খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ৫ জুন, ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

ফরিদপুরে চাহিদার চেয়ে বেশি প্রস্তুত কোরবানির পশু

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: সোমবার, ২৬ মে, ২০২৫, ১১:৩৫ এএম
ফরিদপুরে চাহিদার চেয়ে বেশি প্রস্তুত কোরবানির পশু
আসন্ন ঈদুল আজহায় ফরিদপুর জেলার ৯টি উপজেলায় মোট চাহিদার চেয়ে কয়েক হাজার পশুর আমদানি বেশি রয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর। আর জেলার চাহিদা পূরণ করে বাড়তি কোরবানী পশু দেশের অন্যান্য জেলায় বিক্রির জন্য নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছেন খামারী ও ব্যবসায়ীরা। তবে এ বছর দেশের বাইরে থেকে কোরবানীর পশু আমদানি না করায় দেশের খামারী ও ব্যবসায়ীরা এ বছর পশুতে ভাল দাম পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
জেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুরে কোরবানির জন্য পশুর চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ০৮ হাজার ১১টি। এর মধ্যে পশু প্রস্তুত রয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৮৯১টি পশু। সেই হিসেবে প্রায় ৩ হাজার পশু দেশের বিভিন্ন বাজারে নেওয়া হবে। খামারী ও পশু ব্যবসায়ীরা এবার কোরবানির বাজারে পশুর ভালো দাম পাওয়ার আশায় রয়েছেন। জেলার ৯টি উপজেলায় এ বছর ৮ হাজার ১৭৮টি ছোট-বড় খামার রয়েছে। এসব খামারে গরু ৫১ হাজার ১৬৭, ছাগল ৫৪ হাজার ৯২৫, ভেড়া ৪ হাজার ৫৯৭ ও মহিষ ১০৫টিসহ অন্যান্য ৯৭টি পশু প্রস্তুত রয়েছে। এসব খামারে কোরবানির জন্য গরু-ছাগল পরিচর্যায় শেষ সময়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারী ও ব্যবসায়ীরা। এ জেলায় ৪০টি গরু-ছাগলের হাট-বাজারে ১৮টি মেডিকেল টিম দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
জেলার বিভিন্ন বাজার ও খামার ঘুরে দেখা গেছে, জেলার মধ্যে সদর, সালথা, নগরকান্দা, সদরপুর ও বোয়ালমারী উপজেলায় খামারের সংখ্যা বেশি দেখা গেছে। খামারী ও ব্যবসায়ীরা কোরবানীর পশু পরিচর্যায় শেষ সময়ে ব্যস্ততা সময় পার করছেন। খামারে কেউ পশুকে খাবার দিচ্ছেন, আবার কেউ গোসল করাচ্ছেন। কোরবানী দেওয়ার জন্য অনেকেই খামার থেকে পশু দেখে যাচ্ছেন। তবে ক্রেতারা অনেক যাচাই বাছাই করে পশু কিনবেন বলে জানিয়েছেন। এছাড়া জেলার পদ্মা ও আড়িয়াল খা’র তীরের নর্থ চ্যানেল, ডিক্রীরচর ও চরমাধবদিয়া ইউনিয়ন ছাড়াও চরভদ্রাসন, সদরপুর উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের চরবাসীদের আয়ের অন্যতম মাধ্যম গবাদি পশু পালন। বছর জুড়েই সেই গবাদি পশু লালন পালন করে কোরবানীর হাটে তোলার জন্য প্রস্তুত করেছেন তারা। এখানে প্রতিটা পরিবারের নারী-পুরুষের পাশাপাশি শিশুরাও গবাদি পশু পালন কাজে ব্যস্ত সময় পার করে বছর জুড়ে।
ফরিদপুর শহরতলীর বিল মাহমুদপুর এলাকায় মাইশা ডেইরি ফার্মের মালিক রফিকুল ইসলাম সবুজ বলেন, আমার ফার্মে একটি গরুর নাম দেওয়া হয়েছে ‘বাদশা’। তার ওজন প্রায় ৩০ মন। বাদশার বয়স সাড়ে তিন বছর। গরুটি লম্বায় ৬ ফুট ১০ ইঞ্চি এবং উচ্চতায় ৯ ফুট ৫ ইঞ্চি। প্রতিদিনই আশপাশের এলাকা থেকে গরুটিকে দেখতে আসছেন ক্রেতারা। বাদশার দাম চাওয়া হচ্ছে ১৫ লাখ টাকা।
আলফাডাঙ্গা উপজেলার গরানিয়া গ্রামের রাজুর খামার দেখভালকারী আক্তার হোসেন জানান, আমরা কোরবানীর জন্য ১৫টি গরু প্রস্তত করেছি। গরু গুলোকে দুই বেলা গোসল করা হয়। কুড়া, ভুসি, ঘাস ও খড় খাওয়ানো হয় এদের। দিন-রাত খামারে একজন মানুষ লেগেই থাকতে হয়। গরু কেনার জন্য অনেকেই এসেছেন। তবে এখনো গরু বিক্রি করতে পারিনি।
বোয়ালমারী উপজেলার গুনবহা গ্রামের ঈদগাহ এলাকার খামারী রাশিদা বেগম জানান, আমরা কাবু ও ছোট গরু কিনে লালন পালন করে প্রতিবছরই কোরবানীর জন্য প্রস্তত করি। কোরবানীর ৭-৮ মাস আগে গরু গুলো কেনা হয়। প্রায় ত্রিশ বছর ধরে আমি এ কাজ করছি। স্বামী-সন্তানের পাশাপাশি বেশির ভাগ সময় আমিই গরুগুলো দেখাশুনা করি। কোরবানীর এক সপ্তাহ আগে কুমিল্লায় আমার স্বামী গরুগুলো বিক্রি করার জন্য নিয়ে যাবেন। আশা করছি এবার পশুর ভাল দাম পাওয়া যাবে।
সদর উপজেলার চরধোলাই এলাকার ফিরোজ মোল্লা বলেন, আমি ২৬টি ভেড়া লালন পালন করছি। এবারের ঈদে ভেড়া গুলোকে ভালো দামে বিক্রি করে ভালো আয় রোজগার হবে। আশা করছি এই টাকা দিয়েই আমার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আগামী বছরটি ভালোভাবে কাটাতে পারবো।
ফরিদপুর জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. সঞ্জীব কুমার বিশ্বাস বলেন, ফরিদপুরের খামারীরা আশা করছি এ বছর পশুর ভাল দাম পাবেন। যতটুকু জানতে পেরেছি দেশের বাইরে থেকে কোন পশু আমদানী হচ্ছে না এ বছর। কোরবানীর জন্য চাহিদার চেয়েও কয়েক হাজার পশু বেশি রয়েছে ফরিদপুর জেলায়। জেলার ৪০টি হাটে খামারী ও ব্যবসায়ীদের পশুর সুবিধার্থে ১৮টি চিকিৎসক টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

