খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১০ আশ্বিন, ১৪৩২

ভাঙ্গায় এক্সপ্রেসওয়ে ব্রিজের ওপর হাটতে গিয়ে প্রাণ গেল এসএসসি পরীক্ষার্থীর

আব্দুল মান্নান, ভাঙ্গা:
প্রকাশিত: বুধবার, ২৫ জুন, ২০২৫, ৭:২২ এএম
ভাঙ্গায় এক্সপ্রেসওয়ে ব্রিজের ওপর হাটতে গিয়ে প্রাণ গেল এসএসসি পরীক্ষার্থীর

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় এক্সপ্রেসওয়ে ব্রিজের ওপর হাটতে গিয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীর ও তাবলীগ জামাতে চিল্লার সদস্য যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) সন্ধ্যায় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা গোলচত্বর এক্সপ্রেসওয়েতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতের নাম নুরুউদ্দিন (১৭)। তিনি নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ থানার কামাল হোসেনের ছেলে এবং মোহনগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগের এসএসসি-২০২৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।

জানা যায়, এস,এস,সি পরীক্ষা শেষে বন্ধুদের সঙ্গে ৪১ দিনের তাবলীগ জামাতে এক চিল্লা দিতে ঢাকা কাকরাইল থেকে ভাঙ্গায় আসেন নুরুউদ্দিন। ছয় দিন পর এক চিল্লা শেষ করে তার বাড়ি ফেরার কথা ছিল। মঙ্গলবার আছরের নামাজ পড়ে তার বন্ধুদের সঙ্গে ভাঙ্গা গোলচত্বরে ঘুরতে আসেন তিনি।

এ সময় সন্ধ্যার দিকে ব্রিজের ওপর হাটতে গিয়ে অসাবধানতাবশত ব্রিজের ওপর থেকে নিচে পড়ে মাথায় গুরুতর আঘাত পান। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত ৮টা দিকে তার মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তানসিভ জুবায়ের বলেন,
“নুরুউদ্দিন নামের এক যুবককে গুরুতর আহত অবস্থায় আমাদের হাসপাতালে আনা হয়েছিল। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে নেওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়।

ফরিদপুরের চরাঞ্চলের মানুষের মধ্যে ভেড়া বিতরণ

তামিম ইসলাম, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৬:০৪ পিএম
ফরিদপুরের চরাঞ্চলের মানুষের মধ্যে ভেড়া বিতরণ

ফরিদপুর সদর উপজেলার সুবিধাবঞ্চিত ও পিছিয়ে পড়া চর অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে “সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের” অধীনে ভেড়া বিতরণ করা হয়েছে।

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) নদী-বিধৌত চর এলাকার মানুষের অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা নিশ্চিত করতে এই প্রকল্পের আওতায় ফরিদপুর সদর উপজেলার চারটি ইউনিয়নের ১০৭ জন সুফল ভোগীর মাঝে প্রত্যেকের জন্য দুটি ভেড়ি ও একটি ভেড়া দেওয়া হয়েছে।

এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো প্রান্তিক কৃষকদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি ঘটানো। ভেড়া বিতরণের পাশাপাশি এই অঞ্চলের মানুষদের দুই দিনের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা সঠিকভাবে পশুপালন করতে পারে। এছাড়াও, ভেড়া ও ছাগলের ঘর তৈরির জন্য ১১,০০০ টাকা এবং হাঁস-মুরগির ঘর তৈরির জন্য ৮,৮০০ টাকা করে প্রণোদনাও দেওয়া হয়েছে।

প্রকল্পের অধীনে ফরিদপুর সদর উপজেলার মোট ৫৮৩৫ জন সুফল ভোগীকে বিভিন্ন ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে। এরই অংশ হিসেবে ১৩০ জনকে উন্নত জাতের হাঁস, ২৫ জনকে দেশি মুরগি এবং ২৫ জনকে ছাগলও দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ১৫৫ জন সুফলভোগী তিন কিস্তিতে মোট ২২৬ কেজি হাঁস-মুরগির খাবার পেয়েছেন।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- প্রকল্পের পরিচালক ডা. মো. আব্দুর রহিম। তিনি বলেন, “আমাদের এই সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পটি ৭টি জেলার ৩১টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। ৬৫,২৯০ জন সুফল ভোগীকে বিভিন্ন ধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। ফরিদপুরে আমরা বিশেষ করে নদী-বিধৌত চর অঞ্চলের মানুষদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে কাজ করছি।”

সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ফরিদপুরের জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এ.কে.এম আমজাদ।

তিনি বলেন, “ভেড়া বিতরণ কেবল একটি কর্মসূচি নয়, এটি প্রান্তিক মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির একটি বড় সুযোগ। আমরা আশা করি, এই ভেড়াগুলো চর এলাকার গ্রামীণ অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং স্থানীয় মানুষদের স্বাবলম্বী করে তুলবে।”

সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মিজানুর রহমান বলেন, “সদর উপজেলার চর এলাকার মানুষের জন্য এই প্রকল্পটি একটি বড় প্রাপ্তি। আমরা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি যে প্রকল্পের সকল সুবিধা প্রকৃত সুফল ভোগীদের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছায়।”

এই সহায়তা পেয়ে খুশি চর অঞ্চলের বাসিন্দারা। চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের আকবর মোল্লা বলেন, “আমরা চর এলাকার মানুষ, আমাদের জীবন অনেক কষ্টের। এই ভেড়াগুলো পেয়ে আমরা খুব খুশি। শুধু ভেড়াই নয়, তারা আমাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং ঘর বানানোর টাকাও দিয়েছে। এতে আমাদের মতো গরিব মানুষেরা একটু মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে।”

