খুঁজুন
শনিবার, ২১ জুন, ২০২৫, ৭ আষাঢ়, ১৪৩২

ফরিদপুরে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা, এসআই বোরহান নিহত

এন কে বি নয়ন, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: শনিবার, ১৪ জুন, ২০২৫, ২:২৮ পিএম
ফরিদপুরে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা, এসআই বোরহান নিহত

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী ধরতে এসে বোরহান উদ্দিন(২৭) নামে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন।

শনিবার (১৪ জুন) দুপুর ১২ টার দিকে উপজেলার মাজকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের বোয়ালমারী পৌরসভার সোতাসী ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

 

নিহত বোরহান উদ্দিন যশোরের অভয়নগর থানার পায়ড়া গ্রামের কোবাদ আলীর ছেলে। গত প্রায় এক বছর ধরে মহম্মদপুর থানায় কর্মরত ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বোরহান উদ্দিন
মহম্মদপুর থানা থেকে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী ধরতে বোয়ালমারীর দিকে আসছিলেন। পথিমধ্যে বোয়ালমারী পৌরসভার সোতাসী ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে এবং তিনি ঘটনাস্থলেই নিহত হন।

এ ব্যাপারে মহম্মদপুর থানার ডিউটি অফিসার সহকারী উপপরিদর্শক পরিদর্শক(এএসআই) মোসাম্মত বুলবুলি খাতুন বলেন, তিনি থানা থেকে একটি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীকে ধরতে বোয়ালমারীতে যাচ্ছিলেন।

বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ মোরশেদ আলম বলেন, সম্ভবত তার মাথায় হেলমেট ছিলোনা। মাথার পেছনে আঘাত লেগে মস্তিষ্ক(ঘিলু) বের হয়ে যায়। হাসপাতালে আনার আগেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে।

জানতে চাইলে মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আব্দুর রহমান বলেন, এসআই বোরহান উদ্দিন নিহত হয়েছেন বলে জানতে পেরেছি। বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো যাবে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহামুদুল হাসান বলেন, তিনি মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিহত হয়েছেন বলে জানতে পেরেছি। তার মরদেহ বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে। মহম্মদপুর থানায় জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশ কাজ করছে। বিস্তারিত তথ্য পরবর্তীতে জানানো সম্ভব হবে।

চরভদ্রাসনে সাপে কামড় দেওয়ার তিনদিন পর যুবকের মৃত্যু

চরভদ্রাসন প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২০ জুন, ২০২৫, ১০:২৮ পিএম
চরভদ্রাসনে সাপে কামড় দেওয়ার তিনদিন পর যুবকের মৃত্যু
ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে সাপে কামড় দেওয়ার তিনদিন পর কাউসার ভূইয়া (৩৪) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (২০ জুন) সকালে উপজেলার চর হরিরামপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. বিল্লাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
মৃত কাউসার ভূঁইয়া চরভদ্রাসন উপজেলার চর হরিরামপুর ইউনিয়নের শালিপুর মধ্য গ্রামের মৃত ফালু হভূইয়ার ছোট ছেলে। তার স্ত্রী ও এক ছেলে রয়েছে।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, জেলার চরভদ্রাসন উপজেলার চর হরিরামপুর ইউনিয়নের শালিপুর মধ্য গ্রামের মৃত ফালু হভূইয়ার ছোট ছেলে কাউসার ভূঁইয়াকে গত ১৬ জুন দুপুরের দিকে ধান ক্ষেতের গরু তাড়াতে গেলে সাপে কামড় দেয়। পরে বাড়িতে ফিরে সাপে কামড়ানোর কথা পরিবারকে জানায় যে, তাকে বল ছাপার রং সাপে কামড় দিয়েছে। তবে রাসেল’স ভাইপারকে স্থানীয়রা ‘বল ছাপা’ সাপ বলে থাকেন। ঘটনার দিন বিকেলে পরিবারের লোকজন তাকে প্রথমে ফরিদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন থাকার একদিন পর তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

ফরিদপুরে জাল নিবন্ধনে বাল্যবিয়ের অপরাধে কনের মা ও কাজীকে জরিমানা

হাসান মাতুব্বর (শ্রাবণ), ফরিদপুর:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২০ জুন, ২০২৫, ১০:২৩ পিএম
ফরিদপুরে জাল নিবন্ধনে বাল্যবিয়ের অপরাধে কনের মা ও কাজীকে জরিমানা
ফরিদপুরে জাল জন্মনিবন্ধনের মাধ্যমে বাল্যবিয়ে দেয়ার অভিযোগে কনের মা ও সংশ্লিষ্ট নিকাহ রেজিষ্ট্রারকে (কাজী) জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
শুক্রবার (২০ জুন) রাত ৯ টায় শহরের চকবাজার জামে মসজিদ সংলগ্ন মার্কেটের দোতলায় অবস্থিত কাজী অফিসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ইসরাত জাহান।
এ সময় নিকাহ রেজিষ্ট্রার মো. কামরুল হাসানকে (৪৮) বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এর আগে একই অপরাধে বিকালে শহরের বায়তুল আমান এলাকায় কনের মা’কে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ১২ জুন শহরের বায়তুল আমান এলাকায় ১৬ বছর বয়সি এক কিশোরীকে জাল জন্ম নিবন্ধনের মাধ্যমে বয়স বাড়িয়ে বাল্যবিবাহ দেয়া হয়। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে বিকালে কনের বাড়িতে গিয়ে তথ্য যাচাই করেন। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে নিকাহ রেজিষ্ট্রারের কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
জানা যায়, বিভিন্ন অভিযোগের কারণে নিকাহ রেজিস্টার কামরুল হাসানের নিবন্ধন স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে তিনি উচ্চ আদালত থেকে এক আদেশের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করেন। ওই আদেশ গত ৮ জুন পর্যন্ত কার্যকর ছিল।
বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসরাত জাহান বলেন- ‘এক কিশোরীর জাল নিবন্ধনের মাধ্যমে বয়স বেশি দেখিয়ে বাল্য বিয়ে দেয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান করা হয়েছে এবং সত্যতাও পাওয়া গেছে। যে কারণে দুইজনকে জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া জেলা রেজিষ্ট্রার বরাবর আমরা একটি চিঠি পাঠাবো ওনার নিবন্ধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।