ফরিদপুরে গরু বোঝাইকৃত পিকআপ উল্টে এক ব্যবসায়ী নিহত

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ৯:৩৩ পিএম
ফরিদপুরে গরু বোঝাইকৃত পিকআপ উল্টে এক ব্যবসায়ী নিহত
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে গরু বোঝাইকৃত পিকআপ উল্টে লিয়াকত মোল্যা (৪০) নামে এক ব্যবসায়ী নিহতের ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (৩ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাঝকান্দি-বোয়ালমারী-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের কাদিরদী বাজার সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বোয়ালমারী উপজেলার কাদিরদী এলাকার ইউপি সদস্য বুলবুল আহমেদ।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মাগুরা জেলার গোপালনগর ইউনিয়নের সংকোচ খালী এলাকার তিন ব্যবসায়ী কয়েকটি গরু বোঝাইকৃত ট্রাক নিয়ে ফরিদপুর টেপাখোলা গরুর হাটে যাচ্ছিলেন। তারা মহম্মদপুর-বোয়ালমারী উপজেলার সীমান্ত ব্রীজ পার হয়ে ফরিদপুর জেলার কাদিরদী বাজার এলাকায় পৌঁছালে পিকআপ থেকে গরু লাফ দিলে গরু বোঝাইকৃত পিকআপ উল্টে যায়। এ সময় পিকআপে থাকা লিয়াকত মোল্যাসহ দুই ব্যবসায়ী আহত হয়। স্থানীয়রা মারাত্মক আহত অবস্থায় দুই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক লিয়াকত মোল্যাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় অপর ব্যবসায়ী ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।
এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বোয়ালমারী উপজেলার কাদিরদী এলাকার ইউপি সদস্য বুলবুল আহমেদ জানান, মাগুরা সদর থেকে গরু বোঝাইকৃত পিকআপটি ফরিদপুর শহরের টেপাখোলা গরুর হাটে যাচ্ছিল। গরুর গাড়িটি কাদিরদী বাজারে আসলেই একটি গরু লাফ দিলে গাড়ীটি উল্টে ব্যবসায়ীরা চাপা পড়ে। সেখান থেকে আহত দুইজনকে ফরিদপুর মেডিক্যালে পাঠানো হয়। পরে জানতে পেরেছি লিয়াকত নামে ব্যবসায়ী মারা গেছে।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী থানার ওসি মাহমুদুল হাসান জানান, বিষয়টি নিয়ে আমরা এখনো অবগত নই। এমনকি ঘটনাটি আমাদের কেউ জানায়নি।

ফরিদপুরে তাল পাড়তে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে কিশোরের মৃত্যু 

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ৯:২৮ পিএম
ফরিদপুরে তাল পাড়তে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে কিশোরের মৃত্যু 
ফরিদপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ইমন শেখ (১৪) নামে  এক কিশোরের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (০৩ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফরিদপুর সদরের কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের মহারাজপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত ইমন শেখ কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের মহারাজপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. ফারুক শেখের ছেলে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, জেলা সদরের কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের মহারাজপুর গ্রামের মো. ফারুক শেখের ছেলে ইমন শেখ তাল পাড়ার উদ্দ্যেশ্য বাঁশ নিয়ে বাড়ির পাশে তাল গাছে উঠে। গাছে ওঠার পর বাঁশ দিয়ে খুচিয়ে তাল পাড়ছিল। এ সময় ওই গাছের পাশ দিয়ে যাওয়া উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুতের লাইনে তারে ইমনের হাতে থাকা বাঁশ স্পর্শ করলে  বিদ্যুতায়িত হয়ে পড়ে গিয়ে সে মারাত্মক ভাবে আহত হয়।
পরে স্থানীয়রা ইমনকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ফরিদপুরে চাঁদাবাজির মামলায় অবসরপ্রাপ্ত মেজরসহ চার সহযোগী গ্রেপ্তার

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ৯:২৩ পিএম
ফরিদপুরে চাঁদাবাজির মামলায় অবসরপ্রাপ্ত মেজরসহ চার সহযোগী গ্রেপ্তার
ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার কোদালিয়া গ্রামে চাঁদাবাজি ও হত্যার হুমকির অভিযোগে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর গোলাম হায়দারকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী।
মঙ্গলবার (৩ জুন) গভীর রাতে তার নিজ বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
বুধবার (০৪ জুন) গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুল ইসলাম জানান, মেজর হায়দারের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ফরহাদ হোসেনসহ আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও সাধারণ মানুষকে হয়রানির একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রাজু মোল্ল্যা অভিযোগ করে বলেন, অভিযানের সময় মসজিদের মাইক ব্যবহার করে ফরহাদ হোসেন ‘মেজরের বাড়িতে ডাকাত পড়েছে’ বলে গুজব ছড়ান। এতে আশপাশের এলাকা থেকে মানুষজন ঘটনাস্থলে জড়ো হন। পরে পুলিশ সাইরেন ও মাইকিংয়ের মাধ্যমে জানায়—এটি একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গুজব, ডাকাতির কোনো ঘটনা ঘটেনি।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এলাকাবাসীর সহায়তায় ফরহাদসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে মেজর হায়দারকেও নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয়।
এর আগে উপজেলার ডাংগি ইউনিয়নে বৈষম্য বিরোধী এক নারী নেত্রীকে ঘিরে উত্তেজনার সময় স্থানীয় শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ চলাকালে সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে উগ্র আচরণ ও অশোভন মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়েন মেজর হায়দার। সেই ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয় এবং ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি করে।
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুল ইসলাম জানান, “রাজু মোল্লা নামের এক ব্যক্তি চাঁদাবাজির অভিযোগ দিলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। গ্রেপ্তারের পর মঙ্গলবার (০৩ মে) সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে তাদের।”