খুঁজুন
শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫, ২৪ শ্রাবণ, ১৪৩২

সালথায় বসতবাড়ি ঘেঁষে আ’লীগ নেতার করাতকল, শব্দে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০২৫, ২:৪৩ পিএম
সালথায় বসতবাড়ি ঘেঁষে আ’লীগ নেতার করাতকল, শব্দে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী
নীতিমালা অমান্য করে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের গোপিনাথপুর এলাকায় বসতবাড়ী ঘেঁষে একটি করাতকল (স’মিল) স্থাপন করা হয়েছে। সেই করাতকলের শব্দ ও কাঠের গুড়া উড়ে এসে চোখে পরায় ভোগান্তিতে পড়েছে ওই এলাকার মানুষ। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগকে লিখিত অভিযোগ দিলেও এটি দেখার যেন কেউই নেই। সবাই একে অপরের উপর দায় চাপাচ্ছে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।
পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী কোনো সরকারি অফিস-আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বিনোদন পার্ক, উদ্যান এবং জনস্বাস্থ্য বা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বিঘ্ন সৃষ্টি করে এরূপ কোনো স্থানের ন্যূনতম ২০০ (দুইশত) মিটারের মধ্যে করাতকল স্থাপন করা যাবে না। কিন্তু এ নিয়ম অমান্য করেই চার বছর আগে বসতবাড়ির মাত্র ৫০ মিটার পাশে একটি করাতকল নির্মাণ করেন স্থানীয় আ’লীগ নেতা ও একই উপজেলার গোপিনাথপুর এলাকার মৃত ছব্দু মোল্যার ছেলে মজিবর মোল্যা (৬০)।
চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাঠের গুড়া চোখে গেলে কর্ণিয়া ক্ষতিগ্রস্ত ও গুড়া নিশ্বাসের সঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করলে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যাও হতে পারে। এছাড়া শব্দ দূষণে আশেপাশের পরিবেশ ও জনজীবন স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বসতবাড়ির কাঁচা রাস্তার পাশ ঘেঁষে পশ্চিম পাশে একটি করাতকল গড়ে তোলা হয়েছে। কাঠের গুড়া যাতে উড়ে না আসে সেজন্য টিনের বেড়াও দেয়া হয়নি। তাইতো করাতকলে গাছ কিংবা কাঠ ফাঁড়াই করার সময় গুড়া আশেপাশের বসতবাড়িতে উড়ে যায়। আর শব্দও হয় ভীষণ। এতে শিশু-কিশোররা পড়ালেখা করতে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
গোপিনাথপুর গ্রামের নুর আলম মোল্যা অভিযোগ করে বলেন, যখন করাতকল চালু করা হয় তখন অতিরিক্ত শব্দে পড়ার মনোযোগ নষ্ট হয়। এছাড়া কাঠের গুড়া উড়ে এসে চোখে পড়ে। এছাড়া নিয়মনীতির তোয়াক্কা করে সন্ধ্যার পরেও করাতকল চালানো হচ্ছে। এতে আমাদের খুব কষ্ট হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে মজিবর মোল্যা প্রভাবশালী ও আ’লীগ নেতা হওয়ায় ভয়ে কেউ টুঁশব্দ করতে সাহস পাচ্ছেনা।
এব্যাপারে বক্তব্য জানতে করাতকল মালিক মজিবর মোল্যার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে তার ছেলে নাসির মোল্যা বলেন, করাতকলের আশেপাশে বসতবাড়ি থাকলেও তাদের কোনো অভিযোগ নেই। কিন্তু, একজন লোক স্থানীয় কিছু মানুষের প্ররোচণায় পড়ে আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিচ্ছে। যদিও তাদের ঘর-বাড়িটা আমাদেরই জায়গায়।
এব্যাপারে সালথা উপজেলা বন কর্মকর্তা
নজরুল ইসলাম বলেন, আমাকে ফরিদপুরের সামাজিক বন বিভাগ থেকে একটি চিঠি দিয়েছিল। পরে তদন্ত করে একটি রিপোর্ট প্রদান করা হয়েছে।
এব্যাপারে সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিচুর রহমান বালী বলেন, বিষয়টি আমি অবগত আছি। বনবিভাগকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে বন বিভাগ ওই করাতকলের লাইসেন্স বাতিল করলে, তারপর আইনগত পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এব্যাপারে ফরিদপুরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ গোলাম কুদ্দুছ ভূঁইয়া বলেন, এব্যাপারে গোপিনাথপুর এলাকার রুপালী বেগম নামের একজন নারীর অভিযোগ আমরা পেয়েছি। সরেজমিন তদন্ত করে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় ওই করাতকল মালিককে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) করা হয়েছে। আমরা নোটিশের জবাব পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নিব।

ভাঙ্গায় ১৪ কেজি গাঁজাসহ যুবক গ্রেপ্তার

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫, ৫:৩৩ পিএম
ভাঙ্গায় ১৪ কেজি গাঁজাসহ যুবক গ্রেপ্তার

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় ১৪ কেজি গাঁজা সহ মো. রমজান মোল্লা (২৮) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১০।

শুক্রবার (০৮ আগস্ট) সকালে উপজেলার ভাঙ্গা টোল প্লাজার পশ্চিম পাশের এক্সপ্রেসওয়েতে চেকপোস্ট বসিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার হওয়া রমজান মোল্লা নড়াইলের নড়াগাতীর
পাখিমারা এলাকার মো. মোস্তফা মোল্লার ছেলে।

গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১০) এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার তাপস কর্মকার বলেন, গ্রেপ্তারকৃত মো. রমজান মোল্লা সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে মাদকদ্রব্য গাঁজা সংগ্রহ করে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাসের যাত্রী সেজে যাত্রীবাহী বাস ব্যবহার করে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবনকারীদের নিকট অভিনব কায়দায় সরবরাহ করত। তার বিরুদ্ধে মাদক আইনের ২ টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মাদক মামলা রুজু করতে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

চরভদ্রাসনে মৎস্য সম্পদ রক্ষায় আড়াআড়ি বাঁধ অপসারণ  

মুস্তাফিজুর রহমান শিমুল, চরভদ্রাসন:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫, ২:১৬ পিএম
চরভদ্রাসনে মৎস্য সম্পদ রক্ষায় আড়াআড়ি বাঁধ অপসারণ  

ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে মৎস্য সম্পদ রক্ষায় মোবাইলকোর্ট পরিচালনা করে একটি আড়াআড়ি বাঁধ অপসারণের পাশাপাশি ১০টি চায়না দুয়ারী বিনষ্ট করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (০৭ আগস্ট) বিকেল হতে সন্ধা ৬টা পর্যন্ত উপজেলার লোহারটেক কোলের সর্দার বাড়ি ব্রীজের সন্নিকটে এ মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে বাঁধ ও চায়না দুয়ারী ধ্বংস করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনিরা খাতুন।

অভিযানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাঈম হোসেন বিপ্লব, ক্ষেত্র সহকারী শামিম আরেফিন ও পুলিশ সদস্য।

এ সময় আড়া আড়ি বাঁধটি অপসারণের পাশাপশি জব্দকৃত চায়না দুয়ারী আগুনে পুড়িয়ে বিনষ্ট করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা খাতুন বলেন, চলতি বর্ষা মৌসুমে সর্দার বাড়ি ব্রীজের সন্নিকটে একটি আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে মাছের অবাধ বিচরণ ও বংশবৃদ্ধি রোধ করা হচ্ছিল। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে বাঁধটি অপসারণের পাশাপাশি ১০টি চায়না দুয়ারী বিনষ্ট করা হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় নদী ও কোলে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান ইউএনও।

সালথায় ফুটবল খেলার মাঠ বেড়া দিয়ে দখলের অভিযোগ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট, ২০২৫, ৮:০০ পিএম
সালথায় ফুটবল খেলার মাঠ বেড়া দিয়ে দখলের অভিযোগ

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের উত্তর চণ্ডীবরদী গ্রামের একমাত্র ফুটবল খেলার মাঠটি দখলের অভিযোগ উঠেছে। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে অবস্থিত এই মাঠটি এলাকার প্রায় দশটি গ্রামের শিশু-কিশোর ও তরুণদের খেলার একমাত্র স্থান। সম্প্রতি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি মাঠটিতে বেড়া দিয়ে দখলের চেষ্টা করছেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।

জানা যায়, সড়ক ও জনপথ বিভাগের জমি অধিগ্রহণের পর ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কাজ শেষ হলে জায়গাটি খালি পড়ে থাকে। প্রায় ১৭ বছর ধরে উত্তর চণ্ডীবরদী এবং আশপাশের গ্রামের ফুটবলপ্রেমীরা এটিকে খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন। জমির মূল মালিকরা সরকারের কাছ থেকে তাদের প্রাপ্য ক্ষতিপূরণ বুঝে পেয়েছেন।

অভিযোগ উঠেছে, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর পৌরসভার বাসিন্দা আব্দুল জলিল সরদারের ছেলে, পৌরসভার সাবেক কমিশনার ও মুকসুদপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বাকি সরদার, তার ভাই মুকসুদপুর উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির সরদার, বোন নিলুফা বেগম এবং উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক পলাশ সরদার এই মাঠ দখলের সঙ্গে জড়িত।

মাঠে খেলতে আসা খেলোয়াড় ও দর্শকরা খেলার মাঠটি দখলমুক্ত করাসহ দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে সালথা উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মোহাম্মদ আবুল ফজল বলেন, “স্থানীয়দের খেলাধুলার মাঠটি দখল হয়ে যাওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সালথা থানার ওসি ও ইউএনও-কে জানিয়েছি। অন্যথায়, সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলে দখলদারদের প্রতিহত করা হবে।”

স্থানীয় সাংবাদিক আর. টি. হাসান জানান, বিষয়টি সমাধানের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানানো হয়েছে এবং তিনি ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

এ বিষয়ে সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, “মাঠ দখলের বিষয়টি আমি শুনেছি। স্থানীয়রা আমাকে জানিয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত সমাধান করা হবে।”

এ বিষয়ে অভিযুক্তদের বক্তব্য জানতে দখলকৃত স্থানে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি এবং তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হওয়ায় বক্তব্য নেওয়া যায়নি।