খুঁজুন
শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১১ পৌষ, ১৪৩২

বোয়ালমারীতে বিএনপির সংঘর্ষে পাল্টাপাল্টি মামলা, আসামি ৮ শতাধিক

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: রবিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৫, ১০:০৩ পিএম
বোয়ালমারীতে বিএনপির সংঘর্ষে পাল্টাপাল্টি মামলা, আসামি ৮ শতাধিক

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় স্থানীয় নেতৃত্বদানকারী কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সহ-সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার নাসিরুল ইসলাম এবং বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামসুদ্দীন মিয়া ঝুনুকে (ভিপি ঝুনু) প্রধান আসামি করে পাল্টাপাল্টি দুইটি মামলা হয়েছে।

রবিবার (০৯ নভেম্বর) বিকেলে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুল হাসান।

এর আগে গত ৭ নভেম্বর বিএনপির দুইগ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় শনিবার (০৮ নভেম্বর) দিবাগত রাতে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে থানায় এ মামলা দুটি রুজু করা হয়। পৃথক মামলায় ২২৬ জনের নাম উল্লেখ করে ৬৫০ জনকে দুই মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় ফরিদপুর-১ (মধুখালী-বোয়ালমারী-আলফাডাঙ্গা) আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সহ-সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার নাসিরুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী শামসুদ্দীন মিয়া ঝুনুর অনুসারী বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মজিবুর রহমান বাবু বাদি হয়ে ১৮৮ জনের নাম উল্লেখ করে ২০০-৩০০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করে বিম্ফোরক আইনে মামলা করেন। মামলা নম্বর-১০।

অপর দিকে কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সহ-সভাপতি ও বিএনপি থেকে মনোয়ন প্রত্যাশী খন্দকার নাসিরুল ইসলামের অনুসারী উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম বাদি হয়ে অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামসুদ্দীন মিয়া ভিপি ঝুনুকে প্রধান আসামি করে ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে ৩০০-৪০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে বিস্ফোরক আইনে মামলা করেছেন। মামলা নম্বর-১১।

এ মামলায় বিএনপিসহ বিভিন্ন দল থেকে ফরিদপুর-১ আসনের ৪ বারের সাবেক সংসদ সদস্য কেন্দ্রীয় জনতা পার্টির উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ মো. আবু জাফরকে ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় ৩ নম্বর আসামি করা হয়েছে পাশের সালথা উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের বড় খারদিয়া গ্রামের বাসিন্দা মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারকে।

থানা ও এলাকা সূত্রে জানা যায়, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্প্রতি বিএনপি থেকে ২৩৭ আসনের মধ্যে ফরিদপুর জেলার ৪টি আসনের তিনটিতে দলীয় মনোনয়ন ঘোষণা করে দলটি। এর মধ্যে জেলার বোয়ালমারী, মধুখালী ও আলফাডাঙ্গা উপজেলা নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-১ আসনে দলীয় মনোনয়ন ঘোষণা স্থগিত রাখে। তবে আসনটিতে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সহসভাপতি, সাবেক এমপি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম এবং বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ভিপি শামসুদ্দীন মিয়া ঝুনু মিয়া আলাদা আলাদা দলীয় সভা-সমাবেশ চালিয়ে আসছিল। দুই নেতার সভা-সামাবেশে বিভিন্ন সময় পক্ষে-বিপক্ষে কথা চালাচালিও করতে শোনা গেছে। এ নিয়ে দুই নেতার সমর্থকদের মধ্যে কয়েকবার ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। খন্দকার নাসিরুল ইসলাম ও শামসুদ্দীন মিয়া ঝুনুর নেতৃত্বে এলাকাটিতে বিএনপি দুই ভাগে বিভক্ত থাকলেও নাসিরুল ইসলামের সাথেই তিন উপজেলার বেশির ভাগ নেতাকর্মীরা। গত ২১ অক্টোবর ১০ বছর পরে বোয়ালমারী, মধুখালী ও আলফাডাঙ্গা উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটি গঠিত হয়। কমিটিতে খন্দকার নাসিরুল ইসলামের অনুসারীরা বড় পদ গুলোতে স্থান পায়। কমিটি নিয়ে দুই নেতার সমর্থকদের মধ্যে তীব্র অন্তোকোন্দল চলতে থাকে। এ কমিটি গঠনের পরেরদিন থেকে বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গায় বিক্ষোভ ও মশাল মিছিল চালিয়ে যাচ্ছিল ভিপি ঝুনু অনুসারীরা। এক পর্যায়ে গত শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বিল্পবী ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বোয়ালমারী পৌর বাজারে দুই পক্ষ আলাদা জায়গায় সমাবেশ করে। সমাবেশ করে মিছিল করে আসার সময় মাঝকান্দি-বোয়ালমারী-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের বোয়ালমারী ওয়াবদা মোড়ে মুখোমুখি অবস্থানে পৌছিলে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, ভাংচুর ও একাংশের বিএনপির কার্যালয়সহ ১০-১২টি মোটরসাইকেলে অগ্নি সংযোগ করে বিক্ষুব্ধরা। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের ৪০-৫০ জন কমবেশী আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

