খুঁজুন
শুক্রবার, ৬ জুন, ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

আলোর আঁধারিতে পথ হারানোর শঙ্কা

ফেরদৌস হাসান
প্রকাশিত: বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ২:২৭ পিএম
আলোর আঁধারিতে পথ হারানোর শঙ্কা

কেবল জনসমর্থন বা বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতিই রাজনীতিতে প্রধান শক্তিমত্তার দিক নয়। জনশক্তির সঙ্গে রাজনীতির খেলায় ‘সফট পাওয়ার’ খুব জরুরি উপাদান।

পতিত আওয়ামী লীগ কেবল তার পোষা মাস্তান বাহিনী বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়েই ফ্যাসিবাদ জারি রেখেছিল, এমনটা নয়। লেখক-শিল্পী-সংস্কৃতিকর্মী, আমলা, বুদ্ধিজীবীরা বিভিন্নভাবে আওয়ামী ফ্যাসিবাদে রসদ জুগিয়েছে। মিডিয়া, কালচারাল এস্টাবলিশমেন্ট হলো সফট পাওয়ার; যেটার সর্বোচ্চ ব্যবহার করে শেখ হাসিনার জুলুমতন্ত্র টিকে ছিল পাক্কা দেড় দশক।

 

ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের দুঃশাসনের অবসান হলেও ওই সফট পাওয়ার ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ ফের রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক হতে চাইছে। আর সেই লক্ষ্যে আবার মাঠে নামিয়েছে তার সফট পাওয়ারের কার্যকরী ও সুশীল অংশটাকে।

আওয়ামী স্বৈরাচারের পতন হলেও আমাদের সমাজ ও রাজনীতির অঙ্গনে আওয়ামী সফট পাওয়ার কাজ করে যাচ্ছে সন্তর্পণে। অভ্যুত্থান পরবর্তী বিগত কয়েক মাসে নারী ইস্যু, মুক্তিযুদ্ধ, ১৫ আগস্টের শোক, ‘হিন্দু কার্ড’, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙচুর নিয়ে নানাবিধ কাঁদুনি গাইছে কালচারাল এস্টাবলিশমেন্টের এজেন্টরা। শঙ্কার বিষয় হলো, এইসব কাঁদুনি গাওয়া ব্যক্তিরা অভ্যুত্থান পরবর্তী সরকারকে বিপথে চালিত করার অপচেষ্টায় তৎপর।

বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে প্রো-ইন্ডিয়ান রাজনীতিক, প্রো-ইন্ডিয়ান মিডিয়া আউটলেট, প্রো-ইন্ডিয়ান আর্ট-কালচার করা একটি গোষ্ঠী বিকশিত হয়েছে একটি বিশেষ মিডিয়া গোষ্ঠীকে কেন্দ্রে রেখে। ওই মিডিয়া গোষ্ঠীর বলয়ের লোকজনের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়েছে শিল্প-সংস্কৃতির ঠিকাদারি থেকে শুরু করে দেশের রাজনীতির গতিপথ। ওই কালচারাল এস্টাবলিশমেন্টের লোকেরা আওয়ামী-বাকশালি দুঃশাসনের মধু খেয়েছেন। জুলাই অভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে তথাকথিত ওই ‘আলোকিত’ মিডিয়া গোষ্ঠী এখন উঠেপড়ে লেগেছে নিজেদের গা থেকে স্বৈরাচারের বিষ্ঠা ধুয়ে ফেলতে। এখন ওই মিডিয়া আউটলেটে সকাল-বিকাল পতিত ফ্যাসিস্টের কু-কীর্তির কথা প্রকাশ হচ্ছে।

