খুঁজুন
সোমবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৫, ১৮ কার্তিক, ১৪৩২

সালথায় বসতবাড়িতে হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: রবিবার, ১১ মে, ২০২৫, ৬:২৩ পিএম
সালথায় বসতবাড়িতে হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
ফরিদপুরের সালথায় উপজেলা যুবলীগের নেতা সোহেল রানা ফরহাদ মোল্লার নেতৃত্বে পাশের গ্রাম থেকে সহস্রাধিক লোক ভাড়া করে এনে সোনাপুর ইউনিয়নে বিএনপি’র সমর্থকদের অন্তত ৩০টি বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাট ও আব্দুল হাই নামে এক ব্যক্তির একতলা বিল্ডিংয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।
রবিবার (১১ মে) সকাল ১১ টায় উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের রাঙ্গারদিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত মান্নান মাতুব্বর বলেন, আমি কোনো রাজনীতি করি না। তবে ২০১৪ সালে বিএনপির নেত্রী শামা ওবায়েদ আমার বাড়িতে আসে। এরপর পর থেকে সালথা উপজেলা যুবলীগের নেতা সোহেল রানা ফরহাদ মোল্লা আমাদের উপর অত্যাচার শুরু করেন। কিন্তু ৫ আগস্টের পরে ভেবেছিলাম সন্ত্রাসী ফরহাদ মোল্লার হাত থেকে বেঁচে যাব, কিন্তু তা আর হলো না। যুবলীগের নেতা ফরহাদ মোল্লা বিএনপি নেতা ও সালথা সরকারি কলেজের বাংলা প্রভাষক শাখাওয়াত হোসেন জয়নাল ও নান্নু মেম্বারের সাথে হাত মিলিয়ে গতকাল শনিবার সকালে বহিরাগত লোক নিয়ে অতর্কিতভাবে আমার বাড়িসহ অন্তত ৩০টি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক তাণ্ডব চালায় এবং আগুন ধরিয়ে দেয় ও লুটতারাজ করে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
এসময় হামলাকারীদের বিচার চেয়ে বক্তব্য রাখেন, স্থানীয় বাদশা মোল্যা, ওবায়দুর খা, সুমন সরদার ও নাছিমা বেগম সহ আরো অনেকে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ফরিদপুর ২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহাদাব আকবর লাবু চৌধুরীর আস্থাভাজন সালথা উপজেলা যুবলীগের নেতা সোহেল রানা ফরহাদ মোল্লার অত্যাচারে অতিষ্ঠা ছিলাম আমরা। ৫ আগস্ট স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ফরহাদ মোল্লা খোলশ পাল্টিয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতা ও সালথা সরকারি কলেজের বাংলা প্রভাষক শাখাওয়াত হোসেন জয়নাল ও নান্নু মেম্বারকে সাথে নিয়ে অত্যাচারের মাত্রা আরও বেড়িয়ে দেন আমাদের উপর। ফরহাদ মোল্লার সন্ত্রাসী কর্মকান্ড থেকে বাঁচতে ফরহাদ মোল্লার সহযোগী সহ এই হামলার পিছনে জড়িত সকলকে দ্রুত গ্রেফতার করে  বিচারের আওতায় আনার দাবী করছি। যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
এছাড়া এলাকায় শান্ত পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ও সালথা উপজেলা পুলিশ-প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি আকিকার মাংস ভাগাভাগি নিয়ে স্থানীয় সালথা উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের রাঙ্গারদিয়া গ্রামে শুক্রবার রাতে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। উত্তেজনার মধ্যেই শনিবার সকালে সালথা উপজেলা যুবলীগ নেতা ফরহাদ, স্থানীয় ইউপি সদস্য নান্নু ও স্থানীয় বিএনপি’র প্রভাবশালী নেতা সালথা সরকারি কলেজের বাংলা প্রভাষক শাখাওয়াত হোসেন জয়নাল পাশের যুদনন্দী ইউনিয়নের খারদিয়া, সোনাপুর ও রঙ্গরায়েরকান্দী গ্রাম থেকে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ সহস্রাধিক লোক ভাড়া করে এনে রাঙ্গারদিয়া গ্রামের ১ টি একতলা বিল্ডিংয়ে আগুন ধরিয়ে ৩০টি বসতঘর ভাঙচুর ও লুট করা হয়। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়। আহতদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলার সময় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এসব ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির নারী ও শিশুরা ভয়ে এদিক-ওদিক ছুটাছুটি করতে থাকে। খবর পেয়ে সালথা থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকার পরিবেশ শান্ত রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

ফরিদপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৩৫

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৫, ৮:৩১ পিএম
ফরিদপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৩৫

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আধিপত্য বিস্তার ও শালিশ বৈঠককে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

রবিবার (০২ নভেম্বর) বিকেল চারটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত উপজেলার হামিরদী ইউনিয়নের গুপিনাথপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গুপিনাথপুর এলাকার বাসিন্দা সায়মন শেখ (৫০) গ্রুপ ও কুদ্দুস মুন্সি গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ছোট হামিরদির মোতালেব মাতুব্বরের দোকানে এসে সায়মন শেখ কুদ্দুস মুন্সির লোকজনের সামনে কুদ্দুস মুন্সিকে নিয়ে গালিগালাজ করে। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। এ ঘটনায় রবিবার বিকেলে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে গুপিনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে শালিশ বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সায়মন শেখ গ্রুপ শালিশ বৈঠক প্রত্যাখান করে। পরে এ নিয়ে এক পর্যায়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩৫ জন আহত হন।

স্থানীয় ছোট হামিরদী গ্রামের বাসিন্দা সাহাদাৎ ফকির বলেন, দুই পক্ষের শালিশ বৈঠক ছিল। একপক্ষ শালিশ বৈঠকে উপস্থিত না হলে পরে উভয় পক্ষের লোকজন ঢাল-সরকি,দা-বটি নিয়ে সংঘর্ষ জড়িয়ে পড়ে।

সংঘর্ষে আহত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি সবুজ শেখ বলেন, উভয় পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। আজ একটি বিষয় নিয়ে শালিশ বৈঠকে সায়মন পক্ষের লোকজন হাজির না হলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ লেগে যায়।

এ ব্যপারে কুদ্দুস মুন্সি বলেন, সায়মন শেখের লোকজন শালিশ বৈঠকে উপস্থিত না হয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের লোকজন ওপর হামলা চালায়। এ সময় আমার পক্ষের লোকজনের প্রায় ২০ টি বাড়ি তিনটি দোকান ভাংচুর-লুটপাট করা হয়। এতে আমার পক্ষের কমপক্ষে ২৫ জনের মতো আহত হয়েছেন।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে সায়মন শেখের সঙ্গে মোবাইল একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।

ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা তানসিভ জুবায়ের নাদিম বলেন, সংঘর্ষে গুরুতর আহত চারজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অন্তত ২৫ থেকে ৩০ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আরো রোগী আসতেছে।

ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

ফরিদপুরে জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস পালিত

মাহবুব হোসেন পিয়াল, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৫, ৮:০৬ পিএম
ফরিদপুরে জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস পালিত

জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস উপলক্ষে ফরিদপুরে বর্ণাঢ্য র‍্যালি, আলোচনা সভা ও রক্তদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের আয়োজনে রবিবার (০২ নভেম্বর ) সকাল ১০টায় এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

প্রথমে বর্ণাঢ্য র‍্যালিটি সিভিল সার্জন অফিস প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের সভাকক্ষে গিয়ে শেষ হয়।

পরে সেখানে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সোহরাব হোসেন।

এসময় সন্ধ্যানী ফরিদপুর ডোনার ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. মোস্তাফিজুর রহমান শামিম, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সমাজসেবক অধ্যাপক এম.এ সামাদ, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. আল আমিন সরোয়ার সহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।

সভায় বক্তারা বলেন, রক্তদান একটি মানবিক ও মহৎ কাজ, যা অন্যের জীবন বাঁচাতে সহায়তা করে। সবাইকে সঠিক ও সরকারি নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ব্লাড গ্রুপ নির্ণয় ও দক্ষ টেকনিশিয়ানের মাধ্যমে ব্লাড স্ক্যানিং করানোর আহ্বান জানান তারা।

এছাড়া মরণোত্তর চক্ষুদানের গুরুত্ব সম্পর্কেও আলোচনা হয়। বক্তারা বলেন, চক্ষুদান একটি পবিত্র ও মহৎ কাজ। যে মানুষটি জীবদ্দশায় পৃথিবীর আলো দেখতে পারেননি, তাকে মৃত্যুর পর নিজের চোখ দান করে আলো দেখার সুযোগ করে দেওয়া সবচেয়ে বড় মানবিক অবদান।

বিরল রোগে আক্রান্ত ফরিদপুরের নাঈম, টাকার অভাবে বন্ধ চিকিৎসা!

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৫, ৩:৪৪ পিএম
বিরল রোগে আক্রান্ত ফরিদপুরের নাঈম, টাকার অভাবে বন্ধ চিকিৎসা!

আমরা সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন করলেও আমাদের কারো কারো জীবন নিয়ে অভিযোগের শেষ থাকে না। কিন্তু জন্ম থেকে বিরল চর্ম রোগে (lamellar Ichthyosis) আক্রান্ত হয়ে মারাত্মক শারারিক কষ্টে থেকেও জীবন নিয়ে কোন অভিযোগ নেই আবির হুসাইন নাঈমের। দুঃসহ যন্ত্রণা আর অসুস্থতার মধ্য দিয়েও নিজেকে গড়ে তুলছেন নাঈম।

তিনি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার আলফাডাঙ্গা সদর ইউনিয়নের শুকুরহাটা গ্রামে হাবিবুর রহমান ও রাবেয়া বেগম দম্পত্তির বড় ছেলে। তার বর্তমান বয়স ১৬ বছর। তার ৬ বছরের ছোট ভাই নূর হোসেনেরও একই অবস্থা।

আলফাডাঙ্গা সদর ইউনিয়নের শুকুরহাটা গ্রামের বিস্ময় বালক আবির হুসাইন নাঈমকে শারীরিক অসুস্থতা দমিয়ে রাখতে পারেনি। জীবনের সাথে যুদ্ধ করে চলছে লেখাপড়াও। তিনি এখন ২৭ পাড়া কুরআনের হাফেজ। আগামী বছরের মধ্যে পূর্ণ ৩০ পাড়ার হাফেজ হবেন বলে আশা তার শিক্ষকের।

নাঈম ইছাপাশা কাদিরিয়া হাফিজিয়া নূরানী মাদ্রাসা ও এতিমখানা হেফজ বিভাগের ছাত্র। স্কুলে পঞ্চম শ্রেনিতে জিপিএ ৫ ও বৃত্তি পেয়েছিল সে।

নাঈম বলেন, ‘শরীরে অনেক কষ্ট, ঠিক মতো হাঁটতে পারিনা। চোখে সব সময় পানি পড়ে। রাতে ঘুমাতে পাড়ি না। আগে চিকিৎসা চললেও এখন টাকার অভাবে চিকিৎসা বন্ধ। মা-বাবা অনেক চেষ্টা করেছে। তাদের আর কষ্ট দিতে চাই না বলে কোন কষ্টের কথা কারো কাছে বলি না। আমারও মন চায় সুস্থ হতে অন্যদের মতো সুস্থ ভাবে চলাফেরা করতে। তারপরও জীবন নিয়ে কোন অভিযোগ নেই আমার। আল্লাহর উপর বিশ্বাস রেখে বলেন , তিনি যা ভালো মনে করেছেন আমি তেমন আছি।’

নাঈমের চোখ, মুখ, হাত, পা, নখসহ পুরো শরীরের সমস্থ জায়গায় ফেঁটে গিয়ে রক্তাক্ত হয়ে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। দিনে ৩/৪ বার গোসল করতে হয়। ঘন্টায় ঘন্টায় শরীরে পানি ঢালতে হয় শরীর ভিজিয়ে রাখতে। বেশির ভাগ সময়ই হাত-পা কুঁকড়ে ধরে আসে তার।

চিকিৎসার অভাবে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে ধুকছে দুই ভাই। চিকিৎসা নিতে যেতে হবে ভারতে অথবা উন্নত কোন দেশে, অর্থ সংকটে তা আর হয়ে উঠেনি। চা দোকানি বাবার পক্ষে দুই সন্তানের সুচিকিৎসা করানো দুঃসাধ্য।

শুকুরহাটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনুপ কুমার সরকার বলেন, চা বিক্রেতা হাবিব ভাইয়ের বড় ছেলে আবির হুসাইন আমাদের স্কুলে পড়ালেখা করতো। সে অনেক মেধাবী একজন শিক্ষার্থী। প্রাথমিক সমাপনী পরিক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছিল। ছোট ছেলেকে সবাই ভয় পায়, তার সাথে কেউ মিশতে চায় না বলে নূর
হোসেনকে স্কুলে ভর্তি করাতে পারছে না। এলাকার কোনো বাচ্চা এদের সাথে ভয়ে খেলাধুলা করতে চায় না।

ইছাপাশা কাদিরিয়া হাফিজিয়া নূরানী মাদ্রাসা ও এতিমখানার মহতামিম মুফতি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমাদের এখানে প্রথম যখন আবির হুসাইন ভর্তি হয় তখন অনেকেই তাকে এড়িয়ে চলতো। এখন সে সমস্যা কমে গেছে সবাই স্বাভাবিকভাবে মেনে নিয়েছে। ছাত্র হিসেবে সে অনেক মেধাবী। কারো সাথে কখনো ঝগড়া করে না।

তিনি বলেন, নাঈমের ২৭ পারা কুরআন মুখস্ত হয়ে গেছে। আগামী বছর আল্লাহর রহমতে হাফেজ হয়ে যাবে। তার এখন ভালো চিকিৎসা দরকার। সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের উচিৎ এদের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতা করা।

বাবা হাবিবুর রহমান জানান, দুই সন্তানকে চিকিৎসা করাতে সহায় সম্বল সব ফুরিয়েছি। এখন বাস করা ভিটাটুকু ছাড়া অবশিষ্ট কিছু নেই। চায়ের দোকানের পাশাপাশি ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ করি। ছেলে দুটি বড় হচ্ছে আমার মধ্যে চিন্তা ততই বেড়ে চলছে। কয়েক মাস হলো তাদের চিকিৎসা একেবারেই বন্ধ রয়েছে।

মা রাবেয়া বেগম জানান, স্বাভাবিক জন্ম নেওয়ার পাঁচ মিনিট পর থেকে শিশুদের গায়ের রং কালো হয়ে যায়। এরপর এভাবেই শরীরের কষ্ট নিয়ে আমার সন্তান দুটি বড় হচ্ছে। শরীরের কষ্ট হলেও নাঈম সবার সাথে মিলেমিশে চলছে। ছোট ছেলে নূর হোসেনের সাথে তার সমবয়সীরা খেলাখুলা করতে চায় না। তার সবসময় মন খারাপ থাকে। মা হিসেবে মেনে নিতে পারি না। দুই সন্তানকে সুস্থ ও স্বাভাবিক ভাবে ফিরিয়ে আনতে দেশের সরকার ও সমাজের সহৃদয় বিত্তবানদের কাছে সাহায্য কামনা করি। চিকিৎসা করলে ওরা একটু ভালো থাকতে পারবে।

সাহায্য পাঠানো যাবে, মো.হাবিবুর রহমান, হিসাব নম্বর: ২৮০১৯২২৯৬৮০০১, সিটি ব্যাংক লিমিটেড, আলফাডাঙ্গা শাখা, ফরিদপুর। এবং বিকাশ ও নগদ ০১৯২৩৫২৯৯৩২ (ব্যক্তিগত)।