ফরিদপুরে কোরবানীর মাংস নেওয়াকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় ভ্যানচালক নিহত

ফরিদপুরের সালথা উপজেলাকে বলা হয় পাট -পেঁয়াজের রাজধানী। যেখানে ৯৫ শতাংশ কৃষক পাট চাষাবাদ করে থাকে। পাটের ফলনও ভালো হয়। তবে, এবার কয়েকদিনের অনবরত বৃষ্টিতে অপরিপক্ক পাটে জমেছে বৃষ্টির পানি। এতে পাটের গোড়া পঁচার আশঙ্কা করছে কৃষক। এখন কৃষক না পাড়ছে পাট কাটতে, না পাড়ছে জমিতে রাখতে। ফলে কৃষকদের মধ্যে উভয় সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
সালথার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদুল আজহার আগের কয়েকদিনের বৃষ্টিতে কৃষকের নিচু জমির পাটে বৃষ্টির পানি জমে আছে। তাইতো পাটের গোড়া পঁচনধরার সাথে সাথে দাঁড়িও গজাচ্ছে। এখন এ পাট না যাচ্ছে কাটা, আর না যাচ্ছে নতুন করে পাট বুনন করা। এতে পাট চাষে লোকসানের মুখে পড়তে হবে কৃষকদের।
সালথার খোয়াড় গ্রামের পাটচাষি ভুলু ফকির ও সেলিম মাতুব্বর বলেন, এবার আমরা কয়েক বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। পাট হয়েছিলও মোটামুটি। কিন্তু, পাটের মাঝামাঝি সময়ে কয়েকদিনের ধারাবাহিক বৃষ্টিতে অধিকাংশ জমিতে পানি জমে গেছে। গোড়া এখন পঁচে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। যদি এ পানি না নামে তবে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।
একই উপজেলার আড়ুয়াকান্দি গ্রামের সুজন মাতুব্বর বলেন, আমাদের পাটের গোড়া পঁচে যাচ্ছে। তবে, পাট কাটলেও ফলন হবেনা। আমাদের মাথায় হাত।
সালথা কৃষি অফিস বলছে, হঠাৎ কয়েকদিনের ধারাবাহিক বৃষ্টিতে সালথার অধিকাংশ নিচু জমিতে পানি জমেছে। এতে পাটের গোড়া পঁচার আশঙ্কা রয়েছে।
ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও নানা কর্মসুচীর মধ্য দিয়ে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শশা মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার ৫০ বছর পূর্তি উৎসব পালিত হয়েছে।
সোমবার (০৯ জুন) সকাল ১১ টায় শশা মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার সভাপতি ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী ড. হাফেজ মাওলানা রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থী মুফতি আবু সাঈদ শরীফের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাহিরদিয়া মাদ্রাসার মোহতামিম মাওলানা আকরাম আলী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- চর কমলাপুর মাদ্রাসার মোহতামিম মাওলানা হেলালউদ্দীন, সরকারী নগরকান্দা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম , সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের ইসলামী শিক্ষা বিভাগের প্রধান প্রফেসর আব্দুল কাদের মিয়া, মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসার মোহতামিম মাওলানা কারামত আলী, শাকপালদিয়া মাদ্রাসার মোহতামিম মাওলানা লিয়াকত আলী, নগরকান্দা কাসিমুল উলুম মাদ্রাসার নায়েবে মোহতামিম মাওলানা ইউসুফ, শিবচর জামেয়াতুস সুন্নার মোহাদ্দিস মুফতি সাঈফ মাহমুদ, মাওলানা সগির আহমেদ, নগরকান্দা প্রেসক্লাবের সভাপতি শওকত আলী শরীফ।
এছাড়া এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- সিটি ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. নুরুল ইসলাম, মুকসুদপুর সরকারি কলেজের প্রভাষক এইচ এম সোলায়মান, কাজী মকিদুর রহমান, মুফতি হাসিবুর রহমান, হাফেজ জাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
যোহুরের নামাজের পর প্রীতিভোজ অনুষ্ঠিত হয় এবং উপস্থিত অতিথিবৃন্দ ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের হাতে ক্রেষ্ট তুলে দেওয়া হয়।
মোবাইলে জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে ইজ্জল শেখকে মারপিট ও বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে। এমন অভিযোগ স্বজনদের।
