খুঁজুন
সোমবার, ২৩ জুন, ২০২৫, ৯ আষাঢ়, ১৪৩২

ফরিদপুরে বদ্ধ ঘরে মিলল নারীর বিবস্ত্র লাশ, পাশের কক্ষে পড়ে ছিল অচেতন শিশু

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১০ জুন, ২০২৫, ৯:৩০ পিএম
ফরিদপুরে বদ্ধ ঘরে মিলল নারীর বিবস্ত্র লাশ, পাশের কক্ষে পড়ে ছিল অচেতন শিশু

ফরিদপুরে ভাড়া বাসা থেকে রিনা বেগম (৩০) নামের এক নারীর বিবস্ত্র লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় তাঁর পাঁচ বছর বয়সী শিশুকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। সপ্তাহখানেক আগে মুনিরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ওই বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন।

মঙ্গলবার (১০ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলা শহরের রঘুনন্দনপুরের হাবিব ভিলার তিনতলা ভবনের নিচতলার একটি কক্ষ থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়।

রিনা বেগম ফরিদপুর সদর উপজেলার অম্বিকাপুর ইউনিয়নের মান্নান ব্যাপারীর মেয়ে। তাঁর স্বামী পাশের ঈশানগোপালপুর ইউনিয়নের শহীদ মোল্যা সৌদি আরবে থাকেন। তাঁদের পাঁচ বছরের একটি কন্যাসন্তান ও আট বছর বয়সী একটি ছেলেসন্তান রয়েছে। যদিও রিনার এক স্বজন জানিয়েছেন, রিনা ও শহীদের ছয় মাস আগে বিচ্ছেদ হয়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়, ওই বাসার শৌচাগারের সামনে রিনা বেগমের লাশ পড়ে আছে। পাশের কক্ষে বিছানায় অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় শিশুকন্যাকে। সেখানে একাধিক ওষুধ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে এবং তরকারি ও ভাত মাখা খাবারের প্লেটও পড়ে আছে। ভেতর থেকে বাসাটি বন্ধ ছিল।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই ঘরের ভেতর থেকে পানি বেয়ে বাইরে চলে আসে। বিষয়টি সন্দেহজনক হলে স্থানীয় বাসিন্দারা থানায় জানান। পরে পুলিশের একাধিক দল এসে দরজা ভেঙে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

বাড়ির মালিক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘চলতি মাসে মনিরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি ওই নারীকে নিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসাটি ভাড়া নেন। মাত্র এক সপ্তাহ আগে ওই নারী উঠেছিলেন। আজ সকালে ঘটনাটি শুনে মনিরুলকে ফোন দিয়ে ঘটনাটি জানালে তিনি আর আসেনি। পরের তাঁর মোবাইল ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।’

রিনা বেগমের বাবার বাড়ির স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৫ বছর আগে ঈশানগোপালপুর ইউনিয়নের শহীদ মোল্যার সঙ্গে বিয়ে হয় রিনার। বিয়ের দুই বছর পর শহীদ মোল্যা সৌদি আরবে পাড়ি জমান। একপর্যায়ে রিনাকেও নিয়ে যান। কয়েক বছর আগে রিনা দেশে চলে আসেন। এর মধ্যে এক বছর আগে ঈশানগোপালপুর ইউনিয়নের দয়ারামপুরের মনিরুল ইসলামের (৪০) সঙ্গে বিয়-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়ান রিনা। এ নিয়ে স্বামী শহীদ মোল্যার সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্য হয়। পরে তিনি শহরের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কাজ শুরু করেন।

রিনার চাচা আব্দুস সালাম ব্যাপারী বলেন, ‘ছয় মাস আগে শহীদের সঙ্গে রিনার বিচ্ছেদ হয়। এরপর মনিরুলকে বিয়ে করেন। আজ জানতে পেরেছি, রিনা মারা গেছে। তবে কী কারণে, কীভাবে মারা গেছে, জানি না।’

যদিও আব্দুস সালামের এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন, শহীদ ও রিনার মধ্যে বিচ্ছেদ হয়নি।

এ বিষয়ে ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, ভেতর থেকে বন্ধ একটি বাসা থেকে বিবস্ত্র অবস্থায় এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে তাঁর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ বিষয়ে পুলিশের তদন্তকাজ চলছে। সে অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফরিদপুরে উদ্বোধন হলো ঐতিহ্যবাহী মোল্লার খিচুড়ি

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: সোমবার, ২৩ জুন, ২০২৫, ৯:৪১ এএম
ফরিদপুরে উদ্বোধন হলো ঐতিহ্যবাহী মোল্লার খিচুড়ি

ফরিদপুরে দোয়া মোনাজাত ও ফিতাকাটার মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করলো মোল্লার খিচুড়ি।

 

রবিবার (২২ জুন) দুপুর ২ টার দিকে ফরিদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে ও জেলা স্কুলের পাশে অবস্থিত এই মোল্লার খিচুড়ির দোকানে ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন পিয়াল।

এসময় আইনজীবি এ্যাভোকেট বশির আহমেদ, মোল্লার খিচুড়ির স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ সোহানুর রহমান সোহানের পিতা ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক মোহাম্মদ নুরু মোল্লা, মোল্লার খিচুড়ি আরেক স্বত্বাধিকার মো. রুহুল আমিন, ব্যবসায়ী আব্দুল আল মামুন, সাংবাদিক জাকিব আহমেদ জ্যাক, মো. খালিদ হাসান জনি, রিয়ানুল ইসলাম রুবেল, সেলিম শেখ, মোহাম্মদ রোহান সহ এক ঝাঁক খিচুড়ি প্রেমিরা উপস্থিত ছিলেন।

মোল্লার খিচুড়ির স্বত্বাধিকারী সোহান জানান , ‘ফরিদপুরের খিচুড়ি লাভারসদের জন্য এটি একটি সুখবর, এখন আর দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে মাওয়া ঘাটে মোল্লার খিচুড়ি খেতে যেতে হবেনা। আমরা সেই মোল্লার খিচুড়ি স্বল্প দামে একই স্বাদে ও একই গুণগত মানে এখন থেকে পরিবেশন করব।’

ভারি বৃষ্টিতে ডুবছে পাটক্ষেত, ফরিদপুরে দুশ্চিন্তায় কৃষকরা

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: সোমবার, ২৩ জুন, ২০২৫, ৮:৪৫ এএম
ভারি বৃষ্টিতে ডুবছে পাটক্ষেত, ফরিদপুরে দুশ্চিন্তায় কৃষকরা

ফরিদপুরে ভারি বৃষ্টিতে ডুবছে পাটক্ষেত। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন পার করছে কৃষকরা। পাট বাংলাদেশের অন্যতম অর্থকরী ফসল। এক সময় বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম উৎস ছিল এই ‘সোনালি আঁশ’। এখনো দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে পাটশিল্প।

ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলা, পাট উৎপাদনে দেশের শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। চলতি মৌসুমে উপজেলাজুড়ে ১৬ হাজার ১০৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে বলে জানা গেছে।

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় বর্ষা মৌসুমের অতিবৃষ্টিতে পাটক্ষেতে অস্বাভাবিক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। জমিতে পানি জমে থাকলে পাটগাছ পচে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যার প্রভাব পড়তে পারে জাতীয় পর্যায়ের পাট উৎপাদন ও বাজার ব্যবস্থায়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে পাটক্ষেতে পানি জমে আছে। বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক জানান, ‘হঠাৎ অতিবৃষ্টিতে জমিতে হাঁটু পানি জমে গেছে। যদি এভাবে পানি জমে থাকে, তাহলে গাছ পচে যাবে।’

বাজিতপুর গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম জানান, ‘টানা বৃষ্টির কারণে পাটের আগা মারা যাচ্ছে, ‘এজন্য ফলন আশানুরূপ হচ্ছে না।’

চতুল গ্রামের আরেক কৃষক ওমর আলী শেখ বলেন, ‘প্রতিবছর পাট চাষ করে কিছু লাভ হয়। এই বছরও আশা করেছিলাম ভালো ফলন পাব। কিন্তু বৃষ্টির পানি জমে গাছগুলোর গোড়া পচে যাচ্ছে। ফলে পাটের বৃদ্ধি ভালো হচ্ছে না।’

এ বিষয়ে বোয়ালমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলভীর রহমান জানান, ‘অতিবৃষ্টির কারণে নিচু জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে, যা পাটের স্বাভাবিক বৃদ্ধিকে ব্যাহত করছে।’

তিনি বলেন, ‘কৃষকদের নালা কেটে দ্রুততম সময়ে পানি নিষ্কাশনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে, যাতে পরবর্তী মৌসুমে তাদের সহায়তা দেয়া যায়।’

তিনি আরো বলেন, ‘ফরিদপুর অঞ্চলের পাট উৎপাদন জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। যদি এখানকার উৎপাদন ব্যাহত হয়, তাহলে দেশে মোট পাট উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এতে বাজারে পাটের দামও প্রভাবিত হতে পারে।’

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ‘সোনালি আঁশের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে হলে কৃষকবান্ধব উদ্যোগ ও ত্বরিত পদক্ষেপ নেয়া এখন সময়ের দাবি। বোয়ালমারীর মতো গুরুত্বপূর্ণ পাট উৎপাদক এলাকায় সমস্যাগুলো দ্রুততম সময়ে সমাধান না হলে জাতীয় অর্থনীতিতেই এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

“তোমায় খুঁজি, বাবা”

মুহাম্মাদ মুরাদ হোসাইন
প্রকাশিত: সোমবার, ২৩ জুন, ২০২৫, ৮:৩৩ এএম
“তোমায় খুঁজি, বাবা”

নীরব আকাশ, চুপ করে আজ,

তোমার কথা মনে পড়ে বারবার।

ছায়ার মতো ছিলে পাশে,
আজ নেই, তবু আছো হৃদয় জুড়ে সারাক্ষণ।

তোমার কণ্ঠের ডাক নেই আজ,
ঘরে ফিরে পাই না হাসিমুখ।
তবু মন বলে, বাবার স্পর্শ
আজো মিশে আছে হাওয়ার সুখ।

যখন কষ্টে ভেঙে পড়ি,
তোমার কথা মনে পড়ে খুব।
তুমি বলতে, “সব ঠিক হবে”,
আজ সে শব্দ শুধুই রূপ।

তোমায় ছাড়া জীবনটা এখন
অপূর্ণ এক উপন্যাস।
তবু বিশ্বাস, তুমি আছো
আমার প্রতিটি নিঃশ্বাস।

ঘুমের দেশে রয়েছো তুমি,
আলো হয়ে আমার পাশে।
যতদিন বাঁচি, তুমি থাকবে—
ভালোবাসার গোপন ভাসে।