খুঁজুন
রবিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৬ পৌষ, ১৪৩২

ফরিদপুরে সবুজে ফিরছে বরো ধান, মাঠে মাঠে আশার বার্তা

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: রবিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১১:৫৯ এএম
ফরিদপুরে সবুজে ফিরছে বরো ধান, মাঠে মাঠে আশার বার্তা

ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় চলতি বরো মৌসুমে ধানের ক্ষেতে আবারও ফিরছে সবুজের ছোঁয়া। মৌসুমের শুরুতে কিছু এলাকায় পাতোর রোগের হালকা প্রভাব দেখা দিলেও সময়মতো কৃষি বিভাগের তদারকি ও কৃষকদের সচেতন ব্যবস্থাপনায় বর্তমানে অধিকাংশ জমির ধান সুস্থ ও সতেজ হয়ে উঠেছে। এতে করে মাঠে মাঠে আশার বার্তা ছড়িয়ে পড়েছে কৃষক সমাজে। ফলে ভালো ফলনের প্রত্যাশা করছেন কৃষকরা।

ফরিদপুর সদর, ভাঙ্গা, মধুখালী, বোয়ালমারী ও সালথা উপজেলার একাধিক মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, কিছু জমিতে ধানের পাতায় দাগ দেখা দিলেও অধিকাংশ ক্ষেতেই তা বিস্তার লাভ করেনি। কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক ছত্রাকনাশক প্রয়োগ ও সুষম সার ব্যবস্থাপনার ফলে গাছ আবারও সবুজ হয়ে উঠছে।

ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষক হায়দার খাঁন বলেন, “শুরুর দিকে পাতায় দাগ দেখে চিন্তায় পড়েছিলাম। কৃষি অফিসের পরামর্শে ওষুধ দেওয়ার পর ধান এখন বেশ ভালো আছে। ফলন নিয়ে এখন আশাবাদী।”

ফরিদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ডিডিএ) কৃষিবিদ মো. শাহাদুজ্জামান ‘ফরিদপুর প্রতিদিন‘কে বলেন, ‘ফরিদপুর জেলায় মোট ২৪ হাজার হেক্টর জমিতে বরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আবহাওয়া এখন পর্যন্ত অনুকূলে রয়েছে এবং বড় ধরনের রোগবালাইয়ের প্রাদুর্ভাব নেই। মাঠপর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত নজরদারি করছেন এবং কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন।”

তিনি আরও জানান, ‘কোথাও রোগ বা পোকার আক্রমণের আশঙ্কা দেখা দিলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে কৃষকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি অনুসরণ ও সুষম সার ব্যবহারে জোর দেওয়া হচ্ছে, যাতে ফলন আরও বাড়ে।’

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কৃষকদের আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি, রোগ প্রতিরোধী জাত ব্যবহার এবং নিয়মিত মাঠ পর্যবেক্ষণের ফলে ধানের স্বাভাবিক বৃদ্ধি বজায় রয়েছে। পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ ও কৃষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও জোরদার করা হয়েছে। এবছর বরো ধানের ভালো ফলন হলে জেলার খাদ্য চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বাজারে চালের সরবরাহ বাড়বে, যা দাম স্থিতিশীল রাখতে সহায়ক হবে।

সব মিলিয়ে ফরিদপুরের মাঠে মাঠে সবুজ বরো ধান যেন কৃষকের মুখে হাসি ফিরিয়ে আনছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবছর বরো মৌসুমে কাঙ্ক্ষিত ফলন অর্জনের ব্যাপারে আশাবাদী কৃষক ও সংশ্লিষ্টরা।

ফরিদপুর-২ আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন খেলাফত মজলিসের প্রার্থী

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: রবিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৩:২২ পিএম
ফরিদপুর-২ আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন খেলাফত মজলিসের প্রার্থী

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-২ আসন থেকে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা শাহ আকরাম আলী (ধলা হুজুর)।

রবিবার (২১ ডিসেম্বর) ফরিদপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেন তিনি।

এ সময় দলীয় নেতা-কর্মীসহ প্রার্থীর শুভাকাঙ্ক্ষীরা উপস্থিত ছিলেন।নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকলে ভোটারদের ভোটে তিনি জয়লাভ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

ফরিদপুর জেলা চারটি সংসদীয় আসনে বিভক্ত। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগে রয়েছেন চারটি আসনের বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদ, খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ ৩০ জন প্রার্থী।

সালথা ও নগরকান্দা উপজেলা নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-২ আসন। সেখানে আলোচনায় রয়েছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের প্রার্থী মাওলানা শাহ আকরাম আলী। তিনি ফরিদপুরের সর্বজন মুরব্বি হিসেবে পরিচিত এবং একজন ইসলামী বক্তা হিসেবে জনপ্রিয়তাও রয়েছে।

মাওলানা শাহ আকরাম আলী বলেন, ‘আমাদের এলাকায় আলেম-ওলামাদের সমর্থক বেশি। সেই হিসেবে চেষ্টা করছি ইসলামী দলের একক প্রার্থী হতে। সভা-সমাবেশে যেভাবে সাড়া পাচ্ছি, তাতে আমি নির্বাচনে জয়ী হওয়ার আশা রাখছি।’

ফরিদপুরে মোটরসাইকেল চোর চক্রের ৭ সদস্য গ্রেপ্তার

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: রবিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৩:০৭ পিএম
ফরিদপুরে মোটরসাইকেল চোর চক্রের ৭ সদস্য গ্রেপ্তার

ফরিদপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোটরসাইকেল চোর চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুুলিশ।

রবিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে আইনগত প্রক্রিয়া শেষে গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের ফরিদপুরের আদালতে প্রেরণ করা হয়।

এর আগে শনিবার (২০ ডিসেম্বর) ফরিদপুর শহরের বিভিন্ন এলাকায় রাতভর অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় চুরি হওয়া দুটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে পুলিশ। সম্প্রতি শহরে বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় মামলা হলে এ অভিযানে নামে পুলিশ।

গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা হলেন, ফরিদপুর শহরের আলীপুর গোরস্থান এলাকার মামুন মোল্লার ছেলে তামিম মোল্লা (২৪), আলীপুর কানাই মাতুব্বরের মোড়ের সরোয়ার হোসেনের ছেলে আনিক ইসলাম (২৫), একই এলাকার ইউনুছ শেখের ছেলে রাতুল শেখ (২৪), চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের হামেদ মুন্সী ডাঙ্গীর আনোয়ার শেখের ছেলে লিয়ন শেখ (২৬), শহরের শোভারামপুর এলাকার সাইদা গাছীর ছেলে সিদ্দিক সরদার (৪২), সদর উপজেলার ইব্রাহিমদী গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে এনামুল (২৮) ও নড়াইল জেলার নড়াগাতী থানার চান্দেরচর গ্রামের মুক্তার শেখের ছেলে সাব্বির হোসেন।

অভিযান পরিচালনাকারী কোতয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নূর হোসেন জানান, গ্রেপ্তার হওয়া ৭ জন প্রফেশনাল চোর। ওরা নিয়মিতভাবে মোটরসাইকেল ও অটোরিকশা চুরি করে। ওদের কাছে বিশেষ চাবি আছে যেটা যেকোন মোটরসাইকেল চালু করা যায়। এর আগেও এরা পুলিশের কাছে গ্রেপ্তার হয়েছে। জামিনে বের হয়ে আবারো চুরি করে।

থানা সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার দুপুরে শহরের রঘুনন্দনপুর এলাকা থেকে জুনায়েদ হাবিব নামের এক শিক্ষকের মোটরসাইকেল চুরি হয়। এই ঘটনার সিসি ক্যামেরা ফুটেজ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে প্রাথমিকভাবে চোরের পরিচয় জানা যায়। পরে পুলিশ তাদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে অভিযান চালিয়ে প্রথমে তামিম ও অনিককে গ্রেপ্তার করে। এসময় তারা মোটরসাইকেল ‍চুরির কথা স্বীকার করে। পরে ওদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বাকিদের গ্রেপ্তার করা হয় এবং তাদের কাছ থেকে মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।

ফরিদপুরের কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, আরো কয়েকজন এই চক্রের সাথে জড়িত রয়েছে। তাদের কাছে আরো একটি মোটর সাইকেলও রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যহত রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে কোতয়ালী থানার একাধিক মামলা রয়েছে। দুপুরে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

ফরিদপুরে স্বাস্থ্য সহকারীদের ছয় দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কর্মবিরতি

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: রবিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২:৩৮ পিএম
ফরিদপুরে স্বাস্থ্য সহকারীদের ছয় দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কর্মবিরতি

ফরিদপুরে ছয় দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কর্মবিরতি পালন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা।

রবিবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল থেকে ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে স্বাস্থ্য সহকারীরা এ কর্মবিরতিতে অংশ নেন।

এতে করে ইপিআই টিকাদান, পরিবার পরিকল্পনা ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার বেশ কিছু কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে স্বাস্থ্য সহকারীরা তাদের দীর্ঘদিনের বঞ্চনা ও বৈষম্যের কথা তুলে ধরেন।

বক্তারা বলেন, মাঠপর্যায়ে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে স্বাস্থ্য সহকারীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। অথচ যোগ্যতা ও দায়িত্ব অনুযায়ী তারা ন্যায্য বেতন গ্রেড, পদমর্যাদা ও পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত।

স্বাস্থ্য সহকারীদের ছয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে—নিয়োগবিধি সংশোধন, বেতন বৈষম্য দূর করে উপযুক্ত গ্রেড প্রদান, ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমা সম্পন্নদের টেকনিক্যাল পদমর্যাদা নিশ্চিত করা, পদোন্নতির সুযোগ বৃদ্ধি এবং পদোন্নতির ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে উচ্চতর গ্রেড প্রদান।

ফরিদপুর সদর উপজেলার এক স্বাস্থ্য সহকারী জানান, “আমরা বছরের পর বছর মাঠে কাজ করেও ন্যায্য অধিকার পাচ্ছি না। বারবার দাবি জানানো হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বাধ্য হয়েই আমরা কর্মবিরতিতে নেমেছি।”

কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা আরও বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে। প্রয়োজনে কর্মসূচি আরও কঠোর করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা।

এদিকে কর্মবিরতির ফলে কিছু এলাকায় টিকাদান ও স্বাস্থ্যসেবা নিতে এসে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। তবে স্বাস্থ্য সহকারীরা জানান, জনগণের দুর্ভোগ তাদের কাম্য নয়; দ্রুত দাবি বাস্তবায়ন হলে স্বাভাবিক হবে সব কার্যক্রম।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আলোচনা ও সমাধানের মাধ্যমে দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।