সালথায় বসতবাড়ি ঘেঁষে আ’লীগ নেতার করাতকল, শব্দে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০২৫, ২:৪৩ পিএম
সালথায় বসতবাড়ি ঘেঁষে আ’লীগ নেতার করাতকল, শব্দে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী
নীতিমালা অমান্য করে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের গোপিনাথপুর এলাকায় বসতবাড়ী ঘেঁষে একটি করাতকল (স’মিল) স্থাপন করা হয়েছে। সেই করাতকলের শব্দ ও কাঠের গুড়া উড়ে এসে চোখে পরায় ভোগান্তিতে পড়েছে ওই এলাকার মানুষ। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগকে লিখিত অভিযোগ দিলেও এটি দেখার যেন কেউই নেই। সবাই একে অপরের উপর দায় চাপাচ্ছে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।
পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী কোনো সরকারি অফিস-আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বিনোদন পার্ক, উদ্যান এবং জনস্বাস্থ্য বা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বিঘ্ন সৃষ্টি করে এরূপ কোনো স্থানের ন্যূনতম ২০০ (দুইশত) মিটারের মধ্যে করাতকল স্থাপন করা যাবে না। কিন্তু এ নিয়ম অমান্য করেই চার বছর আগে বসতবাড়ির মাত্র ৫০ মিটার পাশে একটি করাতকল নির্মাণ করেন স্থানীয় আ’লীগ নেতা ও একই উপজেলার গোপিনাথপুর এলাকার মৃত ছব্দু মোল্যার ছেলে মজিবর মোল্যা (৬০)।
চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাঠের গুড়া চোখে গেলে কর্ণিয়া ক্ষতিগ্রস্ত ও গুড়া নিশ্বাসের সঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করলে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যাও হতে পারে। এছাড়া শব্দ দূষণে আশেপাশের পরিবেশ ও জনজীবন স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বসতবাড়ির কাঁচা রাস্তার পাশ ঘেঁষে পশ্চিম পাশে একটি করাতকল গড়ে তোলা হয়েছে। কাঠের গুড়া যাতে উড়ে না আসে সেজন্য টিনের বেড়াও দেয়া হয়নি। তাইতো করাতকলে গাছ কিংবা কাঠ ফাঁড়াই করার সময় গুড়া আশেপাশের বসতবাড়িতে উড়ে যায়। আর শব্দও হয় ভীষণ। এতে শিশু-কিশোররা পড়ালেখা করতে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
গোপিনাথপুর গ্রামের নুর আলম মোল্যা অভিযোগ করে বলেন, যখন করাতকল চালু করা হয় তখন অতিরিক্ত শব্দে পড়ার মনোযোগ নষ্ট হয়। এছাড়া কাঠের গুড়া উড়ে এসে চোখে পড়ে। এছাড়া নিয়মনীতির তোয়াক্কা করে সন্ধ্যার পরেও করাতকল চালানো হচ্ছে। এতে আমাদের খুব কষ্ট হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে মজিবর মোল্যা প্রভাবশালী ও আ’লীগ নেতা হওয়ায় ভয়ে কেউ টুঁশব্দ করতে সাহস পাচ্ছেনা।
এব্যাপারে বক্তব্য জানতে করাতকল মালিক মজিবর মোল্যার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে তার ছেলে নাসির মোল্যা বলেন, করাতকলের আশেপাশে বসতবাড়ি থাকলেও তাদের কোনো অভিযোগ নেই। কিন্তু, একজন লোক স্থানীয় কিছু মানুষের প্ররোচণায় পড়ে আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিচ্ছে। যদিও তাদের ঘর-বাড়িটা আমাদেরই জায়গায়।
এব্যাপারে সালথা উপজেলা বন কর্মকর্তা
নজরুল ইসলাম বলেন, আমাকে ফরিদপুরের সামাজিক বন বিভাগ থেকে একটি চিঠি দিয়েছিল। পরে তদন্ত করে একটি রিপোর্ট প্রদান করা হয়েছে।
এব্যাপারে সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিচুর রহমান বালী বলেন, বিষয়টি আমি অবগত আছি। বনবিভাগকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে বন বিভাগ ওই করাতকলের লাইসেন্স বাতিল করলে, তারপর আইনগত পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এব্যাপারে ফরিদপুরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ গোলাম কুদ্দুছ ভূঁইয়া বলেন, এব্যাপারে গোপিনাথপুর এলাকার রুপালী বেগম নামের একজন নারীর অভিযোগ আমরা পেয়েছি। সরেজমিন তদন্ত করে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় ওই করাতকল মালিককে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) করা হয়েছে। আমরা নোটিশের জবাব পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নিব।