগে চিকিৎসা চললেও এখন টাকার অভাবে চিকিৎসা বন্ধ। মা-বাবা অনেক চেষ্টা করেছে। তাদের আর কষ্ট দিতে চাই না বলে কোন কষ্টের কথা কারো কাছে বলি না। আমারও মন চায় সুস্থ হতে অন্যদের মতো সুস্থ ভাবে চলাফেরা করতে। তারপরও জীবন নিয়ে কোন অভিযোগ নেই আমার। আল্লাহর উপর বিশ্বাস রেখে বলেন , তিনি যা ভালো মনে করেছেন আমি তেমন আছি।’

নাঈমের চোখ, মুখ, হাত, পা, নখসহ পুরো শরীরের সমস্থ জায়গায় ফেঁটে গিয়ে রক্তাক্ত হয়ে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। দিনে ৩/৪ বার গোসল করতে হয়। ঘন্টায় ঘন্টায় শরীরে পানি ঢালতে হয় শরীর ভিজিয়ে রাখতে। বেশির ভাগ সময়ই হাত-পা কুঁকড়ে ধরে আসে তার।

চিকিৎসার অভাবে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে ধুকছে দুই ভাই। চিকিৎসা নিতে যেতে হবে ভারতে অথবা উন্নত কোন দেশে, অর্থ সংকটে তা আর হয়ে উঠেনি। চা দোকানি বাবার পক্ষে দুই সন্তানের সুচিকিৎসা করানো দুঃসাধ্য।

শুকুরহাটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনুপ কুমার সরকার বলেন, চা বিক্রেতা হাবিব ভাইয়ের বড় ছেলে আবির হুসাইন আমাদের স্কুলে পড়ালেখা করতো। সে অনেক মেধাবী একজন শিক্ষার্থী। প্রাথমিক সমাপনী পরিক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছিল। ছোট ছেলেকে সবাই ভয় পায়, তার সাথে কেউ মিশতে চায় না বলে নূর
হোসেনকে স্কুলে ভর্তি করাতে পারছে না। এলাকার কোনো বাচ্চা এদের সাথে ভয়ে খেলাধুলা করতে চায় না।

ইছাপাশা কাদিরিয়া হাফিজিয়া নূরানী মাদ্রাসা ও এতিমখানার মহতামিম মুফতি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমাদের এখানে প্রথম যখন আবির হুসাইন ভর্তি হয় তখন অনেকেই তাকে এড়িয়ে চলতো। এখন সে সমস্যা কমে গেছে সবাই স্বাভাবিকভাবে মেনে নিয়েছে। ছাত্র হিসেবে সে অনেক মেধাবী। কারো সাথে কখনো ঝগড়া করে না।

তিনি বলেন, নাঈমের ২৭ পারা কুরআন মুখস্ত হয়ে গেছে। আগামী বছর আল্লাহর রহমতে হাফেজ হয়ে যাবে। তার এখন ভালো চিকিৎসা দরকার। সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের উচিৎ এদের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতা করা।

বাবা হাবিবুর রহমান জানান, দুই সন্তানকে চিকিৎসা করাতে সহায় সম্বল সব ফুরিয়েছি। এখন বাস করা ভিটাটুকু ছাড়া অবশিষ্ট কিছু নেই। চায়ের দোকানের পাশাপাশি ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ করি। ছেলে দুটি বড় হচ্ছে আমার মধ্যে চিন্তা ততই বেড়ে চলছে। কয়েক মাস হলো তাদের চিকিৎসা একেবারেই বন্ধ রয়েছে।

মা রাবেয়া বেগম জানান, স্বাভাবিক জন্ম নেওয়ার পাঁচ মিনিট পর থেকে শিশুদের গায়ের রং কালো হয়ে যায়। এরপর এভাবেই শরীরের কষ্ট নিয়ে আমার সন্তান দুটি বড় হচ্ছে। শরীরের কষ্ট হলেও নাঈম সবার সাথে মিলেমিশে চলছে। ছোট ছেলে নূর হোসেনের সাথে তার সমবয়সীরা খেলাখুলা করতে চায় না। তার সবসময় মন খারাপ থাকে। মা হিসেবে মেনে নিতে পারি না। দুই সন্তানকে সুস্থ ও স্বাভাবিক ভাবে ফিরিয়ে আনতে দেশের সরকার ও সমাজের সহৃদয় বিত্তবানদের কাছে সাহায্য কামনা করি। চিকিৎসা করলে ওরা একটু ভালো থাকতে পারবে।

