খুঁজুন
বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২ পৌষ, ১৪৩২

ফরিদপুর-ভাঙ্গা মহাসড়কে চারলেনের কাজ শুরুর প্রেক্ষিতে ব্লকেড কর্মসূচি স্থগিত

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ১৬ জুলাই, ২০২৫, ৭:২০ পিএম
ফরিদপুর-ভাঙ্গা মহাসড়কে চারলেনের কাজ শুরুর প্রেক্ষিতে ব্লকেড কর্মসূচি স্থগিত

ফরিদপুর টু ভাঙ্গা মহাসড়কের অংশে চারলেনে উন্নীতকরণের জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ আন্দোলনের মুখে আবার শুরু করা হয়েছে।

বুধবার (১৬ জুলাই) থেকে জেলা প্রশাসন থেকে দাপ্তরিক কাজ শুরু করেছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। একইসাথে তারা জানান, এ বছরের মধ্যেই চারলেনের মহাসড়ক তৈরির কাজ শুরু করা হবে।

সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে মহাসড়কের এই অংশ একেবারেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে সম্প্রতি মহাসড়কটি চারলেনে উন্নীত করার আন্দোলন শুরু হয়। গত ১৩ জুলাই ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন শেষে এ কাজ শুরুর জন্য এক সপ্তাহের আল্টিমেটাম দেন আন্দোলনকারীরা।

এরপর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে মতবিনিময় সভার আহ্বান করা হয়। মঙ্গলবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ সভা থেকে এসব সিদ্ধান্ত জানানো হয়। সভায় জেলার সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে চারলেন বাস্তবায়ন আন্দোলন কমিটির প্রতিনিধি দলের পাশাপাশি পরিবহন মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।

ফরিদপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল হাসান মোল্লার সভাপতিত্বে সভায় ফরিদপুর সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খালিদ সাইফুল্লাহ সরদার, জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মো: বাকাইদ হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধি হিসেবে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এএফএম কাইয়ুম জঙ্গি, জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক আব্দুত তাওয়াব, জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি কামরুজ্জামান সিদ্দিকী, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক কাজী রিয়াজ, সদস্য সচিব সোহেল রানা এবং চারলেন বাস্তবায়ন আন্দোলন কমিটির প্রতিনিধি দলের সদস্য আবরার নাদিম ইতু, কাজী রিয়াজ, ভিপি গিয়াস, শেখ আরিফ, সেলিম মিয়া, মাহমুদউল্লাহ, ওয়ালিদ হাসান প্রমুখ সভায় যোগ দেন।

সভায় আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, চারলেন বাস্তবায়ন কাজে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চরম অবহেলা করছেন। এজন্য তাদের এই পথে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিটি মৃত্যুর দায় নিতে হবে। এ কথায় সভায় কিছুটা উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি কামরুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, এই রুটে যানবাহন চলাচল করানোটা এখন দুঃসাধ্য ব্যাপার। জনগণের ভোগান্তির কথা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এই কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে।

সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খালিদ সাইফুল্লাহ সরদার বলেন, দীর্ঘদিন অচলাবস্থার পর চলতি বছর সেখানে সংস্কার কাজের জন্য দু’টি টেন্ডার করা হয়। কাজ শুরুর সময় অতিবৃষ্টিতে আটকে যায়। এরপর ভারি বর্ষণের ফলে সেখানে খুবই খারাপ অবস্থা সৃষ্টি হয়। আমরা পরিস্থিতি অনুধাবন করে দ্রুতই ব্যবস্থা নেবো। তবে বৃষ্টির মধ্যে কাজ করলে সেটি যথেষ্ট হবেনা বলেই আবহাওয়া ভালো হওয়ার অপেক্ষায় সময় লাগছে।

ফরিদপুর জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, মহাসড়কের এই অংশ চারলেনে উন্নীতকরণের কাজ আটকে যায় কিছু মামলা জটিলতায়। এ মামলাগুলো অনেক পুরনো। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরে আমরা আবার এই কাজ শুরু করেছি। আশা করছি দ্রুতই এ কাজ শুরু করবো।

চারলেন বাস্তবায়ন আন্দোলন কমিটির সদস্য আবরার নাদিম ইতু বলেন, প্রশাসনের আন্তরিকতা বিবেচনায় এ দাবিতে ২৩ জুলাই রোড ব্লকেড কর্মসূচী স্থগিত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আবহাওয়া অনুকূল হলেই মহাসড়ক চলনসই করার জন্য প্রয়োজনীয় মেরামত ও সংস্কার কাজ শুরু করা হবে। পাশাপাশি চারলেনের জন্য জমি অধিগ্রহনের কাজ দ্রুত শেষ করবে। একাজে কোন রকম অবহেলা বা দীর্ঘসূত্রিতা মেনে নেওয়া হবে না। সেক্ষেত্রে আমরা যেকোন সময় রোড ব্লকেড, কার্যালয় ঘেরাও বা এ জাতীয় কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।

কচুলতায় জেগে উঠছে সম্ভাবনা, বদলাচ্ছে কৃষকের ভাগ্য

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১০:৫৭ এএম
কচুলতায় জেগে উঠছে সম্ভাবনা, বদলাচ্ছে কৃষকের ভাগ্য
কচুলতায় এসেছে কৃষকের ভাগ্য পরিবর্তনের বার্তা। দেড়শ বিঘা দিগন্তজুড়ে কচুর লতার সফল চাষ মৌলভীবাজার জেলায় সৃষ্টি করেছে নতুন সম্ভাবনা। তুলনামূলক কম খরচ, কম পরিশ্রম এবং বেশি লাভজনক হওয়ায় কচুর লতা চাষে এক ধরনের কৃষি বিপ্লব দেখা যাচ্ছে এ জেলায়।

