খুঁজুন
সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫, ২৭ শ্রাবণ, ১৪৩২

মুরগির শেডে লাভজনক হাঁস পালন, ফরিদপুরে পিকিং স্টার ১৩’ হাঁস এখন নতুন সম্ভাবনা

তামিম ইসলাম, ফরিদপুর
প্রকাশিত: বুধবার, ১৮ জুন, ২০২৫, ২:০৫ পিএম
মুরগির শেডে লাভজনক হাঁস পালন, ফরিদপুরে পিকিং স্টার ১৩’ হাঁস এখন নতুন সম্ভাবনা

ফরিদপুরের কোমরপুর গ্রামের নারী উদ্যোক্তা কামরুল নাহার বিদেশি জাতের ‘পিকিং স্টার ১৩’ হাঁস পালনের মাধ্যমে সাফল্যের নতুন গল্প রচনা করছেন। এই হাঁস পানির প্রয়োজন ছাড়াই খাঁচায় সহজে পালন করা যায়। মাত্র ৪৫ দিনে ৩ থেকে ৪ কেজি ওজনের হাঁস প্রতি কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি করে তিনি মোটা অঙ্কের লাভ করছেন। বাজারে এই হাঁসের ব্যাপক চাহিদা তার ব্যবসাকে দ্রুত এগিয়ে নিচ্ছে।

কামরুল নাহারের এই যাত্রা শুরু হয় প্রতিকূলতা কাটিয়ে। তিনি আগে মুরগি পালন করতেন, কিন্তু রোগব্যাধির কারণে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েন। এসময় সোসাইটি ডেভেলপমেন্ট কমিটি (এসডিসি) নামে একটি এনজিও তাকে ‘পিকিং স্টার ১৩’ হাঁস পালনের পরামর্শ দেয়।
এসডিসি’র প্রকল্প ব্যবস্থাপক ডাঃ বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, “কামরুল নাহারের মুরগির খামারে রোগের কারণে ক্ষতি হচ্ছিল। আমরা তাকে প্রশিক্ষণ ও ৫০টি হাঁসের বাচ্চা দিয়ে খামার শুরু করতে সাহায্য করি। দুটি বাচ্চা মারা গেলেও ৪৮টি হাঁস বিক্রি করে তিনি ৪৮ হাজার টাকা আয় করেন। এরপর তিনি ২০০টি বাচ্চা নিয়ে বড় পরিসরে পালন শুরু করেন। এখন তিনি ৫০০টি হাঁসের খামারের পরিকল্পনা করছেন।”
কামরুল নাহার বলেন, “মুরগি পালনে ক্ষতির পর আমি ভেবেছিলাম সব শেষ। এসডিসি’র সহায়তায় ‘পিকিং স্টার ১৩’ হাঁস পালন শুরু করি। এই হাঁস পালন সহজ, কম খরচে লাভ বেশি। এখন ফরিদপুরের হোটেল থেকে শুরু করে অন্য জেলাতেও আমার হাঁস সরবরাহ হচ্ছে। আমি শিগগিরই ৫০০ থেকে ১,০০০ হাঁস পালনের পরিকল্পনা করছি।”
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ সঞ্জীব কুমার বিশ্বাস বলেন, “কামরুল নাহারের ‘পিকিং স্টার ১৩’ হাঁস পালনের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। আমরা তাকে প্রযুক্তিগত পরামর্শ, ওষুধ সরবরাহ এবং বাজারজাতকরণে সহায়তা দিচ্ছি। তার হাঁস স্থানীয় হোটেল ও রেস্টুরেন্টে সরবরাহের জন্য আমরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেছি। এই ধরনের উদ্যোগ নারীদের স্বনির্ভরতার পথকে শক্তিশালী করছে।”
কামরুল নাহারের প্রতিবেশীরা তার খামারের প্রতি আকৃষ্ট। তারা বলেন, “কেন দূরে গিয়ে বাড়তি খরচ করব? আমাদের গ্রামেই কামরুল নাহারের আধুনিক খামার থেকে তাজা ও স্বাস্থ্যকর হাঁস সহজে কিনে নিতে পারি।” এই সুবিধা তাকে স্থানীয়দের কাছে জনপ্রিয় করে তুলেছে।
এছাড়া, তিনি হাঁস পালনের পাশাপাশি ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি করে অতিরিক্ত আয় করছেন, যা তার উদ্যোগের বহুমুখী সাফল্যের প্রমাণ।
ডাঃ বিপ্লব কুমার মোহন্ত আরও বলেন, “ফরিদপুরের পাঁচটি উপজেলায় আমাদের প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষক ও খামারিদের পাশে দাঁড়াচ্ছি। কামরুল নাহারের সাফল্য অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণা।”
কামরুল নাহারের সাফল্য এলাকার অনেককে ‘পিকিং স্টার ১৩’ হাঁস পালনে উৎসাহিত করেছে। তার এই অদম্য উদ্যোগ শুধু নিজের জীবনই বদলায়নি, বরং অন্যদের জন্যও স্বনির্ভরতার নতুন পথ দেখিয়েছে, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

ফরিদপুরে এনসিপি নেতার পদত্যাগ 

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫, ৭:৩৫ পিএম
ফরিদপুরে এনসিপি নেতার পদত্যাগ 

ফরিদপুরে মো. রুবেল মিয়া (হৃদয়) নামের জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এক নেতা পদত্যাগ করেছেন। তিনি এনসিপির ফরিদপুর জেলা কমিটির সদস্য।

সোমবার (১১ আগস্ট) সন্ধ্যায় রুবেল মিয়া (হৃদয়) পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পদত্যাগপত্রে রুবেল মিয়া হৃদয় উল্লেখ করেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে দলের কর্মকাণ্ড, বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের অভিযোগ, দলের কার্যক্রম সিদ্ধান্ত এবং অবস্থানগুলো জুলাই বিপ্লবের নীতি ও নৈতিকতার পরিপন্থী বলে মনে হওয়ায় এবং দলটির বর্তমান পথচলা আমার ব্যক্তিগত আদর্শ ও মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায়, আমি গভীরভাবে হতাশ ও বিচলিত।’

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘আমি আর দলের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারছি না। তাই আমি বিনীতভাবে জাতীয় নাগরিক পার্টি, ফরিদপুর জেলা-এর সকল কার্যক্রম ও পদ থেকে পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করছি।’

পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে মো. রুবেল মিয়া (হৃদয়) বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের পর থেকে আমি যেমনটা ভেবেছিলাম তার সাথে বর্তমান কার্যক্রমের কোনো মিল খুঁজে পাচ্ছিনা। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে দলের কর্মকাণ্ড, বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের অভিযোগ, দলের কার্যক্রম সিদ্ধান্ত এবং অবস্থানগুলো জুলাই বিপ্লবের নীতি ও নৈতিকতার পরিপন্থী বলে মনে হওয়ায় আমি পদত্যাগ করেছি।’

ফরিদপুর জেলার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রধান সমন্বয়কারী সৈয়দা নীলিমা দোলা বলেন, ‘রাজনীতি দীর্ঘ দিনের পথচলা। সেখানে অনেকে হতাশ হয়ে যান। এমনটা রুবেল মিয়া হৃদয়ের মধ্যেও রয়েছে। সে হতাশ। তাই পদত্যাগ করেছেন তিনি।’

তিনি বলেন, ‘তাকে অনুরোধ করার পরও পদত্যাগ থেকে পিছপা হননি। তাই তার পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে।’

 

জন্মনিবন্ধন সনদ পেল ফরিদপুরের যৌনপল্লীর শিশুরা, কাটল স্কুলে ভর্তির জটিলতা 

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫, ৬:০৪ পিএম
জন্মনিবন্ধন সনদ পেল ফরিদপুরের যৌনপল্লীর শিশুরা, কাটল স্কুলে ভর্তির জটিলতা 

এক সময় তারা পরিচয় দিতে পারতো না, স্কুলে ভর্তি হতে পারতো না! সেই অবহেলিত ফরিদপুরের যৌনপল্লীর শিশুরা অবশেষে আলোর মুখ দেখতে শুরু করেছে। এসব শিশুদের মাঝে দেওয়া শুরু হয়েছে জন্মনিবন্ধন সনদ। বঞ্চিত এসব শিশুরা এখন থেকে যেতে পারবে স্কুলে, পড়ালেখার পাশাপাশি কাজকর্মে পড়তে হবে না কোনো জটিলতায়।

গত শনিবার (০৯ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে ফরিদপুর পৌরসভার হলরুমে শাপলা মহিলা সংস্থার আয়োজনে প্রথম পর্যায়ে ফরিদপুরের রথখোলা ও সিএন্ডবি ঘাটের দুইটি যৌনপল্লীর ৩৫ জন শিশু ও যৌনকর্মীকে জন্মসনদ দেওয়া হয়েছে।

সনদ বিতরণকালে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. আবু নছর মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ।

এ সময় প্রধান অতিথি বলেন, এই জন্মসনদের মাধ্যমে সকল নাগরিক সুবিধা ভোগ করবে যৌনপল্লীর বঞ্চিত শিশুরা। এসব শিশুদেরকে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করা হবে বলে তিনি বক্তব্যকালে উল্লেখ করেন।

শাপলা মহিলা সংস্থা সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর জেলা সদরের রথখোলা ও সিএন্ডবি ঘাটের দুইটি যৌনপল্লীতে ৩৮৯ জন যৌনকর্মী রয়েছে। এসব যৌনকর্মীদের শিশু সন্তান রয়েছে ২৯৬ জন। এদের মধ্যে অনেকেরই জন্ম নিবন্ধন করতে না পারায় স্কুলে ভর্তি জটিলতায় ভুগছিল। বিষয়টি নিয়ে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ‘জন্মনিবন্ধন জটিলতায় স্কুলে ভর্তি হতে পারছে না যৌনপল্লীর শিশুরা’ শিরোনামে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। যৌনকর্মীর সন্তানদের আবাসিকের পাশাপাশি পড়ালেখার সুবিধা দিয়ে আসছে ‘শাপলা মহিলা’ নামে একটি বেসরকারী সংস্থা। এসব শিশুদের আবাসনের জন্য শহরতলীর গেরদায় গড়ে তোলা হয়েছে ভবন। বর্তমানে সেখানে ৫০ জন মেয়ে ও ৩৫ জন ছেলে রয়েছে। দি ফ্রিডম ফান্ডে’র সহযোগিতায় এসব শিশু ও যৌনকর্মীদের জন্মসনদ দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করে সংস্থাটি। সেই ধারাবাহিকতায় বাবার নাম পরিচয় ছাড়াই বিশেষভাবে এই জন্মসনদ তৈরি করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। যা ফরিদপুর পৌরসভার মাধ্যমে বিতরণ করা হয়।

জন্মসনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও পৌর প্রশাসক মো. সোহরাব হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান, দ্যা ফ্রিডম ফান্ডে’র বাংলাদেশের প্রতিনিধি খালেদা আক্তার ও শাপলা মহিলা সংস্থার উপ-নির্বাহী পরিচালক শ্যামল প্রকাশ অধিকারী প্রমূখ।

ফরিদপুরে স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যায় স্বামীর যাবজ্জীবন

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫, ৫:৫৯ পিএম
ফরিদপুরে স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যায় স্বামীর যাবজ্জীবন

ফরিদপুরে স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যায় স্বামী রয়েল মণ্ডলকে (৪৬) যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

সোমবার (১১ আগস্ট) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক শামীমা পারভীন এ রায় দেন।

রায়ের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিল।

পরে পুলিশ পাহারায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, দুই লাখ টাকা যৌতুক না দেওয়ায় ২০১১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রাতে মলিনা বেগম (২৫) নামের ওই গৃহবধূকে নির্মমভাবে পিটিয়ে ও শরীরে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে হত্যা করেন রয়েল মণ্ডল।

মলিনা একই উপজেলার তাম্বুলখানা গ্রামের আব্দুর রহমানের মেয়ে। ঘটনার একদিন পর কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন তার বাবা।