খুঁজুন
রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫, ৮ আষাঢ়, ১৪৩২

ফরিদপুরে সাত বছরেও শেষ হয়নি একটি সেতুর কাজ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫, ২:০২ পিএম
ফরিদপুরে সাত বছরেও শেষ হয়নি একটি সেতুর কাজ

ফরিদপুরে পদ্মার শাখা নদীতে ৫৮০ মিটারের একটি সেতুর নির্মাণ কাজ গত সাত বছরেও শেষ হয়নি। সেতুর কাজের ধীরগতির কারণে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন দুই ইউনিয়নের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। তাই সেতু নির্মাণে ধীরগতিতে ক্ষুব্ধ পদ্মাপাড়ের বাসিন্দারা।

চলতি বছরের জুনেই এ কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রকৌশলী। এদিকে আরও ২ বছর সময় লাগবে বলে জানিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। 

স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ফরিদপুর জেলার সদর উপজেলার ভাজনডাঙ্গা ঘাট হতে গেন্দুমোল্লা হাট জিসি সড়ক ২০৮ মিটার চেইনেজে পদ্মা শাখা নদীর উপর ৫৫০ মিটার পিএসসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ সংশোধিত দৈর্ঘ্য ৫৮০ মিটারের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ‘জান্নাত কনস্ট্রাকশন’ নামের এক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সেতুর কাজ করছে। এর মাঝে রাজনৈতিক জটিলতায় সেতুর ঠিকাদার পরিবর্তন হয়েছে।

সেতুর কাজ বছরের পর বছর ঝুলে থাকায় তৈরি হয়েছে ভোগান্তি। ট্রলার বা ইঞ্জিনচালিত নৌকার ওপর নির্ভরশীল হয়ে আছে দুই ইউনিয়নের প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ।

বিশেষ করে শিশু, শিক্ষার্থী, রোগী ও কৃষকদের জন্য যোগাযোগ এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা। তাদের অভিযোগ, ঠিকাদার পরিবর্তন, দুর্নীতি আর দপ্তরের উদাসীনতায় এ দুর্দশা দীর্ঘায়িত হয়েছে।

স্থানীয় ডিক্রিরচর ইউনিয়নের একজন কৃষক বলেন, চরাঞ্চলের মানুষের নদী পারাপার ছাড়া কোনো স্থায়ী সড়ক নেই। বর্ষাকালে নদী গর্জে উঠায় ট্রলার চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়া নিত্য নৈমত্তিক ঘটনা। ঝড়-বৃষ্টিতে নৌ-পথে চলাচল করতে হয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। ফলে জরুরি চিকিৎসার জন্য সময়মতো হাসপাতালে পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। একই সঙ্গে এ দূরত্ব পাড়ি দিয়ে ফরিদপুর সদরে যাওয়া এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পৌঁছানোও অত্যন্ত কষ্টকর। ব্রিজ নির্মাণ দেখে আমরা চরের মানুষ স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলাম। কিন্তু সেটি আজ দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছে।

জান্নাত কনস্ট্রাকশন এর সাইট ম্যানেজার আবু হানিফ বলেন, যেসব কাজ বাকি আছে, তা শেষ করতে কমপক্ষে আরও দুই বছর সময় লাগবে। এছাড়া বর্ষা মৌসুম শুরু হয়ে যাওয়ায় দ্রুত কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না।

পদ্মার এ শাখা নদীর উপর নির্মাণাধীন সেতুর কাজের ধীরগতিতে নদীপাড়ের বাসিন্দাদের ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ কাজের মেয়াদ শেষ হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলা আর সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের আগ্রহ কম থাকায় দীর্ঘ সময়ক্ষেপণ হচ্ছে বলে দাবি করেন স্থানীয়রা।

ডিক্রিরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান মিন্টু বলেন, চরের কৃষক ফসল ঠিকই ফলায়, কিন্তু নদী পার করতে না পারায় শহরের বাজারে নিতে পারে না। এজন্য লোকসান গুনতে হয়। ব্রিজটির নির্মাণ শেষ করা জরুরি।

এলজিইডির ফরিদপুর সদর উপজেলার প্রকৌশলী দেবাশীষ বাকচী বলেন, বর্তমানে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাজের মেয়াদ চলতি বছরের জুন পর্যন্ত রয়েছে। সেতুর প্রায় ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। নদীতে পানি বাড়ছে, সময় মতো কাজ শেষ করা কঠিন হবে।

প্রসঙ্গত, ফরিদপুর শহরের সঙ্গে দুর্গম চরের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতেই পদ্মার শাখা নদীর উপর সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি বিভাগ। ২০১৮ সালে প্র্রায় ৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। তবে সে সময়ের  ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাফিয়া কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী আলোচিত দুই হাজার কোটি টাকার মানিলন্ডারিং মামলায় অন্যতম আসামি রুবেল-বরকত নানান দুর্নীতির অভিযোগে মামলার আসামি হলে ২০২০ সালে তারা পালিয়ে গেলে কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

এরপর ২০২২ সালে আবার নতুনভাবে সেতুটি নির্মাণের কার্যাদেশ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফরিদপুর জান্নাত কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। কিন্তু ৬ বছর পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি সেতুর নির্মান কাজ। কয়েক দফা মেয়াদ বাড়িয়ে এখনো প্রায় ৪০  শতাংশ কাজ বাকি রয়েছে।

পদ্মাপাড়ের বাসিন্দারা দ্রুত সেতুর কাজ শেষ করে চলাচলের উপযোগী করার দাবি জানিয়েছেন।

ফরিদপুরে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করলেন কুয়েত প্রবাসী

আব্দুল মান্নান, ভাঙ্গা :
প্রকাশিত: শনিবার, ২১ জুন, ২০২৫, ৫:৪৫ পিএম
ফরিদপুরে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করলেন কুয়েত প্রবাসী
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার কালামৃধা ইউনিয়নের দেওড়া গ্রামে বাবা-মায়ের ইচ্ছে পূরণ করতে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করলেন কুয়েত প্রবাসী আতিয়ার খলিফা।
শুক্রবার ( ২০ জুন) বিকেলে বিয়ে করে নববধূকে নিয়ে হেলিকপ্টারে চড়ে বাড়িতে আসেন।
হেলিকপ্টার ও বর কনেকে এক নজর দেখতে স্কুল মাঠে হাজার হাজার গ্রামবাসী ভিড় করেন।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ভাঙ্গা উপজেলার দেওড়া গ্রামের নুর ইসলাম খালিফার ছেলে কুয়েত প্রবাসী আতিয়ার খলিফার সাথে একই উপজেলার গজারিয়া  গ্রামের ফিরোজ শেখের মেয়ে আমেনা খাতুনের বিয়ে ঠিক হয়। বাবা-মায়ের ইচ্ছে পূরণ করতে বর আতিয়ার খলিফা হেলিকপ্টার ভাড়া করেন।
শুক্রবার বিকেলে ভাঙ্গা  উপজেলার দেওড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে বর সেজে হেলিকপ্টারে চড়েন আতিয়ার খলিফা। পরে হামিরদী ইউনিয়নের গজারিয়া গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে নামে হেলিকপ্টারটি। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিকেলে আবার হেলিকপ্টারে চড়ে কনেকে নিয়ে নিজ এলাকা দেওড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে  ফিরে আসেন।
 এ সময় স্থানীয় হাজার হাজার উৎসুক জনতা দুপুর থেকে বর-কনে ও হেলিকপ্টার দেখতে ভিড় করেন।
হেলিকপ্টারে বিয়ের বিষয় বর মোঃ আতিয়ার খলিফা বলেন, বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করার জন্য ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে হেলিকপ্টারটি ভাড়া করেছি। বাবা-মাকে খুশি করতে পেরে আমি অনেক খুশি।
বর আতিয়ার খলিফার বাবা নুর ইসলাম খলিফা বলেন, আমার ছেলে কুয়েত প্রবাসী। আমাদের আশা ছিল ছেলেকে হেলিকপ্টারে করে বিয়ে করাবো, ছেলে আমাদের স্বপ্ন পূরণ করেছে। আমাদের ইউনিয়নে এবং আমার জীবনের এই প্রথম হেলিকপ্টার কাছে থেকে দেখেছি এবং ছেলেকে হেলিকপ্টারে বিয়ে করিয়েছি।
হেলিকপ্টার দেখতে আসা আক্কাস বেপারী বলেন, ‘আমি কখনো হেলিকপ্টার দেখিনি। এখানে হেলিকপ্টার আসবে শুনে দেখতে আসলাম। হেলিকপ্টার দেখতে পেয়ে খুব আনন্দ পেয়েছি।
স্থানীয় গোলাম মাওলা নামের এক ব্যক্তি বলেন, এই হেলিকপ্টার ওঠানামা দেখার জন্য গ্রামের বহু মানুষ ভিড় করেছিল। এ ধরনের আয়োজন আমরা আগে কোনদিন দেখিনি। হেলিকপ্টার দেখতে পেয়ে আমরা খুব আনন্দ পেয়েছি।

চরভদ্রাসনে সাপে কামড় দেওয়ার তিনদিন পর যুবকের মৃত্যু

চরভদ্রাসন প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২০ জুন, ২০২৫, ১০:২৮ পিএম
চরভদ্রাসনে সাপে কামড় দেওয়ার তিনদিন পর যুবকের মৃত্যু
ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে সাপে কামড় দেওয়ার তিনদিন পর কাউসার ভূইয়া (৩৪) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (২০ জুন) সকালে উপজেলার চর হরিরামপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. বিল্লাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
মৃত কাউসার ভূঁইয়া চরভদ্রাসন উপজেলার চর হরিরামপুর ইউনিয়নের শালিপুর মধ্য গ্রামের মৃত ফালু হভূইয়ার ছোট ছেলে। তার স্ত্রী ও এক ছেলে রয়েছে।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, জেলার চরভদ্রাসন উপজেলার চর হরিরামপুর ইউনিয়নের শালিপুর মধ্য গ্রামের মৃত ফালু হভূইয়ার ছোট ছেলে কাউসার ভূঁইয়াকে গত ১৬ জুন দুপুরের দিকে ধান ক্ষেতের গরু তাড়াতে গেলে সাপে কামড় দেয়। পরে বাড়িতে ফিরে সাপে কামড়ানোর কথা পরিবারকে জানায় যে, তাকে বল ছাপার রং সাপে কামড় দিয়েছে। তবে রাসেল’স ভাইপারকে স্থানীয়রা ‘বল ছাপা’ সাপ বলে থাকেন। ঘটনার দিন বিকেলে পরিবারের লোকজন তাকে প্রথমে ফরিদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন থাকার একদিন পর তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

ফরিদপুরে জাল নিবন্ধনে বাল্যবিয়ের অপরাধে কনের মা ও কাজীকে জরিমানা

হাসান মাতুব্বর (শ্রাবণ), ফরিদপুর:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২০ জুন, ২০২৫, ১০:২৩ পিএম
ফরিদপুরে জাল নিবন্ধনে বাল্যবিয়ের অপরাধে কনের মা ও কাজীকে জরিমানা
ফরিদপুরে জাল জন্মনিবন্ধনের মাধ্যমে বাল্যবিয়ে দেয়ার অভিযোগে কনের মা ও সংশ্লিষ্ট নিকাহ রেজিষ্ট্রারকে (কাজী) জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
শুক্রবার (২০ জুন) রাত ৯ টায় শহরের চকবাজার জামে মসজিদ সংলগ্ন মার্কেটের দোতলায় অবস্থিত কাজী অফিসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ইসরাত জাহান।
এ সময় নিকাহ রেজিষ্ট্রার মো. কামরুল হাসানকে (৪৮) বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এর আগে একই অপরাধে বিকালে শহরের বায়তুল আমান এলাকায় কনের মা’কে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ১২ জুন শহরের বায়তুল আমান এলাকায় ১৬ বছর বয়সি এক কিশোরীকে জাল জন্ম নিবন্ধনের মাধ্যমে বয়স বাড়িয়ে বাল্যবিবাহ দেয়া হয়। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে বিকালে কনের বাড়িতে গিয়ে তথ্য যাচাই করেন। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে নিকাহ রেজিষ্ট্রারের কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
জানা যায়, বিভিন্ন অভিযোগের কারণে নিকাহ রেজিস্টার কামরুল হাসানের নিবন্ধন স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে তিনি উচ্চ আদালত থেকে এক আদেশের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করেন। ওই আদেশ গত ৮ জুন পর্যন্ত কার্যকর ছিল।
বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসরাত জাহান বলেন- ‘এক কিশোরীর জাল নিবন্ধনের মাধ্যমে বয়স বেশি দেখিয়ে বাল্য বিয়ে দেয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান করা হয়েছে এবং সত্যতাও পাওয়া গেছে। যে কারণে দুইজনকে জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া জেলা রেজিষ্ট্রার বরাবর আমরা একটি চিঠি পাঠাবো ওনার নিবন্ধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।