জেলার বিভিন্ন উপজেলার কৃষকরা প্রচলিত অনেক ফসলের তুলনায় বেশি আয়ের আশায় কচুর লতি চাষে ঝুঁকছেন। স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি মৌলভীবাজার থেকে প্রতিদিনই লতি পাঠানো হচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় তিনশ হেক্টর জমিতে কচুর লতি চাষ হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার গিয়াসনগর, শ্রীমঙ্গল উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের যাত্রাপাশা এবং কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর গ্রামে।

গিয়াসনগর এলাকায় দেখা গেছে, পুরো গ্রামজুড়ে এখন বাণিজ্যিকভাবে লতি চাষ হচ্ছে। স্থানীয় কৃষকরা জানান, কয়েক বছর আগেও দুই-তিন বিঘা জমিতে বিচ্ছিন্নভাবে লতি চাষ হলেও বর্তমানে তা ব্যাপক বাণিজ্যিক রূপ নিয়েছে। শুধু গিয়াসনগর এলাকাতেই মৌসুমে প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে লতির চাষ হচ্ছে।

গিয়াসনগর গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান জানান, তিনি ২১ শতাংশ জমিতে লতিরাজ বারি কচু–১ রোপণ করেছেন। প্রায় এক মাস ধরে তিনি লতি তুলছেন। প্রতি সপ্তাহে ৭০ থেকে ৭৫ কেজি লতি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। মৌসুম যত এগোচ্ছে, দামও বাড়ছে। প্রায় ৩০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে তিনি দেড় থেকে দুই লাখ টাকা লাভের আশা করছেন।

একই গ্রামের কৃষক আবদুল আজিজ জানান, তিনি এক কিয়ার জমিতে লতি চাষ করেছেন এবং আরও জমিতে চারা রোপণের পরিকল্পনা করছেন। কৃষক মিলন, কাজিম ও আফাই মিয়াসহ অনেকেই বড় পরিসরে লতি চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।

কমলগঞ্জ উপজেলায় কচুর লতি চাষে সফল হয়েছেন বিমান বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রঞ্জন কুমার। উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের আদমপুর গ্রামে তার উদ্যোগে লতি চাষ ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তার দেখাদেখি স্থানীয় অন্যান্য কৃষকরাও লতি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

এ ছাড়া শ্রীমঙ্গল উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের যাত্রাপাশা গ্রামের এংরাজ মিয়া, রোকন মিয়া, আব্দুল মজিদ ও ইউনুস মিয়া বাণিজ্যিকভাবে কচুর লতি চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার পথ খুঁজে পেয়েছেন।

স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিরোজ কান্তি রায় বলেন, গিয়াসনগর গ্রামে লতি এখন একটি সমৃদ্ধ ফসলে পরিণত হয়েছে। চার-পাঁচ বছর আগে যেখানে দুই-তিন বিঘা জমিতে লতি চাষ হতো, এখন সেখানে মৌসুমে ১৫০ বিঘা জমিতে লতির আবাদ হচ্ছে। সারা বছর ৫০ থেকে ৭০ বিঘা জমিতে লতি চাষ হয়। লতি অত্যন্ত লাভজনক ফসল এবং এতে রোগবালাই তুলনামূলক কম। গ্রামটি যেন এখন ‘লতার গ্রাম’ হয়ে উঠছে।

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দিন বলেন, কচুর লতি এ অঞ্চলে একটি দীর্ঘমেয়াদি ও লাভজনক ফসল। অল্প খরচে কৃষকরা বেশি লাভবান হচ্ছেন। লতি চাষ সম্প্রসারণে কৃষি বিভাগ সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে।

সালথায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে কৃষকলীগ নেতা আটক

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৯:০৯ পিএম
সালথায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে কৃষকলীগ নেতা আটক

ফরিদপুরের সালথায় ওয়ারেন্টভুক্ত এক আসামীকে ধরতে গিয়ে খোরশেদ খান (৪৫) নামে এক কৃষক লীগ নেতার হামলার শিকার হয়েছেন পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক মুকুল। এ ঘটনায় ওই হামলাকারী কৃষকলীগ নেতাকে আটক করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৭ টার দিকে উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের আগুলদিয়া মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

খোরশেদ খান গট্টি ইউনিয়নের কৃষকলীগের সহ-সভাপতি ও ওই গ্রামের উচমান খানের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের আগুলদিয়া মোড় এলাকায় এক ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীকে ধরতে যায় একদল পুলিশ। এ সময় ওই আসামীকে ধরতে বাধা দেন কৃষক লীগ নেতা খোরশেদ খান। এক পর্যায়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক মুকুল আহত হন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবলু রহমান খান বলেন, ওয়ারেন্টভুক্ত এক আসামীকে ধরতে গেলে খোরশেদ খান বাধা প্রদান করেন এবং পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক মুকুল আহত হন। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

মহান বিজয় দিবসে চরভদ্রাসনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা

মুস্তাফিজুর রহমান শিমুল, চরভদ্রাসন:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৬:৩৩ পিএম
মহান বিজয় দিবসে চরভদ্রাসনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা

মহান বিজয় দিবসে ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে চরভদ্রাসন সরকারী কলেজ মাঠে এ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জালাল উদ্দিন।

সভার শুরুতে উপজেলার প্রায়াত মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

পরে ইউএনও জালাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) যায়েদ হোছাইন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুর রাজ্জাক, মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ ও মো. ফখরুজ্জামান প্রমুখ।