খুঁজুন
শনিবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৫, ৮ ভাদ্র, ১৪৩২

নগরকান্দায় ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি-সম্পাদকের ওপর ছাত্রলীগের হামলা

নগরকান্দা প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: সোমবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৫, ৬:২৩ পিএম
নগরকান্দায় ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি-সম্পাদকের ওপর ছাত্রলীগের হামলা

ফরিদপুরের নগরকান্দায় ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে।

জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে সোমবার (১৮ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে উপজেলা হলরুমে আয়োজিত আলোচনা সভা শেষে এই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় নগরকান্দা উপজেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি আজিম মাতুব্বর সাগর (২৫) ও সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুজ্জামান (২৮) গুরুতর আহত হন। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

হামলার শিকার উপজেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অভিযোগ, সাবেক ছাত্রলীগ কর্মীরা কমিটিতে প্রবেশের চেষ্টা করছিল। এতে বাঁধা দেওয়ায় আজ তাদের ওপর এ হামলা চালানো হয়।

উপজেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি আজিম মাতুব্বর সাগর বলেন, জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা শেষে আকস্মিক এ হামলার ঘটনা ঘটে। সাবেক ছাত্রলীগ কর্মীরা গণঅধিকার পরিষদের কমিটিতে প্রবেশের চেষ্টা করছিল। এতে বাঁধা দেওয়ায় আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল তারা। আজকে সুযোগ পেয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় আমি ও সাধারণ সম্পাদক আহত হয়েছে।

নগরকান্দা থানার এসআই (উপ-পরিদর্শক) মো. ইরান হোসেন বলেন, এ ঘটনায় থানায় কোন অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. দবির উদ্দিন বলেন, আমি থাকাকালীন সময়ে হামলার কোন ঘটনা ঘটেনি। অনুষ্ঠান শেষ করে আমি জেলায় চলে আসি। পরে হয়তো কোন ঘটনা ঘটতে পারে, যা আমার জানা নেই।

ফরিদপুরের লোকালয়ে হনুমান, মানুষের সঙ্গে গড়ছে সখ্যতা

মো. ইকবাল হোসেন, আলফাডাঙ্গা:
প্রকাশিত: শনিবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৫, ১১:৪১ এএম
ফরিদপুরের লোকালয়ে হনুমান, মানুষের সঙ্গে গড়ছে সখ্যতা

প্রকৃতির ওপর বিরূপ প্রভাবের ফলে বন্য প্রাণীরা এখন অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। তাইতো এবার খাদ্যের সন্ধ্যানে লোকালয়ে দেখা গেলো দলছুট মুখপোড়া এক হনুমানকে। বন-জঙ্গলের পরিসর সীমিত হয়ে আসায় এসব প্রাণীরা খাদ্যের সন্ধ্যানে চলে আসছে লোকালয়ে।

বেশ কিছু দিন ধরে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা পৌরসভার বাকাইল, নওয়াপাড়া, শ্রীরামপুর গ্রামে ও সদর বাজারের এলাকাতে একেবারে কাছাকাছি ঘোরাফেরা করছে দুইটি হনুমান। সাধারণ মানুষের সাথে বেশ সখ্যতা গড়ে তুলেছে হনুমানটি। এটি এক নজর দেখার জন্য গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ও কৌতুহলী মানুষ ভিড় জমাচ্ছে।

হনুমানটিকে দেখতে আসা বাকাইল গ্রামের ভ্যান চালক আইয়ুব বিশ্বাস জানান, আমি সকাল বেলা হনুমান দুটিকে আলফাডাঙ্গা- গোপালপুর সড়কের বাঁকাইল গ্রামের একটি বাড়ির বাউন্ডারির দেওয়ালের ওপর দেখতে পাই। তখন বিস্কুট ও কলা খেতে দিয়েছি।

হনুমানকে খাবার দিতে আসা একই গ্রামের কিরণ বালা জানান, আলফাডাঙ্গাতে সাধারণত হনুমান দেখা যায় না। মূলত খাবারের সন্ধানে তারা মানুষের কাছে ছুঁটে এসেছে। ঝুঁকি নিয়ে গাছের ডালে, ঘরের চালে অথবা বাড়ির ছাদে অবস্থান করছে। এখনো পর্যন্ত হনুমান করো ওপর আক্রমণ করেনি। এ সময় তিনি উৎসুক সকলকে হনুমানটিকে বিরক্ত করতে নিষেধ করেন।

আলফাডাঙ্গা উপজেলা বন কর্মকর্তা শেখ লিটন জানান, যেহেতু হনুমান দুুটি দলছুট হয়ে লোকালয়ে এসেছে, এটিকে কেউ বিরক্ত না করলে আপনা-আপনি সে তাঁর আবাসস্থলে ফিরে যাবে।

ফরিদপুরে গরুর মাংসের টুকরোতে আল্লাহর নাম, এক নজর দেখতে ভিড়

ইনামুল খন্দকার, মধুখালী:
প্রকাশিত: শনিবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৫, ১০:৩২ এএম
ফরিদপুরে গরুর মাংসের টুকরোতে আল্লাহর নাম, এক নজর দেখতে ভিড়

ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার মুদি দোকানী মো. শহিদুল বিশ্বাসের বাড়িতে রান্না করা কুরবানীর গরুর গোশতের টুকরোর ওপর অলৌকিকভাবে ‘আল্লাহ’ লেখা নামটি ভেসে ওঠে। পরে বাড়ির লোকেরা ‘আল্লাহ’ লেখা গোশতের টুকরোটিকে সংরক্ষণ করেন। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

শুক্রবার (২২ আগস্ট) মিলাদ মাহফিল করে পরিষ্কার পানিতে ওই মাংসের টুকরো ফেলে দেওয়া হয়।

এর আগে মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট ) দুপুরে উপজেলার মেগচামী ইউনিয়নের চরবামুন্দী মধ্যপাড়া গ্রামের শহিদুল বিশ্বাসের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাংসের এক পিঠে আরবি হরফে ‘আল্লাহ’ এবং অপর পিঠেও আল্লাহ’ লেখা রয়েছে। মাংসের টুকরোটি দেখতে এলাকার বিভিন্ন বয়সী মানুষ বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন।

মো. শহিদুল বিশ্বাস বলেন, কুরবানির মাংস ফ্রিজে রাখা হয়েছিল আত্মীয় স্বজন বাড়িতে আসায় কুরবানির মাংস দুপুরে রান্না করার পর খাবার সময় দেখতে পায় প্লেটের এক টুকরা মাংসে আরবি হরফে ‘আল্লাহ’ লেখা রয়েছে এবং অপর পিঠে ও আল্লাহ’ লেখা। পরে স্থানীয় মসজিদের ইমামের পরামর্শ নিয়ে মাংসের টুকরা সংরক্ষণ করে রেখেছি।

স্থানীয় পশু ডা. মোঃ শরিফুল ইসলাম বলেন, মাংসের টুকরাটি এক নজর দেখতে আসছি। সব আল্লাহর গরু রহস্য জানি না ভালো হবে কি না। তবে গরুর গোশতে উপর আল্লাহ লেখা এমন ঘটনায় আল্লাহর কাছে শুকরিয়া।

গোশতের টুকরা দেখতে আসা রেজাউল ইসলাম বলেন, এমন ঘটনা এর আগে টিভি-পত্রিকায় দেখেছি-পড়েছি। তবে এবার বাস্তবে দেখলাম। মহান আল্লাহের অলৌকিক ক্ষমতা দেখতে পেয়ে খুব ভাগ্যমান মনে হচ্ছে।

এলাকাবাসী জানান, মহান আল্লাহর এমন নাম অনেক সময় আমরা ফেসবুক ও মিডিয়ায় দেখতে পাই। এবার আমাদের গ্রামে এমন ঘটনা ঘটেছে। সৃষ্টিকর্তার এটি অলৌকিক ক্ষমতা।

 

ভরা মৌসুমেও ইলিশ শূন্য ফরিদপুরের পদ্মা

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শনিবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৫, ৭:১৩ এএম
ভরা মৌসুমেও ইলিশ শূন্য ফরিদপুরের পদ্মা

ইলিশের ভরা মৌসুমেও ইলিশ শূন্য ফরিদপুরের সদরপুরের পদ্মা নদীতে। জেলেদের জালে আগের মতো ধরা পরছেনা ইলিশ। নদীতে জাল ফেলে ইলিশ না পেয়ে জেলেরা ফিরছে শূন্য হাতে। এ উপজেলার বহু জেলে পদ্মায় কাঙ্খিত ইলিশ না পাওয়ায় পেশা পরিবর্তন করে ফেলছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হঠাৎ করে পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মাছ আগের মতো পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়াও মেঘনা নদী ও সমূদ্র উপকূলে অধিক পরিমাণে ইলিশ শিকার হওয়ায় পদ্মায় আর তেমন ইলিশ ঢুকতে পারে না৷ পদ্মায় যে ইলিশ পাওয়া যায় তা আকারে ছোট, যদিও বড় কিছু পাওয়া যায় তাও খুব অল্প পরিমাণে৷ যে কারণে সেসব বড় ইলিশের প্রচুর দাম হয়ে থাকে। যা সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে।

উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সদরপুর উপজেলার দিয়ারা নারিকেল বাড়িয়া, ঢেউখালী, আকোটের চর ও চর নাসিরপুর ইউনিয়নের জেলেরা মূলত ইলিশ শিকার করে থাকেন। এ ইউনিয়ন গুলোর প্রায় ৭ হাজার মানুষ ইলিশ শিকার পেশায় জড়িত রয়েছে। যার মধ্যে কার্ডধারী জেলে রয়েছে প্রায় ৬৫০ জনের মতো। তবে দ্রুত কার্ডধারী জেলের সংখ্যা আরো বাড়ানো হবে।

নদীতে মাছ ধরতে আসা জেলে মো. মোকলেছুর রহমান জানায়, ‘গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি উপেক্ষা করে পদ্মায় গিয়ে এক প্রকার খালি হাতেই ফিরে এসেছি। ৬/৭ জন মিলে যাও কয়টা ইলিশ পেয়েছি তা বেঁচে তেলের পয়সাও ঠিক মতো উঠে না৷ আমাদের খাটুনির কথাতো বাদই দিলাম৷’

আরেক জেলে আবুল ফরাজি জানায়, ‘গত এক সপ্তাহ ধরে নদীতে জাল ফেলে কাংঙ্খিত ইলিশের দেখা পাচ্ছি না। কালেভদ্রে দু’একটি পেলেও তা সাইজে অনেক ছোট। আমাদের পেশা ইলিশ ধরা। আমরা যদি ইলিশই না ধরতে পারি তাহলে পরিবার নিয়ে বাঁচবো কিভাবে। বাপ-দাদার পেশা চাইলেও পরিবর্তন করতে পারিনা৷’

ঢেউখালী ইউনিয়নের পিয়াজখালী বাজারের ইলিশ মাছ ব্যবসায়ী মো. জয়নাল মোল্যা জানান, ‘ভাদ্র মাস গেলে সামনে ভালো পরিমাণে ইলিশ মাছ পাওয়া যাবে। ১০/২০ বছর আগের তুলনা এখন আর দিয়ে লাভ নাই। বিগত কয়েক বছর ধরে ইলিশ খুব কমই পওয়া যাচ্ছে পদ্মায়। আগে ইলিশ পাওয়া যেত বেশি, দাম ছিলো কম৷ আর এখন ইলিশ পাওয়া যায় কম, কিন্তু দাম অনেক বেশি। বর্তমানে পদ্মার একটি ১ কেজি সাইজের ইলিশ ৩/৪ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ছোট সাইজও ১/২ হাজারের কম না।’

আকোটের চর ইউনিয়নের কালিখোলা বাজারে ইলিশ কিনতে আসা ক্রেতা শহিদুল মুন্সী জানান, বাড়িতে মেহমান আসছে, তাই সেই ফরিদপুর সদর থেকে আসছিলাম পদ্মার তাজা ইলিশ কিনতে। এসে দেখলাম ইলিশ কিছু আছে তবে দাম আকাশছোঁয়া। সাইজেও ছোট সব৷ যদিও এক ডালা ছোট সাইজের ইলিশ কিনেছি তবে অনেক দাম দিয়ে৷ যদি বাজারে ইলিশের পরিমাণ বেশি থাকতো তাহলে হয়তো আরো কম দামে কিনতে পারতাম।

সদরপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসান জানান, ‘পানি প্রবাহের সাথে ইলিশের আনাগোনার একটা ভালো সম্পর্ক রয়েছে। নদীতে পনি বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন জেলেদের জালে তুলনামূলক ইলিশ কম ধরা পড়ছে। বিগত ২ সপ্তাহ হলো মেঘনাতে বেশ ভালো পরিমাণে ইলিশ ধরা পরছে। সে হিসাবে আমরা আশা করতে পারি পানি একটু কমলে পদ্মায়ও ভালো পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়বে।’

এ বিষয়ে সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকিয়া সুলতানা জানান, ‘আমরা যদি ইলিশের প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ ধরা বন্ধ করি এবং জাটকা ইলিশ ধরা থেকে বিরত থাকি তাহলে কিন্তু ইলিশের উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হবে। আমরা উপজেলা প্রশাসন সরকারি নিষেধাজ্ঞার সময় নিয়মিত পদ্মায় অভিযান পরিচালনা করি। ওই সময়ে পদ্মায় ইলিশ শিকার করলে জেলেদের জেল-জরিমানাও করি কিন্তু তার পরেও বহু জেলে লুকিয়ে এবং রাতের আধারে ইলিশ শিকার করে। এতো বিশাল পদ্মায় ২৪ ঘন্টা অভিযান পরিচালনা করেও একেবারে ইলিশ শিকার বন্ধ করা সম্ভব হয়না। জেলেরা যদি প্রতি বছর সরকারি নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি মানতো তাহলে হয়তো ইলিশ সংকট কিছুটা হলেও দূর করা যেত।’