আওয়ামী-বাকশালি রাজনীতির অঙ্গীভূত প্রো-ইন্ডিয়ান ওই মিডিয়া আউটলেট কি তবে অনুশোচনায় ভুগছে বিগত সময়ের ভূমিকার জন্য? মোটেই না। শেখ হাসিনার তো পতন হয়েছেই, ঝাড়েবংশে বাংলাদেশ থেকে বিদায় হয়েছে আওয়ামী লীগের। শেখ পরিবার ও আওয়ামী লীগের পতন ঠেকানোর কোনো উপায় যেহেতু অবশিষ্ট নেই, তাই আওয়ামী লীগকে বিসর্জন দিয়ে নতুন আঙ্গিকে নতুন কুশীলবদের দিয়ে প্রো-ইন্ডিয়ান রাজনীতির মঞ্চ ভিন্নভাবে তৈরি করতে চাইছে ওই মিডিয়া গোষ্ঠী। তারা ধীরে ধীরে মেনে নিয়েছে যে, আওয়ামী লীগকে পূর্বের আদলে রাখার চেয়ে অভ্যুত্থানের স্টেকহোল্ডারদের আওয়ামীকরণ এবং বাংলাদেশে প্রো-ইন্ডিয়ান রাজনীতির নতুন কাঠামো তৈরি তুলনামূলকভাবে সহজ হবে।

আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতির কারণে বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের কৌশলগত আগ্রহের কথা বহুল আলোচিত। বিশেষত চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ভারতের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে চীন বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, বিশেষত অবকাঠামো, অর্থনৈতিক ও সামরিক ক্ষেত্রে। চীনের সহযোগিতা বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হলেও ভারতের তাতে উদ্বেগ বাড়ছে। ভারত মনে করে চীনের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী ও কৌশলগত অংশীদার হয়ে উঠতে পারে, যা ভারতের জন্য ভূরাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে পারে। ভারত চায় বাংলাদেশ চীনের ওপর নির্ভরশীল না হোক। তাই কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক শক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে ভারত।

কেবল কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে বগলদাবা করে রাখা দিনকে দিন কঠিনতর হয়ে উঠেছে ভারতের জন্য, বিশেষত দেশটির নগ্ন সমর্থনপুষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের ন্যক্কারজনক পতনের পর। আর তাই নতুন বাংলাদেশে ভারতের স্বার্থসিদ্ধির জন্য আরও কার্যকর কালচারাল এস্টাবলিশমেন্ট সবচেয়ে বেশি জরুরি। আর সেই কাজে নেমে পড়েছে বিশেষ ওই মিডিয়া আউটলেট। জুলাই অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান থেকে শুরু করে সেনাপ্রধান এবং অভ্যুত্থানের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার দল ও সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ, বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে তাদের সংবাদ প্রকাশ করেছে সরকারের অংশীজনদের সঙ্গে সম্পর্ক প্রতিস্থাপন করতে। অন্তর্বর্তী সরকারের সুনজরে থাকতে এবং তাদের প্রতি জনতার অনাস্থা কমাতে পতিত স্বৈরাচারের নিন্দায় কুমিরের কান্না শুরু করেছে ওই মিডিয়া আউটলেট।

দেশসেরা লেখক-কবি-গায়ক, অভিনেতা-অভিনেত্রী, বুদ্ধিজীবীর সার্টিফিকেটদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেকে জাহির করে আসছে ওই মিডিয়া গোষ্ঠী। আপাত নিরপেক্ষতার ছদ্মবেশে এই কালচারাল এস্টাবলিশমেন্ট ‘ইসলাম-ফোবিক’ এবং আওয়ামী-বাকশালি রিজিমের সমর্থক হিসেবেই ক্রিয়াশীল ছিল বরাবর। তাদের সুশীল বয়ানে দিনকে রাত, রাতকে দিন এমনকি রাজনীতির পটপরিবর্তনও হয়েছে; এক-এগারোর সিভিল-মিলিটারি ক্যু’র অন্তরালেও ছিল তাদের ক্রীড়নকের ভূমিকা।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ওই গোষ্ঠীর বলয়ের কবি, লেখক, বুদ্ধিজীবীরা বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সংস্থার প্রধান কর্তার পদে নিয়োগ পেয়েছেন, এমনকি সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার পদে আসীন হয়েছেন। তাদের প্রভাবাধীন এক লেখক অন্তর্বর্তী সরকারের অত্যন্ত ক্ষমতাধর উপদেষ্টা পদে আসীন হয়েছেন। ওই উপদেষ্টা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংস্থা ও সরকারি নানান পদে মিডিয়া গোষ্ঠীটির বলয়ের লোককে নিয়োগ দিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারে সুশীলদের প্রভাব
দীর্ঘ দেড় দশকের রাজনৈতিক আন্দোলন এবং জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন ঘটে এবং আপামর জনতার আকাঙ্ক্ষার মূর্ত প্রতীক হিসেবে গঠিত হয় অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। ফ্যাসিবাদমুক্ত বৈষম্যবিরোধী নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে অধ্যাপক ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেন এবং আন্তরিকতার সঙ্গে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেন। কিন্তু নতুন বাংলাদেশের পদযাত্রা কিছুটা খেই হারিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরের জনবিরোধী ওই মিডিয়া গোষ্ঠীর সুশীলদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে।