এ ঘটনার পরেরদিন শনিবার দিবাগত রাতে ২২৬ জনের নাম উল্লেখ করে স্থানীয় থানায় পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে। দুই মামলায় ৬৫০জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। তবে আজ রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোন মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান বলেন, বিএনপির দুইপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় শনিবার দিবাগত রাতে বোয়ালমারী থানায় দুইটি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

বর্ণাঢ্য আয়োজনে শেষ হলো ফরিদপুর জিলা স্কুলের গৌরবময় ১৮৫ বছর পূর্তি ও পুনর্মিলনী

পান্না বালা, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৪:১৫ পিএম
বর্ণাঢ্য আয়োজনে শেষ হলো ফরিদপুর জিলা স্কুলের গৌরবময় ১৮৫ বছর পূর্তি ও পুনর্মিলনী

বর্ণাঢ্য ও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনের মধ্য দিয়ে শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) রাতে শেষ হয়েছে ফরিদপুর জিলা স্কুলের গৌরবময় ১৮৫ বছর পূর্তি ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান। দুইদিনব্যাপী এ আয়োজনে প্রিয় শিক্ষাঙ্গণে ফিরে এসে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন নবীন ও প্রবীণ শিক্ষার্থীরা। স্মৃতিময় এ মিলনমেলায় অংশ নিয়ে অনেকেই যেন ফিরে গিয়েছিলেন শৈশবের সোনালি দিনগুলোতে।

এই আনন্দঘন আয়োজনে অংশ নিতে ছুটে আসেন স্কুলটির সবচেয়ে প্রবীণ শিক্ষার্থী আকিদুল ইসলাম। তিনি ১৯৫২ সালে ফরিদপুর জিলা স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন পাস করেন। বয়সের ভারে নুয়ে পড়লেও আবেগ ধরে রাখতে পারেননি তিনি। একইভাবে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অনুষ্ঠানে যোগ দেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ও পরিভ্রাজক হাসনাত আব্দুল হাই (মেট্রিকুলেশন-১৯৫৪) এবং সাবেক রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ সুভাষ ঘোষ (মেট্রিকুলেশন-১৯৫৯)। পুরনো সহপাঠীদের টানে তারা সবাই ফিরে আসেন প্রিয় বিদ্যাপীঠে।

সকাল থেকেই শিক্ষার্থীরা সহপাঠীদের খুঁজে বেড়ান স্কুল প্রাঙ্গণজুড়ে। দীর্ঘদিন পর বন্ধুর দেখা পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে অনেককে বুকে জড়িয়ে ধরে বলতে শোনা যায়— “এতদিন কোথায় ছিলি বন্ধু?”

বেলা ১১টার দিকে স্কুলের উন্নয়নে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের ভূমিকা নিয়ে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেওয়া হয় ফরিদপুর জিলা স্কুল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন গঠনের। এতে আহ্বায়ক করা হয় মির্জা মো. আরিফুর রহমান (১৯৮৪ ব্যাচ) এবং সদস্য সচিব করা হয় ওয়াহিদ মিয়াকে (১৯৮৯ ব্যাচ)।

আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান ও সদস্য সচিব ওয়াহিদ মিয়া। আলোচনায় অংশ নেন প্রাক্তন শিক্ষার্থী মীর মো. নাসির হোসেন, শহীদুল হাসান, সুভাষ চন্দ্র ঘোষ, মিজানুর রহমান, আতিয়ার রহমান, শামসুল আলম, জাহাঙ্গীর হোসেন, পান্না বালা, মির্জা মো. আরিফুর রহমান, বেনজীর আহমেদ, মো. সাইফুজ্জামান চৌধুরীসহ অনেকে।

সারাদিনের কর্মসূচিতে ছিল মিনি ম্যারাথন, বর্তমান শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে চিত্রাঙ্কন ও বিতর্ক প্রতিযোগিতা, পিঠা উৎসব, সংগীতানুষ্ঠান, স্মৃতিচারণ ও বিভিন্ন বিনোদনমূলক আয়োজন। সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় র‍্যাফেল ড্র। রাতে দেশের স্বনামধন্য ব্যান্ড শিল্পী জেমস–এর পরিবেশনায় ব্যান্ড সংগীতের মধ্য দিয়ে দুইদিনের এ উৎসবের পর্দা নামে।

ব্রিটিশ ভারতে সরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হাতে গোনা যে কয়েকটি বিদ্যালয় রয়েছে, ফরিদপুর জিলা স্কুল তার অন্যতম। ১৮৪০ সালে যাত্রা শুরু করা এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ১৮৫ বছরের পথচলায় এ অঞ্চলের শিক্ষা, সংস্কৃতি, আন্দোলন ও সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। কালের পরিক্রমায় আজও ফরিদপুর জিলা স্কুল তার গৌরব ও ঐতিহ্য অটুট রেখে জেলার অন্যতম সেরা বিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত।

এ উপলক্ষে বিদ্যালয়ের ইতিহাস, আন্দোলন-সংগ্রামে অবদান এবং প্রবীণ-নবীন শিক্ষার্থীদের লেখায় সমৃদ্ধ “পরম্পরা” নামে ১৯০ পৃষ্ঠার একটি নান্দনিক সংকলন প্রকাশ করা হয়।

উল্লেখ্য, ফরিদপুর জিলা স্কুলের গৌরবময় ১৮৫ বছর পূর্তি ও পুনর্মিলনী উপলক্ষে দুইদিনের অনুষ্ঠান শুরু হয় বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর)। ওইদিন জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে জাতীয় পতাকা, উৎসবের পতাকা ও জিলা স্কুলের পতাকা উত্তোলন করা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান মোল্যা।

আলফাডাঙ্গায় গ্রাম্য দ্বন্দ্বে প্রাণ গেল এক ব্যক্তির, এলাকা উত্তপ্ত

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১১:০৭ এএম
আলফাডাঙ্গায় গ্রাম্য দ্বন্দ্বে প্রাণ গেল এক ব্যক্তির, এলাকা উত্তপ্ত

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার ব্রাহ্মণ জাটিগ্রাম গ্রামে গ্রাম্য বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের অতর্কিত হামলায় সাইফুল সর্দার ওরফে সাইফেল (৪৮) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ইসমাইল মোল্যা নামে আরও একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। হামলার সময় কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত আনুমানিক ১টার দিকে রাতের আঁধারে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় আধিপত্য ও পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। এরই জেরে রাতের বেলা প্রতিপক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সাইফুল সর্দারের বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় গুরুতর আহত অবস্থায় সাইফুল সর্দারকে উদ্ধার করা হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয় বলে জানান স্থানীয়রা।

এ ঘটনায় আহত ইসমাইল মোল্যাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।চিকিৎসকরা জানান, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

খবর পেয়ে আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকায় যাতে নতুন করে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।

ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) মো. আজম খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পূর্ব বিরোধের জেরে অতর্কিত হামলায় এ ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। নিহতের পরিবার ও স্বজনদের মধ্যে চলছে শোকের মাতম।

হাড় কাপাঁনো শীতে জবুথবু ফরিদপুরের জনজীবন

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১০:০০ এএম
হাড় কাপাঁনো শীতে জবুথবু ফরিদপুরের জনজীবন

হঠাৎ করে তাপমাত্রা নেমে যাওয়ায় হাড় কাপাঁনো শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছে ফরিদপুরের জনজীবন। ভোর থেকে ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শীতের তীব্রতায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষ, দিনমজুর, ভ্যানচালক, রিকশাচালক ও খেটে খাওয়া শ্রমজীবীরা।

সকালে শহরের সড়কগুলোতে মানুষের চলাচল ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় কম। অনেকেই গরম কাপড় জড়িয়ে প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের সর্দি-কাশি, জ্বর ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

শীতের প্রভাব পড়েছে কর্মজীবী মানুষের আয়ে। ভ্যানচালক ও রিকশাচালকরা জানান, সকালবেলা যাত্রী কম থাকায় আয় অর্ধেকে নেমে এসেছে। দিনমজুরদের অনেকেই কাজ না পেয়ে বসে আছেন। নদী ও চরাঞ্চলের মানুষ শীতের প্রকোপে আরও বিপাকে পড়েছেন। পর্যাপ্ত গরম কাপড় না থাকায় তারা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

শীতের কারণে জেলার হাট-বাজারগুলোতেও আগের মতো ভিড় নেই। সবজির বাজারে কিছুটা দাম বাড়তির দিকে, কারণ ভোরের কুয়াশায় কৃষকরা সময়মতো পণ্য আনতে পারছেন না। তবে শীতের সবজি উঠতে শুরু করায় ক্রেতাদের আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। চিকিৎসকরা গরম কাপড় ব্যবহারের পাশাপাশি ঠান্ডা এড়িয়ে চলা ও শিশু-বয়স্কদের বিশেষ যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

এদিকে সমাজসেবা অধিদপ্তর ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় তা এখনও অপ্রতুল বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। দ্রুত আরও শীতবস্ত্র বিতরণ ও মানবিক সহায়তা জোরদারের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

হাড় কাপাঁনো এই শীতে ফরিদপুরবাসী এখন তাকিয়ে আছে একটু উষ্ণতার আশায়, যেন স্বস্তি ফিরে আসে।