খুঁজুন
রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৫, ১৭ কার্তিক, ১৪৩২

ফরিদপুরে সাত বছরেও শেষ হয়নি একটি সেতুর কাজ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫, ২:০২ পিএম
ফরিদপুরে সাত বছরেও শেষ হয়নি একটি সেতুর কাজ

ফরিদপুরে পদ্মার শাখা নদীতে ৫৮০ মিটারের একটি সেতুর নির্মাণ কাজ গত সাত বছরেও শেষ হয়নি। সেতুর কাজের ধীরগতির কারণে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন দুই ইউনিয়নের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। তাই সেতু নির্মাণে ধীরগতিতে ক্ষুব্ধ পদ্মাপাড়ের বাসিন্দারা।

চলতি বছরের জুনেই এ কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রকৌশলী। এদিকে আরও ২ বছর সময় লাগবে বলে জানিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। 

স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ফরিদপুর জেলার সদর উপজেলার ভাজনডাঙ্গা ঘাট হতে গেন্দুমোল্লা হাট জিসি সড়ক ২০৮ মিটার চেইনেজে পদ্মা শাখা নদীর উপর ৫৫০ মিটার পিএসসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ সংশোধিত দৈর্ঘ্য ৫৮০ মিটারের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ‘জান্নাত কনস্ট্রাকশন’ নামের এক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সেতুর কাজ করছে। এর মাঝে রাজনৈতিক জটিলতায় সেতুর ঠিকাদার পরিবর্তন হয়েছে।

সেতুর কাজ বছরের পর বছর ঝুলে থাকায় তৈরি হয়েছে ভোগান্তি। ট্রলার বা ইঞ্জিনচালিত নৌকার ওপর নির্ভরশীল হয়ে আছে দুই ইউনিয়নের প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ।

বিশেষ করে শিশু, শিক্ষার্থী, রোগী ও কৃষকদের জন্য যোগাযোগ এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা। তাদের অভিযোগ, ঠিকাদার পরিবর্তন, দুর্নীতি আর দপ্তরের উদাসীনতায় এ দুর্দশা দীর্ঘায়িত হয়েছে।

স্থানীয় ডিক্রিরচর ইউনিয়নের একজন কৃষক বলেন, চরাঞ্চলের মানুষের নদী পারাপার ছাড়া কোনো স্থায়ী সড়ক নেই। বর্ষাকালে নদী গর্জে উঠায় ট্রলার চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়া নিত্য নৈমত্তিক ঘটনা। ঝড়-বৃষ্টিতে নৌ-পথে চলাচল করতে হয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। ফলে জরুরি চিকিৎসার জন্য সময়মতো হাসপাতালে পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। একই সঙ্গে এ দূরত্ব পাড়ি দিয়ে ফরিদপুর সদরে যাওয়া এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পৌঁছানোও অত্যন্ত কষ্টকর। ব্রিজ নির্মাণ দেখে আমরা চরের মানুষ স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলাম। কিন্তু সেটি আজ দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছে।

জান্নাত কনস্ট্রাকশন এর সাইট ম্যানেজার আবু হানিফ বলেন, যেসব কাজ বাকি আছে, তা শেষ করতে কমপক্ষে আরও দুই বছর সময় লাগবে। এছাড়া বর্ষা মৌসুম শুরু হয়ে যাওয়ায় দ্রুত কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না।

পদ্মার এ শাখা নদীর উপর নির্মাণাধীন সেতুর কাজের ধীরগতিতে নদীপাড়ের বাসিন্দাদের ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ কাজের মেয়াদ শেষ হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলা আর সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের আগ্রহ কম থাকায় দীর্ঘ সময়ক্ষেপণ হচ্ছে বলে দাবি করেন স্থানীয়রা।

ডিক্রিরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান মিন্টু বলেন, চরের কৃষক ফসল ঠিকই ফলায়, কিন্তু নদী পার করতে না পারায় শহরের বাজারে নিতে পারে না। এজন্য লোকসান গুনতে হয়। ব্রিজটির নির্মাণ শেষ করা জরুরি।

এলজিইডির ফরিদপুর সদর উপজেলার প্রকৌশলী দেবাশীষ বাকচী বলেন, বর্তমানে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাজের মেয়াদ চলতি বছরের জুন পর্যন্ত রয়েছে। সেতুর প্রায় ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। নদীতে পানি বাড়ছে, সময় মতো কাজ শেষ করা কঠিন হবে।