অন্তর্বর্তী সরকারে তিনজন ছাত্র প্রতিনিধি ছাড়া বেশির ভাগ উপদেষ্টাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং এই প্রতিনিধিদের একটা বড় অংশ ওই বিশেষ মিডিয়ার লেখক-বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের গুটিকয়েক ব্যক্তি ছাড়া বেশির ভাগ আওয়ামী সরকারের বিপক্ষে কখনোই সোচ্চার তো ছিলেন না, বরঞ্চ আওয়ামী লুটপাটতন্ত্রের উন্নয়নের বুলি ফেরি করেছেন। শেখ হাসিনার শাসনামলে দেশের নির্বাচনব্যবস্থাকে ধ্বংস করা, গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতা হরণ করা, মধ্যযুগীয় কায়দায় বিরোধীদের দমন-পীড়নের বিষয়টি বরাবরই উপেক্ষিত ছিল তাদের  জবান ও কলমে। অতীত ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, এদের অনেকেই এক-এগারোর সিভিল-মিলিটারি সরকারে ক্রীড়নকের ভূমিকায় ছিলেন।

এক-এগারোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নয়-এগারো পরবর্তী রাজনীতির যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া যায়। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর  টুইন টাওয়ারে হামলার প্রতিশোধ নিতে উন্মুখ হয়ে ওঠে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দুনিয়াব্যাপী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধ শুরু করেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ, যা চলে প্রায় আড়াই দশক ধরে। টুইন টাওয়ারে হামলার বছরেই মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট আফগানিস্তানে হামলা করে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পশ্চিমা বিশ্বের সেই অনন্ত যুদ্ধের প্রভাব পড়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতেও। প্রতিবেশী ভারতের মদদে ইসলাম বিদ্বেষী, দেশকে বিরাজনীতিকরণের পথে নিয়ে যাওয়া সুশীলদের ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে ঘটে এক-এগারোর সিভিল-মিলিটারি ক্যু।

এক-এগারোতে অর্থাৎ ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি দুপুরে প্রভাবশালী কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছিল আওয়ামী লীগ নেতাদের। ঢাকাস্থ কানাডীয় হাইকমিশনারের বাসায় হয়েছিল সেই বৈঠক। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের পাশাপাশি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন ভারতীয় হাইকমিশনার। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিম। বৈঠকে উপস্থিতির এই তালিকায় চোখ বোলালেই পরিষ্কার হয়ে যায় এক-এগারোর মূল কুশীলব ছিলেন কারা। আর তাদের পেছনে ছিলেন কথিত সেই সুশীলরা, যা পরবর্তীতে প্রকাশিত হতে থাকে এক-এগারো সরকারের নানা কর্মযজ্ঞে। ওই বিশেষ মিডিয়া আউটলেটে প্রকাশিত সেই সময়ের রিপোর্টে। ইন্দো-মার্কিন শক্তির প্রেসক্রিপশনে মাইনাস ফর্মুলা, বিরাজনীতিকরণ, ইসলাম বিদ্বেষ ডালপালা মেলতে থাকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৮ সালের নিরপেক্ষতার আড়ালে ছক কষা নির্বাচনে বিজয়ী হয় ভারতের আশীর্বাদপুষ্ট আওয়ামী লীগ।

