খুঁজুন
সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫, ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

ফরিদপুরে নিজ কন্যাকে ধর্ষণের দায়ে পিতার আমৃত্যু কারাদণ্ড 

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৮:৪৭ পিএম
ফরিদপুরে নিজ কন্যাকে ধর্ষণের দায়ে পিতার আমৃত্যু কারাদণ্ড 

ফরিদপুরের সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর এলাকায় নিজ কিশোরী কন্যাকে ধর্ষণের দায়ে আব্দুল ওহাব মোল্লা (৪২) নামে এক ব্যক্তিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) শামীমা পারভীন এ রায় দেন।‌

দণ্ডের পাশাপাশি আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া আসামির স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে প্রশাসনের মাধ্যমে ভুক্তভোগীকে দেওয়ার নির্দেশও দেন আদালত।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ২০২৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি নিজ বাড়িতে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে পিতা কন্যাকে ঘুম থেকে তুলে ধর্ষণ করে। বিষয়টি তার মা’কে জানালে মা এ বিষয় নিয়ে কোতোয়ালি থানায় গত ২০২৩ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি মামলা দায়ের করে। ঘটনার প্রায় ৬ বছর আগে থেকেই বিভিন্ন সময় পিতা বিভিন্ন কাজের কথা বলে তাকে ধর্ষণ করতো বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। এ মামলার বিচারকালে ৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন ট্রাইব্যুনাল। এছাড়াও ডিএনএ টেস্টেও ঘটনার সত্যতা প্রমাণ পায় আদালত।

সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট গোলাম রব্বানী ভূঁইয়া রতন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, আসামির আমৃত্যু কারাদণ্ড হওয়ায় রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট। আশা করি, এই রায় সমাজে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করবে। রায় ঘোষণার সময় আসামিকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর তাকে সাজা পরোয়ানা দিয়ে আবারও কারাগারে পাঠানো হয়।

ফরিদপুরে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ১, আহত ৩

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫, ১১:৪৯ এএম
ফরিদপুরে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ১, আহত ৩

ফরিদপুরের নগরকান্দায় চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে শাহিন (২৩) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন তিন জন।

সোমবার (২৪ নভেম্বর) সকালে নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে রবিবার (২৩ নভেম্বর) দিবাগত রাত ২ টার দিকে উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের দেবিনগর সর্বজনীন দুর্গামন্দিরের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শাহিন নগরকান্দার গজগাহ এলাকার মো. মোস্তফার ছেলে।

আহতরা হলেন, সুমন শেখ (২৫), পারভেজ (১৮) ও এনামুল (২৫)। তাদের সবার বাড়ি নগরকান্দা উপজেলায়।
তবে এসময় জিহাদ (২৪) নামে একজন পালিয়ে যায়।

জানা যায়, ওই ব্যক্তিরা উপজেলার তালমার মোড় থেকে মাহিন্দ্র থেকে নেমে হাঁটতে হাঁটতে রামনগর ইউনিয়নে দেবিনগর দুর্গামন্দিরের সামনে পৌঁছালে একটি মোটরসাইকেলে দুই জন এসে তাদেরকে জিজ্ঞেসাবাদ করে। এসময় চোর চোর করে ডাকচিৎকার করলে স্থানীয় দুই-তিন গ্রামের ২০০/২৫০ লোকজন এসে এলোপাতাড়ি মারধর করে তাদের।

অতঃপর নগরকান্দা থানায় সংবাদ দিলে নগরকান্দা কিলো ৮ পার্টির ইনচার্জ এসআই ইরানুর ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ৪ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। এদের মধ্যে শাহিনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় ও বাকি ৩ জনকে নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। তবে আহত শাহিন ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে।

নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ফরিদপুর মহানগর যুবদলের সভাপতি তাবরীজের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫, ৯:৪৮ পিএম
ফরিদপুর মহানগর যুবদলের সভাপতি তাবরীজের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও দলের নীতি-আদর্শ পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ফরিদপুর মহানগর যুবদলের সভাপতি বেনজীর আহমেদ তাবরীজকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। পরবর্তীতে তার আবেদনের প্রেক্ষিতে পুনর্বিবেচনা শেষে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফলে তিনি পুনরায় স্বীয় পদে বহাল হলেন।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না এবং সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন যৌথভাবে ব*হি*ষ্কা*রাদেশ প্র-ত্যা-হারের সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছেন।

কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশক্রমে প্রেরিত এই বার্তায় আরও উল্লেখ করেন যুবদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূইয়া।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংগঠনের স্বাভাবিক কার্যক্রম আরও সুদৃঢ় করতে এবং ভবিষ্যৎ সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে ভূমিকা রাখার সুযোগ সৃষ্টি করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ফরিদপুরে মন্দিরের জমির বিরোধকে ঘিরে অপপ্রচার, যা বলছে পুলিশ

