খুঁজুন
সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫, ১১ কার্তিক, ১৪৩২

রাজনৈতিক আকাশে অনিশ্চয়তার কালো মেঘ

জব্বার আল নাঈম
প্রকাশিত: সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫, ১২:৪৮ পিএম
রাজনৈতিক আকাশে অনিশ্চয়তার কালো মেঘ

জাতীয় নির্বাচন যতই সন্নিকটে আসছে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক আকাশে অনিশ্চয়তার কালো মেঘ ততই ঘনীভূত হচ্ছে। সরকারের উপদেষ্টাদের কয়েকজন সেফ এক্সিট খুঁজছেন বলে মন্তব্য করেছেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। পক্ষে-বিপক্ষে এই আলোচনা এখন টক অব দ্য কান্ট্রি। যদি তা সত্যি হয়, অন্যায় কাজের সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে নিশ্চয়ই? এমনটা হলে এক্সিট খোঁজা স্বাভাবিক।

অথচ ৮ আগস্ট ২০২৪ সালে এই ক্যাবিনেটের প্রতি আস্থা রেখেছিল বাংলাদেশের জনগণ, অভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতা। এক্সিটের মূল কারণ শুধু কি দুর্নীতি! সম্ভবত এখানে অন্য অনেক কারণ বিরাজমান। জুলাই সনদের স্বাক্ষর বাস্তবায়ন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন এবং পিআর প্রসঙ্গে গণভোটের কাঠামো তৈরির উদ্যোগই মূলত নির্বাচনকে ঝুঁকিতে ফেলার আশঙ্কা তৈরি করছে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক্সিট নতুন কিছু নয়।

১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারীরা বিদেশের মাটিতে এক্সিট নিয়েছিল। সম্ভবত সেটিই ছিল প্রথম বড় রাজনৈতিক এক্সিট, যেখানে দায়বদ্ধতার বদলে দেখা গিয়েছিল দায় এড়ানোর সংস্কৃতি। ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হত্যার পরও অনেকে সামরিক ও রাজনৈতিক বলয়ে নিরাপদ ছিল। ২০০৮ সালের পর ফখরুদ্দীন ও মইন ইউ আহমেদের নেতৃত্বাধীন সরকারও নির্বাচন সম্পন্ন করেই এক্সিট নেয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে, যেন তাদের ভূমিকার কোনো দায়ই ছিল না।

সম্প্রতি শেখ হাসিনাও জুলাই আন্দোলনের মুখে সামরিক প্রহরায় এক্সিট নিয়েছেন। এসব আদতে রাজনৈতিক ব্যর্থতার মুখে নৈতিক পশ্চাদপসরণ ছাড়া কিছু নয়। বিপরীতে, তারেক রহমানের ক্ষেত্রে ইতিহাস ভিন্ন কথা বলে, এই এক্সিটটি মূলত ছিল চিকিৎসা নেওয়া ছাড়াও অনিচ্ছায় রাজনৈতিক নির্বাসন। পরবর্তী সময়ে সেই তারেক রহমান মঞ্চে ফিরে বাংলাদেশ ও বিএনপির রাজনীতিকে নতুন পথে দাঁড় করিয়েছেন। তাঁর এই প্রত্যাবর্তন যেন দায় গ্রহণের নতুন এক ইতিহাস।

০২.