এরপর থেকে বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ নিরীহ মুসলমানদের বিরুদ্ধে শুরু হয় ভারত ও আওয়ামী লীগের যৌথ প্রযোজনার ষড়যন্ত্র, বাংলাদেশের মানুষের ওপর চলতে থাকে দমন-পীড়ন। জঙ্গিবাদ দমনের নামে বিশ্ববাসীর কাছে নিজেকে ‘রোল মডেল’ হিসেবে দাবি করে ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার কৌশল অবলম্বন করেন শেখ হাসিনা। ক্ষমতা ধরে রাখতে তিনি পরিকল্পিতভাবে জঙ্গি নাটক, শাহবাগ আন্দোলন, বিনাভোটের নির্বাচন, রাতের ভোটের নির্বাচন, ডামি নির্বাচনের নাটক মঞ্চস্থ করেন। আর এইসব অপতৎপরতায় আওয়ামী লীগের সারথি হিসেবে সক্রিয় ছিলেন সুশীল নামধারীরা। তাদের লেখালেখি, কর্মতৎপরতা সহচর হয়েছিল আওয়ামী অপকর্মের।

বাকশালি বয়ানের বিপক্ষে যেসব সুশীলদের কলম কোনোদিন কথা বলেনি, দেড় দশক ধরে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ-বিরোধী লড়াইয়ে যাদের ন্যূনতম যুক্ততা ছিল না, সেই সুশীলদের প্রভাবে অভ্যুত্থান পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকার পধ হারাচ্ছে। সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের অনেক সদস্য জনতার আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করতে পারছেন না, তাদের ব্যর্থতার কারণে ড. ইউনূসের সরকারের যাত্রাপথ কঠিন হয়ে পড়ছে। জুলাই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণি নির্বিশেষে যে দৃঢ় ঐক্য গড়ে উঠেছিল, সেই ঐক্যে ফাটল ধরছে।

বাংলা একাডেমি পুরস্কার বিতর্ক
অন্তর্বর্তী সরকারের সুশীল প্রতিনিধিদের তৈরি করা বিভিন্ন ইস্যু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ঐক্যে ফাটল ধরাতে সক্ষম হয়েছে। তার একটি উদাহরণ বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার। গত ২৩ জানুয়ারি ‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪’ ঘোষণা করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ দেশব্যাপী মানুষের ব্যাপক সমালোচনার মুখে ২৫ জানুয়ারি তালিকাটি স্থগিত করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।

বাংলা একাডেমি পুরস্কারের জন্য মনোনীত ব্যক্তিরা ছিলেন—কবিতায় মাসুদ খান, কথাসাহিত্যে সেলিম মোরশেদ, নাটক ও নাট্যসাহিত্যে শুভাশিস সিনহা, প্রবন্ধ–গদ্যে সলিমুল্লাহ খান, শিশুসাহিত্যে ফারুক নওয়াজ, অনুবাদে জি এইচ হাবীব, গবেষণায় মুহম্মদ শাহজাহান মিয়া, বিজ্ঞানে রেজাউর রহমান, মুক্তিযুদ্ধে মোহাম্মদ হাননান এবং ফোকলোরে সৈয়দ জামিল আহমেদ। এরপর ২৭ জানুয়ারি মোহাম্মদ হাননান, ফারুক নওয়াজ ও সেলিম মোরশেদের নাম বাদ দেওয়ার কথা জানায় বাংলা একাডেমি।

বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার প্রণয়ন কমিটির কাজ করে বাংলা একাডেমির নির্বাহী পরিষদ। ঘোষিত পুরস্কার নিয়ে দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় উঠলে বাংলা একাডেমির নির্বাহী পরিষদের সদস্যপদ থেকে পদত্যাগ করেন পরিষদের সদস্য কবি ও সাংবাদিক সাজ্জাদ শরিফ। পুরস্কার ঘোষণার পর পরই শিল্প-সাহিত্য অঙ্গনের মানুষেরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঝড় তোলেন। সরকারকে বিব্রত করতে বিশেষ গোষ্ঠীর প্রভাব বলয়ের কবি-লেখক-বুদ্ধিজীবীদের পুরস্কৃত করা হয়েছে বলে তারা অভিযোগ তোলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, বাংলা একাডেমিকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলার জন্যই পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের পুরস্কারের জন্য বাছাই করেছে বিশেষ একটি গোষ্ঠী। ওই গোষ্ঠীর কর্ণধারের সহোদর ভাইকে বাংলা একাডেমি পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে বলেও কেউ কেউ নিন্দা করেন।

অন্তর্বর্তী সরকার যে নানাভাবে বিশেষ গোষ্ঠীর খপ্পরে পড়েছে, বিশেষত তথাকথিত সুশীলরা যে সরকারে প্রভাব বিস্তার করছেন তার বহু নমুনা বিগত কয়েক মাসে দেখা গেছে।

জিয়াফত কর্মসূচি পণ্ড করে দেওয়া 
বাংলাদেশে জঙ্গি নাটক সাজানো, সরকারকে জঙ্গি নাটক সাজাতে সাহায্য করা এবং ভারতের পক্ষ হয়ে বাংলাদেশ-বিরোধী অবস্থান নেওয়ার অভিযোগে গত ২৪ নভেম্বর বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা একটি পত্রিকার কার্যালয়ের সামনে জিয়াফত কর্মসূচির আয়োজন করে। কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতার ওপর টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ব্যবহার করে কর্মসূচিটি পণ্ড করে দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। একজন বিক্ষোভকারীকেও পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিপুলসংখ্যক সেনা সদস্যদের উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে।

বিগত কয়েক মাসে নানাবিধ আন্দোলন মোকাবিলা করতে হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারকে। অনেক ঠুনকো দাবির আন্দোলন, এমনকি প্রেসক্লাবের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বিক্ষোভকারীরা ঢুকে পড়লেও আন্দোলনকারীদের প্রতি সরকারের নমনীয় আচরণ দেখা গেছে। অথচ প্রো-ইন্ডিয়ান ন্যারেটিভের প্রতিবাদে আয়োজিত একটি জিয়াফত কর্মসূচি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোরভাবে দমন করেছে। বিক্ষোভকারীদের প্রতি সেদিন পুলিশের আচরণ ছিল অত্যন্ত নির্মম। এ ঘটনা থেকেও অনুমেয় যে, অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরে বিশেষ বলয়ের লোকেরা জাঁকিয়ে বসেছে।

সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর নিয়োগ
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সংস্থায় বিশেষ বলয়ের লোকেদের নিয়োগ এবং সরকারে তাদের প্রভাব বিস্তার নিয়ে শুরু থেকেই বিরোধিতা করে আসছেন বহু অ্যাক্টিভিস্ট ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা। প্রভাবশালী অ্যাক্টিভিস্ট ও লেখক পিনাকী ভট্টাচার্য, জনপ্রিয় ইউটিউবার ইলিয়াস হোসেনসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচিত অনেকেই অন্তর্বর্তী সরকার বিশেষ গোষ্ঠীর খপ্পরে পড়েছে অভিযোগ তুলে নিন্দা করছেন। তবে তাদের অভিযোগ সরকার আমলে নিচ্ছে না।

অন্তর্বর্তী সরকার দেশের আপামর জনগোষ্ঠীর কাছে সমালোচিত হয়েছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে নিয়োগ দিয়ে। কিন্তু জনগণের শত সমালোচনা, নিন্দার ঝড় সরকারকে এই সিদ্ধান্ত থেকে টলাতে পারেনি।

রক্তক্ষয়ী জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে জনআকাঙ্ক্ষার পক্ষের অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে। শেখ হাসিনার লুটপাটতন্ত্রে বিপর্যস্ত বাংলাদেশকে পুনর্গঠনের চেষ্টা করছেন প্রধান উপদেষ্টা। তাঁকে পূর্ণ সমর্থন ও শক্তি জোগাচ্ছে দেড় দশক স্বৈরাচারের কবলে নিষ্পেষিত রাজনৈতিক দলগুলো এবং নাগরিক অধিকার বঞ্চিত মানুষেরা। কিন্তু বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থের কাছে, তথাকথিত আলোর পথের সুশীলদের ভুল ইশারায় যেন অন্তর্বর্তী সরকার পথ না হারায়, সেই প্রত্যাশা নতুন বাংলাদেশের সবার।

