খুঁজুন
সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫, ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

ফরিদপুরে কবি আব্দুল লতিফ ভূঁইয়ার ২০ তম ‌ মৃত্যুবার্ষিকীতে আলোচনা সভা

মানিক কুমার দাস, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫, ৯:৪৫ এএম
ফরিদপুরে কবি আব্দুল লতিফ ভূঁইয়ার ২০ তম ‌ মৃত্যুবার্ষিকীতে আলোচনা সভা

বহু গ্রন্থের প্রণেতা ‌ ও বিভিন্ন সংগঠনের পৃষ্ঠপোষক ‌ কবি আব্দুল লতিফ ভূঁইয়ার ২০ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ফরিদপুরে ‌আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (০৪ জুলাই) সন্ধ্যায় ‌ কবি আব্দুল লতিফ ভূঁইয়া ফাউন্ডেশন এর আয়োজনে ‌ এবং ‌ ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদ ‌এর সহযোগিতায় শহরের টেপাখোলায় অবস্থিত কোহিনুর পাবলিক লাইব্রেরীতে এ আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

আব্দুল লতিফ ভূঁইয়া ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক ‌ আব্দুস সামাদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- ‌ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের সভাপতি ‌ অধ্যাপক আলতাফ হোসেন, যশোর শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ‌ বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক এবিএম সাত্তার, ‌ প্রবীণ ‌হিতৈষী সংঘের ‌ সভাপতি ডাক্তার আব্দুল জলিল, ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের ‌ সাধারণ সম্পাদক ‌সাংবাদিক ও সাহিত্যিক ‌ মফিজ ইমাম মিলন, খেলাঘর ফরিদপুর শাখার সভাপতি ‌ আলতাফ হোসেন, জেলা শিল্পকলা একাডেমীর ‌ কালচারাল অফিসার ‌ সাইফুল হাসান মিলন, এফ ডি এর নির্বাহী পরিচালক ‌ মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম, ফরিদপুর ‌সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংস্থার আহ্বায়ক তৌহিদুল ইসলাম স্ট্যালিন,‌ লোক সাহিত্য গবেষক ‌ খলিলুল্লাহ দিল দরাজ , খেয়া ‌ সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সভাপতি ‌ ম নিজাম, সাংবাদিক ও সাহিত্যিক ‌ বিজয় পোদ্দার, কবি মাহফুজ খান বাদল, জেবা তাবাসসুম নেহা ‌ প্রমুখ।

অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ‌ ইঞ্জিনিয়ার জাহিদুল ইসলাম।

সভায় বক্তারা ‌কবি আব্দুল লতিফ ভূঁইয়ার ‌ জীবন ও কর্ম তুলে ধরে আলোচনা করেন। তারা বলেন ‌ফরিদপুরের সাহিত্য অঙ্গনে ‌ আব্দুল লতিফ ভুঁইয়ার অবদান ‌চির স্মরণীয় থাকবে। তিনি শুধু একজন ভালো ‌সাহিত্যিক ছিলেন না ভালো মনের মানুষ ছিলেন। অত্যন্ত সৎ ও সাদা মনের মানুষ ছিলেন।‌ সব সময় মানুষের সুখে দুঃখে পাশে থাকবেন।
ফরিদপুরের সাহিত্যঙ্গনে ‌ তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল ‌।

তিনি অসংখ্য কবি সাহিত্যিক ‌ বইয়ের প্রকাশক ছিলেন । মানুষের কল্যাণে তিনি নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন। অনুষ্ঠানের পরবর্তী পর্বে ‌ ‌ মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া‌ মোনাজাত ‌ অনুষ্ঠিত হয় ‌।

অনুষ্ঠানে তাঁর পুত্র ‌ অ্যাডভোকেট ‌ গোলাম রব্বানী ভূঁইয়া রতন, ফরিদপুর জেলা ‌ বিএনপির সদস্য ‌সচিব ‌ এ কে এম কিবরিয়া স্বপন, ফরিদপুর প্রেসক্লাবের ‌ সাধারণ সম্পাদক মাহবুব পিয়াল সহ স্থানীয় ও গণ্যমান্য ‌ ব্যক্তিবর্গ ‌ উপস্থিত ছিলেন।

