খুঁজুন
শনিবার, ২১ জুন, ২০২৫, ৭ আষাঢ়, ১৪৩২

ফরিদপুরে এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী আ.লীগ নেত্রীর মেয়ে, কমিটি নিয়ে ক্ষোভ

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫, ৭:১৮ পিএম
ফরিদপুরে এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী আ.লীগ নেত্রীর মেয়ে, কমিটি নিয়ে ক্ষোভ
ফরিদপুরে সদ্য ঘোষিত জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমন্বয় কমিটি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব মো. সোহেল রানা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের আইডিতে তিনি লিখেছেন, ‘উল্টে যাচ্ছে গণেশ… সাপের ডিম সাপেই খাবে।’
২৩ সদস্যের এই কমিটিতে ‘তৎকালীন আওয়ামী লীগের দোসর’ ও ‘ফ্যাসিবাদের কোলে বসে থাকা মুখোশধারীদের’ স্থান দেওয়ায় তিনি হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, জুলাই-গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এনসিপি ছিল শহীদদের রক্ত ও বীরদের ত্যাগে নির্মিত। কিন্তু আজ সেই দলে জায়গা পাচ্ছে তারা, যারা সেই সময় বিরোধিতা করেছিল।
ফরিদপুর জেলা শাখার ঘোষিত সমন্বয় কমিটিতে প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে আছেন ফরিদপুর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহমুদা বেগমের মেয়ে ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ফরিদপুরের ছাত্রজনতার বুকে গুলি চালানোর অভিযোগে অভিযুক্ত ফরিদপুর জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি ও বিতর্কিত ঠিকাদার গোলাম মোহাম্মদ নাসিরের ভাগ্নি সৈয়দা নীলিমা দোলা। যুগ্ম সমন্বয়কারী হিসেবে রয়েছেন এসএম জাহিদ, সাইফ হাসান খান, জিল্লুর রহমান, মো. বায়েজিদ হোসেন ও মো. কামাল হোসাইন। এছাড়া ১৭ জন সদস্য রয়েছেন যারা জেলার বিভিন্ন পেশা ও পটভূমি থেকে এসেছেন।
গত ৫ জুন এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমোদনে এ কমিটি ঘোষণা করেন সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। কমিটির মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে তিন মাস বা আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পূর্ব পর্যন্ত।
এছাড়া গত ৩ জুন এনসিপির শ্রমিক উইংসের ৩৬ সদস্যের আরেকটি জেলা কো-অর্ডিনেশন কমিটি গঠিত হয়। যার প্রধান সমন্বয়কারী এসএম জুনায়েদ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ফরিদপুরের সদস্যসচিব সোহেল রানা ফেসবুকে তার নিজস্ব আইডিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে মন্তব্য করেন।
ওই মন্তব্যে সোহেল রানা লেখেন, ‘উল্টে যাচ্ছে গণেশ। জুলাই- গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা দল এনসিপি। শদীদের রক্ত, হায়েনার হাত থেকে বেঁচে যাওয়া বীরদের ত্যাগের ওপরে দাঁড়িয়ে থাকা একটি রাজনৈতিক দল। দেখতে পাচ্ছি আমরা তৎকালীন সময়ের আওয়ামী লীগের সম্মানিত দালালরা, ফ্যাসিবাদের কোলে বসে থাকা দোসররা মুখ লুকিয়ে গুরুত্বপূর্ণ যায়গা নিচ্ছেন এই দলে। বাদ যাচ্ছে না সহযোগী সংগঠন গুলোর গুরুত্বপূর্ণ পদ।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন- ‘এমন গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়ার আগে কখনো খতিয়ে দেখার চেষ্টাও করেন নাই, জুলাইয়ে তাদের ভূমিকা ছিল। কার অবস্থান কি ছিল! জুলাইয়ের পক্ষে নাকি বিপক্ষে? যাদের পদ/পদবি দিবেন, তারা কি চায়! মানুষের জন্য রাজনীতি নাকি, টেন্ডারবাজি, দখলদারী, করে নিজের পকেট ভারী। সময় ভালো চলছে…বসন্তের কোকিল আসবে ঝাঁকে ঝাঁকে, সময় খারাপ হলে, এদের কি আদৌ খুঁজে পাওয়া যাবে? রীতিমতো অবাক করে দিচ্ছেন  আমাদের! যেটার ফলাফল হবে- সাপের ডিম সাপেই খাবে!’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও ফরিদপুর জেলা শাখার প্রধান সমন্বয়কারী সৈয়দা নীলিমা দোলা বলেন, রাজনীতিতে কিছু বিতর্ক থাকবেই। আমরা ছবির রাজনীতি করি না। কারও আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে ছবি থাকলে সেটাই সব নয়। তবে কারও বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন,বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটিতেও নানান মাইন্ডের অনেকে রয়েছে। তাই কারও পুরোনো রাজনৈতিক পরিচয় বা সম্পর্কের ভিত্তিতে না দেখে আমরা তার বর্তমান অবস্থান ও ভূমিকা দেখছি।

ফরিদপুরে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করলেন কুয়েত প্রবাসী

আব্দুল মান্নান, ভাঙ্গা :
প্রকাশিত: শনিবার, ২১ জুন, ২০২৫, ৫:৪৫ পিএম
ফরিদপুরে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করলেন কুয়েত প্রবাসী
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার কালামৃধা ইউনিয়নের দেওড়া গ্রামে বাবা-মায়ের ইচ্ছে পূরণ করতে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করলেন কুয়েত প্রবাসী আতিয়ার খলিফা।
শুক্রবার ( ২০ জুন) বিকেলে বিয়ে করে নববধূকে নিয়ে হেলিকপ্টারে চড়ে বাড়িতে আসেন।
হেলিকপ্টার ও বর কনেকে এক নজর দেখতে স্কুল মাঠে হাজার হাজার গ্রামবাসী ভিড় করেন।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ভাঙ্গা উপজেলার দেওড়া গ্রামের নুর ইসলাম খালিফার ছেলে কুয়েত প্রবাসী আতিয়ার খলিফার সাথে একই উপজেলার গজারিয়া  গ্রামের ফিরোজ শেখের মেয়ে আমেনা খাতুনের বিয়ে ঠিক হয়। বাবা-মায়ের ইচ্ছে পূরণ করতে বর আতিয়ার খলিফা হেলিকপ্টার ভাড়া করেন।
শুক্রবার বিকেলে ভাঙ্গা  উপজেলার দেওড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে বর সেজে হেলিকপ্টারে চড়েন আতিয়ার খলিফা। পরে হামিরদী ইউনিয়নের গজারিয়া গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে নামে হেলিকপ্টারটি। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিকেলে আবার হেলিকপ্টারে চড়ে কনেকে নিয়ে নিজ এলাকা দেওড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে  ফিরে আসেন।
 এ সময় স্থানীয় হাজার হাজার উৎসুক জনতা দুপুর থেকে বর-কনে ও হেলিকপ্টার দেখতে ভিড় করেন।
হেলিকপ্টারে বিয়ের বিষয় বর মোঃ আতিয়ার খলিফা বলেন, বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করার জন্য ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে হেলিকপ্টারটি ভাড়া করেছি। বাবা-মাকে খুশি করতে পেরে আমি অনেক খুশি।
বর আতিয়ার খলিফার বাবা নুর ইসলাম খলিফা বলেন, আমার ছেলে কুয়েত প্রবাসী। আমাদের আশা ছিল ছেলেকে হেলিকপ্টারে করে বিয়ে করাবো, ছেলে আমাদের স্বপ্ন পূরণ করেছে। আমাদের ইউনিয়নে এবং আমার জীবনের এই প্রথম হেলিকপ্টার কাছে থেকে দেখেছি এবং ছেলেকে হেলিকপ্টারে বিয়ে করিয়েছি।
হেলিকপ্টার দেখতে আসা আক্কাস বেপারী বলেন, ‘আমি কখনো হেলিকপ্টার দেখিনি। এখানে হেলিকপ্টার আসবে শুনে দেখতে আসলাম। হেলিকপ্টার দেখতে পেয়ে খুব আনন্দ পেয়েছি।
স্থানীয় গোলাম মাওলা নামের এক ব্যক্তি বলেন, এই হেলিকপ্টার ওঠানামা দেখার জন্য গ্রামের বহু মানুষ ভিড় করেছিল। এ ধরনের আয়োজন আমরা আগে কোনদিন দেখিনি। হেলিকপ্টার দেখতে পেয়ে আমরা খুব আনন্দ পেয়েছি।

চরভদ্রাসনে সাপে কামড় দেওয়ার তিনদিন পর যুবকের মৃত্যু

চরভদ্রাসন প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২০ জুন, ২০২৫, ১০:২৮ পিএম
চরভদ্রাসনে সাপে কামড় দেওয়ার তিনদিন পর যুবকের মৃত্যু
ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে সাপে কামড় দেওয়ার তিনদিন পর কাউসার ভূইয়া (৩৪) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (২০ জুন) সকালে উপজেলার চর হরিরামপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. বিল্লাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
মৃত কাউসার ভূঁইয়া চরভদ্রাসন উপজেলার চর হরিরামপুর ইউনিয়নের শালিপুর মধ্য গ্রামের মৃত ফালু হভূইয়ার ছোট ছেলে। তার স্ত্রী ও এক ছেলে রয়েছে।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, জেলার চরভদ্রাসন উপজেলার চর হরিরামপুর ইউনিয়নের শালিপুর মধ্য গ্রামের মৃত ফালু হভূইয়ার ছোট ছেলে কাউসার ভূঁইয়াকে গত ১৬ জুন দুপুরের দিকে ধান ক্ষেতের গরু তাড়াতে গেলে সাপে কামড় দেয়। পরে বাড়িতে ফিরে সাপে কামড়ানোর কথা পরিবারকে জানায় যে, তাকে বল ছাপার রং সাপে কামড় দিয়েছে। তবে রাসেল’স ভাইপারকে স্থানীয়রা ‘বল ছাপা’ সাপ বলে থাকেন। ঘটনার দিন বিকেলে পরিবারের লোকজন তাকে প্রথমে ফরিদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন থাকার একদিন পর তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

ফরিদপুরে জাল নিবন্ধনে বাল্যবিয়ের অপরাধে কনের মা ও কাজীকে জরিমানা

হাসান মাতুব্বর (শ্রাবণ), ফরিদপুর:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২০ জুন, ২০২৫, ১০:২৩ পিএম
ফরিদপুরে জাল নিবন্ধনে বাল্যবিয়ের অপরাধে কনের মা ও কাজীকে জরিমানা
ফরিদপুরে জাল জন্মনিবন্ধনের মাধ্যমে বাল্যবিয়ে দেয়ার অভিযোগে কনের মা ও সংশ্লিষ্ট নিকাহ রেজিষ্ট্রারকে (কাজী) জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
শুক্রবার (২০ জুন) রাত ৯ টায় শহরের চকবাজার জামে মসজিদ সংলগ্ন মার্কেটের দোতলায় অবস্থিত কাজী অফিসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ইসরাত জাহান।
এ সময় নিকাহ রেজিষ্ট্রার মো. কামরুল হাসানকে (৪৮) বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এর আগে একই অপরাধে বিকালে শহরের বায়তুল আমান এলাকায় কনের মা’কে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ১২ জুন শহরের বায়তুল আমান এলাকায় ১৬ বছর বয়সি এক কিশোরীকে জাল জন্ম নিবন্ধনের মাধ্যমে বয়স বাড়িয়ে বাল্যবিবাহ দেয়া হয়। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে বিকালে কনের বাড়িতে গিয়ে তথ্য যাচাই করেন। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে নিকাহ রেজিষ্ট্রারের কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
জানা যায়, বিভিন্ন অভিযোগের কারণে নিকাহ রেজিস্টার কামরুল হাসানের নিবন্ধন স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে তিনি উচ্চ আদালত থেকে এক আদেশের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করেন। ওই আদেশ গত ৮ জুন পর্যন্ত কার্যকর ছিল।
বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসরাত জাহান বলেন- ‘এক কিশোরীর জাল নিবন্ধনের মাধ্যমে বয়স বেশি দেখিয়ে বাল্য বিয়ে দেয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান করা হয়েছে এবং সত্যতাও পাওয়া গেছে। যে কারণে দুইজনকে জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া জেলা রেজিষ্ট্রার বরাবর আমরা একটি চিঠি পাঠাবো ওনার নিবন্ধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।