খুঁজুন
রবিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৫, ২৪ কার্তিক, ১৪৩২

সালথায় বসতবাড়ি ঘেঁষে আ’লীগ নেতার করাতকল, শব্দে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০২৫, ২:৪৩ পিএম
সালথায় বসতবাড়ি ঘেঁষে আ’লীগ নেতার করাতকল, শব্দে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী
নীতিমালা অমান্য করে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের গোপিনাথপুর এলাকায় বসতবাড়ী ঘেঁষে একটি করাতকল (স’মিল) স্থাপন করা হয়েছে। সেই করাতকলের শব্দ ও কাঠের গুড়া উড়ে এসে চোখে পরায় ভোগান্তিতে পড়েছে ওই এলাকার মানুষ। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগকে লিখিত অভিযোগ দিলেও এটি দেখার যেন কেউই নেই। সবাই একে অপরের উপর দায় চাপাচ্ছে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।
পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী কোনো সরকারি অফিস-আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বিনোদন পার্ক, উদ্যান এবং জনস্বাস্থ্য বা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বিঘ্ন সৃষ্টি করে এরূপ কোনো স্থানের ন্যূনতম ২০০ (দুইশত) মিটারের মধ্যে করাতকল স্থাপন করা যাবে না। কিন্তু এ নিয়ম অমান্য করেই চার বছর আগে বসতবাড়ির মাত্র ৫০ মিটার পাশে একটি করাতকল নির্মাণ করেন স্থানীয় আ’লীগ নেতা ও একই উপজেলার গোপিনাথপুর এলাকার মৃত ছব্দু মোল্যার ছেলে মজিবর মোল্যা (৬০)।
চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাঠের গুড়া চোখে গেলে কর্ণিয়া ক্ষতিগ্রস্ত ও গুড়া নিশ্বাসের সঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করলে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যাও হতে পারে। এছাড়া শব্দ দূষণে আশেপাশের পরিবেশ ও জনজীবন স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বসতবাড়ির কাঁচা রাস্তার পাশ ঘেঁষে পশ্চিম পাশে একটি করাতকল গড়ে তোলা হয়েছে। কাঠের গুড়া যাতে উড়ে না আসে সেজন্য টিনের বেড়াও দেয়া হয়নি। তাইতো করাতকলে গাছ কিংবা কাঠ ফাঁড়াই করার সময় গুড়া আশেপাশের বসতবাড়িতে উড়ে যায়। আর শব্দও হয় ভীষণ। এতে শিশু-কিশোররা পড়ালেখা করতে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
গোপিনাথপুর গ্রামের নুর আলম মোল্যা অভিযোগ করে বলেন, যখন করাতকল চালু করা হয় তখন অতিরিক্ত শব্দে পড়ার মনোযোগ নষ্ট হয়। এছাড়া কাঠের গুড়া উড়ে এসে চোখে পড়ে। এছাড়া নিয়মনীতির তোয়াক্কা করে সন্ধ্যার পরেও করাতকল চালানো হচ্ছে। এতে আমাদের খুব কষ্ট হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে মজিবর মোল্যা প্রভাবশালী ও আ’লীগ নেতা হওয়ায় ভয়ে কেউ টুঁশব্দ করতে সাহস পাচ্ছেনা।
এব্যাপারে বক্তব্য জানতে করাতকল মালিক মজিবর মোল্যার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে তার ছেলে নাসির মোল্যা বলেন, করাতকলের আশেপাশে বসতবাড়ি থাকলেও তাদের কোনো অভিযোগ নেই। কিন্তু, একজন লোক স্থানীয় কিছু মানুষের প্ররোচণায় পড়ে আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিচ্ছে। যদিও তাদের ঘর-বাড়িটা আমাদেরই জায়গায়।
এব্যাপারে সালথা উপজেলা বন কর্মকর্তা
নজরুল ইসলাম বলেন, আমাকে ফরিদপুরের সামাজিক বন বিভাগ থেকে একটি চিঠি দিয়েছিল। পরে তদন্ত করে একটি রিপোর্ট প্রদান করা হয়েছে।
এব্যাপারে সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিচুর রহমান বালী বলেন, বিষয়টি আমি অবগত আছি। বনবিভাগকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে বন বিভাগ ওই করাতকলের লাইসেন্স বাতিল করলে, তারপর আইনগত পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এব্যাপারে ফরিদপুরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ গোলাম কুদ্দুছ ভূঁইয়া বলেন, এব্যাপারে গোপিনাথপুর এলাকার রুপালী বেগম নামের একজন নারীর অভিযোগ আমরা পেয়েছি। সরেজমিন তদন্ত করে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় ওই করাতকল মালিককে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) করা হয়েছে। আমরা নোটিশের জবাব পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নিব।

ফরিদপুরে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে আ’লীগের তিন নেতাকর্মী গ্রেপ্তার

নুর ইসলাম, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: রবিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৫, ৫:৫৮ এএম
ফরিদপুরে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে আ’লীগের তিন নেতাকর্মী গ্রেপ্তার

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের একটি মামলায় ইউপি সদস্যসহ আওয়ামী লীগের তিন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শনিবার (০৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় গ্রেপ্তারকৃতদের ফরিদপুর আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজালাল আলম।

এর আগে শুক্রবার (০৭ নভেম্বর) গভীর রাতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উপজেলার পাঁচুড়িয়া ইউনিয়নের চরচাঁদড়া গ্রামের ইউপি সদস্য ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ মোল্যা (৬৭), গোপালপুর ইউনিয়ন মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি চর চান্দরা গ্রামের বাসিন্দা কাজী রুবেল (৩৫) এবং টগরবন্দ ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিন মোল্যা (৩৫)।

থানা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি আলফাডাঙ্গা থানায় আওয়ামী লীগের ১৭০ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে একটি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করেন আলফাডাঙ্গা পৌর সদরের বুড়াইচ এলাকার বাসিন্দা নিনমজুর ইদ্রিস সর্দারের ছেলে বিএনপির সমর্থক লাভলু সর্দার। মামলাটিতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক ও সাংবাদিকদের আসামি করা হয়। এ মামলায় আড়াই থেকে তিন হাজার অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছে। মামলার অজ্ঞাত আসামি হিসেবে ওই তিন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আলফাডাঙ্গা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজালাল আলম বলেন, একটি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ শনিবার তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।

ভাঙ্গায় খেলাফত প্রতিষ্ঠার দাবীতে খেলাফত মজলিসের জনসভা

সোহাগ মাতুব্বর, ভাঙ্গা:
প্রকাশিত: রবিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৫, ৫:৪৫ এএম
ভাঙ্গায় খেলাফত প্রতিষ্ঠার দাবীতে খেলাফত মজলিসের জনসভা

ফরিদপুরের ভাঙ্গার চান্দ্রা ইউনিয়নের উদ্যোগে খেলাফত প্রতিষ্ঠার দাবীতে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (০৮ নভেম্বর) বিকেলে চান্দ্রা ইউনিয়নের দক্ষিণ চরচান্দ্রা গ্রামে দক্ষিণ চরচান্দ্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাঠে সংগঠনটির ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি মাওলানা ইমরান হুসাইনের সভাপতিত্বে ও ভাঙ্গা উপজেলা কমিটির সহ-সভাপতি হাফেজ মাহবুবুল হকের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- দলের জেলা কমিটির সহ-সভাপতি ও ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাওলানা মিজানুর রহমান মোল্লা।

প্রধান আলোচক হিসেবে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ফরিদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মুফতি আবু নাসির আইয়ুবী বক্তব্য প্রদান করেন। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন- জেলা কমিটির সহ-সভাপতি মাওলানা মিজানুর রহমান ফরিদী, ভাঙ্গা উপজেলা কমিটির সভাপতি মাওলানা হাফিজুর রহমান, পৌর কমিটির সভাপতি হাফেজ নূর মোহাম্মদ বাচ্চু মোল্লা, সদরপুর উপজেলা কমিটির সভাপতি মাওলানা সাদিকুর রহমান সিদ্দিকী, চরভদ্রাসন উপজেলা কমিটির সভাপতি মুফতি মো. জাকারিয়া, ভাঙ্গা উপজেলা খেলাফত যুব মজলিসের সভাপতি মাওলানা ওমর ফারুক প্রমুখ।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমাদের সাবেক এমপি সাহেব এই চরাঞ্চলে এসেছিলেন বলে এখানকার মানুষের ভাগ্যের কিছুটা পরিবর্তন হয়েছিল। যদি ইসলামী দল ক্ষমতায় আসে, এ আসনে যদি সমস্ত ইসলামী দলের পক্ষ থেকে এমপি হয় তাহলে এদেশের মানুষের ভাগ্যকে চলমান অবস্থা ও পূর্বের অবস্থা বহাল রাখবে ইনশাআল্লাহ।’

তিনি বলেন, ‘বিগত এক বছরের বেশী সময় ধরে এ অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে বিচরণ করেছি এবং বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের পক্ষ থেকে দাওয়াত দিয়েছি। আজ আমার এ অঞ্চলের মানুষের কাছে এসেছি, আমার অঞ্চলের মানুষ যেভাবে সাড়া দিয়েছে তাতে আমার বুক ভরে গেছে। আমি আশা করি আগামী দিনে এ অঞ্চলের মানুষ বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কর্মী হয়ে তিন থানা মিলে, তথা এ আসনের সমস্ত জায়গায় তারা বিচরণ করে মানুষের ঘুমন্ত হৃদয়কে জাগ্রত করে আগামী জাতীয় নির্বাচনে রিক্সা প্রতীকের যেভাবে জয় জয় আসে তারা সেভাবেই কাজ করে যাবে।’

তিনি আরও বলেন, আমি আশা করি আমার এই ভাঙ্গা, সদরপুর, চরভদ্রাসনের সমস্ত জনগণ বিগত সতেরো বছরে বার বার তারা ভোট দিয়ে যাদেরকে নির্বাচিত করেছে তাদের কাছ থেকে যতটুকু ভালোবাসা, যতটুকু চাহিদা তারা প্রাপ্ত হয়েছে তার চেয়ে ইনশাআল্লাহ শতভাগ বেশী তারা পাবে যদি ইসলামী দল ক্ষমতায় আসে। সাধারণ কিছু মানুষ মনে করে ইসলামী দল যদি ক্ষমতায় আসে তাহলে তাদের জন্য চাপ হয়ে যাবে। আসলে এটা ভুল ধারণা। ইসলাম ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে এসেছে, ইসলাম সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে এসেছে, ইসলাম এদেশ থেকে অন্যায়, অত্যাচার, জুলুম উৎখাত করতে এসেছে। বিগত একটি বছরে বিভিন্ন দল
তাদের নীতি – আদর্শে যে কার্যক্রম চালিয়েছে তাতে ইসলামী দলের কোন বিকল্প নেই। কারণ ইসলামী দলের এমন কোন বদনাম ছড়ায়নি তারা কোথাও টেন্ডারবাজি করেছে, চাঁদাবাজি করেছে, পাথর দিয়ে থেতলে মানুষ হত্যা করেছে। ইসলামী দলের যে সকল নেতা আগামীতে নির্বাচন করতে যাচ্ছে তারা মানুষের সেবা ও কল্যাণ নিয়ে ভাবে। তারা আল্লাহকে ভয় পায়। তারা কোন দিন মানুষের অধিকার ছিনিয়ে নিতে পারে না, তারা মানুষকে পুলিশ দ্বারা হয়রানি করতে পারে না, তারা মানুষের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে জানে না।’

তিনি তার নির্বাচনী এলাকার মানুষের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমি আপনাদের উদাত্ত আহ্বান জানাবো এ আসনের সমস্ত জনগণ ও আমার এলাকার সমস্ত জনগণকে, যাতে আমি আগামী নির্বাচনে আপনাদের ভোট দ্বারা নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের পক্ষ থেকে সংসদে গিয়ে আপনাদের জন্য কাজ করে যেতে পারি, সুন্দর একটি সমাজ উপহার দিতে পারি, এদেশ থেকে মাদক, সন্ত্রাস উৎখাত করে সুন্দর একটি দেশ আপনাদের উপহার দিতে পারি এবং সুন্দর মডেল ফরিদপুর ৪ উপহার দিতে পারি।’

ফরিদপুরে ধানের চেয়ে খড়ের ‘দাম বেশি’, গো-খাদ্যের সংকটে বিপাকে কৃষক

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: রবিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৫, ৫:২১ এএম
ফরিদপুরে ধানের চেয়ে খড়ের ‘দাম বেশি’, গো-খাদ্যের সংকটে বিপাকে কৃষক

ফরিদপুরে ধানের চেয়ে খড়ের দাম বেশি। তাইতো গো-খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এতে কৃষক পড়ছে বিপাকে। স্থানীয় বাজারগুলোতে এ দৃশ্য চোখে পড়ছে হরহামেশাই।

গ্রামের কৃষি জমিতে গড়ে উঠছে ৮-১০ বিঘা জমি নিয়ে ইটের ভাটা। কৃষি জমি আটকিয়ে কেউ করছেন মুরগির ফার্ম। কেউবা কৃষি জমিতে পুকুর কেটে করছেন মাছের চাষ।

পুকুরের উপর মাচায় করছে সোনালি মুরগী বা বয়লার পালন। কেউ করছেন কোয়েল পাখি, কেউ করছেন কবুতর। মাচার নিচে পানিতে মাছ, সাথে হাঁসও পালন করছেন।

এ কারণে ফরিদপুরে চর এলাকা ও গ্রামগুলোতে দিন দিন কমে আসছে আবাদি জমি। গেরস্তের ক্ষেত-খোলা কমে যাওয়া গো-খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে। সংকীর্ণ হয়ে আসছে ফসলের মাঠ। সাথে গ্রামগঞ্জেও অপরিকল্পিতভাবে পাল্লা দিয়ে গড়ে উঠছে পাকা ইমারত। ফলশ্রুতিতে, কমে আসছে চাষের জমি। হ্রাস পেয়েছে মাঠের ঘাঁস। ফলে একমাত্র ধানের বিচালি খড় এবং শুকনা ও কাঁচা খড় নির্ভর হয়ে উঠছে গবাদি পশুর মালিকরা।

এদিকে, পদ্মার পানি দ্রতই কমে আসছে। জেগে উঠছে চর। পদ্মা শুকিয়ে জেগে উঠছে চর, তীব্র তাপদহনে মরে গেছে চরের ঘাস। বোরো মৌসুমে অনিয়মিত বৃষ্টিপাত এবং আবহাওয়ার কারণে কৃষকরা পর্যাপ্ত পরিমাণ খড় ঘরে তুলতে পারেননি। ফলে বাজারে খড়ের সরবরাহ কমে গিয়ে দাম বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। বর্তমানে ফরিদপুর শহর -উপশহর এবং চর এলাকা পর্যন্ত গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে।

এক মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকায়। অথচ সেই ধানের খড় বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা মণে। কি আজব।

সরেজমিনে ফরিদপুর সদরের কবিরপুর চরের হাট-টেপাখোল গো-হাটে গিয়ে খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় খড় বিক্রেতা মো. ইসলাম পাবনা থেকে এক ট্রাক খড় এনে প্রতিটি আটি ১১ থেকে ১২ টাকায় বিক্রি করছেন। যারা হাতে কেটে খুচরা গেরস্তের কাছে বিক্রি করছেন তারা আরেকটু বেশি দামে।

ফরিদপুর নৌ-বন্দরঘাট এলাকায় খড় বিক্রি করে মো. এনায়ত হোসেন।
তিনি বলেন, ‘খড় বিক্রিতে সামান্য কিছু লাভ থাকে, কিন্তু চাহিদা এত বেশি যে- পাইকাররা আমার কাছ থেকে কিনে বিভিন্ন হাটবাজারে আরও বেশি দামে বিক্রি করছে। ফলে সেই অতিরিক্ত দামের বোঝাটা চাপে কৃষকদের উপর।

নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের আক্কাসের হাটের (চর এলাকা) কৃষক জলিল মৌলভি বলেন, আমরা ভেবেছিলাম ধান বিক্রি করে কিছু লাভ হবে। গবাদি পশুর খাওয়ানোর জন্য খড় কিনতে হবে না। এখন আমরা ভাত খাবো না গরুকে খড় খাওয়াবো সেটাই ভেবে পাচ্ছি না। যে হারে দাম বাড়ছে তাতে কিভাবে এই খড় কিনব ভবিষ্যতে সেটাই এখন ভাবছি।

ডিক্রীরচর গেন্দু মোল্যা খেয়া ঘাট এলাকার গো- খামারী মো. রহমান জানান, আমার ৮টি গরু আছে। কিন্তু বোরো মৌসুমে খড় সংগ্রহ করতে না পারায় এখন বাজার থেকে বেশি দামে খড় কিনে খাওয়াতে হচ্ছে। এতে গরু লালন-পালনে খরচ বেড়ে গেছে বহুগুণে। নিজেরা খাবো নাকি গরু খাওয়াবো।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন খড় ব্যবসায়ী বলেন, ‘ইদানীং যারা তোষক গদি, ছোপা তৈরি করেন তারাও প্রচুর পরিমানে খড় কিনছেন।

তিনি বলেন, গরুর পাইকার এবং খামারিরাই খড় কিনবে না-কি লেপ তোষক বানানো লোকের খড় কিনবে। সব মিলে এখন খারাপ অবস্থা।

ফরিদপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হেসেন জানান, গবাদি পশুর খাদ্যের ঘাটতি এবং খামারি সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে খড়ের চাহিদা অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে।