খুঁজুন
শনিবার, ৯ আগস্ট, ২০২৫, ২৫ শ্রাবণ, ১৪৩২

ফরিদপুরে বদ্ধ ঘরে মিলল নারীর বিবস্ত্র লাশ, পাশের কক্ষে পড়ে ছিল অচেতন শিশু

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১০ জুন, ২০২৫, ৯:৩০ পিএম
ফরিদপুরে বদ্ধ ঘরে মিলল নারীর বিবস্ত্র লাশ, পাশের কক্ষে পড়ে ছিল অচেতন শিশু

ফরিদপুরে ভাড়া বাসা থেকে রিনা বেগম (৩০) নামের এক নারীর বিবস্ত্র লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় তাঁর পাঁচ বছর বয়সী শিশুকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। সপ্তাহখানেক আগে মুনিরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ওই বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন।

মঙ্গলবার (১০ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলা শহরের রঘুনন্দনপুরের হাবিব ভিলার তিনতলা ভবনের নিচতলার একটি কক্ষ থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়।

রিনা বেগম ফরিদপুর সদর উপজেলার অম্বিকাপুর ইউনিয়নের মান্নান ব্যাপারীর মেয়ে। তাঁর স্বামী পাশের ঈশানগোপালপুর ইউনিয়নের শহীদ মোল্যা সৌদি আরবে থাকেন। তাঁদের পাঁচ বছরের একটি কন্যাসন্তান ও আট বছর বয়সী একটি ছেলেসন্তান রয়েছে। যদিও রিনার এক স্বজন জানিয়েছেন, রিনা ও শহীদের ছয় মাস আগে বিচ্ছেদ হয়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়, ওই বাসার শৌচাগারের সামনে রিনা বেগমের লাশ পড়ে আছে। পাশের কক্ষে বিছানায় অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় শিশুকন্যাকে। সেখানে একাধিক ওষুধ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে এবং তরকারি ও ভাত মাখা খাবারের প্লেটও পড়ে আছে। ভেতর থেকে বাসাটি বন্ধ ছিল।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই ঘরের ভেতর থেকে পানি বেয়ে বাইরে চলে আসে। বিষয়টি সন্দেহজনক হলে স্থানীয় বাসিন্দারা থানায় জানান। পরে পুলিশের একাধিক দল এসে দরজা ভেঙে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

বাড়ির মালিক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘চলতি মাসে মনিরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি ওই নারীকে নিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসাটি ভাড়া নেন। মাত্র এক সপ্তাহ আগে ওই নারী উঠেছিলেন। আজ সকালে ঘটনাটি শুনে মনিরুলকে ফোন দিয়ে ঘটনাটি জানালে তিনি আর আসেনি। পরের তাঁর মোবাইল ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।’

রিনা বেগমের বাবার বাড়ির স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৫ বছর আগে ঈশানগোপালপুর ইউনিয়নের শহীদ মোল্যার সঙ্গে বিয়ে হয় রিনার। বিয়ের দুই বছর পর শহীদ মোল্যা সৌদি আরবে পাড়ি জমান। একপর্যায়ে রিনাকেও নিয়ে যান। কয়েক বছর আগে রিনা দেশে চলে আসেন। এর মধ্যে এক বছর আগে ঈশানগোপালপুর ইউনিয়নের দয়ারামপুরের মনিরুল ইসলামের (৪০) সঙ্গে বিয়-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়ান রিনা। এ নিয়ে স্বামী শহীদ মোল্যার সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্য হয়। পরে তিনি শহরের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কাজ শুরু করেন।

রিনার চাচা আব্দুস সালাম ব্যাপারী বলেন, ‘ছয় মাস আগে শহীদের সঙ্গে রিনার বিচ্ছেদ হয়। এরপর মনিরুলকে বিয়ে করেন। আজ জানতে পেরেছি, রিনা মারা গেছে। তবে কী কারণে, কীভাবে মারা গেছে, জানি না।’

যদিও আব্দুস সালামের এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন, শহীদ ও রিনার মধ্যে বিচ্ছেদ হয়নি।

এ বিষয়ে ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, ভেতর থেকে বন্ধ একটি বাসা থেকে বিবস্ত্র অবস্থায় এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে তাঁর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ বিষয়ে পুলিশের তদন্তকাজ চলছে। সে অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে সালথায় মানববন্ধন 

সালথা প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫, ৮:৫১ পিএম
সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে সালথায় মানববন্ধন 

গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে নির্মমভাবে হত্যার প্রতিবাদে এবং দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ফরিদপুরের সালথায় মানববন্ধন করেছে স্থানীয় সাংবাদিকরা।

শুক্রবার (০৮ আগস্ট ) বিকেলে সালথা প্রেসক্লাবের আয়োজনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

সালথা প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. সেলিম মোল্লার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নাহিদের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, সালথা প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি মনির মোল্লা, সহ-সভাপতি হারুন-অর-রশীদ, সাইফুল ইসলাম, রেজাউল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক শরিফুল হাসান, দপ্তর সম্পাদক জাকির হোসেন, প্রচার সম্পাদক লাভলু মিয়া, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সম্পাদক পারভেজ মিয়া, সাহিত্য ও পাঠাগার সম্পাদক আকাশ সাহা, কার্যনির্বাহী সদস্য এম কিউ হুসাইন বুলবুল, বিডি২৪লাইভ-এর ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি মো. এহসানুল হক মিয়া প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা তুহিন হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন। এসময় বক্তারা বলেন, তুহিন হত্যার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। দেশের সংবাদকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (০৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তায় কুপিয়ে ও জবাই করে দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

বিস্ফোরক মামলা : ভাঙ্গায় ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার

আব্দুল মান্নান, ভাঙ্গা:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫, ৮:৪৭ পিএম
বিস্ফোরক মামলা : ভাঙ্গায় ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক মোল্লাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (০৮ আগস্ট) সকালে উপজেলার মালিগ্রাম এলাকায় থেকে ভাঙ্গা থানার একটি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে একইদিন দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, চান্দ্রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক মোল্লার বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্রদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। তাছাড়া ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে সে কিছুটা গা ডাকা দিয়েছিল। তিনি যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক এমপি মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরীর আস্তাভাজন ছিলেন।

এবিষয়ে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, শুক্রবার সকালে ভাঙ্গা উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে ভাঙ্গা থানাযর বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়।

ফরিদপুরে পাট শুকানোকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২০

এন কে বি নয়ন, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫, ৮:৪২ পিএম
ফরিদপুরে পাট শুকানোকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২০

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে চলাচলের সড়কে পাট শুকানোর বাঁশপুতাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার (০৮ আগস্ট) সকালে উপজেলার শেখর ইউনিয়নের বাজিদাদপুর গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় উভয়পক্ষের ৭ জনকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে উত্তম সরকার (৩০) নামে একজনকে আশঙ্কজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

গুরুতর আহতরা হলেন, বাজিদাদপুর গ্রামের বিশ্বাস গ্রুপের জগদীশ বিশ্বাস (৬০), জয়ন্ত বিশ্বাস (২৬) ও অপূর্ব বিশ্বাস (৩৫) এবং বালা গ্রুপের শিবু বালা (৬০), রতন বালা (৪০) ও সুজন সরকার (২৫)। তারা সকলেই ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এছাড়া জগদীশের স্ত্রী ইতি বিশ্বাস (৫২), সুশান্ত বিশ্বাস (৩০), রবিন বিশ্বাস (৫০), সমীর বিশ্বাস (৪০), সুজন সরকার (৩০), শুক্লা বিশ্বাস (৩৩)সহ বাকিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে ফিরেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার শেখর ইউনিয়নের বাজিদাদপুর গ্রামের নীতিশ কুমার বালা (৫৫) ও জগদ্বীশ কুমার বিশ্বাসের (৬০) মধ্যে বাড়ির সামনে রাস্তা সংলগ্ন জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার সালিশ বৈঠক বসে। সম্প্রতি শালিশ মিমাংসা করে সীমানা নির্ধারণ পিলার বসিয়ে দেওয়া হয়। শুক্রবার সকালের দিকে জগদিশ বিশ্বাসরা সড়কের ওপর পাট শুকানো বাঁশ পুঁততে গেলে প্রতিপক্ষ নীতিশ কুমার বালার লোকজন বাঁধা দেয়। এ সময় বাঁশ সরানো নিয়ে দুইপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উভয়পক্ষের ৭ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

সংঘর্ষের ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী শেখর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু সাইদ (পান্নু) জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দুইপক্ষকে নিবৃত করার চেষ্টা করি। সংঘর্ষ থেমে যাওয়ার খবর পেয়ে টহল পুলিশ অর্ধেক পথ থেকে ফিরে গেছেন।

বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাবরিনা হক রুম্পা জানান, একটি মারামারির ঘটনায় ১৭ জন হাসপাতালে আসেন। সেখান থেকে ৭জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।