ফরিদপুরে বলাৎকারের অভিযোগে শিক্ষকের চুল কেটে মুখে আলকাতরা দিলো স্থানীয় জনতা

মানসিক চাপ বাড়লে তা চোখে, মুখে স্পষ্ট ফুটে ওঠে। কথায় রয়েছে, মনের ছাপ মুখে পড়ে।
সুতরাং আপনি যদি নিজের সমস্যা সম্পর্কে কিছু না বলেন, তবুও আপনার শরীরই জানান দেবে অনেক কিছুই। মানসিক চাপ বাড়লে শরীরে তার লক্ষণ দেখা দেয়।
রাতে ঠিক করে ঘুম হয় না। বাড়ছে অনিদ্রার সমস্যা। ক্লান্ত থাকার সত্ত্বেও মাঝরাতে বার বার ঘুম ভেঙে যায়। এ লক্ষণকে অবহেলা করবেন না। এর কারণে ওজনও বেড়ে যায়। এগুলোর পেছনে দায়ী মানসিক চাপ।
প্রচণ্ড পরিমাণে মাথার যন্ত্রণা হচ্ছে? টানা ঘুম দিয়েও মাথার যন্ত্রণা কমাতে পারছেন না? এ ঘন ঘন মাথা ব্যথা আদতে মানসিক চাপের লক্ষণ। এ সমস্যা তখনই দেখা দেয় যখন আপনি অতিরিক্ত মানসিক চাপের মধ্যে থাকেন।
বাড়ির খাবার খেয়েও দেখা দিচ্ছে অ্যাসিডিটির সমস্যা। যদি আপনার পেটের সমস্যা না থাকে তাহলে এটাও কিন্তু মানসিক চাপের জন্যই ঘটে। কারণ পাচনতন্ত্র বিভিন্ন স্নায়ু দ্বারা মস্তিষ্কের সঙ্গে যুক্ত। তাই যখনই মানসিক চাপ বাড়ে তার প্রভাব পড়ে হজমের ওপর। এ সমস্যা ক্রমাগত চলতে থাকলে ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোমের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
একটানা বসে কাজ করলে ঘাড়, কাঁধ এবং পিঠে ব্যথা হতে শুরু হয়। অনেকেই ভাবেন যে শারীরিক পরিশ্রমের কারণে পেশিতে ব্যথা হচ্ছে। কিন্তু সেটা নয়। মানসিক চাপ বাড়লে অনেক সময় পেশিতে ক্র্যাম্প হয়।
স্ট্রেস বাড়লে শরীরে ক্লান্তি দেখা দেয়। কাজে মন বসে না। কোনো কাজই ঠিক করে করা যায় না। কিছু সময়ের জন্য শরীরও আপনার মনের মতো ‘ফ্লাইট মোড’-এ চলে যায়। এ লক্ষণ সহজেই ধরা পড়ে ঠিকই কিন্তু বেশির ভাগ মানুষ এটা উপেক্ষা করেন।
টেলিভিশনের একটি বিজ্ঞাপনে দেখা যায়, মাটি যতই চাপ দিক না কেন, তাদের পণ্যটি ১২৫০ ফুট গভীরে যেয়েও সেই চাপ নিতে পারবে। আমাদের দেশের কেউ কেউ করদাতাদেরও ওই পণ্য মনে করেন। অর্থাৎ আপনাকে যতই চাপ দেওয়া হোক, আপনি সেই চাপ নিতে পারবেন। আপনি তা নিতে বাধ্য। আপনার কাছে কোনো উপায় নেই। কারণ আপনার বেতনদাতা বেতন দেওয়ার সময়ই আপনার কাছ থেকে কর কেটে রাখে। এটা আমাদের কর কর্তৃপক্ষের কাছে কর আদায়ের অনেক সহজ সমাধান। বাড়তি কর দরকার– করের হার বাড়িয়ে দাও। তাতে আপনার আয় কত কমলো, সে জন্য তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। এত সহজভাবে সরকারের আয় বাড়ানোর উপায় বোধ হয় এই দুনিয়ায় আর কোথাও নেই। যারা ব্যক্তি করদাতা বিশেষ করে বেসরকারি চাকরিজীবী, তাদের কপালে বছর ঘুরলেই নেমে আসে বাড়তি করের এ খড়্গ।
প্রতিবছর বাজেট আসে; আর করদাতারা আশায় বুক বাঁধেন, কিছুটা বুঝি করের বোঝা কমবে। বাস্তবে দিন দিন এই বোঝা বেড়েই চলেছে। এদিকে নজর দেওয়ার যেন কেউ নেই। বিগত সরকার গণবিরোধী বলে পরিচিত ছিল। তাই গণআন্দোলনের মুখে সরকারটি চলে যাওয়ার পর বেসরকারি চাকরিজীবী এবং নিয়মিত করদাতারা ভেবেছিলেন, এবার হয়তো সেই দুঃখের দিনের অবসান ঘটবে। অন্তত তাদের জন্য ভালো কিছু একটা হয়তো আসবে।
এখন যিনি সরকারপ্রধান তিনি বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তি, অর্থনীতিরও শিক্ষক। বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে যারা আছেন তাদেরও অনেকে স্বনামধন্য অর্থনীতিবিদ। তারা সব সময় দেশের মানুষ, অর্থনীতি নিয়ে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে আসছেন। তাদের কাছে ন্যায়পরায়ণতা ও জনহিতৈষী পদক্ষেপ আশা করা খুব বেশি কিছু ছিল না। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, বাজেটে এ নিয়ে সদর্থক চিন্তা-চেতনার প্রতিফলন ঘটেনি। মানুষ হতাশ বললে অতিরঞ্জন হবে না।