বর্তমান উপদেষ্টাদের অবস্থানও কি সেই ধারার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে যাচ্ছে। উপদেষ্টাদের প্রধান দায়িত্ব ছিল জুলাই সনদের স্বাক্ষর বাস্তবায়ন, যেখানে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল জনগণের অংশগ্রহণমূলক শাসন, দায়বদ্ধ প্রশাসন ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেখা যাচ্ছে, বাস্তবায়নের ইচ্ছার চেয়ে ভয়ই তাঁদের বেশি গ্রাস করছে। শুধু দুর্নীতি নয়, নির্বাচন পদ্ধতি, প্রক্রিয়া ও বাস্তবায়ন নিয়েও ভয়। পিআর পদ্ধতিতে সংসদের আসন ভাগ হবে প্রতিটি দলের প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে। অর্থাৎ কোনো একক দল বা জোট পুরো রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণে থাকতে পারবে না। পিআর পদ্ধতিতে বড় দলগুলোর আধিপত্য ভেঙে যায়, ছোট দল ও বিকল্প নেতৃত্বের জন্য খুলে যায় নতুন দরজা। ফলে পিআর মানে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, এমনকি অস্তিত্ব সংকটও, আদতে এই পদ্ধতি হঠাৎ করে সংকটই তৈরি করবে। বাংলাদেশ এই মুহূর্তে আরেকটি সরকার পতনের ধকল সহ্য করতে পারবে না। সেই আশঙ্কা থেকেই কেউ কেউ চাইছেন পুরনো পদ্ধতিতে নির্বাচনব্যবস্থার বাস্তবায়ন। তাই বর্তমান এক্সিটপ্রবণতা কেবল প্রশাসনিক ক্লান্তি নয়, বরং রাজনৈতিক অস্থিরতা, ভীতির প্রকাশও।

এদিকে জুলাই সনদের প্রতিশ্রুতিগুলো এখনো প্রশ্নবিদ্ধ অবস্থায়। এই সনদ জনগণের অংশগ্রহণমূলক রাষ্ট্রচিন্তার এক ঐতিহাসিক দলিল। রাষ্ট্র হবে জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক; কোনো সরকার বা প্রশাসন ক্ষমতার একচ্ছত্র মালিক নয়। আজ সেই অঙ্গীকারই ঝুলে আছে প্রশাসনিক কাগজে। সনদ বাস্তবায়নের পথে দাঁড়িয়ে আছে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, বিদেশি প্রভাব আর রাজনৈতিক গোষ্ঠীর কৌশল। অথচ জনগণ অপেক্ষা করছে, কবে তারা সত্যিকার অর্থে নিজের হাতে রাষ্ট্রের মালিকানা ফিরে পাবে।

০৩.

পিআর বাস্তবায়নের আগে গণভোট আয়োজনের উদ্যোগ এসেছে নতুনভাবে। নির্বাচনের আগে আরেকটি নির্বাচন, যেন নতুন সংকট ঘনীভূত! এর আগে বাংলাদেশের ইতিহাসে গণভোট হয়েছে দুইবার—প্রথমটি ১৯৭৭ সালে, দ্বিতীয়টি ১৯৮৫ সালে, যদিও আগের গণভোটের সঙ্গে বর্তমান গণভোটে অমিল অনেক। দীর্ঘ চার দশক পর আবারও যখন গণভোটের আলাপ উঠছে, তখন তা কেবল পিআর পদ্ধতির বৈধতা নয়, রাষ্ট্রচিন্তার দিকনির্দেশনা, শক্তি, হিম্মত জানানোর সক্ষমতাও। ব্যর্থ হলে অনুমিত আগামী দিনের জন্য পিআর পদ্ধতি চিরতরে কবরে শায়িত হবে, সেই সঙ্গে রাষ্ট্র পড়বে গভীর সংকটে। এ জন্য দায়ী থাকবে অতি উত্সুক ও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চাওয়া দলটিই।

গণভোট মানে জনগণের সরাসরি অংশগ্রহণ। কিন্তু ইতিহাস বলে, গণভোট যতটা গণতান্ত্রিক সম্ভাবনা তৈরি করে, ততটাই সহজে তা রাজনৈতিক প্রহসনেও পরিণত হতে পারে। তাই আসন্ন গণভোটের সাফল্য নির্ভর করবে মূলত জনগণের চাহিদা ও আস্থার ওপর। এটি সত্যিকার অর্থে জনগণের মতামত প্রতিফলিত করলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে; বিপরীতে যদি ক্ষমতার পুনর্বিন্যাসের হাতিয়ার হয়, তাহলে এক্সিটের ধারাবাহিকতা আবারও ফিরে আসবে।