ডিগ্রিরচর ইউনিয়নের মো. হাবিব জানান, “আমাদের আগে ভেড়া পালনের কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না। কিন্তু প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ পেয়ে আমরা এখন ভেড়া পালন করতে পারব। আশা করি, এই ভেড়াগুলো বড় হলে বিক্রি করে আমরা ভালো লাভ পাব এবং আমাদের পরিবারের অভাব কিছুটা হলেও দূর হবে।”

নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের আসমার আক্তার বলেন, “আমাদের মতো মহিলাদের জন্য এই প্রকল্প একটি বড় সুযোগ। ভেড়া পালন করে আমরাও পরিবারের আয়ে সাহায্য করতে পারব। এই ধরনের সহযোগিতা পেলে আমরাও স্বাবলম্বী হতে পারব।”

এই প্রকল্প ফরিদপুরের চর অঞ্চলের গ্রামীণ অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে এবং প্রান্তিক মানুষের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।

ভাঙ্গায় সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে মানববন্ধন

ভাঙ্গা প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৪:০৮ পিএম
ভাঙ্গায় সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে মানববন্ধন

ফরিদপুর-৪ আসনের আওতাধীন ভাঙ্গার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন দু’টিকে পার্শ্ববর্তী ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা ও সালথা) আসনে যুক্ত করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে আন্দোলনকারীরা।

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ভাঙ্গা উপজেলার এম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ কলেজপাড় এলাকায় অখণ্ড ভাঙ্গা রক্ষা কমিটির ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করেন সর্বস্তরের জনগণ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আমরা প্রশাসনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি, যতদিন না পর্যন্ত আমাদের দুই ইউনিয়নকে ফরিদপুর-৪ আসনের সাথে যুক্ত করা না হবে, ততদিন পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

বক্তারা আন্দোলনে গ্রেফতার প্রধান দুই সমন্বয়ক আলগী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ম ম সিদ্দিক মিয়া ও পলাশ মিয়াকে নিঃস্বার্থভাবে মুক্তির দাবি জানান।

বক্তারা আরো বলেন, ভাঙ্গাকে ছোট করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এটি কোনোভাবেই আমরা মেনে নিতে পারি না, পারব না। আমরা অখণ্ড ভাঙ্গা চাই।

মানববন্ধনকারীদের অভিযোগ, স্বাধীনতার পর থেকে ভাঙ্গা উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন বঞ্চিত হয়ে আসছে। এবার উপজেলাকে দ্বিখণ্ডিত করার মাধ্যমে আরো অবহেলার স্বীকার করা হচ্ছে।

এলাকাবাসী মনে করেন, ‘প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি উন্নয়ন থেকেও বঞ্চিত হবেন ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী মানুষ। এছাড়া এ দু’টি ইউনিয়ন থেকে ভাঙ্গায় যেতে সময় লাগে মাত্র এক থেকে দুই মিনিট, আর নগরকান্দা সালথায় যেতে সময় লাগবে এক থেকে দেড় ঘণ্টা। তাই দ্রুত ইউনিয়ন দু’টিকে ফরিদপুর-৪ আসনে পুনর্বহালের দাবি জানান তারা।’

উল্লেখ্য, গত ৪ সেপ্টেম্বর ফরিদপুর-৪ আসন থেকে ভাঙ্গা উপজেলার বৃহত্তর দু’টি ইউনিয়ন আলগী ও হামিরদীকে কেটে ফরিদপুর-২ আসনের সাথে যুক্ত করে প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এরপর থেকেই বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে ভাঙ্গার দু’টি ইউনিয়নসহ ভাঙ্গাবাসী।

‘পূজায় গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে’ — এসপি আব্দুল জলিল

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৩:৪২ পিএম
‘পূজায় গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে’ — এসপি আব্দুল জলিল

আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণ ও নির্বিঘ্নে করতে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে সহযোগিতা চেয়ে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আব্দুল জলিল বলেছেন, ‘এ জেলায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটা চমৎকার মেলবন্ধন রয়েছে, সেটাকে অক্ষুন্ন রাখতে ‌সকল পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। ‘

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১ টার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে জেলায় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় এ আহ্বান জানান পুলিশ সুপার।

পুলিশ সুপার বলেন, ‘জেলায় ৭৫৭ মন্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপন করা হবে। এ সকল পূজা মন্ডপগুলোতে শান্তিপূর্ণ ও নির্বিঘ্নে পূজা উৎসব করতে জেলা পুলিশ ও জেলা প্রশাসন সর্তক রয়েছে। এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘পূজাকে কেন্দ্র করে কোন গুজব যেন না ছডায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। পুলিশের পক্ষ থেকে গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এ প্রশ্নে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। পূজা উপলক্ষে কিশোর গ্যাং এর তৎপরতা বৃদ্ধি যেন না হয়‌ সেদিকে লক্ষ্য রাখছে পুলিশ। এ কাজে প্রশাসনের সাথে গোয়েন্দা বিভাগের লোকজন কাজ করছে।’

তিনি পূজারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘ধর্মীয় ভাব গম্ভীর্যের সাথে মিলিয়ে ‌গান পরিবেশন করা উচিত। তবে কোন ‌‌ ডিজে গান ‌পরিবেশন করা যাবে না। এছাড়া কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী পূজা বিসর্জন ‌দেওয়ার সময়ে সকল মন্দির কমিটিকে সক্রিয় থাকতে হবে। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্টী পূজার মধ্যে দূর্গা পূজা শুরু হবে।’

মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) ‌মো. আসিফ ইকবাল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আজমীর হোসেন, সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) মো. আজম খান, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ‌মো. আসাদউজ্জামান, ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন পিয়ালসহ প্রিন্ট-ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার গণমাধ্যম কর্মীরা।