খুঁজুন
সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫, ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

ফরিদপুরে নদীতে গোসল করা নিয়ে অতর্কিত হামলা, আহত ৩৫

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫, ৫:৪১ পিএম
ফরিদপুরে নদীতে গোসল করা নিয়ে অতর্কিত হামলা, আহত ৩৫

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে পূর্ব শত্রুতার জের ও নদীতে গোসল করাকে কেন্দ্র করে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে পরমেশ্বরদী গ্রাম ও তেলজুড়ী বাজারে ব্যাপক হামলা ও বাড়িঘর ভাঙচুর ও গুরুত্বর আহত করে করেছে সালথা উপজেলার খারদিয়া গ্রামের লোকজন। এতে কমপক্ষে ৩৫ জন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় দেশীয় অস্ত্রসহ দুইজনকে আটক করা হয়েছে।

সোমবার (২৪ নভেম্বর) সকালের দিকে বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের তেলজুড়ী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

প্রাথমিকভাবে আহতদের নাম পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। এর মধ্যে ১৫ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসা নেন এবং পাঁচ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ নভেম্বর উপজেলার পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের রাকিব শেখের ছেলে রাজ (৭) ও হারুন শেখের ছেলে রহমত (১০) নদীতে গোসল করা নিয়ে মারামারি হয়। এরপর ২২ নভেম্বর রাতে বিষয়টি মিমাংসার জন্য শালিশ বৈঠক হয়। কিন্তু শালিশ বৈঠকে সন্তুষ্ট হয়নি হারুন শেখ। এর জের ধরে উপজেলার শেখর ইউনিয়নের তেলজুড়ী বাজার ও পরমেশ্বরদী পশ্চিমপাড়া এলাকায় অতর্কিত হামলা চালায় সালথার খারদিয়া ও পরমেশ্বরদীর এক অংশের লোকজন। এতে ৩৫ জনের মতো আহত হন। এদের মধ্যে মারাত্বক আহত হয় শেখর ইউনিয়নের দৈবকনন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা আফতাব (৪২), দূর্গাপুর চকপাড়া গ্রামের নাদেন (২৪), সবজি ব্যবসায়ী রেজাউল (৫০), বাজিতপুর গ্রামের বিপ্লব (৩৫), তেলজুড়ী গ্রামের ওহিদ (৪০), ইউনুস (৫০) দূর্গাপুর গ্রামের লিপটন শিকদার (৩৫)। বাকিদের নাম পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, সালথা উপজেলার খারদিয়ার ইউনিয়নের মুশফিক বিল্লাহ জিহাদ ও টুলু মিয়া লোকজনের সাথে নিয়ে তেলজুড়ীতে আক্রমণ করে। এতে কমপক্ষে ৩৫ জন আহত হন। এ সময় তেলজুড়ী এলাকায় ১৮ টি ঘরবাড়ি ও বাজারের ৫ টি দোকান ভাংচুর ও লুটপাট চালায়।

দূর্গাপুর গ্রামের ইলিয়াস মোল্লা বলেন, পাশের সালথা উপজেলার খারদিয়া গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্র সজ্জিত হয়ে পরমেশ্বরদী পশ্চিমপাড়া গ্রামে ও আমাদের শেখর ইউনিয়নের লোকজনের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ ঘটনার নিন্দা জানাই। আমাদের লোকজনকে তারা মারাত্বক আহত করেছে। আমরা এর বিচার চাই।

এ বিষয়ে খারদিয়ার ইউনিয়নের মুশফিক বিল্লাহ জিহাদ ও টুলু মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

শেখর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রইসুল ইসলাম পলাশ বলেন, খারদিয়া গ্রামের বাসিন্দা মুশফিক বিল্লাহ জিহাদ মিয়া ও তার মামা ইলিয়াস কাজী যৌথভাবে এক থেকে দেড় হাজার লোক ঢাল, সড়কি, দেশীয় অস্ত্র সজ্জিত হয়ে আমাদের লোকজনের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার(মধুখালী,বোয়ালমারী সার্কেল) আজম খান বলেন, পার্শ্ববর্তী সালথার থেকে কিছু লোকজন ওই এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রবেশ করে। এলাকার দুটি বাচ্চা গোসল করা নিয়ে মারামারি করে। এর জের ধরে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বাড়ি-ঘর ভাংচুর করা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

তিনি আরও বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে দেখে আমরা প্রকৃত দোষীদের আটক করবো। এ ঘটনায় মামলা হবে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। দুইজনকে আটক করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

মধুখালীতে নকল কীটনাশক জব্দ, প্রস্তুতকারককে ১ বছরের কারাদণ্ড

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫, ৬:৪০ পিএম
মধুখালীতে নকল কীটনাশক জব্দ, প্রস্তুতকারককে ১ বছরের কারাদণ্ড

ফরিদপুরে অবৈধভাবে নকল সার, কীটনাশক তৈরি ও বাজারজাত করার অভিযোগে দাউদ মোল্লা (৩৫) নামে এক যুবককে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অনাদায়ে তাকে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

সোমবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে জেলার মধুখালী উপজেলার বাগাট ইউনিয়নের বাগাট গ্রামের কবির মোল্লার ছেলে মো. দাউদ মোল্লাকে এ দণ্ড প্রদান করা হয়।

মধুখালী কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মাহবুব এলাহী বলেন, গ্রাম পুলিশকে সোর্স হিসেবে ব্যবহার করে সোমবার দুপুরে সেখানে অভিযান চালানো হয়। এসময় প্রায় লক্ষাধিক টাকার নকল সার ও কীটনাশক জব্দ করা হয় এবং প্রায় ৫০ লক্ষাধিক টাকার বিভিন্ন কৃষি উপকরণে (বালাইনাশক ও অনুখাদ্য) মোড়ক জব্দ করে ধ্বংস করা হয়। পরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯-এর ৪৩ ধারায় দাউদ মোল্লাকে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু রাসেল জানান, দীর্ঘদিন ধরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, বাগাট দাখিল মাদরাসার পূর্ব পাশে গোরস্থানসংলগ্ন একটি বসতবাড়িতে দাউদ মোল্লা বিভিন্ন পরিচিত কোম্পানির লোগো ও প্যাকেট ব্যবহার করে নকল সার–কীটনাশক প্রস্তুত ও বাজারজাত করছেন।

অভিযানে উপস্থিত ছিলেন মধুখালী থানা পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর তন্ময় সাহা সঙ্গীয় ফোর্সসহ স্থানীয় কৃষক ও সাধারণ মানুষ।

‘নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিবাহ বৈধ নয়’ — ফরিদপুরের ডিসি

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫, ৬:২৬ পিএম
‘নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিবাহ বৈধ নয়’ — ফরিদপুরের ডিসি

ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদ হলরুমে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে অংশীজনদের নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

 

সোমবার (২৪ নভেম্বর) সকাল ১১টায় উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত সভায় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক,শিক্ষাথী,সাংবাদিক, এনজিও কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় প্রধান অতিথি ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান মোল্যা বলেন, নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিবাহ সম্পন্ন করা কোনোভাবেই বৈধ নয়। নোটারি বিবাহের আইনি স্বীকৃতি নেই। এটি প্রতারণা ও দণ্ডনীয় অপরাধ। তিনি বাল্যবিবাহ রোধে ভ্রাম্যমাণ আদালতসহ সব ধরনের আইনি ব্যবস্থা আরও জোরদার করার ঘোষণাও দেন।

বক্তারা বলেন, বাল্যবিবাহ শুধু একটি আইনি অপরাধ নয়; এটি শিশুর শারীরিক-মানসিক স্বাস্থ্য, শিক্ষাজীবন ও সমাজে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে পরিবার, সমাজ ও প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তারা।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন চরভদ্রাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রজিউল্লাহ খান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাফিজুর রহমান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন, গাজিরটেক ইউপি চেয়ারম্যান ইয়াকুব আলী, সাংবাদিক আব্দুস সবুর মোল্লা (কাজল) ও লিতাকত আলী (লাভ্লু) আব্দুস সালাম মোল্লা প্রমুখ।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জাহিদ তালুকদার। সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরা খাতুন।

জেলা প্রশাসন জানায়, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে নিয়মিত সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি আইন প্রয়োগে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

আলফাডাঙ্গায় জুতার দোকানে ভয়াবহ আগুন, ২০ লাখ টাকার ক্ষতি

মো. ইকবাল হোসেন, আলফাডাঙ্গা:
প্রকাশিত: সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫, ৬:০৯ পিএম
আলফাডাঙ্গায় জুতার দোকানে ভয়াবহ আগুন, ২০ লাখ টাকার ক্ষতি

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় ভয়াবাহ আগুনে জুতার দোকানের গোডাউনে থাকা মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এ অগ্নিকান্ডে প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন দোকান মালিক।

রোববার (২৩ নভেম্বর) দিনগত রাত দেড়টার দিকে আলফাডাঙ্গা সদর বাজারে বাশার সু-স্টোরে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। বৈদ্যুতিক সট সার্কিট থেকে এ আগুণের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

বাজার ব্যবসায়ী সূত্রে জানা যায়, রবিবার রাত দেড়টায় সদর বাজারের মেসার্স বাশার সু স্টোরের দোকানের মধ্যে থেকে আগুনের ধোঁয়া দেখতে পেয়ে দোকান মালিককে ফোন করে জানানো হয়। এর মধ্যে আলফাডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়। ফায়ার সার্ভিস প্রায় এক ঘন্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে নেয়। এসময়ের মধ্যে দোকানের গোডাউন আন্ডার গ্রাউন্ডে থাকা প্রায় ২০ লাখ টাকার বাটাসহ বিভিন্ন কোম্পানির জুতা-সেন্ডেল পুড়ে যায়।

বাশার সু স্টোরের মালিক আবুল বাশার শেখ জানান, রাত দেড়টার দিকে এক ব্যবসায়ীর মাধ্যমে জানতে পারলাম আমাদের দোকানে আগুন লেগেছে। এসে দেখি দোকানের নিচ তলার গোডাউনের আন্ডার গ্রাউন্ডের মধ্যে থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। এরমধ্যে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে প্রায় এক ঘন্টা চেষ্টা করে আগুণ নিয়ন্ত্রণে আনে। দোকানে কত টাকার মালামাল ছিল তার কোনো সঠিক হিসেব নেই তার কাছে। তবে ধারণা করছে প্রায় ২০ লাখ টাকার জুতা-সেন্ডেল পুড়ে গেছে।

আলফাডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন লিডার (ভারপ্রাপ্ত) ওবাইদুল রহমান জানান, জুতার দোকানের নিচে একটি গোডাউন ছিল আমরা সেখানে গিয়ে শুধু ধোঁয়া দেখতে পাই। পানির পাইপ ঢুকিয়ে ভিতরে পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক সর্ট সার্কিট থেকে এ আগুণের সূত্রপাত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে আমাদের সঠিক ধারণা দিতে পারছি না। তবে গোডাউনে থাকা মালামাল পুড়ে গেছে।