খুঁজুন
শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৫, ৮ কার্তিক, ১৪৩২

মধুখালীতে বাস-নসিমন মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ গেল নসিমন চালকের

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:০৬ পিএম
মধুখালীতে বাস-নসিমন মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ গেল নসিমন চালকের

ফরিদপুরের মধুখালীতে সোহাগ পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে অপর দিক থেকে আসা নসিমনের মুখোমুখি সংঘর্ষে মামুন শেখ (৩৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তি নসিমন চালক ছিলেন বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার বোয়ালিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত নসিমন চালক মামুন শেখ বোয়ালমারী উপজেলার ভীমপুর-সাতৈর গ্রামের তৈয়ব শেখের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুর্ঘটনার সময় সোহাগ পরিবহনের বাসটি ফরিদপুর থেকে মাগুরার দিকে যাচ্ছিল আর নছিমনটি মধুখালী থেকে ফরিদপুরমুখী ছিল। মুখোমুখি সংঘর্ষের পর নছিমনটি দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং মামুন সেখ গুরুতরভাবে আহত হন। স্থানীয়রা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

দুর্ঘটনার পরপরই সোহাগ পরিবহনের বাসচালক ও হেলপার পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে করিমপুর হাইওয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং দুর্ঘটনাগ্রস্ত যান দুটি উদ্ধার করে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, মহাসড়কের ওই অংশে অতিরিক্ত গতির কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে, যা নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

ফরিদপুরের করিমপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন চৌধুরী বলেন, এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ভাঙ্গায় নকশা পরিবর্তন করে বহুতল ভবন নির্মাণ, ১৫ দিনের মধ্যে অপসারণের নির্দেশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:৫৮ পিএম
ভাঙ্গায় নকশা পরিবর্তন করে বহুতল ভবন নির্মাণ, ১৫ দিনের মধ্যে অপসারণের নির্দেশ

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় পৌরসভার নকশা পরিবর্তন করে বহুতল ভবন নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এঘটনায় অনুমোদন বহির্ভূত ভবনের অংশ অপসারণের জন্য পৌর কতৃপক্ষ নির্দেশ দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার বিকেলে (২৩ অক্টোবর) হোগলাডাংগী সদরদী গ্রামের মো. আমিনুল ইসলাম খালাসী ওরফে আদমকে চিঠি দেওয়া হয়েছে এবং তাকে অপসারণের জন্য ১৫ দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। পৌর কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য করিলে ভবন মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে পৌর কর্তৃপক্ষ।

ওই ভবনের মালিক আমিনুল ইসলাম আদমের বাড়ি ভাঙ্গা পৌরসভার ০৮ নং ওয়ার্ডের হোগলাডাঙ্গী সদরদী গ্রামে। সে ওই গ্রামের আলেপ খালাসীর পুত্র।

পৌরসভার চিঠি সূত্রে জানা যায়, বিগত ১৯/০১/১২ তারিখে ভাঙ্গা পৌরসভা প্রকৌঃ ২০১২/৩৪৪ স্মারক মূলে আমিনুল ইসলামকে পাঁচতলা ইমারত নির্মাণের অনুমোদন দেন পৌরসভা। কিন্তু বিল্ডিং এর মালিক আমিনুল ইসলাম ওরফে আদম নকশা পরিবর্তন করে পাঁচতলার উপর অবৈধভাবে ছয়তলা ভবন নির্মাণ করেন। যাহা ইমারত নির্মাণ আইন বহির্ভূত। তাই পৌর কর্তৃপক্ষ ১৫ দিনের মধ্যে অবৈধ অংশটি ভেঙে ফেলার জন্য নির্দেশ দিয়েছে।

এ বিষয়ে অভিযোগকারী পার্শ্ববর্তী ভবনের মালিক হাজী আব্দুল মান্নান বলেন, নকশা পরিবর্তন করে ভবনের মালিক আমিনুল ইসলাম আদম পৌরসভার নিয়ম বহির্ভূতভাবে নকশা পরিবর্তন করে ৫ তলার স্থলে ৬তলা ভবন নির্মাণ করাতে ভবনটি ঝুঁকিতে পড়েছে। তার বিডিং এর পাশে আমার ভবনটি ও ঝুঁকিতে পড়েছে। আদমের ছয়তলা ভবনটি যেমন ঝুঁকিপূর্ণ ঠিক তেমনি আমার ভবনটিও ঝুঁকিতে পড়েছে। তাই পৌর কর্তৃপক্ষ দ্রুত অবৈধ ৬তলার অংশটি ভেঙে ফেলার জন্য পৌর কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।

এ বিষয়ে ভবনের মালিক আমিনুল ইসলাম খালাসী ওরফে আদম বলেন, আমি বিষয়টির না বুঝতে পেরে পাঁচতলার পরিবর্তে ছয় তলা ভবন নির্মাণ করেছি। আমি অতিরিক্ত ৬তলার অংশটি ভেঙে ফেলব।

এ ব্যাপারে পৌরসভার সার্ভেয়ার মো. রাকিব জানান, আমিনুল ইসলাম ওরফে আদম পৌরসভার নকশা ৫তলা অনুমোদন নিয়ে তিনি নকশা পরিবর্তন করে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ৬ তলা নির্মাণ করেছে। আমরা অবৈধ অংশ টি ভেঙে ফেলার জন্য ১৫ দিন সময় দিয়েছি। ১৫দিনের মধ্যে অবৈধ অংশটি না ভাঙলে এবং পৌরসভার আইন অমান্য করিলে তার বিরুদ্ধে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চরভদ্রাসনের গোপালপুর ঘাটে লাইফ জ্যাকেট ও বয়া বিতরণ

মুস্তাফিজুর রহমান শিমুল, চরভদ্রাসন:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫, ৬:৪১ পিএম
চরভদ্রাসনের গোপালপুর ঘাটে লাইফ জ্যাকেট ও বয়া বিতরণ

ফরিদুপরের চরভদ্রাসন উপজেলার গোপালপুর ও চরমইনুট নৌ পথে স্পীডবোট যাত্রীদের জানমাল রক্ষায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে লাইফ জ্যাকেট ও বয়া বিতরণ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টবর) বিকেল ৫ টার দিকে উপজেলার গোপালপুর ঘাটে স্পীডবোট চালকদের হাতে এসকল সামগ্রী তুলেদেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনিরা খাতুন।

জানা যায়, গোপালপুর ঘাট অংশের স্পীডবোট গুলোতে তিনটি করে ত্রিশটি বয়া ও বিভিন্ন সাইজের চল্লিশটি লাইফ জ্যাকেট বিতরণ করা হয়।

ইউএনও মনিরা খাতুন বলেন, গোপালপুর হতে মইনুট ঘাটে যাতায়াতকারী যাত্রীদের ভেতর অনেক শিশু থাকে। এদের মধ্যে অনেকে আবার লাইফ জ্যাকেট পরেননা। যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে লাইফ জ্যাকেটের পাশাপাশি প্রতিটি বোটে তিনটি করে বয়া দেওয়া হয়েছে, যাতে করে নৌ দুর্ঘটনায় যাত্রীরা ভেসে থাকতে পারে।

এসময় স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ ও স্পীডবোট চালকরা উপস্থিত ছিলেন।

ফরিদপুরে ধার নেওয়া ২০ টাকার জন্য গলাটিপে হত্যা করে বন্ধুকে অপর বন্ধু

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫, ৪:১৮ পিএম
ফরিদপুরে ধার নেওয়া ২০ টাকার জন্য গলাটিপে হত্যা করে বন্ধুকে অপর বন্ধু

নিহত শিক্ষার্থী আমির হামজার (১৩) কাছ থেকে হত্যাকারী অপর শিক্ষার্থী ফরহাদ রেজা মাঝে মধ্যেই টাকা ধার নিতে। সর্বশেষ সে ৫০ টাকা ধার নিয়েছিল। তার মধ্যে ৩০ টাকা পরিশোধ করেছিল। ঘটনার দিন বাকি ২০ টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে তর্কে-বিতর্কে ওই শিক্ষার্থী গালিগালাজ করায় ফরহাদ প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে দুইজন তর্কে-বিতর্ক করতে করতে যাওয়ার সময় আমির হামজার গলা টিপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ফরহাদ।

এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের চান্দড়া তা’লিমুল কুরআন মাদ্রাসা ও এতিমখানায়। এ ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে ওই কিশোরের (হত্যাকারী) ব্যবহৃত একটি কাঁথার সূত্র ধরে এ হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটন করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) মো. আজম খান।

জানা গেছে, নিহত মাদ্রাসাছাত্র আমির হামজা আলফাডাঙ্গা সদর ইউনিয়নের শুকুরহাটা গ্রামের সায়েমউদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে ও উপজেলার চান্দড়া তা’লিমুল কুরআন মাদ্রাসা ও এতিমখানার জামাতখানা বিভাগের দ্বিতীয় জামাতের ছাত্র ছিল।

এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত কিশোর ফরহাদ রেজা (১৬) উপজেলার চর চান্দড়া গ্রামের জাহিদুল ইসলাম ফকিরের ছেলে। আসামি ফরহাদও একই মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। তারা দুইজন একই ক্লাসের পড়ালেখা করে এবং দুইজন ভালো বন্ধুও।

আলফাডাঙ্গা থানা সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ অক্টোবর মাদ্রাসা থেকে নিখোঁজ হয় আমির হামজা। দীর্ঘ খোঁজাখুঁজির পর গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে মাদ্রাসার পার্শ্ববর্তী একটি ডোবায় বস্তাবন্দি অবস্থায় তার লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে পরেরদিন বুধবার ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। ​এরপর ​ক্লুলেস হত্যা মামলায় তদন্তে শুরু করে মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করে এবং হত্যাকারী কিশোরকে গ্রেপ্তার করে।

​বিষয়টি নিশ্চিত করে সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) আজম খান বলেন, এটি একটি ক্লুলেস হত্যাকান্ড ছিল। এ হত্যা রহস্য উদ্‌ঘাটনের জন্য চারটি আলাদা টিম গঠন করা হয়। আমির হামজা ওইদিন বিকেলে কারও সঙ্গে সাইকেলে উঠেছিল। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা ওই কিশোরের ব্যবহৃত কাঁথার মাধ্যমে হত্যাকারীকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয় পুলিশ।

তিনি বলেন, মাদ্রাসার পাশে একটি বাগান থেকে গ্রেপ্তার কিশোরের বাড়ি প্রায় ৫০০ গজ দূরে। ওই বাগানে টাকা ফেরত চাওয়া নিয়ে দুই কিশোরের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ওই কিশোর হামজার গলা টিপে ধরে। এতে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় হামজা। ঘটনার পর সন্ধ্যা হয়ে গেলে ওই কিশোর লাশ বাগানে ফেলে রেখে মাদ্রাসায় ফিরে আসে। সন্ধ্যার হাজিরা দিয়ে মাদ্রাসা থেকে একটি কাঁথা নিয়ে আবার বাগানে যায়। এরপর নিজের বাড়ি থেকে একটি প্লাস্টিকের বস্তা এনে হামজার লাশ বস্তার মধ্যে ঢুকিয়ে পাঁচটি ইট ভরে দেয়, যাতে সেটি পানিতে না ভাসে। পরে বস্তাটি বাগানের পাশের পুকুরে ফেলে দেয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর পুকুর থেকে দুর্গন্ধ পেয়ে এলাকাবাসী বস্তাটি দেখতে পায়। পরে পুলিশ গিয়ে বস্তাবন্দী অবস্থায় অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে।

হত্যাকারী কিশোরের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী এএসপি বলেন, আমির হামজার কাছ থেকে মাঝেমধ্যেই কিছু টাকা ধার নিত আসামী কিশোর। সর্বশেষ ৫০ টাকা ধার নেওয়ার পর অনেক দিন ধরে তা ফেরত দেয়নি। এদিকে আমির হামজা বারবার টাকা ফেরত চাইতে থাকায় বিরক্ত হয় ফরহাদ রেজা এ হত্যাকান্ড ঘটায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই কিশোর হত্যার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। তবে এ হত্যার পেছনে অন্য কেউ জড়িত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ জালাল আলম বলেন, এ ঘটনায় হামজার বাবা সায়েমউদ্দিন বিশ্বাস বাদী হয়ে বুধবার দিবাগত রাতে আলফাডাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় ওই কিশোরকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।