ফরিদপুরে গভীর রাতে যৌথবাহিনীর অভিযানে ৪ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার

খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, চিকিৎসা বঞ্চিত রোগীরা। বহিরাগত স্বাস্থ্য সহকারী দিয়ে চলছে জরুরী বিভাগের চিকিৎসা সেবা। বিভিন্ন অনিয়মে জর্জরিত হাসপাতালে কোনভাবেই ফিরছে না শৃঙ্খলা। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত, গর্ভবতী নারী শিশুসহ বিভিন্ন ধরনের মুমূর্ষু রোগী জরুরী সেবা নিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলেও মিলছে দায়সারা চিকিৎসা সেবা। এমনকি বহিরাগত লোক দিয়ে জরুরী বিভাগে চিকিৎসা দেওয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
উপজেলার শশা গ্রাম থেকে জাহিদ হাসান নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করে জানান , আমার ছেলে জুনায়েদ (৬ মাস) জ্বরে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হলে ২৩ জুলাই রাত ১০ টার দিকে আমার স্ত্রী নগরকান্দা হাসপাতালে নিয়ে যায়। জরুরী বিভাগে তখন কোন চিকিৎসক ছিলো না। একটা ছেলে বসা ছিলো সে চিকিৎসক নয় তারপরও ওষুধ লিখে দেয়েছে।
জানা গেছে, চিকিৎসক সংকটের কারণে মুখ থুবড়ে পড়েছে হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা। সেই সুযোগে ঘোলাটে পরিবেশে দায়সারা চিকিৎসা দিচ্ছেন চিকিৎসকগণ। বহিরাগত দুই জন স্বাস্থ্য সহকারীই চালাচ্ছে হাসপাতালের জরুরী বিভাগ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, বহিরাগত দুই জন স্বাস্থ্য সহকারী জরুরী বিভাগে সব সময় ফ্রি সার্ভিস দিচ্ছে। তবে ফ্রি সার্ভিসের আড়ালে তারা জরুরী বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের প্রাইভেট হাসপাতালে রেফার্ড করে।
এবিষয়ে আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার অভিজিৎ সাহা জানান, সালাউদ্দিন নামে একটি ছেলে জরুরী বিভাগে ডিউটিতে থাকে , সে মূলত চিকিৎসকের সহযোগী হিসেবে কাজ করে। কোন রোগী আসলে তার চিকিৎসা দেওয়ার কথা নয়, ডিউটিরত চিকিৎসককে ডেকে দেওয়ার কথা।
নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জয়দেব কুমার সরকার জানান, তারা (বহিরাগত স্বাস্থ্য সহকারী) চিকিৎসকদের সহযোগিতা করার জন্য থাকে, তবে তাদের চিকিৎসা দেওয়ার কথা নয়। তিনি আরোও বলেন, চিকিৎসক সংকটের কারণে এমন সমস্যা হচ্ছে।
এদিকে নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. দবির উদ্দিন জানান, ইতোমধ্যে এক ভুক্তভোগী আমার নিকট অভিযোগ করেছে। আমি হাসপাতাল প্রশাসনের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
ফরিদপুর সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান জানান, এমন কোন ঘটনা ঘটে থাকলে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এমন মেঘলা আকাশ আমি বহুবার দেখেছি। ছায়া ঘেরা, রঙহীন, নিঃশব্দ—যেন নিজের মধ্যে ডুবে থাকা কোনো বিষণ্ণ মানুষ। জানি না কেন, যখনই এমন আকাশ দেখি, মনে হয় ওটা আমারই প্রতিচ্ছবি। আমি যেমন হাসি লুকিয়ে রাখি মনের অন্ধকারে, তেমনি সে আকাশও সূর্যকে ঢেকে রাখে বুকের গোপন কষ্টে। যেন আমরা দুজন—আমি আর মেঘলা আকাশ—একই রকমের নিরবতা নিয়ে বেঁচে আছি।
ছোটবেলাতেই মেঘলাকে আপন করে নিয়েছিলাম। কারণ আমি কখনোই রঙিন সকাল কিংবা রৌদ্রোজ্জ্বল দুপুরের মানুষ ছিলাম না। আমার ভেতরেও বরাবরই একটা ঘন সাদা-কালো ভাব, যেটা বৃষ্টি নামার আগে আকাশে দেখা যায়। আশেপাশের মানুষজন যখন ঝলমলে দিনকে ভালোবেসে গান গায়, তখন আমি একা বসে থাকি জানালার ধারে—মেঘের দিকে তাকিয়ে। মেঘের মধ্যে কী আছে, জানি না। শুধু জানি, ওখানে কোথাও আমার মন লুকিয়ে আছে।
প্রতিবারই মনে হয়, আজ হয়তো আকাশ কেঁদে ফেলবে। আমিও তো কেঁদে ফেলতে চাই—অকারণে, অজুহাতহীন, শব্দহীন এক কান্না। কিন্তু পারি না। কারণ আমাকে শক্ত থাকতে হয়। আমার কান্না কেউ বোঝে না, কেউ দেখতে চায় না। তাই হয়তো আকাশও নিজেকে ধরে রাখে। তার বুকভরা জলের ভার, আর আমার বুকভরা হাহাকার—দুটোই যেন জমে থাকে এক জায়গায়, ফেটে না পড়ে কোনোদিন।
মেঘলা আকাশ এক রকমের প্রতারণাও করে। সে বলে, “আমি আসছি, তোমার মন ভালো করতে।” কিন্তু শেষে করে কী? আলো ঢেকে দেয়, বাতাস ভারি করে তোলে, চারপাশে এক ধরণের বিষণ্নতা ছড়িয়ে দেয়। ঠিক যেমন আমার জীবনের মানুষগুলো করেছে। তারা বলেছে—”ভালোবাসবো”, “সাথে থাকবো”, “তোমাকে বোঝার চেষ্টা করবো”—কিন্তু শেষে কি তা করেছে? করেছে ঠিক উল্টোটা। যেমন আকাশ, তেমনি তারাও।
আমি ভেবেছি, এই আকাশের নিচেই আমি হেঁটে যাবো অনেক দূর। একদিন কেউ বুঝবে আমার পথচলার ক্লান্তি। কেউ হয়তো ধরে ফেলবে, এই গাঢ় মেঘের ভেতর কতটা অসহ্য বিষণ্নতা জমে আছে। কিন্তু কেউ বোঝেনি। সবাই ব্যস্ত নিজের গল্পে, নিজের রোদে, নিজের সুখে। আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম একা, একদম একা, এক আকাশ-ভর্তি অনিশ্চয়তার সামনে।
আমার জীবনের প্রতিটি বড় মুহূর্তেই যেন এই মেঘলা আকাশ ছিল। পরীক্ষার খারাপ ফল, প্রথম প্রেমে ধোঁকা খাওয়া, বাবার অসুস্থতা, বন্ধুর বিশ্বাসঘাতকতা—সব কিছুর পেছনে ছিল এক ছায়াঘেরা আকাশ। যেন সৃষ্টিকর্তা আমায় বলেনি, “সব ঠিক হবে”—বরং বলেনি, “তোমার কষ্টটাই হবে তোমার পরিচয়।”
তবু আশ্চর্যের কথা, আমি এই আকাশকে ঘৃণা করতে পারিনি। বরং ভালোবেসেছি। কারণ আমি জানি, যেমন করে সে আলো ঢেকে রাখে, তেমনি আমিও হাসির আড়ালে কান্না ঢেকে রাখি। সে যেমন গর্জন করে—তেমনি আমিও গর্জন করতে চাই, কিন্তু পারি না। আমি তো মানুষ, আর মানুষ চুপ থাকে—বুকের সব আগুন নিয়েই।
একবার এক ভোরে, খুব তীব্র মেঘলা দিনে আমি রাস্তায় হাঁটছিলাম। চারপাশে লোকজন ছাতা হাতে ছুটছে, বৃষ্টি আসবে বলে। আমি দাঁড়িয়ে রইলাম, যেন বৃষ্টির অপেক্ষায় না—বরং সেই মুহূর্তের সঙ্গে একাত্ম হয়ে থাকতে চাইছিলাম। হঠাৎ মনে হলো, এই আকাশ আমাকে জানে, আমার কষ্ট চেনে। এমনকি সে আমায় বলতে চাইছে—”আমি আছি, তুই একা না।” অদ্ভুত এক শান্তি এসেছিল সেদিন। যেন কারো কোলে মাথা রাখা, কোনো উত্তরহীন প্রশ্নের ছোট্ট একটা সমাধান।
