খুঁজুন
সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫, ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

ফরিদপুরে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ১, আহত ৩

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫, ১১:৪৯ এএম
ফরিদপুরে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ১, আহত ৩

ফরিদপুরের নগরকান্দায় চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে শাহিন (২৩) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন তিন জন।

সোমবার (২৪ নভেম্বর) সকালে নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে রবিবার (২৩ নভেম্বর) দিবাগত রাত ২ টার দিকে উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের দেবিনগর সর্বজনীন দুর্গামন্দিরের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শাহিন নগরকান্দার গজগাহ এলাকার মো. মোস্তফার ছেলে।

আহতরা হলেন, সুমন শেখ (২৫), পারভেজ (১৮) ও এনামুল (২৫)। তাদের সবার বাড়ি নগরকান্দা উপজেলায়।
তবে এসময় জিহাদ (২৪) নামে একজন পালিয়ে যায়।

জানা যায়, ওই ব্যক্তিরা উপজেলার তালমার মোড় থেকে মাহিন্দ্র থেকে নেমে হাঁটতে হাঁটতে রামনগর ইউনিয়নে দেবিনগর দুর্গামন্দিরের সামনে পৌঁছালে একটি মোটরসাইকেলে দুই জন এসে তাদেরকে জিজ্ঞেসাবাদ করে। এসময় চোর চোর করে ডাকচিৎকার করলে স্থানীয় দুই-তিন গ্রামের ২০০/২৫০ লোকজন এসে এলোপাতাড়ি মারধর করে তাদের।

অতঃপর নগরকান্দা থানায় সংবাদ দিলে নগরকান্দা কিলো ৮ পার্টির ইনচার্জ এসআই ইরানুর ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ৪ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। এদের মধ্যে শাহিনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় ও বাকি ৩ জনকে নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। তবে আহত শাহিন ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে।

নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ফরিদপুরের সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রীর এপিএস ফুয়াদের সাড়ে ৫ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫, ৪:৪৫ পিএম
ফরিদপুরের সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রীর এপিএস ফুয়াদের সাড়ে ৫ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের (এলজিআরডি) সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশারফ হোসেনের এপিএস এএইচ এম ফুয়াদের ৫ কোটি ৪৪ লাখ ৯৫ হাজার ৫৮৬ টাকার সম্পত্তি ক্রোক করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ফরিদপুরের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত সম্পত্তি ক্রোক করার এ আদেশ দেন।

সোমবার (২৪ নভেম্বর) সম্পত্তি ক্রোকের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান। ক্রোক করা সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে একটি ফ্ল্যাটসহ মোট ৩৮.৯৩৩ শতাংশ জমি।

জসীম উদ্দিন খান জানান, মানিলন্ডারিং তদন্তে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ফুয়াদ ছিলেন সাবেক মন্ত্রীর মন্ত্রণালয়কালীন এপিএস। সেই সময় ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ইমতিয়াজ হোসেন রুবেলকে সঙ্গে নিয়ে তিনি ‘হেলমেট বাহিনী’ নামে একটি গ্রুপ গঠন করেন। এই বাহিনী ব্যবহার করে এলজিইডি, স্বাস্থ্য প্রকৌশলী, শিক্ষা অধিদপ্তর, গণপূর্ত, বিএডিসি, পাসপোর্ট অফিস, বিআরটিএ, রোডস অ্যান্ড হাইওয়েসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করতেন। এসব টেন্ডার থেকে বড় অঙ্কের কমিশন গ্রহণ করে বিপুল সম্পদ গড়ে তোলেন।

তিনি আরও জানান, এছাড়া বিভিন্ন ব্যক্তিকে ভয়ভীতি দেখিয়েও অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তদন্তে আরও বেরিয়ে আসে, নিজের নামে ছাড়াও তার প্রথম স্ত্রী ফারজানা ফোয়াদ, দ্বিতীয় স্ত্রী তাছলিমা আক্তার বাবলী, দ্বিতীয় পক্ষের শাশুড়ি নাদিরা বেগমসহ আত্মীয়দের নামে বেনামে বহু জমি কেনার তথ্য। এসব সম্পত্তির দখল বর্তমানে তার ভাই ও ভাগিনার হাতে রয়েছে। এমনকি বেনামে বিলাসবহুল বাস কিনে পরিবহন খাতেও বিনিয়োগ করেছেন তিনি।

অনুসন্ধান শেষে সিআইডি বাদী হয়ে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন গত আগস্ট মাসে একটি মামলা দায়ের করে। বর্তমানে মামলার তদন্ত সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট পরিচালনা করছে। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অন্যান্য সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে সিআইডির অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ফরিদপুর মহানগর যুবদলের সভাপতি তাবরীজের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫, ৯:৪৮ পিএম
ফরিদপুর মহানগর যুবদলের সভাপতি তাবরীজের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও দলের নীতি-আদর্শ পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ফরিদপুর মহানগর যুবদলের সভাপতি বেনজীর আহমেদ তাবরীজকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। পরবর্তীতে তার আবেদনের প্রেক্ষিতে পুনর্বিবেচনা শেষে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফলে তিনি পুনরায় স্বীয় পদে বহাল হলেন।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না এবং সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন যৌথভাবে ব*হি*ষ্কা*রাদেশ প্র-ত্যা-হারের সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছেন।

কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশক্রমে প্রেরিত এই বার্তায় আরও উল্লেখ করেন যুবদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূইয়া।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংগঠনের স্বাভাবিক কার্যক্রম আরও সুদৃঢ় করতে এবং ভবিষ্যৎ সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে ভূমিকা রাখার সুযোগ সৃষ্টি করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ফরিদপুরে মন্দিরের জমির বিরোধকে ঘিরে অপপ্রচার, যা বলছে পুলিশ

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫, ৯:০৩ পিএম
ফরিদপুরে মন্দিরের জমির বিরোধকে ঘিরে অপপ্রচার, যা বলছে পুলিশ

সম্প্রতি ফরিদপুরের সদরপুরে মন্দিরের জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া গুজব ও অপপ্রচারের অভিযোগে এক প্রেসবিজ্ঞপ্তি দিয়েছে পুলিশ।

রবিবার (২৩ নভেম্বর) রাতে ফরিদপুর জেলা পুলিশ এ প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেন, ‘সম্প্রতি “HINDUS NEWS” নামক একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে এবং ফেসবুক পেইজে “ফরিদপুরের সদরপুরে মন্দিরের জমি নিয়ে সংঘর্ষ- পালিয়ে যাচ্ছে হিন্দু পরিবার, টহলে পুলিশ” শিরোনাম একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। উক্ত সংবাদে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ঢেউখালী ইউনিয়নের হরিনা গ্রামে রাধা গোবিন্দ মন্দিরের জমি নিয়ে সৃষ্ট বিরোধের বিষয়কে কেন্দ্র করে স্থানীয়ভাবে পরিস্থিতি উত্তেজনাকর সহ হামলার পর ভয়-আতঙ্কে গ্রাম ছাড়ছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এবং চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন অন্তত পাঁচ শতাধিক হিন্দু পরিবার বলে দাবী করা হয়। বিষয়টি ফরিদপুর জেলা পুলিশের নজরে এসেছে। উক্ত ঘটনাটি সম্পর্কে সরেজমিনে তদন্ত এবং প্রকৃত তথ্যের ভিত্তিতে জেলা পুলিশ নিশ্চিত করছে যে, ছড়িয়ে পড়া ওই তথ্যটি অতিরঞ্জিত, অসত্য এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে পারে।

প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘হরিনা মৌজার ৫৮৪ নং খতিয়ানের ৪১২/৪১৩ দাগে ৪৬ শতাংশ জমির মালিক ছিলেন মহাদেব ঘোষ। আনুমানিক ৬/৭ মাস পূর্বে মহাদেব ঘোষ উক্ত জমি স্থানীয় বাবুল বেপারী ও সনাতন ধর্মাবলম্বী সুশান্ত মালো গং-এর নিকট সাব কবলা দলিল মূলে বিক্রি করেন।’

জেলা পুলিশ জানায়, ‘জমি বিক্রির বিষয়টি মহাদেব ঘোষের প্রতিপক্ষ মানিক ঘোষ গং জানতে পারলে তারা দাবি করেন যে, ওই জমিটি সার্বজনীন মন্দিরের। এ নিয়ে বিক্রেতা মহাদেব ঘোষ এবং ক্রেতা সুশান্ত মালো ও বাবুল বেপারী পক্ষের সাথে প্রতিপক্ষ মানিক ঘোষ পক্ষের বিরোধ সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ, বিরোধটি মূলত ‘জমির মালিক/বিক্রেতা ও ক্রেতা’ বনাম ‘প্রতিপক্ষ দাবিদার’-এর মধ্যে, যেখানে উভয় পক্ষেই সনাতন ধর্মাবলম্বী ও মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন জড়িত রয়েছেন।

মারামারি ও পুলিশি পদক্ষেপ:

‘গত ১৬ নভেম্বর ভোরে জমি দখলকে কেন্দ্র করে দু-পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকজন আহত হন। খবর পাওয়া মাত্রই সদরপুর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। উক্ত ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সুশান্ত মালো নামের একজনকে আটক করে এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে। পরবর্তীতে থানা পুলিশ কর্তৃক বাবুল বেপারীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমানে সেখানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’

গুজব নিরসন:

‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত “হামলার ভয়ে ৫ শতাধিক হিন্দু পরিবার গ্রাম ছেড়ে পালাচ্ছে” এবং “চরম নিরাপত্তাহীনতা”—এই তথ্যগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন । সরেজমিনে তদন্তে দেখা গেছে, কোনো পরিবার গ্রাম ছেড়ে যায়নি এবং বর্তমানে এলাকাটি পুলিশের সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রয়েছে।’

সতর্কবার্তা:

একটি স্বার্থান্বেষী মহল সাধারণ জমি সংক্রান্ত বিরোধকে ‘সাম্প্রদায়িক হামলা’ হিসেবে চালিয়ে দিয়ে জনমনে ভীতি ও বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এ ধরনের উসকানিমূলক পোস্ট শেয়ার করা থেকে বিরত থাকার জন্য সর্বসাধারণকে অনুরোধ করা হলো। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী যেকোনো অপতৎপরতার বিরুদ্ধে ফরিদপুর জেলা পুলিশ কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

উক্ত ঘটনায় আতঙ্কিত না হয়ে পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করার জন্য এবং শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে।