খুঁজুন
রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৫, ১৭ কার্তিক, ১৪৩২

শেষ চিঠি

রোমিও অনুব্রত
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫, ১০:২৭ এএম
শেষ চিঠি

নিরুদ্দেশের কবিতা লেখা সহজ কাজ নয়। এসেনিনকে তাই করতে হয়। এমন নয় যে কবিতা লেখার ঠিকানা তার নেই। বরং একটা নয়…কয়েকটা আছে। এই যেমন ধরা যাক সোফিয়ার কথা। গত তিন মাস হল তার থেকে ১৬ বছরের বড় সোফিয়ার সাথে তার খুব গভীরতা হয়েছে। দুজনেই দুজনের কুয়োর ভিতর যখন তখন একজন আরেকজনকে নামিয়ে নিচ্ছে। কাল রাতেও প্রেম গলিয়ে অনেক আনন্দ করেছে তারা। এসেনিন শক্ত করে সোফিয়াকে নিজের সাথে চেপে ধরে বলেছে, “তোমার ভিতরে মাথা গুঁজে দম বন্ধ হয়ে মরে যেতে ইচ্ছে করে। কিংবা ধরো, কাঁটা না বেছে একটা লাল গোলাপ পুঁতে দিলাম”! এসব কথার মানে বোঝে না সোফিয়া। এসেনিন নিজেও হয়ত বোঝে না। কিন্তু এইসব কথা খুব শীতে আগুনের আঁচের মতোই ভালো লাগে সোফিয়ার কাছে।

এখন দুপুর বারোটা। সিগারেটের ধোঁয়ায় ঘরটা কেমন ঘোলাটে হয়ে আছে। জানালার পাশের সোফাটায় বসে আছে সোফিয়া। ধোঁয়ার কুণ্ডলী ছুড়ে দিচ্ছে এসেনিনের দিকে। তার দিকে ভেসে আসতে থাকা একেকটা ধোঁয়ার বৃত্তের দিকে এক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে এসেনিন। সে বৃত্তের ওপাশে দেখতে পাচ্ছে দুপুরবেলা হঠাৎ লক আউট হওয়া কোনো কারখানা আর সেখান থেকে বের হয়ে আসতে থাকা শ্রমিকদের ঢল। ড্রেন দিয়ে ভেসে যাচ্ছে পোড়া মবিলের কালো স্রোত। একটা মরা বেড়ালের বাচ্চা সেখানে ডুবছে-ভাসছে, ডুবছে-ভাসছে.. একটা ছেলে শ্রমিকদের উল্টো দিকে ড্রেনের পাশ দিয়ে হাটছে। একটা মোড় ঘুরতেই থামতে হলো। একটা লাশ! ভেজা জামা। উপুড় হয়ে পড়ে আছে। হাতদুটো পিছমোড়া করে দড়ি দিয়ে বাঁধা। একপাশে মাথা কাত হয়ে আছে। চোখ দুটো একটু আগে উপরে ফেলা হয়েছে। রক্তে ভেসে যাচ্ছে রাস্তা। ছেলেটা দাঁড়িয়ে আছে। আশেপাশে উপড়ানো চোখদুটো খুঁজছে তার দৃষ্টি। নেই! কিন্তু কোথায়.. আর শ্রমিকেরা ওদিকেই-বা চলে যাচ্ছে কেন! তাদের তো এই লাশ কাঁধে নিয়ে মিছিল করার কথা.. কই… একটা মানুষও তো…

বিহ্বল চোখ নিয়ে তাকিয়ে থাকা এসেনিনকে জিজ্ঞেস করল সোফিয়া, কী ভাবছো এত বলো তো?

-ভাবছি কারখানার ড্রেন দিয়ে যে আলকাতরা ভেসে যায়, তা নিয়ে একটা ছবি আঁকব। একটা মেয়ের মুখ। ধরো সিসিফির মুখ।

-নামটা এখন না বললে কী হতো না!

-সিসিফি তোমার থেকেও বেশি নখরামো জানত। আমি ঘুমের ভিতরে এখনও ওর আঁচড়ের গন্ধ পাই..

-স্টপ ইট!!

-ওকে। আমার না খিদে পেয়েছে!

-দেখো তুমি দশটা মেয়ের সাথে শুতে পারো। কিন্তু আমাকেই বেশি ভালোবাসতে হবে! বাসতেই হবে..

-বাসি তো! সাত দিন হলো একটা লাইনও লিখতে পারিনি। সব যে তোমার ভিতর গলিয়ে দিয়েছি।

-আমারও খুব খিদে লেগেছে। জানো, খালি পেটে সেক্স করলে বেশি এনজয় করা যায়।

-ও। কী খাবে?

-তোমায় খাবো। আসো, আসো বলছি!

-আমি আর কতদূর আসতে পারি বলো!

সোফিয়া দুই হাত প্রসারিত করে বলল, এই যে.. এতদূর

এসেনিন উঠে বিছানায় সোফিয়ার পাশে এসে বসলো। সোফিয়া তার কাঁধের দিকে মাথা ঝুকিয়ে অনুনয়ের সুরে বলল, কই..

এসেনিনের ঠোঁটের কাছে সোফিয়ার ঠোঁট। অন্তত সাত-আটজন পুরুষের পিপাসা মিটিয়েছে তার ঠোঁট। তাও নিজের তৃষ্ণা মেটাতে পারেনি। ঠোঁট এগিয়ে দেওয়ার সময় চোখের ভাষা সেইরকমই আদিম। কোনো রমণীর প্রথম দিকের কামনার মতো।

একটা ব্যাপার সোফিয়ার সাথে মেলে না এসেনিনের। কামনার খেলায় সোফিয়া একেবারেই সময় নেয় না। কিন্তু এসেনিনের ভালো লাগতো যদি চুমু খাওয়ার সময়গুলোতে শুধু ওর মুখের দিকেই সারাজীবন তাকিয়ে থাকা যেত।

চুমু খাওয়ার ফাঁকে জানালার দিকে চোখ পড়ে যায় এসেনিনের। একটা ছোট্ট রবিন এসে বসেছে। জানালার কাচের ওপাশে। কী সুন্দর রঙ! মা খুব পাখি পছন্দ করে। কতটা পছন্দ করে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। প্রতিদিন মায়ের বারান্দায় বিকেল ৫টায় পাখিরা খাবার খেতে আসে। একদম ঘড়ির কাঁটা দেখে। দেখার মতো একটা দৃশ্য। সেই ছোটবেলা থেকে এমনভাবেই চলে আসছে। পাখিরা এসে খাবার না পেয়ে ফিরে যাবে এইজন্য মা কোনোদিন বাইরে কোথাও যায়নি। মা একা থাকে। গম কিনতে গেলেও তো সেই আট ক্রোশ পথ হেঁটে শহরে পৌঁছাতে হয়। কাকে পাঠায়! কী অদ্ভুত.. তারপরও কিছু থেমে থাকে না।

-ওহ তুমি না! শুধু অন্যমনস্ক হয়ে যাও, এটা খোলো। দেখি আমি..

কণ্ঠস্বরে বিরক্তির সুর থাকলেও সোফিয়া এখন ভীষণ আসক্ত। এসেনিনও জানলা থেকে মন টেনে নিলো। নাহ, এই মেয়েটাকে নিয়ে পারা যায় না। উফ.. অবশ্য সোফিয়ার শরীরের বাসি এই গন্ধটা সত্যিই মাদকতায় ভরা। এমনকি থেলাসেমিয়া রোগীও উঠে বসতে বাধ্য। এসেনিন এবার মন বসাতে পারলো। সেও ক্রমশ ডুবে যাচ্ছে, আঃ.. মুহূর্তের আচ্ছন্নতা এসেনিনকে একবার মহাশূন্যে আর একবার পাতালে নিয়ে যাচ্ছে। সোফিয়াও সম্পূর্ণ বিকারগ্রস্ত। কিন্তু এইসব লুণ্ঠনের মাঝখানেও এসেনিনের চোখ বারবার মনোযোগ হারিয়ে ফেলছে। সে হঠাৎ সোফিয়ার মাথা ঠেলে সরিয়ে ঝপ করে শুয়ে পড়লো। বললো, প্লিজ থামো.. আই কান্ট টেক দিস নাউ..

সোফিয়া অবাক হলো না। এসেনিন সবসময় খামখেয়ালি করে। কিন্তু তাই বলে এরকম একটা মুহূর্তে! সোফিয়া খুব বিরক্ত হলো।

-কী হয়েছে আমায় একবার বলবে!! (সোফিয়া একটু জোরেই কথাটা বলতে বাধ্য হলো)

-কিছু না। তুমি যেতে পারো!

-হোয়াট!! আর ইউ ক্রেজি!

-দূর হও। তোমাকে আর ভালো লাগছে না।

-এক্সিউজ মি! হোয়াট দা হেল আর ইউ ফাকিং এবাউট..

-গো আই সে। আই সে গো! (কথাটা চেঁচিয়ে বলে উঠল এসেনিন।)

কেঁপে উঠেছিল সোফিয়া। নিজেকে কোনোরকমে সামলে নিয়ে দ্রুত বিছানা থেকে লাফ দিয়ে নেমে বাথরুমে ঢুকলো সে। এসেনিন চিৎ হয়ে শুয়ে রইলো। তার কাছে মনে হচ্ছে ঘরটা কেমন দুলছে। ইস ঘরটা কী তবে সত্যি ভেসে উঠলো আকাশে! কই.. জানালার দিকে তাকালো সে। নাহ, বাইরে ঝড়ো হাওয়া বইছে। সে নেমে এসে জানালার কাচ উঠিয়ে দিলো। কী অদ্ভুত ঠাণ্ডা বাতাস! সে আবারও জানালার পাশে তার প্রিয় জায়গায়টায় বসলো। ওপাশের দেয়ালে পিকাসোর বয় উইথ দা পাইপের প্রিন্টটা দুলছে। একটা সিগারেট ধরালো সে। দেয়ালে হেলান দিয়ে ছবিটার দিকে তাকিয়ে থাকলো। ছেলেটার মুখ একেবারে আনসিরোর মতো। আনসিরোর মতো ভালো ছেলে পৃথিবীতে একবারই জন্ম নেয়। এসেনিনের হঠাৎ নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে হয়। আনসিরোর মতো বন্ধু পেয়েছিল। একবার দুই বন্ধুতে মিলে একটা নতুন জায়গায় গিয়ে পথ হারিয়ে ফেলেছিল। সে এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা। পথ খুঁজে পাওয়ার কোনো আগ্রহ নেই দুজনের। অথচ একটা জায়গায় পৌঁছানো খুব জরুরি। এক আত্মীয়কে কিছু টাকা দিয়ে আসতে হবে। সেখানে একজন খুব অসুস্থ। টাকা হাতে পেলে তারা দুধ পাউরুটি কিনবে, ওষুধ কিনবে। অথচ পথ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। শেষে অনেক ঘুরে তারা সেখানে গেলো। গিয়ে দেখে সেই আত্মীয়দের অবস্থা খুব খারাপ। ঘরে পানি পর্যন্ত নেই। একজন ব্যথায় কাতরাচ্ছে। দুই বন্ধু মিলে তাদের ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলো। বাজার করে দিলো। সবকিছু শেষে তারা ফিরে এলো। ফিরে আসার পর দেখা গেলো যে টাকা তারা দেওয়ার কথা ভেবেছিল তার চারগুণ টাকা খরচ করে ফিরেছে তারা। কিন্তু এত টাকা তো তাদের কাছে থাকার কথা না। পরে বোঝা গেলো আনসিরো তার সঞ্চিত সব টাকা সেখানে খরচ করে এসেছে। অথচ তার সাথের বন্ধুটিও ব্যাপারটি বুঝতে পারেনি তখন। এই হলো আনসিরো। আহা আনসিরোর মুখটা কেমন বাতাসে দুলছে।

এই সময় সোফিয়া বাথরুম থেকে বের হয়ে এলো। বোঝাই যাচ্ছে এতক্ষণ সে কাঁদছিল। সে কোনোরকমে তার ব্যাগটা গুছিয়ে নিলো। ঘর থেকে বের হওয়ার সময়ও সে চোখ মুছছিল..

এসেনিনের মনে হলো সে একটা সিনেমা দেখছে। সোফিয়া চলে গেছে। তবু মনে হচ্ছে সে আছে। বিছানায় উপুড় হয়ে বুকে বালিশ চাপা দিয়ে কাঁদছে।

এসেনিন হঠাৎ পাগলের মতো কাগজ কলম খুঁজতে থাকলো। সোফিয়া এনে রেখেছিল। কোথাও না কোথাও আছে। শেষে পাওয়া গেলো। পোশাকহীন অবস্থাতেই এসেনিন টেবিলে লিখতে বসে। সে তার মায়ের কাছে একটা চিঠি লিখতে চায়। এখনই…

প্রিয় মা,
আমি এত মাতাল হয়ে যাইনি যে তোমার সাথে দেখা না করেই মরে যাবো। দেখো একদিন সকাল বেলা তুমি জানালার কাছে বসেই দূর থেকে আমায় দেখতে পাবে। তোমার অনেক আনন্দ হবে মা! আমি কিন্তু তোমার জন্য কিছুই আনতে পারবো না। কারণ আমার মনে থাকবে না ।

মা, আমি স্বপ্নের ভিতরে বেঁচে আছি। বিশ্বাস কর। কেউ করে না। কেউ যেন আমায় একটা বেলচা ধরিয়ে দিয়ে কোনো বনের মধ্যে ছেড়ে দিয়েছে। আমি মাটি খুঁড়ি। আমি চাই না। আমি খুঁড়ি। মাঝে মাঝে মনে হয় খুঁড়তে খুঁড়তে আমি একটা সুড়ঙ্গ দিয়ে পৃথিবীর অন্য পাশে চলে যাবো আর মহাশূন্যে গিয়ে পড়বো। আমি হারিয়ে গেছি মা! মা, আমি হারিয়ে গেছি !!

তোমায় বলা হয়নি, এখন আমি একটা হোটেলে থাকি। জানো, আমি মাঝে মাঝেই বাইরে থেকে ফিরে অন্যের ঘরে ঢুকে পড়ি। তুমি কি হাসছো মা? দেখি! আসলে আমি একা থাকি না। আমার সাথে সোফিয়াও থাকে। আমরা বিয়ে করেছি। কেন যে মানুষ বিয়ে করে! শুধুই বাচ্চার জন্য, শুধুই সঙ্গমের জন্য। মানুষের কী একটুও লজ্জাবোধ নেই! মা জানো, আমার এখন সবথেকে বেশি রাগ হয় দেয়ালের উপর। সব দেয়ালগুলি যদি শুইয়ে দেওয়া যেতো। আমার নিজেকে সাপের মতো মনে হয়। দেখো তো কী নিয়ে কথা বলছিলাম, কী সব বলছি! আচ্ছা তোমায় সোফিয়ার কথা বলি। সে এখন বিছানার উপর উপুড় হয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। কোনো পোশাক নেই। এই দৃশ্যটা আমার কী যে ভালো লাগে। মা নগ্ন মেয়েদের কাছে পৃথিবীর ঋণ কবে শেষ হবে!

মা তুমি কি জানো ম্যাজিক মাশরুম কি? খুব নেশা হয় মা। তোমাকেও একদিন দেবো। তুমিও কি ডানা মেলে আকাশে উড়তে চাও না?

আমার কোনো কাজ নেই। কী করি বলো। হোটেলের পাশ দিয়ে একটা রেললাইন চলে গেছে। আমি রেললাইনের উপর শুয়ে থাকি। বিছানায় আমার ঘুম আসে না মা। সবাই ভাবে আমি উন্মাদ। আমি হাসি। তুমি বল তোমার ছেলের থেকে ভালো কবিতা এই পৃথিবীতে আর কেউ লিখতে পারে! কিন্তু কতদিন আমি লিখি না মা। আমার শরীরে সবাই লিখে যাচ্ছে। আমি পারি না। অন্যের কলমের আঘাতে আমার শরীর ক্ষত-বিক্ষত। আমার শরীরে রক্ত নেই মা। শুধু কালি। ক্ষত থেকে শুধু কালি ঝরে পড়ছে। আমি মারা যাচ্ছি মা। কী যে শান্তি। আবার কবে তোমায় লিখতে পারবো মা? আবার কবে…

ইতি
তোমার সবচেয়ে প্রিয় ছেলে

গল্পসুত্র : এসেনিন একজন রুশ কবি । ক্ষনজন্মা । আত্মহত্যা করেছিলেন । তার বিখ্যাত কবিতা Goodbye My Friend কলম না পেয়ে লিখেছিলেন নিজের রক্ত দিয়ে । মাকে খুব ভালবাসতেন । গল্পে যে চিঠিটা আছে তার প্রথম লাইন সত্যিই তিনি তার মাকে লিখেছিলেন।

ফরিদপুরে নির্মাণাধীন ব্রিজ থেকে পড়ে শ্রমিক নিহত

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৫, ১০:১৫ এএম
ফরিদপুরে নির্মাণাধীন ব্রিজ থেকে পড়ে শ্রমিক নিহত

ফরিদপুরে নির্মাণাধীন একটি ব্রিজ থেকে পড়ে জহুরুল ইসলাম (৩২) নামে এক শ্রমিক নিহতের ঘটনা ঘটেছে।

শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে ফরিদপুর শহরতলীর ভাজনডাঙ্গা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।


নিহত জহুরুল ইসলাম নওগাঁ জেলার ভীমপুর গ্রামের বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিনের ছেলে।


জানা যায়, ফরিদপুর শহরতলীর ভাজনডাঙ্গা এলাকায় পদ্মা নদীর ধারায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে একটি সেতু নির্মাণের কাজে নিয়োজিত ছিলেন নির্মাণ শ্রমিক জহুরুল ইসলাম। নির্মাণ কাজ করার সময় অসাবধানতাবশত তিনি নির্মাণাধীন সেতু থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন।


এ সময় সেখানে থাকা অপর শ্রমিকরা তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরিদপুর কোতয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আব্দুল্লাহ বিশ্বাস জানান, এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ফরিদপুরে ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিএনপির মতবিনিময় সভা

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৫, ৭:৫৩ এএম
ফরিদপুরে ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিএনপির মতবিনিময় সভা

ফরিদপুরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত ৩১ দফা রাষ্ট্রকাঠামো মেরামত ও সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে ফরিদপুর শহরের টেপাখোলা বেলতলায় পৌরসভার ১৮ ও ১৯ নং ওয়ার্ড বিএনপি’র আয়োজনে এ মতবিনিময় সব অনুষ্ঠিত হয়।

১৯ নং ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সভাপতি মো. মিরু খানের সভাপতিত্বে এবং ফরিদপুর জেলা বিএনপির সাবেক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মো. আশরাফ হোসেনের পরিচালনায় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন- ফরিদপুর জেলা বিএনপির যুগ্ন-আহবায়ক সৈয়দ জুলফিকার হোসেন জুয়েল।

এ সময় জেলা বিএনপি যুগ্ন আহবায়ক ফাত্তাউল ইসলাম ফাত্তাহ, মহানগর বিএনপি যুগ্ন আহবায়ক শামসুল আরেফিন সাগর, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মোজাম্মেল হোসেন খান মিঠু, ফরিদপুর মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. হাসানুর রহমান মৃধা, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ন আহবায়ক রাকিবুল ইসলাম রনি, ১৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সৈয়দ এখলাছুর রহমান, ১৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি গোলাম মোস্তফা খোকা, ১৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার কাদির রুবেল, জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য মো. সাব্বির হোসেন খান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সাহিদুল ইসলাম মহব্বত, বিএনপি নেতা শাহাদাত হোসেন শাহীন সহ বিএনপি অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বক্তারা বলেন, ‘রাজনীতিতে মতপার্থক্য ভেদাভেদ থাকলেও ধানের শীষের স্বার্থে ফরিদপুর জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সবাই আমরা ঐক্যবদ্ধ। আমরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুরে যারাই ধানের শীষ প্রতীক পাবে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে বিজয় নিশ্চিত করব। এ সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা সম্পর্কে উপস্থিত স্থানীয় সাধারণ জনগণ ও নেতাকর্মীদেরকে তা বাস্তবায়নের জন্য সহযোগিতা কামনা করা হয়। এবং আগামীতে একমাত্র দল বিএনপি ক্ষমতায় আসলেই দেশের ও জাতির উন্নয়ন করা সম্ভব বলে ব্যক্ত করেন নেতাকর্মীরা।’

ভাঙ্গায় ১০ টাকার লোভ দেখিয়ে শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ

আব্দুল মান্নান মুন্নু, ভাঙ্গা:
প্রকাশিত: রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৫, ৭:৪৭ এএম
ভাঙ্গায় ১০ টাকার লোভ দেখিয়ে শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় ১০ টাকার লোভ দেখিয়ে প্রথম শ্রেণির এক শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে পাশের বাড়ির এক বৃদ্ধ লম্পট দাদার বিরুদ্ধে।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) বেলা ১০টার দিকে ভাঙ্গা উপজেলার পূর্ব সদরদী গ্রামের বৃদ্ধ লম্পট দাদা শাফি শিকদারের বিল্ডিংয়ের ভিতরে এঘটনা ঘটলেও শনিবার বিষয়টি জানাজানি হয়।

শিশুটি পূর্ব সদরদী গ্রামের বাবা বাদল শিকদার কন্যা ও পুর্ব সদরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

ঘটনার পর লম্পট বৃদ্ধর লোকজন ভুক্তভোগীর বিচার আশ্বাসের নামে ভয় দেখিয়ে থানায় যেতে ও মামলা করতে এবং মুখ খুলতে নিষেধ করছেন।
বর্তমানে লম্পট বৃদ্ধ গা ঢাকা দিয়েছে।

এঘটনায় শিশুটির মা বিচার দাবি করে বলেন , আমার ছোট মেয়ের সাথে আমার চাচা শশুর শফি শিকদার যে খারাপ কাজ করেছে। আমি তার উপযুক্ত বিচার চাই এবং তার শাস্তি চাই। আমার স্বামী এক দিনমজুর ও গ্রামে গ্রামে হেঁটে প্লাস্টিকের মালামাল বিক্রি করে। আমরা খুবই গরীব মানুষ। তাই গরীব মানুষ হিসেবে আমরা কোন বিচার পাচ্ছি না। শাফি শিকদার একজন প্রভাবশালী টাকা ওয়ালা। তার লোকজন আমাদেরকে থানায় যেতেও নিষেধ করছেন। বিচার ও পাচ্ছি না এবং প্রভাবশালীদের ভয়ে থানায়ও যেতে পারছি না। আমরা কার নিকট বিচার দাবি করবো। আমি এঘটনার বিচার চাই।

স্থানীয়দের দাবি, পূর্ব সদরদী গ্রামের শাফি শিকদার একজন লম্পট ও খারাপ চরিত্রের মানুষ। সে অনেক মহিলার সাথে খারাপ কাজ করে ধরা পড়েছে। আজ দরিদ্র ঘরের সাড়ে ৬ বছরের এক শিশুর সাথে যতটুকু খারাপ কাজ করেছে আমরা গ্রামবাসী তার বিচার চাই এবং শাস্তি চাই ।

এঘটনায় চুমুরদী ইউনিয়নের ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও বাল্যবিবাহ এবং নারী নির্যাতন কমিটির সদস্য মোসা. ঝর্না আক্তার বলেন, আমার বাড়ির পাশে পূর্ব সদরদী শিকদার বাড়ির একটা ঘটনা ঘটেছে। আমি শুনেছি এবং শুনে খুব খারাপ লেগেছে। তখন আমি আবেগ আপ্লুত হয়ে বলতে বলতে কেঁদেও ফেলেছি। এঘটনা আমি একজন নারী হিসাবে কিভাবে বলি। যদি ভুক্তভোগীরা আমার নিকট আসে, আমি তাদের সাথে থেকে আইনগত সহযোগিতা করব।

এব্যাপারে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফ হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। তবে কেউ এখন পর্যন্ত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।