খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ৮ মে, ২০২৫, ২৫ বৈশাখ, ১৪৩২

সালথার আলোচিত কাসেম হত্যা : ১১ জনের জামিন মঞ্জুর 

ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৯:৫২ পিএম
সালথার আলোচিত কাসেম হত্যা : ১১ জনের জামিন মঞ্জুর 
ফরিদপুরের সালথার আলোচিত কাসেম হত্যায় ১১ জন আসামিকে জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (০৪ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে ফরিদপুর জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাড. ইব্রাহিম হোসেন ওই ১১ আসামির জামিন মঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অ্যাড. ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘আসামিরা আদালতে আত্মসমর্পণ করে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন চেয়েছিলেন। আদালত শুনানি শেষে তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
এর আগে রোববার (০৩ ফেব্রুয়ারী) সকাল ১১ টার দিকে ফরিদপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জিয়া হায়দার এ জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিন পাওয়া ১১ আসামি হলেন- সানোয়ার শরীফ, সানোয়ার শরীফ, মোশারফ, ওহিদ খাঁ, আনোয়ার, লিমন, শহিদ মাতুব্বর, আরফিন, জনি, রেজাউল মাতুব্বর, মো. শহিদ। তাদের সবার বাড়ি বালিয়াগট্টি ও আশেপাশের এলাকায়।
প্রসঙ্গ, গত ১৪ অক্টোবর ফরিদপুরের সালথার গট্টি ইউনিয়নের জয়ঝাপের ইমামবাড়ী এলাকায় এক তরুণীকে উত্ত্যক্তের জের ধরে বখাটেদের চাকুর আঘাতে খুন হন কাসেম বেপারী (২৮) নামে এক যুবক। এ মামলায় নিরীহ মানুষদের হয়রানির উদ্যেশ্যে আসামি করার অভিযোগ উঠে।
এ হত্যাকে পুঁজি করে  উপজেলার বালিয়াগট্টি, দোহার গট্টি, বড় বালিয়া, ছোট বালিয়া, পাটপাশা, জয়ঝাপসহ আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষকে হত্যা মামলায় আসামি করার ভয় দেখিয়ে ও ঘরবাড়ি লুটপাট এবং আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে কোটি টাকার চাঁদাবাজি করা হয় বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এছাড়া দোকান-পাট, ঘরবাড়ি লুটসহ এলাকায় হাতুড়ি বাহিনী দিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েমের বিস্তর অভিযোগ উঠে।
এরই ধারাবাহিকতা গত বছরের ২০ অক্টোবর রাতে জেলার সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের আড়ুয়াকান্দি, মেম্বার গট্টিসহ আশপাশের এলাকায় চাঁদাবাজির অভিযোগে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। এলাকায় তখন কিছুটা স্বস্তি মিললেও ফের হাতুড়ি বাহিনির উত্থান হয়েছে বলে স্থানীয়দের দাবি।

ফরিদপুরে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৮ মে, ২০২৫, ১০:২৬ এএম
ফরিদপুরে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার গোপালদী গ্রামে স্ত্রীকে হত্যার দায় স্বামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লক্ষ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (০৭ মে) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) শামীমা পারভীন এ আদেশ দেন।
সাজাপ্রাপ্ত নুর আলম ওরফে হুমায়ুন(৩৪) মধুখালী উপজেলার গোপালদী গ্রামের মোঃ শহীদ শেখের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় নুর আলম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাকে পুলিশ প্রহরায় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, নিহত ওই নারীর বাড়ি ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার দয়ারামপুর গ্রামে। মেয়ে হত্যার দায়ে তার পিতা কুতুব উদ্দিন মোল্লা গত ২০১৮ সালের ২৫ অক্টোবর স্থানীয় থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার বিবরনে উল্লেখ করা হয়, গত ২০১৮ সালের ২৩ অক্টোবর দিবাগত রাত পৌনে একটার সময় আমার মেয়ের স্বামীর বাড়ি উপজেলার গোপালদী গ্রামে তার পরিবারের লোকজন যোগসাজশে যৌতুকের জন্য আমার মেয়েকে তাদের নিজ বাড়িতে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর আমার মেয়ে বিষপান করে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচারণা চালায়। এ বিষয়ে আমাকে এবং আমার পরিবারের কাউকে কিছু জানান না তার স্বামীর বাড়ির লোকজন। পরদিন ২৪ অক্টোবর ভোর ছয়টার সময় প্রতিবেশীদের মাধ্যমে ফোনে আমরা বিষয়টি জানতে পারি। ওই বাড়িতে গিয়ে পরিবারে কোন লোকজনকে না দেখে আমরা বিষয়টি পুলিশকে জানাই। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
এর সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট গোলাম রব্বানী ভূঁইয়া রতন জানান, মামলাটিতে মোট ১২ জন সাক্ষী দেন। সকল আলামত ও সাক্ষীদের জবানবন্দীতে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত এই রায় দেন।

