খুঁজুন
শনিবার, ২১ জুন, ২০২৫, ৭ আষাঢ়, ১৪৩২

মুরগির শেডে লাভজনক হাঁস পালন, ফরিদপুরে পিকিং স্টার ১৩’ হাঁস এখন নতুন সম্ভাবনা

তামিম ইসলাম, ফরিদপুর
প্রকাশিত: বুধবার, ১৮ জুন, ২০২৫, ২:০৫ পিএম
মুরগির শেডে লাভজনক হাঁস পালন, ফরিদপুরে পিকিং স্টার ১৩’ হাঁস এখন নতুন সম্ভাবনা

ফরিদপুরের কোমরপুর গ্রামের নারী উদ্যোক্তা কামরুল নাহার বিদেশি জাতের ‘পিকিং স্টার ১৩’ হাঁস পালনের মাধ্যমে সাফল্যের নতুন গল্প রচনা করছেন। এই হাঁস পানির প্রয়োজন ছাড়াই খাঁচায় সহজে পালন করা যায়। মাত্র ৪৫ দিনে ৩ থেকে ৪ কেজি ওজনের হাঁস প্রতি কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি করে তিনি মোটা অঙ্কের লাভ করছেন। বাজারে এই হাঁসের ব্যাপক চাহিদা তার ব্যবসাকে দ্রুত এগিয়ে নিচ্ছে।

কামরুল নাহারের এই যাত্রা শুরু হয় প্রতিকূলতা কাটিয়ে। তিনি আগে মুরগি পালন করতেন, কিন্তু রোগব্যাধির কারণে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েন। এসময় সোসাইটি ডেভেলপমেন্ট কমিটি (এসডিসি) নামে একটি এনজিও তাকে ‘পিকিং স্টার ১৩’ হাঁস পালনের পরামর্শ দেয়।
এসডিসি’র প্রকল্প ব্যবস্থাপক ডাঃ বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, “কামরুল নাহারের মুরগির খামারে রোগের কারণে ক্ষতি হচ্ছিল। আমরা তাকে প্রশিক্ষণ ও ৫০টি হাঁসের বাচ্চা দিয়ে খামার শুরু করতে সাহায্য করি। দুটি বাচ্চা মারা গেলেও ৪৮টি হাঁস বিক্রি করে তিনি ৪৮ হাজার টাকা আয় করেন। এরপর তিনি ২০০টি বাচ্চা নিয়ে বড় পরিসরে পালন শুরু করেন। এখন তিনি ৫০০টি হাঁসের খামারের পরিকল্পনা করছেন।”
কামরুল নাহার বলেন, “মুরগি পালনে ক্ষতির পর আমি ভেবেছিলাম সব শেষ। এসডিসি’র সহায়তায় ‘পিকিং স্টার ১৩’ হাঁস পালন শুরু করি। এই হাঁস পালন সহজ, কম খরচে লাভ বেশি। এখন ফরিদপুরের হোটেল থেকে শুরু করে অন্য জেলাতেও আমার হাঁস সরবরাহ হচ্ছে। আমি শিগগিরই ৫০০ থেকে ১,০০০ হাঁস পালনের পরিকল্পনা করছি।”
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ সঞ্জীব কুমার বিশ্বাস বলেন, “কামরুল নাহারের ‘পিকিং স্টার ১৩’ হাঁস পালনের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। আমরা তাকে প্রযুক্তিগত পরামর্শ, ওষুধ সরবরাহ এবং বাজারজাতকরণে সহায়তা দিচ্ছি। তার হাঁস স্থানীয় হোটেল ও রেস্টুরেন্টে সরবরাহের জন্য আমরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেছি। এই ধরনের উদ্যোগ নারীদের স্বনির্ভরতার পথকে শক্তিশালী করছে।”
কামরুল নাহারের প্রতিবেশীরা তার খামারের প্রতি আকৃষ্ট। তারা বলেন, “কেন দূরে গিয়ে বাড়তি খরচ করব? আমাদের গ্রামেই কামরুল নাহারের আধুনিক খামার থেকে তাজা ও স্বাস্থ্যকর হাঁস সহজে কিনে নিতে পারি।” এই সুবিধা তাকে স্থানীয়দের কাছে জনপ্রিয় করে তুলেছে।
এছাড়া, তিনি হাঁস পালনের পাশাপাশি ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি করে অতিরিক্ত আয় করছেন, যা তার উদ্যোগের বহুমুখী সাফল্যের প্রমাণ।
ডাঃ বিপ্লব কুমার মোহন্ত আরও বলেন, “ফরিদপুরের পাঁচটি উপজেলায় আমাদের প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষক ও খামারিদের পাশে দাঁড়াচ্ছি। কামরুল নাহারের সাফল্য অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণা।”
কামরুল নাহারের সাফল্য এলাকার অনেককে ‘পিকিং স্টার ১৩’ হাঁস পালনে উৎসাহিত করেছে। তার এই অদম্য উদ্যোগ শুধু নিজের জীবনই বদলায়নি, বরং অন্যদের জন্যও স্বনির্ভরতার নতুন পথ দেখিয়েছে, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

ফরিদপুরে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করলেন কুয়েত প্রবাসী

আব্দুল মান্নান, ভাঙ্গা :
প্রকাশিত: শনিবার, ২১ জুন, ২০২৫, ৫:৪৫ পিএম
ফরিদপুরে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করলেন কুয়েত প্রবাসী
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার কালামৃধা ইউনিয়নের দেওড়া গ্রামে বাবা-মায়ের ইচ্ছে পূরণ করতে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করলেন কুয়েত প্রবাসী আতিয়ার খলিফা।
শুক্রবার ( ২০ জুন) বিকেলে বিয়ে করে নববধূকে নিয়ে হেলিকপ্টারে চড়ে বাড়িতে আসেন।
হেলিকপ্টার ও বর কনেকে এক নজর দেখতে স্কুল মাঠে হাজার হাজার গ্রামবাসী ভিড় করেন।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ভাঙ্গা উপজেলার দেওড়া গ্রামের নুর ইসলাম খালিফার ছেলে কুয়েত প্রবাসী আতিয়ার খলিফার সাথে একই উপজেলার গজারিয়া  গ্রামের ফিরোজ শেখের মেয়ে আমেনা খাতুনের বিয়ে ঠিক হয়। বাবা-মায়ের ইচ্ছে পূরণ করতে বর আতিয়ার খলিফা হেলিকপ্টার ভাড়া করেন।
শুক্রবার বিকেলে ভাঙ্গা  উপজেলার দেওড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে বর সেজে হেলিকপ্টারে চড়েন আতিয়ার খলিফা। পরে হামিরদী ইউনিয়নের গজারিয়া গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে নামে হেলিকপ্টারটি। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিকেলে আবার হেলিকপ্টারে চড়ে কনেকে নিয়ে নিজ এলাকা দেওড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে  ফিরে আসেন।
 এ সময় স্থানীয় হাজার হাজার উৎসুক জনতা দুপুর থেকে বর-কনে ও হেলিকপ্টার দেখতে ভিড় করেন।
হেলিকপ্টারে বিয়ের বিষয় বর মোঃ আতিয়ার খলিফা বলেন, বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করার জন্য ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে হেলিকপ্টারটি ভাড়া করেছি। বাবা-মাকে খুশি করতে পেরে আমি অনেক খুশি।
বর আতিয়ার খলিফার বাবা নুর ইসলাম খলিফা বলেন, আমার ছেলে কুয়েত প্রবাসী। আমাদের আশা ছিল ছেলেকে হেলিকপ্টারে করে বিয়ে করাবো, ছেলে আমাদের স্বপ্ন পূরণ করেছে। আমাদের ইউনিয়নে এবং আমার জীবনের এই প্রথম হেলিকপ্টার কাছে থেকে দেখেছি এবং ছেলেকে হেলিকপ্টারে বিয়ে করিয়েছি।
হেলিকপ্টার দেখতে আসা আক্কাস বেপারী বলেন, ‘আমি কখনো হেলিকপ্টার দেখিনি। এখানে হেলিকপ্টার আসবে শুনে দেখতে আসলাম। হেলিকপ্টার দেখতে পেয়ে খুব আনন্দ পেয়েছি।
স্থানীয় গোলাম মাওলা নামের এক ব্যক্তি বলেন, এই হেলিকপ্টার ওঠানামা দেখার জন্য গ্রামের বহু মানুষ ভিড় করেছিল। এ ধরনের আয়োজন আমরা আগে কোনদিন দেখিনি। হেলিকপ্টার দেখতে পেয়ে আমরা খুব আনন্দ পেয়েছি।

চরভদ্রাসনে সাপে কামড় দেওয়ার তিনদিন পর যুবকের মৃত্যু

চরভদ্রাসন প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২০ জুন, ২০২৫, ১০:২৮ পিএম
চরভদ্রাসনে সাপে কামড় দেওয়ার তিনদিন পর যুবকের মৃত্যু
ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে সাপে কামড় দেওয়ার তিনদিন পর কাউসার ভূইয়া (৩৪) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (২০ জুন) সকালে উপজেলার চর হরিরামপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. বিল্লাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
মৃত কাউসার ভূঁইয়া চরভদ্রাসন উপজেলার চর হরিরামপুর ইউনিয়নের শালিপুর মধ্য গ্রামের মৃত ফালু হভূইয়ার ছোট ছেলে। তার স্ত্রী ও এক ছেলে রয়েছে।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, জেলার চরভদ্রাসন উপজেলার চর হরিরামপুর ইউনিয়নের শালিপুর মধ্য গ্রামের মৃত ফালু হভূইয়ার ছোট ছেলে কাউসার ভূঁইয়াকে গত ১৬ জুন দুপুরের দিকে ধান ক্ষেতের গরু তাড়াতে গেলে সাপে কামড় দেয়। পরে বাড়িতে ফিরে সাপে কামড়ানোর কথা পরিবারকে জানায় যে, তাকে বল ছাপার রং সাপে কামড় দিয়েছে। তবে রাসেল’স ভাইপারকে স্থানীয়রা ‘বল ছাপা’ সাপ বলে থাকেন। ঘটনার দিন বিকেলে পরিবারের লোকজন তাকে প্রথমে ফরিদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন থাকার একদিন পর তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

ফরিদপুরে জাল নিবন্ধনে বাল্যবিয়ের অপরাধে কনের মা ও কাজীকে জরিমানা

হাসান মাতুব্বর (শ্রাবণ), ফরিদপুর:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২০ জুন, ২০২৫, ১০:২৩ পিএম
ফরিদপুরে জাল নিবন্ধনে বাল্যবিয়ের অপরাধে কনের মা ও কাজীকে জরিমানা
ফরিদপুরে জাল জন্মনিবন্ধনের মাধ্যমে বাল্যবিয়ে দেয়ার অভিযোগে কনের মা ও সংশ্লিষ্ট নিকাহ রেজিষ্ট্রারকে (কাজী) জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
শুক্রবার (২০ জুন) রাত ৯ টায় শহরের চকবাজার জামে মসজিদ সংলগ্ন মার্কেটের দোতলায় অবস্থিত কাজী অফিসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ইসরাত জাহান।
এ সময় নিকাহ রেজিষ্ট্রার মো. কামরুল হাসানকে (৪৮) বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এর আগে একই অপরাধে বিকালে শহরের বায়তুল আমান এলাকায় কনের মা’কে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ১২ জুন শহরের বায়তুল আমান এলাকায় ১৬ বছর বয়সি এক কিশোরীকে জাল জন্ম নিবন্ধনের মাধ্যমে বয়স বাড়িয়ে বাল্যবিবাহ দেয়া হয়। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে বিকালে কনের বাড়িতে গিয়ে তথ্য যাচাই করেন। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে নিকাহ রেজিষ্ট্রারের কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
জানা যায়, বিভিন্ন অভিযোগের কারণে নিকাহ রেজিস্টার কামরুল হাসানের নিবন্ধন স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে তিনি উচ্চ আদালত থেকে এক আদেশের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করেন। ওই আদেশ গত ৮ জুন পর্যন্ত কার্যকর ছিল।
বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসরাত জাহান বলেন- ‘এক কিশোরীর জাল নিবন্ধনের মাধ্যমে বয়স বেশি দেখিয়ে বাল্য বিয়ে দেয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান করা হয়েছে এবং সত্যতাও পাওয়া গেছে। যে কারণে দুইজনকে জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া জেলা রেজিষ্ট্রার বরাবর আমরা একটি চিঠি পাঠাবো ওনার নিবন্ধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।