 

Source : Banglanews24

ফরিদপুরে বেহাল মহাসড়কে ঈদ যাত্রায় ভোগান্তি, ডাকাতির শঙ্কা

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৫ জুন, ২০২৫, ৬:২৪ পিএম
ফরিদপুরে বেহাল মহাসড়কে ঈদ যাত্রায় ভোগান্তি, ডাকাতির শঙ্কা

 

 

ভাঙ্গা উপজেলা থেকে ফরিদপুর জেলা সদর পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে অসংখ্য খানাখন্দের সৃষ্টি হওয়ায় এবারের ঈদ যাত্রায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে ঘর মুখো মানুষকে।

একদিকে খানাখন্দে ভরপুর সড়ক দিয়ে চলাচলে প্রায়শ ভেঙ্গে যাচ্ছে যানবাহনের যন্ত্রপাতি, অন্যদিকে ওই সড়ক অতিক্রমে ভোগান্তির পাশাপাশি ধীর গতির কারণে যথাসময়ে গন্তব্যে পৌছাতে না পারাসহ রাতে ছিনতাই ও ডাকাতির শংকা রয়েছে ঘরমুখো যাত্রীদের মাঝে। যদিও ফরিদপুরের পুলিশ সুপার বলছেন, ঘরমুখো যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ওই অংশে রাতের বেলায় পুলিশ টহল বাড়ানো হয়েছে। তাই শংকিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।

বরিশাল-ফরিদপুর মহাসড়কের ভাঙ্গা উপজেলা এক্সপ্রেসওয়ের শেষ প্রান্ত থেকে ফরিদপুরের দুরত্ব ৩০ কিলোমিটার, যা দীর্ঘদিন প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে খানাখন্দে ভরে গেছে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে বেড়েছে খানা-খন্দের পরিমান।

এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ওই সড়ক ব্যবহার করে যাতায়াত করা ফরিদপুরসহ অন্তত ১০ জেলার মানুষ। ফরিদপুরের সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তাদের এই সড়কটির ব্যাপারে উদাসীনতাকে দায়ি করছে এই সড়কে যাতায়াতকারীরা।

ওই সড়ক ব্যবহারকারী যানবাহন চালক ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খানাখন্দের কারণে প্রায়শ গাড়ীর যন্তপাতি ভেঙ্গে যাচ্ছে। এছাড়া ধীর গতিতে যানবাহন চালাতে হচ্ছে, ফলে নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পেছানো যাচ্ছেনা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা।

এই সড়ক দিয়ে ঢাকাগামী মাইক্রোচালক আবুল হোসেন বলেন, এয়ারপোর্টে যাচ্ছি যাচ্ছি আনতে ভাঙ্গা থেকে ফরিদপুর পর্যন্ত সড়কের যে অবস্থা তাতে গাড়ির গতিসিমা সর্বোচ্চ ১৫ বেশি চালানো যায় না। মহাসড়কের গতি যদি এরকম হয় সে ক্ষেত্রে ডাকাতি সহ নানা পদের ঝামেলার আশঙ্কা থাকে।

এদিকে গাড়ী নষ্ট হওয়া ও ধীর গতির কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন ঘরমুখো মানুষেরাও। এছাড়া রাতে ধীর গতির কারণে ছিনতাই বা ডাকাতির মতো ঘটনার শংকাও রয়েছে তাদের মধ্যে। সড়কটি দ্রুত সংস্কার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবী তাদের।

যদিও ছিনতাই ও ডাকাতির বিষয়টি মাথায় রেখে ওই অংশে পুলিশ টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল।

