খুঁজুন
মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০২৫, ১০ আষাঢ়, ১৪৩২

ফরিদপুরে লোকসানের মুখে পেঁয়াজ চাষীরা, ন্যায্য মূল্য না পেয়ে হতাশ

মফিজুর রহমান শিপন, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০২৫, ১:৪০ পিএম
ফরিদপুরে লোকসানের মুখে পেঁয়াজ চাষীরা, ন্যায্য মূল্য না পেয়ে হতাশ

দেশের পেঁয়াজ উৎপাদরে দ্বিতীয় বৃহত্তর জেলা ফরিদপুর। এ জেলার চাষীরা বর্তমান পেঁয়াজের দরে লোকসানের মুখে পড়েছে। ফরিদপুরের বড় বড় বাজার গুলোতে পেঁয়াজের দর ১৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ১৭০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। চাষীদের দাবি, ২০০০ থেকে ২২০০ টাকা বিক্রি করতে পারলে তাদের লোকসানে পড়তে হতো না।

সরেজমিনে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার ঠেনঠেনিয়ার পেঁয়াজ বাজারে গিয়ে দেখা যায়- প্রকার ভেদে এই বাজারের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে পনেরশো থেকে সর্বোচ্চ ১৭০০ টাকায় মন প্রতি। বর্তমানে পেঁয়াজের দরের এমন চিত্র জেলা শহর ও আশে-পাশের বাজার গুলোতেও।

 

সালথার ঠেনঠেনিয়া পেঁয়াজের এই বাজারে সকাল ছয়টা থেকেই পেঁয়াজ চাষীরা কেউ ভ্যান যোগে, কেউ নসিমন, কেউ অটো, কেউবা বস্তা মাথায় করে, আবার কেউ ধামায় (ঝুড়ি) করে বাজারে তুলছে পেঁয়াজ। সেখানে স্থানীয় ব্যবসায়ীর পাশাপাশি দেশের দুর্দান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ীরাও বিক্রেতার কাছ থেকে দরদাম করে পেঁয়াজ সংগ্রহ করছে। ঠেনঠেনিয়া এই বাজারটি চলে দুপুর পর্যন্ত। সপ্তাহে রবি ও বুধবার বসে পেঁয়াজের হাট। প্রতি হাটে পেঁয়াজের দুই শতাধিক বড় ব্যবসায়ী আড়াইশো থেকে ৩০০ টন পেঁয়াজ ক্রয় করে দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহরে নিয়ে যায়।

সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম খান সোহাগ বলেন, ঠেনঠেনিয়া বাজারের প্রতি হাটে কোটি টাকার বেশি পেঁয়াজ ক্রয় বিক্রয় হয় । ঢাকা, চট্রগ্রাম, রবিশালসহ বেশ কয়েকটি বিভাগীয় শহরের পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা এখানে পেঁয়াজ কিনতে আসেন । যোগযোগ ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় সহজেই কৃষি পণ্যটি ক্রয় করে নিয়ে যেতে পারেন তারা।

এ দিকে পেঁয়াজ চাষীরা জানিয়েছেন, পেঁয়াজ উৎপাদনে তুলনামূলকভাবে ব্যয় বেড়েছে, কিন্তু সেই হারে দর বাড়েনি। এ মৌসুমে পেঁয়াজের আবাদও বেশি হয়েছে।

কথা হয় বাজারের পেঁয়াজ চাষী নিজাম উদ্দিন শেখ, আলমগির মোল্লা, ঈব্রাহিম মাতুব্বর, নিছার উদ্দিন খানের সঙ্গে । তারা সকলেই জানান, পেঁয়াজ যখন ঘরে তুলি সেই সময় দাম হাজারের কম ছিল। একটু ভাল দরের আশায় এতোদিন ঘরে সংগ্রহ করে রেখে ছিলাম । কিন্তু এখন যে দর বাজারে আছে তাতে পুঁজি টিকানো কষ্ট । তার ওপর আবার এতো দিনে পেঁয়াজের ঘাটতি হয়েছে ।

এই চাষীরা দাবি করেন, বাজারের আমরা যাদি দুই হাজার থেকে ২২শ টাকায় দর পেতাম তাহলে লোকসানে পড়তে হতো না।

এদিকে পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা বললেন, ফরিদপুরের যতগুলো পেঁয়াজের বাজার রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম সালথার ঠেনঠেনিয়ার বাজারটি। ঈদের পরেই হঠাৎ করে পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দর কিছুটা কমেছে বলে তাদের ধারণা।