ফরিদপুর মহানগর যুবদলের সভাপতি তাবরীজের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫, ৯:৪৮ পিএম
ফরিদপুর মহানগর যুবদলের সভাপতি তাবরীজের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও দলের নীতি-আদর্শ পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ফরিদপুর মহানগর যুবদলের সভাপতি বেনজীর আহমেদ তাবরীজকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। পরবর্তীতে তার আবেদনের প্রেক্ষিতে পুনর্বিবেচনা শেষে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফলে তিনি পুনরায় স্বীয় পদে বহাল হলেন।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না এবং সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন যৌথভাবে ব*হি*ষ্কা*রাদেশ প্র-ত্যা-হারের সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছেন।

কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশক্রমে প্রেরিত এই বার্তায় আরও উল্লেখ করেন যুবদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূইয়া।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংগঠনের স্বাভাবিক কার্যক্রম আরও সুদৃঢ় করতে এবং ভবিষ্যৎ সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে ভূমিকা রাখার সুযোগ সৃষ্টি করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ফরিদপুরে মন্দিরের জমির বিরোধকে ঘিরে অপপ্রচার, যা বলছে পুলিশ

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫, ৯:০৩ পিএম
ফরিদপুরে মন্দিরের জমির বিরোধকে ঘিরে অপপ্রচার, যা বলছে পুলিশ

সম্প্রতি ফরিদপুরের সদরপুরে মন্দিরের জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া গুজব ও অপপ্রচারের অভিযোগে এক প্রেসবিজ্ঞপ্তি দিয়েছে পুলিশ।

রবিবার (২৩ নভেম্বর) রাতে ফরিদপুর জেলা পুলিশ এ প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেন, ‘সম্প্রতি “HINDUS NEWS” নামক একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে এবং ফেসবুক পেইজে “ফরিদপুরের সদরপুরে মন্দিরের জমি নিয়ে সংঘর্ষ- পালিয়ে যাচ্ছে হিন্দু পরিবার, টহলে পুলিশ” শিরোনাম একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। উক্ত সংবাদে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ঢেউখালী ইউনিয়নের হরিনা গ্রামে রাধা গোবিন্দ মন্দিরের জমি নিয়ে সৃষ্ট বিরোধের বিষয়কে কেন্দ্র করে স্থানীয়ভাবে পরিস্থিতি উত্তেজনাকর সহ হামলার পর ভয়-আতঙ্কে গ্রাম ছাড়ছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এবং চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন অন্তত পাঁচ শতাধিক হিন্দু পরিবার বলে দাবী করা হয়। বিষয়টি ফরিদপুর জেলা পুলিশের নজরে এসেছে। উক্ত ঘটনাটি সম্পর্কে সরেজমিনে তদন্ত এবং প্রকৃত তথ্যের ভিত্তিতে জেলা পুলিশ নিশ্চিত করছে যে, ছড়িয়ে পড়া ওই তথ্যটি অতিরঞ্জিত, অসত্য এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে পারে।

প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘হরিনা মৌজার ৫৮৪ নং খতিয়ানের ৪১২/৪১৩ দাগে ৪৬ শতাংশ জমির মালিক ছিলেন মহাদেব ঘোষ। আনুমানিক ৬/৭ মাস পূর্বে মহাদেব ঘোষ উক্ত জমি স্থানীয় বাবুল বেপারী ও সনাতন ধর্মাবলম্বী সুশান্ত মালো গং-এর নিকট সাব কবলা দলিল মূলে বিক্রি করেন।’

জেলা পুলিশ জানায়, ‘জমি বিক্রির বিষয়টি মহাদেব ঘোষের প্রতিপক্ষ মানিক ঘোষ গং জানতে পারলে তারা দাবি করেন যে, ওই জমিটি সার্বজনীন মন্দিরের। এ নিয়ে বিক্রেতা মহাদেব ঘোষ এবং ক্রেতা সুশান্ত মালো ও বাবুল বেপারী পক্ষের সাথে প্রতিপক্ষ মানিক ঘোষ পক্ষের বিরোধ সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ, বিরোধটি মূলত ‘জমির মালিক/বিক্রেতা ও ক্রেতা’ বনাম ‘প্রতিপক্ষ দাবিদার’-এর মধ্যে, যেখানে উভয় পক্ষেই সনাতন ধর্মাবলম্বী ও মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন জড়িত রয়েছেন।

মারামারি ও পুলিশি পদক্ষেপ:

‘গত ১৬ নভেম্বর ভোরে জমি দখলকে কেন্দ্র করে দু-পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকজন আহত হন। খবর পাওয়া মাত্রই সদরপুর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। উক্ত ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সুশান্ত মালো নামের একজনকে আটক করে এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে। পরবর্তীতে থানা পুলিশ কর্তৃক বাবুল বেপারীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমানে সেখানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’

গুজব নিরসন:

‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত “হামলার ভয়ে ৫ শতাধিক হিন্দু পরিবার গ্রাম ছেড়ে পালাচ্ছে” এবং “চরম নিরাপত্তাহীনতা”—এই তথ্যগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন । সরেজমিনে তদন্তে দেখা গেছে, কোনো পরিবার গ্রাম ছেড়ে যায়নি এবং বর্তমানে এলাকাটি পুলিশের সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রয়েছে।’

সতর্কবার্তা:

একটি স্বার্থান্বেষী মহল সাধারণ জমি সংক্রান্ত বিরোধকে ‘সাম্প্রদায়িক হামলা’ হিসেবে চালিয়ে দিয়ে জনমনে ভীতি ও বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এ ধরনের উসকানিমূলক পোস্ট শেয়ার করা থেকে বিরত থাকার জন্য সর্বসাধারণকে অনুরোধ করা হলো। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী যেকোনো অপতৎপরতার বিরুদ্ধে ফরিদপুর জেলা পুলিশ কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

উক্ত ঘটনায় আতঙ্কিত না হয়ে পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করার জন্য এবং শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে।

চরভদ্রাসনের পদ্মা নদীতে অভিযান: ৬ বাঁধ, ২ ভেসাল অপসারণ

আসলাম বেপারী, চরভদ্রাসন:
প্রকাশিত: রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫, ৮:২৩ পিএম
চরভদ্রাসনের পদ্মা নদীতে অভিযান: ৬ বাঁধ, ২ ভেসাল অপসারণ

ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলায় পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে নির্মিত ৬টি আড়াআড়ি বাঁধ এবং ২টি ভেসাল অপসারণসহ ১০টি চায়না দুয়ারি ও ১০ কেজি মাছ জব্দ করেছে উপজেলা প্রশাসন।

রবিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালিত হয়।

উপজেলা মৎস্য দপ্তর জানায়, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল দীর্ঘদিন ধরে পদ্মা নদীতে আড়াআড়ি বাঁধ বসিয়ে অবৈধভাবে মাছ শিকার করছে—এমন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা খাতুনের নির্দেশনায় উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাঈম হোসেন বিপ্লবের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে সহযোগিতায় ছিল চরভদ্রাসন থানার চৌকস পুলিশ টিম এবং উপজেলা মৎস্য দপ্তরের সকল কর্মকর্তা–কর্মচারী।

স্থানীয় সূত্র জানায়, দুটি প্রভাবশালী মহলসহ কয়েকটি জেলে গোষ্ঠী নদীতে এসব বাঁধ নির্মাণ করে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে মাছ শিকার করছে। এতে নদীর প্রাকৃতিক প্রজনন ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি লক্ষ লক্ষ টাকা অবৈধ আয় করার অভিযোগ উঠেছে।

অভিযানে পদ্মা নদী থেকে ৬টি আড়াআড়ি বাঁধ ও ২টি ভেসাল অপসারণ করা হয়। এর মধ্যে একটি বাঁধের প্রস্থ ছিল প্রায় ১ কিলোমিটার এবং বাকি ৫টি ছিল ৫০০ মিটার করে, মোট ৩.৫ কিলোমিটার। এছাড়া জব্দ করা হয় ১০টি চায়না দুয়ারি ও ১০ কেজি মাছ। নিষিদ্ধ জাল ও দুয়ারি জনসম্মুখে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয় এবং উদ্ধার করা মাছ বাদুল্লা মাতুব্বরের ডাঙ্গী মাদ্রাসায় বিতরণ করা হয়।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাঈম হোসেন বিপ্লব বলেন, পদ্মা নদীর মৎস্য সম্পদ ও প্রজনন রক্ষায় এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। নদীতে মাছের অবাধ চলাচল ও প্রজনন নিশ্চিত করতে ভবিষ্যতেও নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হবে।