প্রসঙ্গত, ফরিদপুর শহরের সঙ্গে দুর্গম চরের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতেই পদ্মার শাখা নদীর উপর সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি বিভাগ। ২০১৮ সালে প্র্রায় ৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। তবে সে সময়ের  ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাফিয়া কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী আলোচিত দুই হাজার কোটি টাকার মানিলন্ডারিং মামলায় অন্যতম আসামি রুবেল-বরকত নানান দুর্নীতির অভিযোগে মামলার আসামি হলে ২০২০ সালে তারা পালিয়ে গেলে কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

এরপর ২০২২ সালে আবার নতুনভাবে সেতুটি নির্মাণের কার্যাদেশ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফরিদপুর জান্নাত কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। কিন্তু ৬ বছর পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি সেতুর নির্মান কাজ। কয়েক দফা মেয়াদ বাড়িয়ে এখনো প্রায় ৪০  শতাংশ কাজ বাকি রয়েছে।

পদ্মাপাড়ের বাসিন্দারা দ্রুত সেতুর কাজ শেষ করে চলাচলের উপযোগী করার দাবি জানিয়েছেন।

ফরিদপুরে নির্মাণাধীন ব্রিজ থেকে পড়ে শ্রমিক নিহত

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৫, ১০:১৫ এএম
ফরিদপুরে নির্মাণাধীন ব্রিজ থেকে পড়ে শ্রমিক নিহত

ফরিদপুরে নির্মাণাধীন একটি ব্রিজ থেকে পড়ে জহুরুল ইসলাম (৩২) নামে এক শ্রমিক নিহতের ঘটনা ঘটেছে।

শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে ফরিদপুর শহরতলীর ভাজনডাঙ্গা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।


নিহত জহুরুল ইসলাম নওগাঁ জেলার ভীমপুর গ্রামের বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিনের ছেলে।


জানা যায়, ফরিদপুর শহরতলীর ভাজনডাঙ্গা এলাকায় পদ্মা নদীর ধারায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে একটি সেতু নির্মাণের কাজে নিয়োজিত ছিলেন নির্মাণ শ্রমিক জহুরুল ইসলাম। নির্মাণ কাজ করার সময় অসাবধানতাবশত তিনি নির্মাণাধীন সেতু থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন।


এ সময় সেখানে থাকা অপর শ্রমিকরা তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরিদপুর কোতয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আব্দুল্লাহ বিশ্বাস জানান, এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ফরিদপুরে ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিএনপির মতবিনিময় সভা

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৫, ৭:৫৩ এএম
ফরিদপুরে ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিএনপির মতবিনিময় সভা

ফরিদপুরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত ৩১ দফা রাষ্ট্রকাঠামো মেরামত ও সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে ফরিদপুর শহরের টেপাখোলা বেলতলায় পৌরসভার ১৮ ও ১৯ নং ওয়ার্ড বিএনপি’র আয়োজনে এ মতবিনিময় সব অনুষ্ঠিত হয়।

১৯ নং ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সভাপতি মো. মিরু খানের সভাপতিত্বে এবং ফরিদপুর জেলা বিএনপির সাবেক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মো. আশরাফ হোসেনের পরিচালনায় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন- ফরিদপুর জেলা বিএনপির যুগ্ন-আহবায়ক সৈয়দ জুলফিকার হোসেন জুয়েল।

এ সময় জেলা বিএনপি যুগ্ন আহবায়ক ফাত্তাউল ইসলাম ফাত্তাহ, মহানগর বিএনপি যুগ্ন আহবায়ক শামসুল আরেফিন সাগর, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মোজাম্মেল হোসেন খান মিঠু, ফরিদপুর মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. হাসানুর রহমান মৃধা, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ন আহবায়ক রাকিবুল ইসলাম রনি, ১৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সৈয়দ এখলাছুর রহমান, ১৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি গোলাম মোস্তফা খোকা, ১৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার কাদির রুবেল, জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য মো. সাব্বির হোসেন খান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সাহিদুল ইসলাম মহব্বত, বিএনপি নেতা শাহাদাত হোসেন শাহীন সহ বিএনপি অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বক্তারা বলেন, ‘রাজনীতিতে মতপার্থক্য ভেদাভেদ থাকলেও ধানের শীষের স্বার্থে ফরিদপুর জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সবাই আমরা ঐক্যবদ্ধ। আমরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুরে যারাই ধানের শীষ প্রতীক পাবে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে বিজয় নিশ্চিত করব। এ সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা সম্পর্কে উপস্থিত স্থানীয় সাধারণ জনগণ ও নেতাকর্মীদেরকে তা বাস্তবায়নের জন্য সহযোগিতা কামনা করা হয়। এবং আগামীতে একমাত্র দল বিএনপি ক্ষমতায় আসলেই দেশের ও জাতির উন্নয়ন করা সম্ভব বলে ব্যক্ত করেন নেতাকর্মীরা।’

ভাঙ্গায় ১০ টাকার লোভ দেখিয়ে শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ

আব্দুল মান্নান মুন্নু, ভাঙ্গা:
প্রকাশিত: রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৫, ৭:৪৭ এএম
ভাঙ্গায় ১০ টাকার লোভ দেখিয়ে শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় ১০ টাকার লোভ দেখিয়ে প্রথম শ্রেণির এক শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে পাশের বাড়ির এক বৃদ্ধ লম্পট দাদার বিরুদ্ধে।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) বেলা ১০টার দিকে ভাঙ্গা উপজেলার পূর্ব সদরদী গ্রামের বৃদ্ধ লম্পট দাদা শাফি শিকদারের বিল্ডিংয়ের ভিতরে এঘটনা ঘটলেও শনিবার বিষয়টি জানাজানি হয়।

শিশুটি পূর্ব সদরদী গ্রামের বাবা বাদল শিকদার কন্যা ও পুর্ব সদরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

ঘটনার পর লম্পট বৃদ্ধর লোকজন ভুক্তভোগীর বিচার আশ্বাসের নামে ভয় দেখিয়ে থানায় যেতে ও মামলা করতে এবং মুখ খুলতে নিষেধ করছেন।
বর্তমানে লম্পট বৃদ্ধ গা ঢাকা দিয়েছে।

এঘটনায় শিশুটির মা বিচার দাবি করে বলেন , আমার ছোট মেয়ের সাথে আমার চাচা শশুর শফি শিকদার যে খারাপ কাজ করেছে। আমি তার উপযুক্ত বিচার চাই এবং তার শাস্তি চাই। আমার স্বামী এক দিনমজুর ও গ্রামে গ্রামে হেঁটে প্লাস্টিকের মালামাল বিক্রি করে। আমরা খুবই গরীব মানুষ। তাই গরীব মানুষ হিসেবে আমরা কোন বিচার পাচ্ছি না। শাফি শিকদার একজন প্রভাবশালী টাকা ওয়ালা। তার লোকজন আমাদেরকে থানায় যেতেও নিষেধ করছেন। বিচার ও পাচ্ছি না এবং প্রভাবশালীদের ভয়ে থানায়ও যেতে পারছি না। আমরা কার নিকট বিচার দাবি করবো। আমি এঘটনার বিচার চাই।

স্থানীয়দের দাবি, পূর্ব সদরদী গ্রামের শাফি শিকদার একজন লম্পট ও খারাপ চরিত্রের মানুষ। সে অনেক মহিলার সাথে খারাপ কাজ করে ধরা পড়েছে। আজ দরিদ্র ঘরের সাড়ে ৬ বছরের এক শিশুর সাথে যতটুকু খারাপ কাজ করেছে আমরা গ্রামবাসী তার বিচার চাই এবং শাস্তি চাই ।

এঘটনায় চুমুরদী ইউনিয়নের ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও বাল্যবিবাহ এবং নারী নির্যাতন কমিটির সদস্য মোসা. ঝর্না আক্তার বলেন, আমার বাড়ির পাশে পূর্ব সদরদী শিকদার বাড়ির একটা ঘটনা ঘটেছে। আমি শুনেছি এবং শুনে খুব খারাপ লেগেছে। তখন আমি আবেগ আপ্লুত হয়ে বলতে বলতে কেঁদেও ফেলেছি। এঘটনা আমি একজন নারী হিসাবে কিভাবে বলি। যদি ভুক্তভোগীরা আমার নিকট আসে, আমি তাদের সাথে থেকে আইনগত সহযোগিতা করব।

এব্যাপারে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফ হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। তবে কেউ এখন পর্যন্ত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।