পেঁয়াজ ব্যবসায়ী খোরশেদ মোল্লা জানান, এ বাজার থেকে প্রতি হাটে ৩০ থেকে ৪০ ট্রাক পেঁয়াজ দেশের বিভিন্ন জেলায় যায়। গড়ে এক কোটি টাকার বেশি পেঁয়াজ প্রতি হাটে ক্রয় বিক্রয় হয় ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শাহেদুজ্জামান বলেন, জেলার তিন প্রকারের পেঁয়াজের আবাদ হয়। এর মধ্যে শীতকালীন মুড়িকাটা পেঁয়াজ, হালি পেঁয়াজ এবং দানা পেঁয়াজ । এ তিন ধরনের পেঁয়াজের মধ্যে হালি পেঁয়াজ বেশি আবাদ হয় । এই মৌসুমে ফরিদপুরে ৩৮ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়। এ বারের উৎপাদনের হারও বেশ ভাল বলে জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।

ফরিদপুরে পুত্রবধূকে ধর্ষণের দায়ে শ্বশুরের যাবজ্জীবন

হাসান মাতুব্বর (শ্রাবণ), ফরিদপুর:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০২৫, ৪:৫৬ পিএম
ফরিদপুরে পুত্রবধূকে ধর্ষণের দায়ে শ্বশুরের যাবজ্জীবন

ফরিদপুরে পুত্রবধূকে ধর্ষণের দায়ে শ্বশুর গণি খা (৫০) নামে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। একই সাথে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয়েছে তাকে।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিকাল ৩ টার দিকে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) শামীমা পারভীন এ রায় দেন।

সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার গোয়াইলপোতা গ্রামের আমির খা’র পুত্র। রায় ঘোষণার সময় আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে পুলিশ পাহারায় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ওই গৃহবধূর স্বামী প্রবাসে থাকার সুযোগে ২০১৯ সালের ২০ এপ্রিল শ্বশুরের ধর্ষণের শিকার হয়। এক পর্যায়ে গর্ভবতী হয়ে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে একই বছরের ২৮ জুন নগরকান্দা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন ওই গৃহবধূর ভগ্নিপতি (বোন জামাই)।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ঘটনার দিন রাতে গৃহবধূ ঘুমিয়ে থাকলে তার ঘরে প্রবেশ করে গণি খা। তখন ভয়ভীতি দেখিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে ওই গৃহবধূ শারিরীকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে ডাক্তারী পরীক্ষার মাধ্যমে গর্ভবতী হওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে ওই গৃহবধূ ঘটনার বর্ণনা দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরিদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারী কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট গোলাম রব্বানী ভুইয়া রতন জানান, দীর্ঘ স্বাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ঘটনাটি প্রমাণিত হলে বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন। এ রায়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়, সমাজে ধর্ষণের মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়ে কেউ রক্ষা পাবে না।

সালথায় ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছিল স্কুলছাত্রের মরদেহ

আবু নাসের, সালথা:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০২৫, ৩:১৯ পিএম
সালথায় ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছিল স্কুলছাত্রের মরদেহ

বাবার উপর অভিমান করে ফরিদপুরের সালথায় ঘরের ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে সামিউল শরীফ (১২) নামে এক স্কুলছাত্র আত্মহত্যা করেছে বলে জানা গেছে।

সোমবার (২৩ জুন) দিবাগত রাতে উপজেলার বড় খারদিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত সামিল বড় খারদিয়া গ্রামের মেহেদী হাসান শরীফের ছেলে ও বড় খারদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র।

সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, বাবার উপর অভিমান করে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র সামিউল আত্মহত্যা করে। নিহতের মরদেহ আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা রুজু হয়েছে।

ফরিদপুরে কেন্দ্রীয় কৃষকদল নেতার সংবাদ সম্মেলনে হামলার অভিযোগ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০২৫, ৩:০১ পিএম
ফরিদপুরে কেন্দ্রীয় কৃষকদল নেতার সংবাদ সম্মেলনে হামলার অভিযোগ

ফরিদপুরে কেন্দ্রীয় এক কৃষকদল নেতার বাড়ির প্রবেশপথ আটকিয়ে বেড়া দেয়ার ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করতে গিয়ে প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হয়েছেন। এ সময় তার পরিবারের নারী সদস্যসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে পিঞ্জিরা বেগমকে (৪০) উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।