সালথায় যুবলীগ নেতার ভাইকে গ্রেপ্তার করায় বিএনপি নেতার ভাইকে হাতুড়িপেটা

সালথা (ফরিদপুর) উপজেলা সংবাদদাতা:
প্রকাশিত: বুধবার, ৭ মে, ২০২৫, ১২:০৭ পিএম
সালথায় যুবলীগ নেতার ভাইকে গ্রেপ্তার করায় বিএনপি নেতার ভাইকে হাতুড়িপেটা
ফরিদপুরের সালথায় মো. কবির মোল্যা (৩৮) নামে এক ইউপি সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাকে গ্রেপ্তারের একঘণ্টা পর তার সমর্থকরা স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতার বড় ভাই মো. বাবলু মাতুব্বরকে (৫৫) হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বুধবার (০৭ মে) সকালে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে মঙ্গলবার (০৬ মে) বিকাল ৪ টার দিকে উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের মাঝারদিয়া বাজারে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহত বাবলু মাঝারদিয়া ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা সলেমান মাতুব্বরের ছেলে ও উপজেলা স্বোচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মো. হারুন মাতুব্বরের বড় ভাই। এর আগে একইদিন বিকাল ৩টার দিকে ইউপি সদস্য কবির মোল্যাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কবির মাঝারদিয়া গ্রামের আইজদ্দী মোল্যার ছেলে ও  মাঝারদিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মুরাদ মোল্যার ছোট ভাই।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মো. হারুন মাতুব্ব বলেন, মঙ্গলবার বিকেল ৩ টার দিকে যুবলীগ নেতা মুরাদের ভাই মাঝারদিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কবির মোল্যাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে ১০-১২ টি মামলা রয়েছে। ওয়ারেন্টও আছে। যে কারণে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। কবিরকে গ্রেপ্তারের বিষয় আমার ভাই বাবলু কিছুই জানে না। অথচ কবিরকে গ্রেপ্তার করায় তার সমর্থকরা আমার নিরহ ভাইকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।  আমি এর সঠিক বিচার চাই।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, ইউপি সদস্য কবির মোল্যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ১২টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় ওয়ারেন্ট রয়েছে। গ্রেপ্তারের পর হামলার বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফরিদপুরে শিশু মেয়েকে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দিলেন বাবা!

ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: বুধবার, ৭ মে, ২০২৫, ১২:০৩ পিএম
ফরিদপুরে শিশু মেয়েকে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দিলেন বাবা!
ফরিদপুরের নগরকান্দায় পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে নির্যাতন করে মৌখিকভাবে তালাক দেয়ার পর ৮ মাস বয়সী শিশু মেয়েকে ছিনিয়ে নিয়ে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে। ঘটনার পর মা পপি বেগম থানা পুলিশ থেকে শুরু করে আদালতে গিয়েছেন নিজের মেয়েকে ফিরে পেতে। আদালত শিশুটিকে খুঁজে দিতে পুলিশকে নির্দেশ দিলেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে নগরকান্দা উপজেলার ফুলসূতী  ইউনিয়নের রামপাশা গ্রামে।
শিশুটিকে ফিরে পেতে ফরিদপুরের এক নম্বর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন শিশুর মা পপি বেগম। ওই মামলায়- স্বামী কাইয়ুম বিশ্বাস (৪০), তাঁর তিন বোন মিতা আক্তার, বুলি বেগম, সাগরী আক্তারসহ মোট পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।
গত ৯ ডিসেম্বর এ মামলাটি দায়ের করা হয়। এর প্রেক্ষিতে আদালত গত ১৯ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য প্রতিবেদনসহ নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)র বরাবর সার্চ ওয়ারেন্ট ইস্যু করেন।
জানা যায়, তিন বছর আগে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার ভাবড়াশুড় ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের হান্নান সরদারের মেয়ে পপি বেগমের সাথে পাশের ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ফুলসূতি ইউনিয়নের রামপাশা গ্রামের মানিক বিশ্বাসের ছেলে কাইয়ুম বিশ্বাসের পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। বিয়ের পর থেকে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো। এর মাঝে তাদের একটি মেয়ে শিশুর জন্ম হয়। গত পাঁচ মাস আগে কলহের জের ধরে তালাক হয়।
ভুক্তভোগী পপি বেগম জানান- তালাকের সময় জোর করে তার শিশু তানহাকে রেখে দেয় তার স্বামী। পরে শিশুকে একই উপজেলার শাখরাইল গ্রামের কুবাদ শেখের মেয়ে কহিনুর বেগমের নিকট দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করেন। আর এই বিক্রির মধ্যস্থতা করেন নগরকান্দার দলিল লেখক আলমগীর তালুকদার।
পপি বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার বাঁচ্চাডারে দেখবার জন্য রাতে ঘুম হয় না, খাবার পারিনা। আমার কলিজাডা শুকায় গেছে। যার কাছে বাঁচ্চা বিক্রি করা হয়েছে তাঁর মায়ের পা পর্যন্ত জড়ায় ধরছি, তবুও দেখতে দেয় নাই।
তবে এ সংক্রান্ত মামলা হওয়ার পর পপি বেগমের স্বামী কাইয়ুম বিশ্বাস আত্মগোপন করেন। তবে কাইয়ুম বিশ্বাসের বোন মিতা আক্তারের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে কল করলে একজন পুরুষ ব্যক্তি কলটি ধরে  মিতার স্বামী পরিচয় দেন এবং ব্যস্ত আছেন বলে কেটে দেন।
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ সফর আলী জানান, আদালত আমাদের কাছে প্রতিবেদন চেয়েছে, সে অনুযায়ী কাজ চলছে। কিন্তু অভিযোগে বাঁচ্চাটি বিক্রির যে ঠিকানা দেয়া হয়েছে, সেখানে খুঁজে পাওয়া যায়নি। শিশুটিকে খুঁজে পেলে আদালতে পাঠিয়ে দেয়া হবে।