খুঁজুন
শনিবার, ১০ মে, ২০২৫, ২৭ বৈশাখ, ১৪৩২

সদরপুরে কিস্তির টাকা না পেয়ে মৎস্যজীবীকে পেটালেন এনজিও কর্মীরা

ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৭ মার্চ, ২০২৫, ৮:১৬ পিএম
সদরপুরে কিস্তির টাকা না পেয়ে মৎস্যজীবীকে পেটালেন এনজিও কর্মীরা
ফরিদপুর  সদরপুরে কিস্তির টাকা না পেয়ে নন্দ মালো (৪৫) নামের এক মৎস্যজীবীকে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠেছে পিপল্স ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টেশন (পপি)’র এনজিও কর্মীদের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (০৭ মার্চ) এ প্রতিনিধি সরেজমিন আহত ওই ব্যক্তির বাড়ীতে গেলে গ্রামবাসী এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (০৬ মার্চ) বিকেলে উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
 আহত নন্দ মালো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলে ” পপি’র ” এনজিওর  ম্যানেজার মো: মমিনুল হক, এরিয়া ম্যানেজার মো: মোজাফ্ফর হোসেন ও মাঠকর্মী প্রণব কুমার  নন্দ মালোর বাড়িতে এনজিও’র পাওনা কিস্তির টাকা নিতে আসেন।
তাঁর কাছে টাকা না থাকায় তাদের পরে আসতে বলেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ওই এনজিওকর্মীরা নন্দর উপর হামলা চালিয়ে গুরুত্বর জখম করে।
আহত নন্দ মালো বলেন, বিকেলে তিনজন পপি’র এনজিও কর্মীরা আমার কাছে কিস্তির টাকা নিতে আসে। আমার কাছে টাকা না থাকায় আমি কিস্তি দিতে পারিনি। পরে তারা আমার বাড়িতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবেন বলে সন্ধ্যায় বাড়িতে থাকতে বলেন। আমার কাছে টাকা নেই আপনারা যা ইচ্ছা করেন বললে, তারা তিনজন আমাকে মারধর করে।
তিনি আরও জানান, পপি এনজিও’র হাট কৃষ্ণপুর শাখা থেকে ৫০ হাজার টাকা লোন নেই। এখন ওই এনজিও তার কাছে ৯ হাজার টাকা পাবেন বলে জানান।
পপি’র হাট কৃষ্ণপুর শাখার এরিয়া ম্যানেজার মো: মোজাফ্ফর হোসেন বলেন,  আমরা তিনজন বিকেলে নন্দর বাড়িতে বকেয়া কিস্তির টাকা তুলতে যাই। টাকা চাইলে তিনি আমাদের বলেন, টাকা দিব না, যা পারেন তাই করেন। পরে তিনি আমাদের উপর হামলা চালায়। হামলায় আমাদের ম্যানেজার আহত হয়।
এ ঘটনায় এনজিওটির ওই শাখার ম্যানেজার মো: মমিনুল হক সাথে একাধিক বার মুঠো ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মোতালেব বলেন, এই ঘটনায় আমাদের কাছে এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ফরিদপুরে বসুন্ধরা শুভসংঘের আয়োজনে সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আলোচনা সভা

ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৮ মে, ২০২৫, ৪:০০ পিএম
ফরিদপুরে বসুন্ধরা শুভসংঘের আয়োজনে সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আলোচনা সভা
ফরিদপুরে শিক্ষার্থীদের নিয়ে সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও তথ্য সুরক্ষায় করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৮ মে) ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ হলরুমে এ উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে জেলা বসুন্ধরা শুভ সংঘ।
বসুন্ধরা শুভ সংঘের ফরিদপুর জেলা সভাপতি তন্ময় রায়ের সভাপতিত্বে সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও তথ্য সুরক্ষায় করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ ও শুভ সংঘের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর এস এম আব্দুল হালিম।
ফরিদপুর জেলা শুভ সংঘের দপ্তর সম্পাদক তিহান আহমেদের পরিচালনায় এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, কোতয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সাইফুল ইসলাম, উপদেষ্টা ও বাংলানিউজ২৪.কম-এর ফরিদপুর ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট হারুন-অর-রশীদ, কালের কণ্ঠের জেলা প্রতিনিধি মো. নুর ইসলাম, জেলা বসুন্ধরা শুভ সংঘের সাধারণ সম্পাদক সোনীয়া সুলতানা, আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক বিপ্লব বিশ্বাস, কার্যনিবাহী সদস্য সনত চক্রবর্তী, শিক্ষার্থী অর্ঘ্য শিকদার ও ফয়সাল প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, দিন দিন ই-মেইলসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাইবার অপরাদের সাথে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ জড়িয়ে পড়ছে। যেকোন ডিভাইসে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে গিয়ে আমরা সাইবার অ্যাটকের শিকার হতে পারি। তাই এসব বিষয়ে আমাদের আরো সচেতন হতে হবে। আমরা ভালকাজের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করবো। কেউ বুলিং বা হয়রানির শিকার হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নেওয়ার কথা জানানো হয় আলোচনা সভায়।