সাহায্য পাঠানো যাবে, মো.হাবিবুর রহমান, হিসাব নম্বর: ২৮০১৯২২৯৬৮০০১, সিটি ব্যাংক লিমিটেড, আলফাডাঙ্গা শাখা, ফরিদপুর। এবং বিকাশ ও নগদ ০১৯২৩৫২৯৯৩২ (ব্যক্তিগত)।

ফরিদপুরের পদ্মা নদীতে নিখোঁজের ২৩ ঘন্টা পরেও উদ্ধার হয়নি শিশু খাদিজা

মুস্তাফিজুর রহমান শিমুল, চরভদ্রাসন:
প্রকাশিত: রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৫, ২:২৯ পিএম
ফরিদপুরের পদ্মা নদীতে নিখোঁজের ২৩ ঘন্টা পরেও উদ্ধার হয়নি শিশু খাদিজা

ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে শনিবার (০১ নভেম্বর) নিখোঁজ হওয়ার ২৩ ঘন্টা পার হলেও আজ রবিবার (০২ নভেম্বর) এখনও উদ্ধার হয়নি ১৫ মাস বয়সী শিশু খাদিজা। খাদিজা চরভদ্রাসন উপজেলার সদর ইউনিয়নের হাজীডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা শাকিল সিকদারের ছোট মেয়ে। এক ভাই এক বোনের মধ্যে খাদিজা ছোট।

খাদিজার বাবা শাকিল সিকদার জানায়, ‘শুক্রবার দুপুর ১ টার দিকে খাওয়া দাওয়া শেষ করে ঘরে বিশ্রাম করতে যেয়ে ঘুমিয়ে পরেন তিনি। এসময় খাদিজা তার পাশেই ছিল। কিছু সময় পর উঠে দেখেন খাদিজা তার পাশে নেই। স্থানীয়দের কাছে জানতে পারেন খাদিজাকে নদী পাড়ে খেলা করতে দেখেছেন তারা। পরে পরিবারের সদস্যরা নদীতে জাল ফেলে অনেক খোঁজ করেও মেয়েটির সন্ধান পাননি। খাদিজাদের বাড়ি নদীর তীরে হওয়ায় সুযোগ পেলেই নদীর পাড়ে চলে আসত সে।

খবর পেয়ে চরভদ্রাসন ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে যায় এবং শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত নদীতে শিশুটির খোঁজ করেন। পরেরদিন রবিবার (০২ নভেম্বর) সকালে ফরিদপুর শহর থেকে চার সদস্যের একটি ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে এসে বেলা বারোটা পর্যন্ত উদ্ধার কাজ পরিচালনা করে শিশুটির কোন সন্ধান পাননি।

শিশু খাদিজাকে উদ্ধারের বিষয়ে চরভদ্রাসন ফায়ার সার্ভিসের ষ্টেশন অফিসার মুর্তজা ফকির বলেন, শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য তারা কাজ করে যাচ্ছেন। সকালে ডুবুরি দল কাজ করে শিশুটির কোন সন্ধান পাননি। চব্বিশ ঘন্টা পরে শিশুটি ভেসে উাঠার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

রবিবার বিকেল পর্যন্ত পদ্মা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে নৌকা নিয়ে শিশুটির সন্ধান করবেন বলে জানান চরভদ্রাসন ফায়ার সার্ভিস।

ফরিদপুরে নির্মাণাধীন ব্রিজ থেকে পড়ে শ্রমিক নিহত

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৫, ১০:১৫ এএম
ফরিদপুরে নির্মাণাধীন ব্রিজ থেকে পড়ে শ্রমিক নিহত

ফরিদপুরে নির্মাণাধীন একটি ব্রিজ থেকে পড়ে জহুরুল ইসলাম (৩২) নামে এক শ্রমিক নিহতের ঘটনা ঘটেছে।

শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে ফরিদপুর শহরতলীর ভাজনডাঙ্গা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।


নিহত জহুরুল ইসলাম নওগাঁ জেলার ভীমপুর গ্রামের বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিনের ছেলে।


জানা যায়, ফরিদপুর শহরতলীর ভাজনডাঙ্গা এলাকায় পদ্মা নদীর ধারায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে একটি সেতু নির্মাণের কাজে নিয়োজিত ছিলেন নির্মাণ শ্রমিক জহুরুল ইসলাম। নির্মাণ কাজ করার সময় অসাবধানতাবশত তিনি নির্মাণাধীন সেতু থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন।


এ সময় সেখানে থাকা অপর শ্রমিকরা তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরিদপুর কোতয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আব্দুল্লাহ বিশ্বাস জানান, এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।