খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৩ পৌষ, ১৪৩২

ফরিদপুরে পাইলসের বদলে পিত্তথলিতে অপারেশন, পালাল চিকিৎসক

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৯:৪৪ এএম
ফরিদপুরে পাইলসের বদলে পিত্তথলিতে অপারেশন, পালাল চিকিৎসক

ফরিদপুর শহরের সৌদি-বাংলা নামক একটি প্রাইভেট হাসপাতালের বিরুদ্ধে আবারও ভুল চিকিৎসার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এবার এক নারী রোগীর পাইলস অপারেশনের বদলে পিত্তথলিতে অপারেশন করার মতো চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। অতঃপর ভুল বুঝতে পেরে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স এবং সকল স্টাফ পালিয়ে গেছেন। এই ঘটনার পর স্বাস্থ্য প্রশাসন তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালটি বন্ধ করে দিয়েছে।

সোমবার (০৮ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে ফরিদপুর শহরের ওই প্রাইভেট হাসপাতালে হ্যাপি বেগম (৩৫) নামে এক রোগীর ক্ষেত্রে এ ঘটনা ঘটে।

‎রোগীর স্বজন ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুরের দিকে হ্যাপি বেগম পাইলসের সমস্যা নিয়ে ভর্তি হন এবং হাসপাতালটির চিকিৎসক ফজলুল হকের (শোভন) শরণাপন্ন হন। কিন্তু, সন্ধ্যা ৭টায় তাকে অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করিয়ে পিত্তথলির অস্ত্রোপচার করেন মো. নজরুল ইসলাম নামে আরেক চিকিৎসক। ভুল রোগীর ভুল অপারেশনের বিষয়টি বুঝতে পেরে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান চিকিৎসক, নার্সসহ স্টাফরা।

‎ঘটনার ৩ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও রোগীকে কোনো চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। পরে রোগীর স্বজনরা প্রশাসন, সাংবাদিক ও ছাত্র প্রতিনিধিদের বিষয়টি অবগত করেন। এরপর রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফরিদপুরের সিভিল সার্জন মাহামুদুল হাসান, বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদক ডা. আলি আকবর হাওলাদার হাসপাতালে আসেন। এ সময় তারা ওই রোগীর শারীরিক পরীক্ষা শেষে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

​রোগীর পরিবার অভিযোগ করে জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে এবং ভুল চিকিৎসার কারণে রোগীর জীবন এখন ঝুঁকির মুখে। বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ওই রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য একটি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

‎রোগীর মেয়ে জান্নাতি আক্তার অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালে আরেকজন রোগী ভর্তি ছিল, তার পিত্তথলিতে পাথর হয়েছে। কিন্তু তার জায়গায় আমার আম্মুকে অপারেশন করেছে। কোনো কাগজপত্র যাঁচাই-বাছাই ছাড়া কেন অপারেশন করল? আমার আম্মুর কিছু হলে কাউকে ছাড়ব না।

​তবে এই ঘটনার পর ফরিদপুরের সিভিল সার্জন কার্যালয় ও স্বাস্থ্য প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। তারা হাসপাতালটি সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে এবং এ ঘটনার তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে।

ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মাহামুদুল হাসান বলেন, ডাক্তার ঠিকভাবে কাগজপত্র দেখেননি। এ কারণে পাইলসের রোগীর পিত্তথলিতে অপারেশন করা হয়েছে। আজ থেকেই এ হাসপাতাল বন্ধ থাকবে এবং তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তের প্রেক্ষিতে হাসপাতাল ও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

​উল্লেখ্য, এই প্রথম নয়, এর আগেও সৌদি বাংলা হাসপাতালের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসার একাধিক অভিযোগ উঠেছিল। এর আগে এক প্রসূতি মায়ের সিজার অপারেশনের সময় ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। বারবার এমন ঘটনা ঘটলেও হাসপাতালটির বিরুদ্ধে কঠোর কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার পরিত্যক্ত জমি এখন দৃষ্টিনন্দন খেলার মাঠ

মিয়া রাকিবুল, আলফাডাঙ্গা:
প্রকাশিত: বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৯:৩৪ পিএম
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার পরিত্যক্ত জমি এখন দৃষ্টিনন্দন খেলার মাঠ

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে যাত্রা শুরু হলো একটি নিজস্ব ও সুপরিসর খেলার মাঠের।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবসের বর্ণিল অনুষ্ঠানমালা প্রদর্শনের মাধ্যমে নবনির্মিত এই দৃষ্টিনন্দন মাঠটির আনুষ্ঠানিক পথচলা শুরু হয়েছে।

এতদিন উপজেলা প্রশাসনের জাতীয় দিবসের মূল অনুষ্ঠানগুলো পরিষদের বাইরে স্থানীয় আরিফুজ্জামান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হতো। এবারই প্রথম উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে নিজস্ব মাঠে বিজয় দিবস উদযাপিত হলো।

​উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, পরিষদের পুরাতন ভবনের পেছনে বিশাল একখণ্ড নিচু জমি দীর্ঘকাল ধরে পরিত্যক্ত ও অকেঁজো অবস্থায় পড়েছিল। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল হক এই স্থানটিকে ভরাট করে একটি আধুনিক মাঠে রূপান্তরের উদ্যোগ নেন এবং স্থানীয় সমাজ সেবকদের সহযোগিতার আহ্বান জানান। ​ইউএনও’র সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে তরুণ সমাজসেবক তাজমিনউর রহমান তুহিন মাঠটি তৈরির দায়িত্ব নেন। তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিদ্যাধর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মরহুম আলহাজ্ব আলী আহমেদ মৃধার ছেলে। তুহিন হযরত শাহ্ জালাল মৎস্য এ্যান্ড ডেইরি ফার্মের স্বত্বাধিকারী ও লেবাজ সোয়েটার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান।

​ব্যক্তিগত অর্থায়ন ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রায় এক মাস সময় ধরে বিপুল পরিমাণ মাটি ভরাট করে জায়গাটিকে একটি আধুনিক ও সমতল খেলার মাঠে রূপান্তর করেন তুহিন। তার এই নিঃস্বার্থ অবদানের ফলে বর্তমানে মাঠটি সবুজ ঘাসে আচ্ছাদিত এক মনোরম স্থানে পরিণত হয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর এই মাঠেই অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে কুচকাওয়াজ ও ক্রীড়া অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।

​নতুন মাঠে প্রথম অনুষ্ঠান সফল হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তাজমিনউর রহমান তুহিন বলেন, ‘তৎকালীন ইউএনও রফিকুল হকের অনুপ্রেরণায় আমরা কাজটি শুরু করি। আজ যখন দেখলাম এই সুন্দর মাঠে জাতি শ্রদ্ধাভরে বিজয় দিবস উদযাপন করছে, তখন মনটা ভরে গেল। এটি আলফাডাঙ্গাবাসীর জন্য একটি স্থায়ী মিলনকেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে।’

​এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে আলফাডাঙ্গা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মনিরুল হক সিকদার বলেন, ‘এটি আলফাডাঙ্গাবাসীর জন্য একটি বড় প্রাপ্তি। উপজেলা পরিষদের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এমন একটি মাঠের অভাবে জাতীয় অনুষ্ঠান আয়োজনে যে সীমাবদ্ধতা ছিল, তা দূর হলো। সমাজসেবক তুহিনের মতো তরুণরা এগিয়ে এলে সমাজের আমূল পরিবর্তন সম্ভব।’

​উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও স্থানীয় সুধীজন মনে করছেন, এই মাঠটি শুধু খেলাধুলা নয়, বরং বছরজুড়ে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সরকারি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি পালনের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হবে।

সদরপুরে অভিযানের দ্বিতীয় দিনেও ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণ করল প্রশাসন

শিশির খাঁন, সদরপুর:
প্রকাশিত: বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৮:৪৬ পিএম
সদরপুরে অভিযানের দ্বিতীয় দিনেও ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণ করল প্রশাসন

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তফসিল ঘোষণা করার পর নির্বাচন কমিশন সকল প্রকার রাজনৈতিক ব্যানার ফেস্টুন ও পোস্টার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের নির্দেশনা দেন। গত শনিবার রাত নয় টায় ৪৮ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও নেতাকর্মীরা ব্যানার ফেস্টুন ও পোস্টার অপসারণ করেননি তারা। সেই নির্দেশনা না শুনায় ফেস্টুন অপসারণ করেছে প্রশাসন।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকালে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাত আনজুম পিয়ার নেতৃত্বে উপজেলা প্রশাসন ব্যানার ফেস্টুন এবং পোস্টার অপসারণ অভিযান শুরু করেন।

অভিযানের দ্বিতীয় দিনে সদরপুর বাজার, কৃষ্ণপুর মোড় ও থানার মোড় এলাকায় অপসারণ করেন। এ সময় ভূমি অফিসের কর্মচারী সহ গ্রাম পুলিশের সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

সদরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিফাত আনজুম পিয়া বলেন, রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন এবং পোস্টার অপসারণ করেন নাই বিধায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অপসারণ অভিযান শুরু করেছি।

তিনি আরও বলেন, ফরিদপুর-৪ নির্বাচনী এলাকার সম্ভাব্য সকল প্রার্থীর সব ধরণের পোস্টার, ব্যানার, দেয়াল লিখন, বিলবোর্ড , গেইট, তোরণ বা ঘের, প্যান্ডেল ও আলোকসজ্জা ইত্যাদি প্রচার সামগ্রী নিজ খরচে/দায়িত্বে অপসারণ করার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।

বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশনের জন্য ফরিদপুর থেকে ঢাকায় পাঠানো হলো ২৪ রোগী

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৭:১৮ পিএম
বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশনের জন্য ফরিদপুর থেকে ঢাকায় পাঠানো হলো ২৪ রোগী

ফরিদপুর-৪ সংসদীয় আসনের আওতাধীন সদরপুর উপজেলা থেকে ২৪ জন অসহায় ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী রোগীকে বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশনের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়।

এর আগে দুই ধাপে সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলায় বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। প্রথম ধাপে সদরপুর উপজেলায় ৩৫ জন এবং দ্বিতীয় ধাপে চরভদ্রাসন উপজেলায় ২৮ জন রোগীর চোখের ছানি অপারেশন (লেন্সসহ) সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছিল।

এই পুরো কার্যক্রমের সার্বিক ব্যবস্থাপনা, তদারকি ও দেখভাল করছেন ফরিদপুর-৪ আসনের ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থী এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম খান বাবুল।

জানা গেছে, চোখের চিকিৎসার পাশাপাশি তিনি এর আগেও একাধিকবার ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প (ওষুধসহ) এবং ফ্রি চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্পের আয়োজন করেছেন। এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে সাধারণ ও দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা সেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন তিনি।

এ বিষয়ে শহিদুল ইসলাম খান বাবুল জানান, মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার অংশ হিসেবেই এসব মানবিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের সেবামূলক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।