সালথায় ধর্ষণ মামলা তুলতে চাপ প্রয়োগ, প্রাণ দিল স্কুল শিক্ষার্থী

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৮ মে, ২০২৫, ১০:২৮ এএম
সালথায় ধর্ষণ মামলা তুলতে চাপ প্রয়োগ, প্রাণ দিল স্কুল শিক্ষার্থী
ফরিদপুরের সালথায় ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলছিল ইতি ইসলাম (১৩) নামে এক স্কুল শিক্ষার্থীর মরদেহ।
পরে বুধবার (৭ মে) সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে ওই স্কুল শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
ইতি উপজেলার গট্টি ইউনিয়ন সিংহপ্রতাপ গ্রামের মো. সিদ্দিক আলীর মেয়ে ও স্থানীয় একটি স্কুলের ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
নিহত স্কুল শিক্ষার্থীর পরিবারের দাবি, একটি ধর্ষণ মামলা তুলতে ইতিকে মোবাইল ফোনে বারবার চাপ দেওয়ায় সে আত্মহত্যা করেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকালে বাড়ির সবাই কাজে গেলে সবার অজান্তে ঘরের আড়ার সঙ্গে রশি দিয়ে ঝুল দেন ইতি। পরে স্থানীয়রা তাকে ঘরের আড়া থেকে নামালে ডাক্তার এসে তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।
নিহত স্কুল শিক্ষার্থীর পরিবার জানায়, বিয়ের প্রলোভনে ইতিকে কয়েবার ধর্ষণ করে ফরিদপুর সদরের প্রতাবপুর এলাকার সোহেল (২২) নামের এক বখাটে। এ ঘটনায় সম্প্রতি সালথা থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করা সোহেলের বিরুদ্ধে। অতঃপর গত ১৪ মার্চ র‌্যাব-১০ অভিযান চালিয়ে পটুয়াখালী থেকে গ্রেপ্তার করে সোহেলকে। এ ঘটনার পর থেকে মামলা তুলতে বারবার ইতি ও তার পরিবারকে বারবার চাপ ও হুমকি দিয়ে আসছিল সোহেলের পরিবার। এই চাপ সহ্য করতে না পেরে ইতি আত্মহত্যা করেছে।
তবে এব্যাপারে সোহেলের পরিবার পলাতক থাকায় তার পরিবারের কারো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, ওই স্কুলশিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এব্যাপারে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নিতে পুলিশ কাজ করছে।

ফরিদপুরে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৮ মে, ২০২৫, ১০:২৬ এএম
ফরিদপুরে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার গোপালদী গ্রামে স্ত্রীকে হত্যার দায় স্বামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লক্ষ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (০৭ মে) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) শামীমা পারভীন এ আদেশ দেন।
সাজাপ্রাপ্ত নুর আলম ওরফে হুমায়ুন(৩৪) মধুখালী উপজেলার গোপালদী গ্রামের মোঃ শহীদ শেখের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় নুর আলম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাকে পুলিশ প্রহরায় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, নিহত ওই নারীর বাড়ি ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার দয়ারামপুর গ্রামে। মেয়ে হত্যার দায়ে তার পিতা কুতুব উদ্দিন মোল্লা গত ২০১৮ সালের ২৫ অক্টোবর স্থানীয় থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার বিবরনে উল্লেখ করা হয়, গত ২০১৮ সালের ২৩ অক্টোবর দিবাগত রাত পৌনে একটার সময় আমার মেয়ের স্বামীর বাড়ি উপজেলার গোপালদী গ্রামে তার পরিবারের লোকজন যোগসাজশে যৌতুকের জন্য আমার মেয়েকে তাদের নিজ বাড়িতে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর আমার মেয়ে বিষপান করে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচারণা চালায়। এ বিষয়ে আমাকে এবং আমার পরিবারের কাউকে কিছু জানান না তার স্বামীর বাড়ির লোকজন। পরদিন ২৪ অক্টোবর ভোর ছয়টার সময় প্রতিবেশীদের মাধ্যমে ফোনে আমরা বিষয়টি জানতে পারি। ওই বাড়িতে গিয়ে পরিবারে কোন লোকজনকে না দেখে আমরা বিষয়টি পুলিশকে জানাই। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
এর সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট গোলাম রব্বানী ভূঁইয়া রতন জানান, মামলাটিতে মোট ১২ জন সাক্ষী দেন। সকল আলামত ও সাক্ষীদের জবানবন্দীতে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত এই রায় দেন।