রোববার (৮ জুন) সন্ধ্যায় দাফন সম্পন্ন হয়েছে তার। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে। ইজ্জল শেখের এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।
এঘটনা নিয়ে বিকেলে ইজ্জল শেখকে পুনরায় মারপিট করে হানিফ শেখ ও তার লোকজন। এরপর কিছু সময় পর হোগলাকান্দি বাজার সংলগ্ন এলাকায় রাস্তার পাশে ইজ্জল শেখকে পরে থাকতে দেখে এবং মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছিল দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। সেখানে এসে হানিফ শেখের লোকজন ইজ্জল শেখকে অসুস্থ অবস্থায় তুলে নিয়ে বাজারের পাশে নদীর পানির মধ্যে চুপিয়ে অচেতন অবস্থায় তাকে ফেলে রেখে যায়। পরে রাত ৯টার দিকে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তবে ইজ্জল শেখের পরিবারের দাবি, তাকে মারপিট ও বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে। এঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি নিহতের স্বজনদের।
নিহতের স্ত্রী নবীরন বেগম বলেন, ‘আমি ভিক্ষা করে সংসার চালাই। স্বামী কোনো কাজ করতো না। সে মাঝে মধ্যে জুয়া খেলতো, তাকে অনেকবার নিষেধ করেছি, কিন্তু শোনে না। ঈদের দিন আমি ফরিদপুর গেছিলাম মাংস জোগাড় করতে। বিভিন্ন মানুষের বাড়িতে গিয়ে মাংস নিয়ে বাড়িতে আসি। এরপর বাড়ি এসে শুনতে পারি আমার স্বামীকে হানিফসহ তার লোকজন মারপিট করেছে। আমি বিষয়টি জানতে গেলে আমাকেও মারপিট করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘মারপিট করার পর আমার স্বামীর মুখে বিষ ঢেলে দেওয়া হয়। তারপর তাকে নদীতে নিয়ে চুবানো হয়, এক পর্যায়ে তার গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। পরে সেখান থেকে হানিফ ও তার লোকজন চলে যায়। পরে স্থানীয়রা আমার স্বামীকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
নবীরন বেগম বলেন, ‘এঘটনার পর আমাকে অর্থের লোভ দেখানো হচ্ছে। মিটমাট করতে বলা হচ্ছে। এমনকি হুমকি ধামকিও দেওয়া হচ্ছে আমাকে মিটমাট করার জন্য। কিন্তু আমি মিটমাট চাই না, স্বামী হত্যার বিচার চাই। যারা জড়িত তাদের গ্রেফতার করা হোক। আমি ভিক্ষা করে সংসার চালাই, গরিব মানুষ বলে স্বামীর হত্যার বিচার পাব না?’
নিহতের বোন ফরিদা খাতুন বলেন, ‘আমার ভাই মারা যাওয়ার আগে একটি কাগজে তাকে কারা মারছে তাদের নাম উল্লেখ করে লিখে রেখে গেছে। ভাইকে যারা হত্যা করেছে তাদের বিচার চাই। সন্তানরা এতিম হয়ে গেল, ওদের দেখবে কে। ভাইকে যারা মেরেছে তাদের ফাঁসি চাই।’
কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ আলতাফ হুসাইন বলেন, ‘হোগলাকান্দি এলাকায় মাদক ও জুয়ায় সয়লাব হয়ে গেছে। যুব সমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। কতিপয় ব্যক্তি এলাকায় মাদক ও জুয়ার ব্যবসা করছে। আমি অনেক চেষ্টা করেছি, কিন্তু রোধ করতে পারছি না।’
তিনি আরও বলেন, ইজ্জল শেখের মৃত্যু নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। তবে তার মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে পুলিশের সহায়তা কামনা করেন এবং যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের দ্রুত গ্রেফতারের অনুরোধ জানান তিনি।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানান, সংবাদ পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে ইজ্জল শেখের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে দাফনের জন্য পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তার মৃত্যু বিষক্রিয়ায় হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। এঘটনায় থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, তবে মোবাইলে জুয়া খেলা নিয়ে তাকে মারপিট করে হত্যা করা হয়েছে বলে পরিবারের অভিযোগ। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। এছাড়া বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। অন্য কোনো কারণ পেলে সেই হিসেবে মামলা নেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন
Array