তিনি জানান, ৩০ কিলোমিটার মহাসড়ককে চারটি ভাগে ভাগ করে পুলিশ টহলের ব্যবস্থা করা হযেছে। কোনো ধরনের সমস্যা বা সন্দেহ হলে দ্রুত পুলিশকে জানানোর আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। এদিকে জেলার সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শফিকুর রহমান জানিয়েছে, আপাতত চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক করতে সড়কটির সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে।

‘জিয়াউর রহমান ছিলেন বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা’– এ্যাড. বুলু

এহসানুল হক, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৫ জুন, ২০২৫, ৬:১৪ পিএম
‘জিয়াউর রহমান ছিলেন বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা’– এ্যাড. বুলু

‘জিয়াউর রহমান ছিলেন বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা’ বলে মন্তব্য করেছেন ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাড. লিয়াকত আলী খান বুলু।

ফরিদপুরের নগরকান্দায় জিয়াউর রহমানের ৪৪ তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।  এসময় লিয়াকত আলী খান বুলু জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক জীবন নিয়ে বিস্তর আলোচনা করেন।

বুধবার (৪ জুন) নগরকান্দা পৌর বিএনপির সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মো. জাহিদুল ইসলাম জাহিদ।

 

এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রফিকুজ্জামান অনু, উপজেলা ওলামা দলের সভাপতি মাওলানা দেলোয়ার হোসেন ঝিলু, উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি মো. বিল্লাল হোসেন মোল্লা, পৌর ছাত্রদলের সভাপতি মহিদ বিল আল মাহিম প্রমুখ।

আলোচনাসভা শেষে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি করেন তাঁরা।

ফরিদপুরে গরু বোঝাইকৃত পিকআপ উল্টে এক ব্যবসায়ী নিহত

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ৯:৩৩ পিএম
ফরিদপুরে গরু বোঝাইকৃত পিকআপ উল্টে এক ব্যবসায়ী নিহত
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে গরু বোঝাইকৃত পিকআপ উল্টে লিয়াকত মোল্যা (৪০) নামে এক ব্যবসায়ী নিহতের ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (৩ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাঝকান্দি-বোয়ালমারী-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের কাদিরদী বাজার সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বোয়ালমারী উপজেলার কাদিরদী এলাকার ইউপি সদস্য বুলবুল আহমেদ।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মাগুরা জেলার গোপালনগর ইউনিয়নের সংকোচ খালী এলাকার তিন ব্যবসায়ী কয়েকটি গরু বোঝাইকৃত ট্রাক নিয়ে ফরিদপুর টেপাখোলা গরুর হাটে যাচ্ছিলেন। তারা মহম্মদপুর-বোয়ালমারী উপজেলার সীমান্ত ব্রীজ পার হয়ে ফরিদপুর জেলার কাদিরদী বাজার এলাকায় পৌঁছালে পিকআপ থেকে গরু লাফ দিলে গরু বোঝাইকৃত পিকআপ উল্টে যায়। এ সময় পিকআপে থাকা লিয়াকত মোল্যাসহ দুই ব্যবসায়ী আহত হয়। স্থানীয়রা মারাত্মক আহত অবস্থায় দুই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক লিয়াকত মোল্যাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় অপর ব্যবসায়ী ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।
এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বোয়ালমারী উপজেলার কাদিরদী এলাকার ইউপি সদস্য বুলবুল আহমেদ জানান, মাগুরা সদর থেকে গরু বোঝাইকৃত পিকআপটি ফরিদপুর শহরের টেপাখোলা গরুর হাটে যাচ্ছিল। গরুর গাড়িটি কাদিরদী বাজারে আসলেই একটি গরু লাফ দিলে গাড়ীটি উল্টে ব্যবসায়ীরা চাপা পড়ে। সেখান থেকে আহত দুইজনকে ফরিদপুর মেডিক্যালে পাঠানো হয়। পরে জানতে পেরেছি লিয়াকত নামে ব্যবসায়ী মারা গেছে।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী থানার ওসি মাহমুদুল হাসান জানান, বিষয়টি নিয়ে আমরা এখনো অবগত নই। এমনকি ঘটনাটি আমাদের কেউ জানায়নি।