আজকের বাংলাদেশ এক ভয়ংকর সন্ধিক্ষণে। উপদেষ্টারা চাইলে এখনই ইতিহাসের দায় নিতে পারেন—যৌক্তিক ও কাঙ্ক্ষিত জুলাই সনদের বাস্তবায়ন, গণভোটের মাধ্যমে জনগণের মতামত গ্রহণ, পিআর পদ্ধতি নির্বাচিত সরকারের অধীনে পরীক্ষামূলকভাবে দেখা হবে, বাস্তবায়নের এই আশ্বাস। নয়তো রিস্কি সময়ে রিস্কি এক্সপেরিমেন্টের অর্থ রাষ্ট্রকে বাঘের মুখে ফেলা।

আবার উপদেষ্টারা যদি সেফ এক্সিট বেছে নেন, তাহলে ইতিহাস তাঁদেরও সেই একই অন্ধকার অধ্যায়ে লিখে রাখবে, যেখানে দায়ের চেয়ে ভয়, নৈতিকতার চেয়ে স্বার্থই বড় হয়ে দাঁড়ায়। জুলাই সনদ বলতে চায়, রাষ্ট্রের মালিক জনগণ, প্রশাসন তাদের প্রতিনিধি। এখন সময় এসেছে সেই কথাটিকে বাস্তব রূপান্তরের। এক্সিট নয়, প্রয়োজন উপস্থিতি; পলায়ন নয়, প্রয়োজন জবাবদিহি; নীরবতা নয়, প্রয়োজন জনগণের কণ্ঠস্বর টিকিয়ে রাখার প্রবল ইচ্ছশক্তি; নয়তো বারবার গণ-অভ্যুত্থান প্রাসঙ্গিক হবে। গণতন্ত্র পালিয়ে বাঁচে না, জবাব দিয়েই টিকে থাকে। আর আজকের বাংলাদেশকে হাঁটতে হবে দায় গ্রহণের, সাহসের ও সত্যের পথে।

লেখক : কবি ও কথাসাহিত্যিক

শীতের আগেই হাতে খসখসে ভাব? মেনে চলুন ঘরোয়া উপায়

লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫, ১:২১ পিএম
শীতের আগেই হাতে খসখসে ভাব? মেনে চলুন ঘরোয়া উপায়

প্রকৃতিতে এখন হেমন্তকাল চলছে। শীতের আগের এ সময়টায় ত্বকের পাশাপাশি হাতেও খসখসে রুক্ষ ভাব দেখা দেয়। এ সমস্যা দূর করতে নিয়মিত ত্বককে ময়েশ্চারাইজিং করা জরুরি। এছাড়া সঠিক হ্যান্ডওয়াশ ব্যবহার এবং হালকা গরম পানি দিয়ে হাত ধোয়ার মতো কিছু সহজ পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে।

হাতের যত্নে কী করবেন

সঠিক হ্যান্ডওয়াশ ব্যবহার করুন: অ্যালকোহল বা রাসায়নিক-যুক্ত হ্যান্ডওয়াশ এড়িয়ে চলুন, কারণ এটি ত্বকের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট করে দেয়। গ্লিসারিন বা অ্যালোভেরা যুক্ত মাইল্ড হ্যান্ডওয়াশ ব্যবহার করুন।

হালকা গরম পানি ব্যবহার করুন: অতিরিক্ত গরম পানি ত্বকের আর্দ্রতা কমিয়ে দেয়। এ কারণে হাত ধোয়ার জন্য হালকা গরম পানি ব্যবহার করুন।

ময়েশ্চারাইজ করুন: প্রতিবার হাত ধোয়ার পরে, বিশেষ করে শীতকালে, ত্বকের প্রাকৃতিক তেল ফিরিয়ে আনতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।

নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন: দিনের বেলা এবং রাতে ঘুমানোর আগে গ্লিসারিন-ভিত্তিক ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।

আর্দ্রতা ধরে রাখুন: হালকা গরম পানিতে গোলাপ জল এবং লেবুর রস মিশিয়ে একটি দ্রবণ তৈরি করে ব্যবহার করতে পারেন।

রাতে যত্ন নিন: রাতে ঘুমানোর আগে হাতে গ্লিসারিন ও লেবুর রস মিশিয়ে ম্যাসাজ করতে পারেন। এই মিশ্রণ ত্বককে কোমল রাখতে সাহায্য করে।

গ্লাভস পরুন: বাইরে বা ঠান্ডা জায়গায় গেলে হাতে গ্লাভস ব্যবহার করুন।

হালকা স্ক্রাব করুন: হাত পরিষ্কার করার জন্য স্ক্রাবিং করতে পারেন। এটি ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে সাহায্য করে।

নারকেল তেল ব্যবহার করুন: নারকেল তেল ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে এবং ত্বককে নরম রাখতে সাহায্য করে।

সানস্ক্রিন: মুখের মতো হাতেও সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। তা না হলে ট্যান পরতে পারে। প্রতিদিন ভালো এসপিএফ যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।

খেজুরে ভরপুর মরক্কোর বাজার

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫, ১:০৮ পিএম
খেজুরে ভরপুর মরক্কোর বাজার

মরক্কোর দ্রা–তাফিলালেত অঞ্চল এ বছর রেকর্ড পরিমাণ খেজুর উৎপাদনের পথে রয়েছে। কৃষকরা জানিয়েছেন, অনুকূল আবহাওয়া ও পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের কারণে ফলনের পরিমাণ এবং গুণমান উভয়ই গত বছরের তুলনায় ভালো হয়েছে।

দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের এরফুদ এলাকায়, জিজ নদীর তীরে অবস্থিত খেজুর বাগানগুলোতে এরই মধ্যে এক লাখ টনেরও বেশি খেজুর সংগ্রহ করা হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তাদের মতে, এ অঞ্চলের মধ্যম তাপমাত্রা ও পূর্ববর্তী মৌসুমের বৃষ্টিপাত খেজুরের বৃদ্ধি এবং পাকতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

স্থানীয় কৃষক বলেন, সেপ্টেম্বরে বাজারে খেজুরের সরবরাহ বেড়েছে। ফলন ভালো হয়েছে, তাই আমরা সময়মতো সংগ্রহের কাজ শেষ করার চেষ্টা করছি।

খেজুরে ভরপুর মরক্কোর বাজার

খেজুর পাকার সঙ্গে সঙ্গে বাগানে কর্মব্যস্ততা বেড়েছে। সবুজ থেকে সোনালি বা বাদামি রঙে পরিবর্তনের সময় কৃষকেরা হাতে কাঁচি বা দা ব্যবহার করে ফল সংগ্রহ করেন। এই প্রক্রিয়ায় দক্ষতা প্রয়োজন, যাতে গাছ ও ফলের ক্ষতি না হয়।

অন্য এক কৃষক জানান, সকালের পর থেকে বিকেল পর্যন্ত আমরা খেজুর সংগ্রহে ব্যস্ত থাকি। বিভিন্ন জাতের খেজুর রয়েছে—মাঝহুল, বউফগুস, লখালক ও বউস্লিখ। সংগ্রহ শেষে মাটে ছড়িয়ে বাছাই ও শুকানোর কাজ করা হয়।

কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নতুন মৌসুমে স্থানীয় বাজারে খেজুরের চাহিদা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। ব্যবসায়ীরাও রপ্তানির জন্য মানসম্মত খেজুর সংগ্রহে আগ্রহী।