এই আকাশ মাঝে মাঝে আমায় শেখায়, ভেঙে যাওয়ারও এক ধরনের সৌন্দর্য আছে। তুমুল বৃষ্টির পর যেমন আকাশ পরিষ্কার হয়, তেমনি হৃদয়ের কষ্ট সাফ করতে কষ্টের প্রয়োজন হয়। আমি ভেঙেছি, গুঁড়িয়ে গেছি, বারবার। কিন্তু প্রতিবারই উঠে দাঁড়িয়েছি। হয়তো আকাশও তাই করে—বৃষ্টির পরে আবার সেজে ওঠে নতুন করে, রংধনু আঁকে, সূর্যকে ডাক দেয়।
তবে আমার মনে হয়, মেঘলা আকাশই আমার আসল রূপ। অন্যরা হয়তো একদিন রোদ চাইবে, আলো চাইবে, পরিষ্কার আকাশ চাইবে। কিন্তু আমি চাই একটানা এক মেঘলা বিকেল—যেখানে কোনো শব্দ নেই, মানুষ নেই, কেবল আমি আর আমার নিরবতা। এই নিরবতাই তো আমার আত্মা, আমার শেকড়, আমার সত্য।
আমার জীবন কখনো সহজ ছিল না। ছোট ছোট ভালোবাসা পেয়েছি, বড় বড় ভুল করেছি, গভীর গভীর শূন্যতায় ডুবে গেছি। সেই শূন্যতা অনেকটা মেঘের মতো—দেখতে ভারি, কিন্তু ধরতে গেলে ফাঁকা। মানুষ যেমন আমার মনের ভেতরটা বুঝতে পারেনি, তেমনি তারা মেঘের ওজনও বোঝে না। কেবল দেখে, “আকাশ মেঘলা, বৃষ্টি আসবে”, কিন্তু বোঝে না, সেই মেঘে কতটা না বলা কথা জমে আছে।
আমার ভিতরে যে কষ্ট, তা আমি কাউকে দেখাই না। কারণ জানি, সবাই শুধু নিজের গল্প বোঝে। কেউ আমার আকাশের দিকে তাকায় না, কেউ আমার মেঘের ওজন মাপতে চায় না। তাই আমি চুপচাপ হাঁটি, মাথার উপর এক বিস্তীর্ণ মেঘলা আকাশ নিয়ে। সে আকাশই আমার সঙ্গী, আমার প্রতিচ্ছবি।
জীবনে কিছু কিছু মানুষ এসেছে, যারা বলেছে, “তুই খুব গভীর”। আমি হেসেছি। তারা জানে না, এই গভীরতা কোনো গৌরব নয়, একটা অভিশাপ। গভীরতা মানে একা হয়ে যাওয়া। গভীরতা মানে, কিছুই আর হালকা করে বলা যায় না, সব কিছুই বোঝানোর জন্য সময় লাগে, শব্দ লাগে, হৃদয় লাগে। তাই হয়তো আকাশও কিছু বলে না—সে শুধু থাকে, তার নিজের ছায়া নিয়ে।
আমার জীবনের সবচেয়ে প্রিয় সময়গুলো ছিল তখনই, যখন বৃষ্টি নামছিল, কেউ ছিল না আশেপাশে, আর আমি একা দাঁড়িয়ে ছিলাম জানালার ধারে। সেই সময়গুলোতে মনে হতো, আমি নিজের কাছে ফিরে এসেছি। কেউ নেই আমাকে বদলাতে, কেউ নেই আমায় বোঝাতে—আমি কেবল আমি, একা, নিঃশব্দ, মেঘলা।
জানি না, এই আকাশ আর কতবার এমন করে ফিরে আসবে। জানি না, আমি আর কতবার নিজের ছায়া খুঁজে পাব মেঘের ভেতর। তবে এটুকু জানি—আকাশ যেমন তার রঙ বদলায়, আমিও একদিন বদলে যাব। হয়তো পুরোপুরি ভেঙে গিয়ে আবার নতুন করে গড়ে উঠব। হয়তো একদিন সূর্য উঠবে, কিন্তু আমি তবু তাকিয়ে থাকব মেঘের দিকে—কারণ সেখানে লুকানো আমার হৃদয়, আমার যন্ত্রণা, আমার আমি।
শেষে শুধু এটুকু বলি- যখনই কেউ বলবে, “আজ আকাশটা অনেক বিষণ্ন”—তখন আমি মনে মনে বলব, “না, আজ আকাশটা আমার মতো হয়েছে।”
রোববার (২৭ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ফরিদপুর-মুকসুদপুর আঞ্চলিক সড়কের উপজেলার কোদালিয়া শহীদ নগর এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
আপনার মতামত লিখুন
Array