 

সোমবার (২৩ জুন) বিকাল সাড়ে ৫ টার দিকে ফরিদপুর জেলা সদরের গেরদা ইউনিয়নের নিখুরদি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে জমি সংক্রান্ত বিরোধে ও বাড়ির প্রবেশপথে বেড়া দেয়ার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহদপ্তর সম্পাদক ও ওই এলাকার ইয়াকুব আলির ছেলে অ্যাডভোকেট সুলায়মান হোসাইন। তার পৈত্রিক বাড়ি ও নানা বাড়ি পাশাপাশি অবস্থানে। বর্তমানে নানা বাড়িতে পরিবারের লোকজন বসবাস করেন।

 
সংবাদ সম্মেলনে ব্যানারে উল্লেখ করা হয়-আওয়ামী লীগের দোসর, ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী পুলিশ এএসআই ইউসুফ হোসেন নূরের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, জোরপূর্বক ইয়াতিমদের ভূমি দখল করে বিএনপি নেতার প্রতি মিথ্যা, বানোয়াট অভিযোগ তৈরি করে সমাজে নানা প্রকার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন।
 
এ সময় উপস্থিত ছিলেন-তার মা লাইলী বেগম, মামা ফারুক ফকির, নানি সুফিয়া বেগম, খালা পিঞ্জিরা বেগমসহ উপজেলা ও ইউনিয়ন কৃষকদলের নেতৃবৃন্দ।
 
অ্যাডভোকেট সুলায়মান হোসাইন জানান, যখন সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তখন প্রতিপক্ষ আলতাফ হোসেন (৭০) সহ কয়েকজন এসে বাঁধা দেন। এ সময় একজন ব্যানার ছিনিয়ে নিয়ে যায়। তখন বাঁধা দিতে গেলে তার পরিবারের সকলকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। এ সময় প্রতিপক্ষের মারধরে খালা পিঞ্জিরা বেগম আহত হয়ে পড়লে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হয়। এছাড়া তাকে মাটিতে ফেলে মারধরও করা হয়।
 
এ ঘটনার পরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমার বয়স যখন ৭ বছর এবং বোনের বয়স ৭ মাস তখন আমার বাবা মারা যায়। আমরা দুইভাই বোন এতিম হয়ে পড়লে পাশেই নানা বাড়িতে থাকি। ওই সময়ে আমার বাবার পৈত্রিক সম্পত্তি হাতিয়ে নেয় তার বড়ো ভাই আলতাফ হোসেন। আমরা বড়ো হওয়ার পরে জমি উদ্ধারে কাজ করতে গেলে আলতাফ হোসাইন ও তার ছেলে পুলিশের এএসআই ইউসুফ হোসেন নূর অত্যাচার ও হুমকি-ধামকি দিতে থাকে।
 
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি আমার নানা বাড়ির প্রবেশপথে জোরপূর্বকভাবে বেড়া নির্মাণের জন্য খুঁটি গেড়েছে। আমি এর সঠিক বিচারের দাবি জানাই।
 

জানতে চাইলে এএসআই ইউসুফ হোসেন নূরের পিতা আলতাফ হোসেন সম্পত্তি আত্মসাতের বিষয়ে অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ওর বাবার পারিবারিক ঝামেলার সময় বাড়ির জমি আমার কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। বর্তমানে আমার সম্পত্তিতে বেড়া দিয়েছি। কয়েকবার মাপঝোঁপ করেও দেখা হয়েছে।
 
তিনি আরও বলেন, গত ১৭ বছর যাবৎ আমরা বিএনপির নির্যাতিত পরিবার। বিভিন্ন সময় জেলজুলুমের শিকার হয়েছি। এই সুলাইমান আওয়ামী লীগের লোকজনের সাথে মিশে আমাদের পুলিশ দিয়ে ধরিয়েছে।
 
আজ আমার ছেলেকে সন্ত্রাসী ও আওয়ামী লীগের দোসর বলতেছে। আমার ছেলের নামে যাত্রাবাড়ী থানায় মিথ্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে এই সুলায়মানের মাধ্যমে। তখন আমার ছেলে মাদারীপুরে র‌্যাবে কর্মরত ছিল। আমার ছেলের নামে কেন মিথ্যা মামলা দেয়া হলো, আমিও এর সঠিক বিচার চাই।