সূত্র : আফ্রিকানিউজ

ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’ বাংলাদেশে আঘাত হানার আশঙ্কা কতটুকু

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫, ১:০৪ পিএম
ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’ বাংলাদেশে আঘাত হানার আশঙ্কা কতটুকু

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’ আগামীকাল মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে আঘাত হানতে পারে। যদিও ঘূর্ণিঝড় সরাসরি বাংলাদেশে আঘাত হানবে না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিম (বিডব্লিউওটি)।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) বিডব্লিউওটির ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এ তথ্য জানানো হয়।

পোস্টে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’ এখন পর্যন্ত সরাসরি বাংলাদেশে আঘাত হানার কোনো সম্ভাবনা নেই। এটি বাংলাদেশ থেকে অনেক দূরে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে আঘাত হানতে পারে আগামীকাল মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) রাতে। তাই এটি বাংলাদেশে আঘাত হানবে এমন কোনো গুজবে আপাতত কেউ বিভ্রান্ত হবেন না।

তবে এর প্রভাবে বাংলাদেশে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। মূলত এই বৃষ্টির সম্ভাবনাকে কেন্দ্র করেই বৃষ্টিবলয় আঁখি আসতে পারে।

বিডব্লিউওটির আরও জানায়, বৃষ্টিবলয় আঁখি আসার কারণ হলো ঘূর্ণিঝড়ের দূরবর্তী প্রভাব এবং ঘূর্ণিঝড় স্থলভাগে আঘাতের পরে দিক পরিবর্তন করে দুর্বল হয়ে লঘুচাপ বা সার্কুলেশন আকারে বাংলাদেশের রংপুর রাজশাহী বিভাগের ওপরে বা কাছাকাছি আসতে পারে। তখন দেশের ভেতরে বৃষ্টির জন্য বেশ অনুকূল পরিবেশ তৈরি হবে। তবে সারা দেশে একযোগে ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।

কারণ এটি কোনো বর্ষাকালীন বৃষ্টিবলয় নয় যে সারা দেশে টানা ভারি বর্ষণ বা অধিকাংশ স্থানে ২০০/৩০০ মিমি বৃষ্টি হবে। এটি একটি ক্রান্তীয় বা সিস্টেম কেন্দ্রিক বৃষ্টিবলয়। এই ধরনের বৃষ্টি বলয়ে দেশের অল্প কিছু স্থানে ভারি বৃষ্টি এবং বাকি স্থানগুলোতে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হয়ে থাকে। এমনকি সিস্টেমের গতিপথের ওপরে নির্ভর করে অনেক স্থান বৃষ্টিহীন ও থাকতে পারে।

পোস্টে আরও বলা হয়, তেমনি বৃষ্টিবলয় আঁখির তীব্রতা এবং সক্রিয়তা দুটোই নির্ভর করছে ঘূর্ণিঝড় মোন্থার গতিপথের ওপরে। তাই আমরা এখনও বৃষ্টি বলয়ের জেলাভিত্তিক আপডেট দেইনি। কারণ বর্তমানে শুষ্ক মৌসুম চলছে। যার ফলে অনেকেই কৃষিকাজসহ নানান কাজ করছেন। এ সময় সামান্য বৃষ্টি হলেও অনেকের ক্ষতি হতে পারে। আবার হালকা বৃষ্টি কৃষি কাজে উপকার ও হতে পারে। কিন্তু ভারি বৃষ্টি হলেই বিপদ।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড়টি গতকাল রাত ৩টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩৬০ কিমি দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩০০ কিমি দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ১২৮০ কিমি দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৬০ কিমি দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে। এটি আগামীকাল মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যা বা রাত নাগাদ ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

এতে আরও বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিমির মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিমি, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৮৮ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।

এ সময় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ২ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

এ ছাড়াও উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে, যাতে স্বল্প সময়ের নোটিশে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারে।