খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৫, ২৪ আশ্বিন, ১৪৩২

ফরিদপুরে পশু হাসপাতালে জনবল সংকট, ব্যাহত সেবা কার্যক্রম

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: রবিবার, ১৭ আগস্ট, ২০২৫, ৮:০৮ এএম
ফরিদপুরে পশু হাসপাতালে জনবল সংকট, ব্যাহত সেবা কার্যক্রম

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় অর্ধেকেরও কম জনবল দিয়ে চলছে প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল। গুরুত্বপূর্ণ এ প্রতিষ্ঠানের ১১টি পদের মধ্যে ছয়টি শূন্য। এর মধ্যে আবার তিনবছরের জন্য অন্যত্র প্রশিক্ষণে রয়েছেন একজন। বর্তমানে এই কার্যালয়ে কাগজে-কলমে পাঁচজন থাকলেও বাস্তবে কর্মরত আছেন মাত্র চারজন। ফলে অল্প সংখ্যক জনবল নিয়ে উপজেলার একমাত্র সরকারি পশু হাসপাতালটিতে চিকিৎসাসেবা চরম ব্যাহত হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আলফাডাঙ্গা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ১২১টি গ্রামের লাখো মানুষের ৫৮ হাজার ৭৭৬টি গবাদি পশু ও দুই লাখ ৯০ হাজার ৫০১টির বেশি হাঁস মুরগীসহ বিভিন্ন প্রাণি রয়েছে। তাই প্রতিদিন অনেক গবাদি পশু পালনকারী সেবা ও পরামর্শ নিতে আসেন প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে। কিন্তু ভেটোরিনারি সার্জনসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে জনবল না থাকায় চিকিৎসা সেবা ও পরামর্শ নিতে আসা লোকদের যেমন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তেমনি হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে। ফলে খামার মালিকরা বিভিন্ন গবাদি পশুর অপারেশনের জন্য ছুটছেন বেসরকারি চিকিৎসকের কাছে। এতে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতি উপজেলায় একজন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, একজন ভেটেরোনারি সার্জন, একজন উপজেলা লাইফ স্টক অ্যাসিসটেন্ট (ইউএলএ), তিনজন ভেটেরেনারি ফিল্ড অ্যাসিসটেন্ট (ডিএফএ), একজন কম্পাউন্ডার, একজন ফিল্ড অ্যাসিসটেন্ট (এফএ/এআই), একজন অফিস সহকারী, একজন ড্রেসার ও একজন অফিস সহায়ক (এমএলএসএস) পদ রয়েছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে বর্তমানে একজন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, একজন উপজেলা লাইফ স্টক অ্যাসিসটেন্ট, একজন ফিল্ড অ্যাসিসটেন্ট, একজন ড্রেসার ও একজন অফিস সহায়ক আছেন। অর্থাৎ ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর স্থলে পাঁচজন কর্মকর্তা-কর্মচারি আছেন। ছয়টি পদই দীর্ঘদিন ধরে শূণ্য রয়েছে। এদিকে এই পাঁচজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে আবার ফিল্ড অ্যাসিসটেন্ট তিন বছরের জন্য অন্যত্র প্রশিক্ষণে রয়েছেন। ফলে বর্তমানে এই কার্যালয়ে মাত্র চারজন কর্মরত আছেন।

দপ্তর থেকে জানা গেছে, কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রম, প্রশিক্ষণ, পশুপাখিকে টিকাদান, চিকিৎসাদান, মাঠ পরিদর্শন, খামারিদের মধ্যে উন্নত প্রযুক্তি বিতরণ, পশুপাখির সুস্থতার সনদ দেওয়া, উন্নত জাতের ঘাস চাষ সম্প্রসারণ, খামার নিবন্ধন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে জরুরি সেবাদানের কাজগুলো এই দপ্তরের অধীনে পরিচালিত হয়। কিন্তু জনবলসংকট থাকায় বাকিদেরই সব দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এতে পশু পালনকারীরা চাহিদামতো সেবা না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়ছেন।

উপজেলার জাটিগ্রামের কৃষক মাহাবুর মোল্যা জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরে একজন ডাক্তার দিয়ে চলছে এ হাসপাতাল। চিকিৎসার জন্য গবাদি পশু নিয়ে আসলে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয়। হাসপাতালে অনেক ভিড় থাকে। এ হাসপাতালে আরেকজন ডাক্তারের খুবই প্রয়োজন।’

উপজেলা ডেইরি এসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম নজরুল ইসলাম জানান, ‘হাসপাতালে জনবল সংকটের কারণে যথাসময়ে সেবা দিতে পারছে না। আমরা চাই দ্রুত জনবল নিয়োগের মাধ্যমে সেবার মান বৃদ্ধি করা হোক।’

আলফাডাঙ্গা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ভবেন বাইন বলেন, ‘ভেটেরিনারি সার্জনসহ ছয়টি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য। প্রতিদিন প্রায় অর্ধশতাধিক কৃষক বিভিন্ন গবাদিপশু নিয়ে আসেন চিকিৎসাসেবা নিতে। আমাকে দৈনন্দিন অফিসিয়াল কাজকর্ম করতে হয়। মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন কাজের জন্য যেতে হয়। সরকারি বিভিন্ন সভায় যেতে হয়। প্রতিদিন আমাকে একাই সব সামলাতে হচ্ছে। জনবল সংকটের মধ্যেও সেবা প্রদানে কোনো ধরনের গাফিলতি হচ্ছে না। তবে কাজ করতে কিছুটা হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে জেলার মাসিক সভায় বারবার অবহিত করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে ফরিদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সঞ্জীব কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘শূন্য পদে পদায়ন না হওয়ায় প্রাণিসম্পদ সংশ্লিষ্ট অন্য যারা আছেন, তাদের সহযোগিতায় সেবা কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। যেসব পদে লোক নেই, সেসব পদে লোকবল দেওয়া হলে আমাদের সার্বিক কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’

চিঠি হারিয়ে গেলেও ঐতিহ্যের সাক্ষী লাল ডাকবাক্স

দেলোয়ার হোসেন বাদল, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৫, ২:২৭ পিএম
চিঠি হারিয়ে গেলেও ঐতিহ্যের সাক্ষী লাল ডাকবাক্স

সময় বদলেছে, বদলেছে যোগাযোগের ধরনও। একসময় যার অপেক্ষায় প্রহর গুনতেন প্রিয়জনরা, সেই ডাকপিয়নের ডাক এখন আর শোনা যায় না।

প্রযুক্তির স্পর্শে বদলে গেছে মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা। হাতে-কলমে লেখা চিঠির জায়গা করে নিয়েছে মোবাইল, ইন্টারনেট আর সোশ্যাল মিডিয়া।

 

একটা সময় ছিল, চিঠি পৌঁছাতে লাগত সপ্তাহ কিংবা মাস। প্রিয়জনের খবর জানতে অপেক্ষার প্রহর গুনতে হতো। এখন পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে মুহূর্তেই পৌঁছে যাচ্ছে বার্তা। এক ক্লিকে পাঠানো যাচ্ছে অর্থ, ছবি, শুভেচ্ছা।

চিঠিপত্র আদান-প্রদানের মাধ্যম হিসেবে ডাক বিভাগ একসময় ছিল অপরিহার্য। অফিস-আদালত, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এমনকি ব্যক্তিগত যোগাযোগেও ডাকপিয়নের পদধ্বনি ছিল খবরের প্রতীক। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় এনালগ থেকে ডিজিটাল যুগে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে ডাকবিভাগের সেই জৌলুস ক্রমেই ম্লান হয়ে গেছে। এখন আর দেখা মেলে না রাস্তার মোড়ে মোড়ে রাখা সেই লাল রঙের ডাকবাক্স। জিপিওর সামনে কয়েকটা রয়েছে তাও ফুটপাতের ভাসমান দোকানের কারণে ভেতরে পড়ে আছে। দেখা যায় না কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে আসা চেনা মুখের সেই ডাকপিয়নদের।

তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নে দ্রুত যোগাযোগের নতুন যুগ শুরু হয়েছে। চিঠির জায়গা দখল করেছে ই-মেইল, ফেসবুক, টুইটারসহ নানা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। এমনকি ফ্যাক্স ব্যবস্থাও হারিয়ে যাচ্ছে ই-মেইলের দাপটে। মানুষের আর্থিক লেনদেনও এখন সহজ। ডাক মানিঅর্ডারের জায়গা নিয়েছে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা। একইসঙ্গে দেশজুড়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছে কুরিয়ার সার্ভিস, যা ডাকবিভাগের বিকল্প হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যদিও তা তুলনামূলক ব্যয়বহুল।

ডাকবিভাগের কার্যক্রম আজও পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। অফিসিয়াল নথি, সরকারি চিঠি, নিয়োগপত্র কিংবা নোটিশ পাঠানোয় আজও ডাক বিভাগের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করা যায় না। আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে ২০০০ সালে চালু হয় ই-পোস্ট সার্ভিস, এর মাধ্যমে দেশের তৃণমূল জনগণ পাচ্ছে ইন্টারনেটভিত্তিক ডাকসেবা। এ ছাড়া অনেক জেলা শহরে রয়েছে নাইট পোস্ট অফিস। যেখানে সারারাত চিঠি ও পার্সেল আদান-প্রদান হয়।

বিশ্বব্যাপী ডাক সেবাকে সমন্বিত ও আধুনিক করার লক্ষ্যেই ১৮৭৪ সালের ৯ অক্টোবর সুইজারল্যান্ডের বার্ন শহরে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘জেনারেল পোস্টাল ইউনিয়ন’। ১৯৬৯ সালে টোকিও সম্মেলনে দিনটি ‘বিশ্ব ডাক দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশ ১৯৭৩ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি এ সংগঠনের সদস্য হয় এবং তখন থেকেই ৯ অক্টোবর বিশ্ব ডাক দিবস পালন করে আসছে।

যদিও সময়ের পরিবর্তনে ডাক ব্যবস্থা তার উজ্জ্বলতা অনেকটাই হারিয়েছে, তবুও এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটি এখনও জনগণের পাশে আছে। ডাকবাক্সে কেউ চিঠি না ফেললেও, এগুলোকে সংরক্ষণ ও সংস্কার করা দরকার— অতীত ঐতিহ্য হিসেবে নয়, বরং ইতিহাসের অংশ হিসেবে। কারণ এই ডাক ব্যবস্থা একসময় ছিল মানুষের হৃদয়ের সঙ্গে যুক্ত একটি আবেগময় অধ্যায়।

বিশ্ব ডাক দিবস উপলক্ষে রাজধানীর গুলিস্থান এলাকার জিপিওর সিনিয়র পোস্টমাস্টার মো. মনিরুজ্জামানের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বিরক্তবোধ করেন ও জানান কথা বলতে রাজি নন।

গুলিস্তান জেনারেল পোস্ট অফিসের ডাকপিয়ন আবদুল মতিন বলেন, আমরা যেদিন চিঠি হাতে নিয়ে মানুষের দোরগোড়ায় যেতাম, সেদিন ওদের মুখে যে হাসি দেখতাম, সেটা আজ আর দেখি না। তখন মানুষ চিঠির অপেক্ষায় থাকত।  এখন অপেক্ষায় থাকে মোবাইলের নোটিফিকেশনের। তবে সব সরকারি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আমাদেরকেই জাগায়মতো পৌঁছাতে হয়।

মুরাদপুর হাই স্কুলের শিক্ষিকা সোনিয়া আক্তার বলেন, আমাদের স্কুলজীবনে বন্ধুরা একে অপরকে চিঠি লিখতাম। খামে করে একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে ঈদ কার্ডের শুভেচ্ছা পাঠাতাম। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে এখন সবকিছু ভার্চ্যুয়াল। চিঠির মতো মমতা আর ভালোবাসা আর কোথাও নেই।

গণমাধ্যমকর্মী আকাশমনি বলেন, সময়ের সাথে সাথে আমাদের ভালোবাসা হারিয়েছে। আমাদের আবেগ অনুভূতি শেষ হয়ে গেছে। আগে আমরা আবেগ দিয়ে একটি চিঠি লিখতে গিয়ে কত কাগজ নষ্ট করতাম। রাতের পর রাত জাগতাম। সেই সময়ের গভীর যে টান, এখন সেই গভীর টান আর নাই। আমাদের মা, খালারাদের দেখতাম তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষার থাকতো কখন ডাকপিয়ন সন্তানের চিঠি নিয়ে বাসায় আসবে।

 

কাপড় ব্যবসায়ী আব্দুল জলিল মিয়া বলেন, আগে মানিঅর্ডারেই টাকা পাঠাতাম। এখন মোবাইল ব্যাংকিংয়ে মুহূর্তেই চলে যায়। তবে ডাক বিভাগের নির্ভরযোগ্যতা আজও মনে পড়ে। চিঠি ছিল সম্পর্কের এক মধুর মাধ্যম। আমি চাই, পোস্ট অফিসগুলোকে অন্তত ঐতিহ্যবাহী স্মৃতি হিসেবে সংরক্ষণ করা হোক।

বাংলাদেশ সফরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দল ঘোষণা, নতুন মুখ আকিম

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৫, ২:০১ পিএম
বাংলাদেশ সফরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দল ঘোষণা, নতুন মুখ আকিম

বাংলাদেশ সফরের জন্য দল ঘোষণা করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড। চলতি মাসেই সাদা তিনটি ওয়ানডে ও তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের দুটি সিরিজ খেলবে টাইগাররা।

মিরপুরে ১৮ অক্টোবর শুরু হবে ওয়ানডে সিরিজ, এরপর ২৭ অক্টোবর থেকে চট্টগ্রামে গড়াবে টি-টোয়েন্টি সিরিজিটি।

 

দুই ফরম্যাটেই নেতৃত্বে থাকছেন নিয়মিত অধিনায়ক শাই হোপ। তার সঙ্গে থাকছেন গুডাকেশ মতি, রোমারিও শেফার্ড, শারফেইন রাদারফোর্ড, জেডন সিলস ও ব্র্যান্ডন কিংয়ের মতো পরিচিত মুখরা।

সবচেয়ে বড় চমক প্রথমবারের মতো ওয়ানডে দলে ডাক পেয়েছেন সাবেক অনূর্ধ্ব-১৯ অধিনায়ক আকিম অগাস্ট। তরুণ এই ব্যাটারকে ভবিষ্যতের তারকা হিসেবে দেখছে দল। অভিজ্ঞ ওপেনার এভিন লুইস চোটের কারণে ছিটকে গেছেন। কব্জির ইনজুরি থেকে তিনি এখনও পুরোপুরি সেরে ওঠেননি।

আগামী বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও ২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপকে সামনে রেখে এই সিরিজকে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তুতি হিসেবেই দেখছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ টিম ম্যানেজমেন্ট। দলের প্রধান কোচ ড্যারেন স্যামি বলেন, ‘আমরা এমন একটি দল গড়েছি, যারা জয়ের মানসিকতা ধরে রাখতে পারবে এবং শক্ত দলীয় সংহতি তৈরি করতে সক্ষম হবে। দীর্ঘমেয়াদে সফলতার জন্য এই দুটি বিষয়ই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘বাংলাদেশের বিপক্ষে এই সিরিজ আমাদের জন্য দারুণ সুযোগ এনে দেবে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট অর্জনের, যা বিশ্বকাপে সরাসরি জায়গা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। ’

ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ সূচি ও স্কোয়াড

ওয়ানডে দল: শাই হোপ (অধিনায়ক), অ্যালিক আতানাজে, আকিম অগাস্ট, জেদিয়া ব্লেডস, কেসি কার্টি, রস্টন চেজ, জাস্টিন গ্রিভস, আমির জাঙ্গু, শামার জোসেফ, ব্র্যান্ডন কিং, গুডাকেশ মতি, খারি পিয়ার, শারফেইন রাদারফোর্ড, জেডেন সিলস ও রোমারিও শেফার্ড।

টি-টোয়েন্টি দল: শাই হোপ (অধিনায়ক), অ্যালিক আতানাজে, আকিম অগাস্ট, রস্টন চেজ, জেসন হোল্ডার, আকিল হোসেইন, আমির জাঙ্গু, শামার জোসেফ, ব্র্যান্ডন কিং, গুডাকেশ মতি, রোভম্যান পাওয়েল, শারফেইন রাদারফোর্ড, জেডেন সিলস, রোমারিও শেফার্ড ও র‌্যামন সিমন্ডস।

ওয়ানডে সিরিজ
  • ১ম ওয়ানডে – ১৮ অক্টোবর, মিরপুর, ঢাকা
  • ২য় ওয়ানডে – ২১ অক্টোবর, মিরপুর, ঢাকা
  • ৩য় ওয়ানডে – ২৩ অক্টোবর, মিরপুর, ঢাকা
টি-টোয়েন্টি সিরিজ
  • ১ম টি-টোয়েন্টি – ২৭ অক্টোবর, চট্টগ্রাম
  • ২য় টি-টোয়েন্টি – ২৯ অক্টোবর, চট্টগ্রাম
  • ৩য় টি-টোয়েন্টি – ৩১ অক্টোবর, চট্টগ্রাম

ফরিদপুরে আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর বিলীন হচ্ছে নদীতে, মালামাল যাচ্ছে ভাঙ্গাড়ির দোকানে

নুর ইসলাম, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৫, ১:৪৬ পিএম
ফরিদপুরে আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর বিলীন হচ্ছে নদীতে, মালামাল যাচ্ছে ভাঙ্গাড়ির দোকানে

এক সময় জায়গা ছিলো না, ঘর ছিলো না। এই রকম ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য তের বছর আগে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার চাপুলিয়া গ্রামে সরকারি খাস জমিতে নির্মাণ করা হয়েছিল আশ্রায়ণ প্রকল্পের ১৩০টি ঘর। সাথে করা হয়েছিল একটি অফিস ঘর। তখন আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলি থেকে মধুমতি নদীর দূরত্ব ছিল এক কিলোমিটার বেশি। গত ২০২১ সালে ওই এলাকায় মধুমতি নদীর তীব্র ভাঙ্গন শুরু হলে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আশ্রায়ণ প্রকল্পের কমপক্ষে একশটি ঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। সেখানে থাকা একটি অফিস ঘরসহ ৩০টি বসতঘরের মধ্যে এ বছর ভাঙ্গনের কবলে পড়ে অফিস ঘরসহ চারটি ঘর। এই সুযোগে প্রকল্প এলাকার একটি চক্র রাতের আঁধারে ঘরগুলোর মালামাল ভাঙারির দোকানে বিক্রি করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১১-২০১২ অর্থ বছরে জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার টগরবন্ধ ইউনিয়নের চাপুলিয়া গ্রামে মধুমতি নদীর তীর ঘেঁষে ১৩০টি পরিবারের আবাসনের জন্য নির্মাণ করা হয় আশ্রায়ণ প্রকল্প নামে। বসবাসের কয়েক বছরের মাথায় নদীভাঙনের কবলে পড়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পটির ঘরগুলি। তবে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ১০০টি ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ বছর ভাঙন ঝুঁকিতে প্রকল্পের চারটি পরিবার অন্যত্র চলে যায়। এই সুযোগে সেসব ঘরের ঢেউটিন, লোহার এঙ্গেল ও ইট খুলে নিয়ে রাতের আঁধারে ভ্যান ভর্তি করে নামমাত্র মূল্যে ভাঙারির দোকানে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে ওই প্রকল্পের কয়েকজন বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চাপুলিয়া গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা ইমরুল শেখ ইমুল, আরিফুল শেখ ও মুকুল শেখ রাতের আঁধারে ভ্যান ভর্তি করে কয়েকটি ঘরের ঢেউটিন ও লোহার এঙ্গেল পাশ্ববর্তী বোয়ালমারী উপজেলার সহস্রাইল বাজারের বিভিন্ন ভাঙারির দোকানে বিক্রি করেছে। এখনো ওইসব ঘরের কিছু মালামাল তাদের বাড়ির সামনে জমা আছে। যেকোন সময় চক্রটি ওইসব মালামালও বিক্রি করে দিতে পারে।’

ভাঙ্গারির দোকানে মালামাল বিক্রির অভিযোগটি অস্বীকার করে শেখ ইমুল বলেন, ‘নদীতে প্রকল্পের অফিস ঘর ভেঙে যাচ্ছিল। তাই অফিস ঘরের মালামাল খুলে এনে আমার ঘরের সামনে রাখা হয়েছে। এসব দিয়ে নতুন করে আবার ঘর করা হবে।

তিনি বলেন, কয়েক বছর আগে একবার ১০ মণ লোহার মালামাল বিক্রি করেছিলাম। পরে ইউএনও অফিস থেকে জানতে পেরে আমাকে গ্রেপ্তার করে। এরপর সেই মালামাল ফেরত দিয়ে আমি মুক্তি পাই। সেই থেকে আমি আর কোন সরকারি মালামাল বিক্রি করিনি।

চাপুলিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকার সভাপতি আকুব্বর শেখ বলেন, ‘আমরা যখন এখানে আসি তখন ১৩০ পরিবারের বসবাস ছিল। প্রতিবছর নদীতে ভাঙতে ভাঙতে এখন আমরা মাত্র ৩০ পরিবার বসবাস করি। প্রকল্পের ঘরগুলোর মালামাল গোপনে বিক্রি হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এসব আমার জানা নেই।’

বিষয়টি নিশ্চিত করে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল কালাম কালু বলেন, ‘বেশ কয়েকবছর ধরে মধুমতি নদীতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর ভেঙে যাচ্ছে। এই সুযোগে ওখানের কিছু লোকজন সরকারি মালামাল নিয়ে বিক্রি করে দিচ্ছে।’ তিনি বলেন, ঘরগুলি যখন নির্মাণ করা হয় তখন নদী অন্তত এক কিলোমিটার দূরে ছিল। এরপর থেকে নদী ভাঙতে ভাঙতে এ আশ্রয়ণ প্রকল্পে চলে এসেছে।

আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেল ইকবাল বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের অবশিষ্ট ঘরগুলি ভাঙ্গণের ঝুঁকিতে রয়েছে। এর আগে কয়েক বছরে একশো ঘর নদীতে বিলীন হয়েছে। এ ঘরগুলি সরকারি সম্পত্তি। সরকারি মালমাল গোপনে বিক্রি করা দন্ডনীয় অপরাধ। ঘরের মালামাল গোপনে বিক্রির বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।