খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৩ পৌষ, ১৪৩২

ফরিদপুরে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল কিশোরের

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: রবিবার, ১১ মে, ২০২৫, ৬:৩১ পিএম
ফরিদপুরে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল কিশোরের
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে ইয়াসিন খালাসী (১৬) নামে এক ওয়ার্কশপ শ্রমিক নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় রায়হান ও সজীব নামে দুই যুবককে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করা হয়।
রবিবার (১১ মে) দুপুরে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে শনিবার (১০ মে) দিনগত রাত ১০টার দিকে উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের থানমাত্তা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ইয়াসিন খালাসী ওই গ্রামের জাহাঙ্গীর খালাসীর ছেলে।
এদিকে ইয়াসিনের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে প্রতিপক্ষ বাদশা শরীফের বাড়িসহ অন্তত ১০-১২টি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটের ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার থানমাত্তা গ্রামে বহু পুরাতন একটি বটগাছ রয়েছে। সেই বটগাছের নিচে স্থানীয় নুরা নামে একজন আসর বসিয়ে রাতভর গানবাজনা করতেন। গত দুই বছর হলো তিনি মারা যান। এরপর থেকে তার স্ত্রী হালিমা সেখানে বসবাস করেন। গত কয়েক মাস আগে বটগাছের একটি ডাল দোকানের ওপর পড়লে ডালটি কেটে ফেলেন শরীফ গ্রুপের দোকান মালিক। সেই ডাল কাটাকে কেন্দ্র করে হালিমার পক্ষ নেন জাহাঙ্গীর খালাসী। অন্য গ্রুপের পক্ষ নেন বাদশা শরীফ ও আলমগীর শরীফ।
এ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এর জের ধরে শনিবার রাত ১০টার দিকে থানমাত্তা বটতলা এলাকা থেকে ইয়াসিন খালাসীকে পার্শ্ববর্তী কালামৃধা ইউনিয়নের ফুলমাল্লিক গ্রামের আউয়াল বেপারীর ছেলে ইসমাইল বেপারীকে দিয়ে ইয়াসিনকে ডেকে নেয়। পরে পার্শ্ববর্তী নির্জন এলাকায় ব্রিজের নিচে ধানক্ষেতে নিয়ে ইয়াসিনকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়।
নিহত ইয়াসিনের বাবা জাহাঙ্গীর খালাসি জানান, পূর্ব শত্রুতার জেরে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা ডেকে নিয়ে নির্জন স্থানে ধানক্ষেতে আমার ছেলেকে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। কিন্তু খুনিদের ভেতরে দুইজন আহত হলে তাদের লোকজনের খবরে আমার ছেলেকে দেখতে পাই। তা না হলে ছেলের মরদেহও পাওয়া যেত না। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আলমগীর সরদার বলেন, খুনে অভিযুক্তদের পক্ষে দুজন ঠেকাতে গিয়ে তারাও আহত হয়েছেন। তারা হচ্ছেন ওই গ্রামের ফকু শেখের ছেলে রায়হান শেখ (১৮) ও তার আত্মীয় সজীব মাতব্বর। তার বাড়ি কাশেমপুর এলাকায়।
আজিমনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাজাহান হাওলাদার বলেন, যতটুকু জানতে পেরেছি নিহত ইয়াসিনের সঙ্গে কালামৃধা গ্রামের কয়েকজন কিশোরের পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে।
ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, মৌখিকভাবে ঘটনা জানতে পেরেছি। পূর্ব শত্রুতার জেরে ডেকে নিয়ে খুন করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল থেকে নিহতের মরদেহ এসে পৌঁছেনি। অফিসিয়াল কোনো কাগজপত্রও পাইনি। নিহতের মরদেহ আসার পর বিস্তারিত তথ্য জানানো সম্ভব হবে।

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার পরিত্যক্ত জমি এখন দৃষ্টিনন্দন খেলার মাঠ

মিয়া রাকিবুল, আলফাডাঙ্গা:
প্রকাশিত: বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৯:৩৪ পিএম
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার পরিত্যক্ত জমি এখন দৃষ্টিনন্দন খেলার মাঠ

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে যাত্রা শুরু হলো একটি নিজস্ব ও সুপরিসর খেলার মাঠের।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবসের বর্ণিল অনুষ্ঠানমালা প্রদর্শনের মাধ্যমে নবনির্মিত এই দৃষ্টিনন্দন মাঠটির আনুষ্ঠানিক পথচলা শুরু হয়েছে।

এতদিন উপজেলা প্রশাসনের জাতীয় দিবসের মূল অনুষ্ঠানগুলো পরিষদের বাইরে স্থানীয় আরিফুজ্জামান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হতো। এবারই প্রথম উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে নিজস্ব মাঠে বিজয় দিবস উদযাপিত হলো।

​উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, পরিষদের পুরাতন ভবনের পেছনে বিশাল একখণ্ড নিচু জমি দীর্ঘকাল ধরে পরিত্যক্ত ও অকেঁজো অবস্থায় পড়েছিল। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল হক এই স্থানটিকে ভরাট করে একটি আধুনিক মাঠে রূপান্তরের উদ্যোগ নেন এবং স্থানীয় সমাজ সেবকদের সহযোগিতার আহ্বান জানান। ​ইউএনও’র সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে তরুণ সমাজসেবক তাজমিনউর রহমান তুহিন মাঠটি তৈরির দায়িত্ব নেন। তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিদ্যাধর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মরহুম আলহাজ্ব আলী আহমেদ মৃধার ছেলে। তুহিন হযরত শাহ্ জালাল মৎস্য এ্যান্ড ডেইরি ফার্মের স্বত্বাধিকারী ও লেবাজ সোয়েটার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান।

​ব্যক্তিগত অর্থায়ন ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রায় এক মাস সময় ধরে বিপুল পরিমাণ মাটি ভরাট করে জায়গাটিকে একটি আধুনিক ও সমতল খেলার মাঠে রূপান্তর করেন তুহিন। তার এই নিঃস্বার্থ অবদানের ফলে বর্তমানে মাঠটি সবুজ ঘাসে আচ্ছাদিত এক মনোরম স্থানে পরিণত হয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর এই মাঠেই অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে কুচকাওয়াজ ও ক্রীড়া অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।

​নতুন মাঠে প্রথম অনুষ্ঠান সফল হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তাজমিনউর রহমান তুহিন বলেন, ‘তৎকালীন ইউএনও রফিকুল হকের অনুপ্রেরণায় আমরা কাজটি শুরু করি। আজ যখন দেখলাম এই সুন্দর মাঠে জাতি শ্রদ্ধাভরে বিজয় দিবস উদযাপন করছে, তখন মনটা ভরে গেল। এটি আলফাডাঙ্গাবাসীর জন্য একটি স্থায়ী মিলনকেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে।’

​এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে আলফাডাঙ্গা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মনিরুল হক সিকদার বলেন, ‘এটি আলফাডাঙ্গাবাসীর জন্য একটি বড় প্রাপ্তি। উপজেলা পরিষদের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এমন একটি মাঠের অভাবে জাতীয় অনুষ্ঠান আয়োজনে যে সীমাবদ্ধতা ছিল, তা দূর হলো। সমাজসেবক তুহিনের মতো তরুণরা এগিয়ে এলে সমাজের আমূল পরিবর্তন সম্ভব।’

​উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও স্থানীয় সুধীজন মনে করছেন, এই মাঠটি শুধু খেলাধুলা নয়, বরং বছরজুড়ে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সরকারি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি পালনের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হবে।

সদরপুরে অভিযানের দ্বিতীয় দিনেও ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণ করল প্রশাসন

শিশির খাঁন, সদরপুর:
প্রকাশিত: বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৮:৪৬ পিএম
সদরপুরে অভিযানের দ্বিতীয় দিনেও ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণ করল প্রশাসন

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তফসিল ঘোষণা করার পর নির্বাচন কমিশন সকল প্রকার রাজনৈতিক ব্যানার ফেস্টুন ও পোস্টার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের নির্দেশনা দেন। গত শনিবার রাত নয় টায় ৪৮ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও নেতাকর্মীরা ব্যানার ফেস্টুন ও পোস্টার অপসারণ করেননি তারা। সেই নির্দেশনা না শুনায় ফেস্টুন অপসারণ করেছে প্রশাসন।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকালে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাত আনজুম পিয়ার নেতৃত্বে উপজেলা প্রশাসন ব্যানার ফেস্টুন এবং পোস্টার অপসারণ অভিযান শুরু করেন।

অভিযানের দ্বিতীয় দিনে সদরপুর বাজার, কৃষ্ণপুর মোড় ও থানার মোড় এলাকায় অপসারণ করেন। এ সময় ভূমি অফিসের কর্মচারী সহ গ্রাম পুলিশের সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

সদরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিফাত আনজুম পিয়া বলেন, রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন এবং পোস্টার অপসারণ করেন নাই বিধায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অপসারণ অভিযান শুরু করেছি।

তিনি আরও বলেন, ফরিদপুর-৪ নির্বাচনী এলাকার সম্ভাব্য সকল প্রার্থীর সব ধরণের পোস্টার, ব্যানার, দেয়াল লিখন, বিলবোর্ড , গেইট, তোরণ বা ঘের, প্যান্ডেল ও আলোকসজ্জা ইত্যাদি প্রচার সামগ্রী নিজ খরচে/দায়িত্বে অপসারণ করার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।

বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশনের জন্য ফরিদপুর থেকে ঢাকায় পাঠানো হলো ২৪ রোগী

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৭:১৮ পিএম
বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশনের জন্য ফরিদপুর থেকে ঢাকায় পাঠানো হলো ২৪ রোগী

ফরিদপুর-৪ সংসদীয় আসনের আওতাধীন সদরপুর উপজেলা থেকে ২৪ জন অসহায় ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী রোগীকে বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশনের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়।

এর আগে দুই ধাপে সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলায় বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। প্রথম ধাপে সদরপুর উপজেলায় ৩৫ জন এবং দ্বিতীয় ধাপে চরভদ্রাসন উপজেলায় ২৮ জন রোগীর চোখের ছানি অপারেশন (লেন্সসহ) সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছিল।

এই পুরো কার্যক্রমের সার্বিক ব্যবস্থাপনা, তদারকি ও দেখভাল করছেন ফরিদপুর-৪ আসনের ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থী এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম খান বাবুল।

জানা গেছে, চোখের চিকিৎসার পাশাপাশি তিনি এর আগেও একাধিকবার ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প (ওষুধসহ) এবং ফ্রি চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্পের আয়োজন করেছেন। এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে সাধারণ ও দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা সেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন তিনি।

এ বিষয়ে শহিদুল ইসলাম খান বাবুল জানান, মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার অংশ হিসেবেই এসব মানবিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের সেবামূলক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।