আরও হতাশার বিষয়, পূর্বের ধারাবাহিকতায় এসেছে গতানুগতিক এক বাজেট। যেখানে সহজ পন্থায় রাজস্ব বাড়ানোর চিরাচরিত পথেই হেঁটেছে বর্তমান সরকার। যারা নিয়মিত কর দেন তাদের করের বোঝা আরও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। করের হার ও ধাপ বাড়িয়ে এ অপকর্মটি করা হয়েছে। আগের আয়ে যে কর আসত, নতুন নিয়মে অর্থাৎ ২০২৫-২৬ করবর্ষে তার চেয়ে ৯ শতাংশ হারে করের বোঝা বেড়ে গেছে অনেক করদাতার। আর ২০২৬-২৭ করবর্ষে কারও বার্ষিক করযোগ্য আয় (৫০ হাজার প্রতি মাসে) যদি হয়, তাঁর আয়কর বাড়বে ১২ দশমিক পাঁচ শতাংশ। এভাবে আসলে সবার করই বেড়ে গেল। তার মানে, চলমান অর্থবছর থেকে আপনার বেতন কমে গেল। এ দুঃসংবাদটা এমন সময়ে এসেছে যখন মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের ব্যয়যোগ্য আয় কমে গেছে। অর্থাৎ কর বৃদ্ধির কারণে সাধারণ মানুষ দ্বিগুণ হারে ক্ষতিগ্রস্ত হলো। একদিকে দেখানো হয়েছে, আপনার কর রেয়াত বেড়েছে। অন্যদিকে করহার বাড়িয়ে যা রেয়াত দেওয়া হয়েছে, তার চেয়ে অধিক পরিমাণে টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে। এটাকে শুভঙ্করের ফাঁকি বললেও কম বলা হয়।
এভাবে কিন্তু খুব বেশি আয়কর সরকার পায়, তা নয়। বিশেষ করে বেসরকারি খাতে এমন পরিস্থিতিতে ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। এই যে বছরে যে পরিমাণ রিটার্ন জমা পড়ে, তার ধারকদের কিয়দংশও আয়কর দেয় না। তার কারণ বের করতে হলেও আলোচ্য বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে আমাদের নীতিনির্ধারকদের।
আমাদের সুস্পষ্ট প্রস্তাব হচ্ছে; করের আওতা বাড়িয়ে কর আদায় বাড়ানো হোক। করমুক্ত আয়সীমা পাঁচ লাখ টাকায় উন্নীত করার কথাও অনেক দিন যাবৎ বলা হচ্ছে। করের ধাপগুলো সমন্বয় করার গুরুত্বও উপলব্ধি করা দরকার। আমরা বলেছি, পাঁচ লাখের পরবর্তী ১,০০,০০০ পর্যন্ত ৫ শতাংশ, পরবর্তী চার লাখ ১০ শতাংশ, পরবর্তী পাঁচ লাখ ১৫ শতাংশ, পরবর্তী ছয় লাখ ২০ শতাংশ, পরবর্তী ৩০ লাখ ২৫ শতাংশ, এর পর ৩০ শতাংশ হতে পারে। সর্বজনীন পেনশন স্কিমের মধ্যে যারা কর দিচ্ছেন, তাদের করের টাকা থেকে একটা অংশ পেনশন স্কিমে রেখে করদাতাদের জন্য আজীবন পেনশনের ব্যবস্থা করা যায়। কর থেকে সবার জন্য পেনশন স্কিমের সঙ্গে সঙ্গে হেলথ ইন্স্যুরেন্সেরও ব্যবস্থা করা কঠিন কিছু না। সহনীয় মাত্রায় কর আরোপ হলে এবং করদাতার জন্য ভবিষ্যৎ পেনশনের ব্যবস্থা করলে অধিক সংখ্যক মানুষ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কর প্রদান করবেন– এ কথাও জোর গলায় বলা যায়।
আনোয়ার ফারুক তালুকদার: অর্থনীতি বিশ্লেষক
ফরিদপুরের করিমপুর হাইওয়ে থানায় সড়ক দুর্ঘটনায় জব্দ করা একটি বাসে আগুনের ঘটনা ঘটেছে। তবে আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেনি হাইওয়ে থানা পুলিশ।
শনিবার (১৯ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টার দিকে জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের করিমপুর হাইওয়ে থানা সংলগ্ন ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিস গিয়ে রাত ১২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
করিমপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘গত ঈদুল আজাহার আগে আরএসএফ পরিবহনের বাসটি মধুখালীতে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়। এরপর বাসটি জব্দ করে থানার দেড়শ গজ পশ্চিমে সড়কের পাশে রাখা ছিল। মালিকপক্ষ লোক রেখে বাসটি দেখাশুনা করত। শনিবার দুপুর থেকে তারাও ছিলেন না। রাত সাড়ে ১১টার দিকে জানতে পারি বাসটিতে আগুন লেগেছে। কীভাবে আগুনের সুত্রপাত বা দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়েছে কিনা জানি না।’
আপনার মতামত লিখুন
Array