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫, ৯:০৩ পিএম
ফরিদপুরে মন্দিরের জমির বিরোধকে ঘিরে অপপ্রচার, যা বলছে পুলিশ

সম্প্রতি ফরিদপুরের সদরপুরে মন্দিরের জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া গুজব ও অপপ্রচারের অভিযোগে এক প্রেসবিজ্ঞপ্তি দিয়েছে পুলিশ।

রবিবার (২৩ নভেম্বর) রাতে ফরিদপুর জেলা পুলিশ এ প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেন, ‘সম্প্রতি “HINDUS NEWS” নামক একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে এবং ফেসবুক পেইজে “ফরিদপুরের সদরপুরে মন্দিরের জমি নিয়ে সংঘর্ষ- পালিয়ে যাচ্ছে হিন্দু পরিবার, টহলে পুলিশ” শিরোনাম একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। উক্ত সংবাদে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ঢেউখালী ইউনিয়নের হরিনা গ্রামে রাধা গোবিন্দ মন্দিরের জমি নিয়ে সৃষ্ট বিরোধের বিষয়কে কেন্দ্র করে স্থানীয়ভাবে পরিস্থিতি উত্তেজনাকর সহ হামলার পর ভয়-আতঙ্কে গ্রাম ছাড়ছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এবং চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন অন্তত পাঁচ শতাধিক হিন্দু পরিবার বলে দাবী করা হয়। বিষয়টি ফরিদপুর জেলা পুলিশের নজরে এসেছে। উক্ত ঘটনাটি সম্পর্কে সরেজমিনে তদন্ত এবং প্রকৃত তথ্যের ভিত্তিতে জেলা পুলিশ নিশ্চিত করছে যে, ছড়িয়ে পড়া ওই তথ্যটি অতিরঞ্জিত, অসত্য এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে পারে।

প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘হরিনা মৌজার ৫৮৪ নং খতিয়ানের ৪১২/৪১৩ দাগে ৪৬ শতাংশ জমির মালিক ছিলেন মহাদেব ঘোষ। আনুমানিক ৬/৭ মাস পূর্বে মহাদেব ঘোষ উক্ত জমি স্থানীয় বাবুল বেপারী ও সনাতন ধর্মাবলম্বী সুশান্ত মালো গং-এর নিকট সাব কবলা দলিল মূলে বিক্রি করেন।’

জেলা পুলিশ জানায়, ‘জমি বিক্রির বিষয়টি মহাদেব ঘোষের প্রতিপক্ষ মানিক ঘোষ গং জানতে পারলে তারা দাবি করেন যে, ওই জমিটি সার্বজনীন মন্দিরের। এ নিয়ে বিক্রেতা মহাদেব ঘোষ এবং ক্রেতা সুশান্ত মালো ও বাবুল বেপারী পক্ষের সাথে প্রতিপক্ষ মানিক ঘোষ পক্ষের বিরোধ সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ, বিরোধটি মূলত ‘জমির মালিক/বিক্রেতা ও ক্রেতা’ বনাম ‘প্রতিপক্ষ দাবিদার’-এর মধ্যে, যেখানে উভয় পক্ষেই সনাতন ধর্মাবলম্বী ও মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন জড়িত রয়েছেন।

মারামারি ও পুলিশি পদক্ষেপ:

‘গত ১৬ নভেম্বর ভোরে জমি দখলকে কেন্দ্র করে দু-পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকজন আহত হন। খবর পাওয়া মাত্রই সদরপুর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। উক্ত ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সুশান্ত মালো নামের একজনকে আটক করে এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে। পরবর্তীতে থানা পুলিশ কর্তৃক বাবুল বেপারীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমানে সেখানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’

গুজব নিরসন:

‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত “হামলার ভয়ে ৫ শতাধিক হিন্দু পরিবার গ্রাম ছেড়ে পালাচ্ছে” এবং “চরম নিরাপত্তাহীনতা”—এই তথ্যগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন । সরেজমিনে তদন্তে দেখা গেছে, কোনো পরিবার গ্রাম ছেড়ে যায়নি এবং বর্তমানে এলাকাটি পুলিশের সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রয়েছে।’

সতর্কবার্তা:

একটি স্বার্থান্বেষী মহল সাধারণ জমি সংক্রান্ত বিরোধকে ‘সাম্প্রদায়িক হামলা’ হিসেবে চালিয়ে দিয়ে জনমনে ভীতি ও বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এ ধরনের উসকানিমূলক পোস্ট শেয়ার করা থেকে বিরত থাকার জন্য সর্বসাধারণকে অনুরোধ করা হলো। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী যেকোনো অপতৎপরতার বিরুদ্ধে ফরিদপুর জেলা পুলিশ কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

উক্ত ঘটনায় আতঙ্কিত না হয়ে পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করার জন্য এবং শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে।