খুঁজুন
বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২ পৌষ, ১৪৩২

সদরপুরের উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ভয়াবহ ঝুঁকিপূর্ণ, চরম আতঙ্কে রোগীরা 

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: রবিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৫, ৮:২৯ এএম
সদরপুরের উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ভয়াবহ ঝুঁকিপূর্ণ, চরম আতঙ্কে রোগীরা 

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার আকোটেরচর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি দীর্ঘদিন যাবত জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভবনের যে অবস্থা তাতে যেকোনো সময় ঘটতে পারে প্রানহানির ঘটনা। আর এই ভয়াবহ ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছেন আকোটেরচর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।

শনিবার (০২ আগস্ট) সকালে সরেজমিনে ওই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি পরিদর্শনকালে দেখা যায়, উপ-স্বাস্হ্য কেন্দ্রটি ঝুঁকিপূর্ন অবস্থায় রয়েছে। ভবনটির নিচ থেকে উপর পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় ছোট ছোট ফাঁটলও দৃশ্যমান হয়ে উঠছে। ভবনের কক্ষপথের বিভিন্ন জায়গায় পলেস্তারা খসে খসে পড়ার চিত্র দৃশ্যমান হয়ে উঠছে।

এসময় কথা হয় ওই এলাকার রহিমা বেগম নামে ৫৬ বছর বয়সী এক নারীর সাথে।

তিনি বলেন, ‘ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ যা যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে। ঘটতে পারে বহু প্রাণহানির ঘটনা। ব্যবহার না হওয়ায় ভবনটির অধিকাংশই জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। উপরের পলেস্তারা খসে পড়েছে, জানালা ভাঙা, বৃষ্টির পানি চুইয়ে চুইয়ে পড়ছে। এতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রসহ মূল‍্যবান ওষুধপত্র নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় আছে। এছাড়া সেবাদানকারীদের চরম ঝুঁকি নিয়ে দ্বায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। তারা মাঝে মাঝেই কম বেশি নানাবিদ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।’

এ সময় হাসপাতালে দায়িত্বরত পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা মনজুরী বেগম বলেন, ‘আমি মাত্র এক মাস যাবৎ এখানে যোগদান করেছি। আমি আসার পর দেখি ভবনটির অবস্থা একরাবেই নাজেহাল। যে কোন সময় ভেঙে পড়তে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি আসার পর এখানে দুইবার চুরি হয়েছে, আমার সেবাদানের রুমে একটি ফ্যান ও কিছু চিকিৎসার যন্ত্রপাতি, বিদ্যুৎ সংযোগের তার ও মিটার চুরি হয়ে গেছে। এখানে কোন পানির ব্যবস্থা নেই। আমি আমার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখানে কাজ করছি।’

অপর এক স্বাস্থ্যকর্মী পিংকি জানান, ‘আকোটেরচর ইউনিয়নের উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভবনটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। এখানে রোগীরা চিকিৎসা নিতে এসে সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকেন। তারপরও সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না।’

স্থানীয় একজন স্কুল শিক্ষক রবিউল ইসলাম ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে মৌখিকভাবেও জানিয়েছেন। কিন্তু তবুও কোন কাজ হচ্ছে না। তারা ব্যবস্থা নেওয়ার শুধু আশ্বাস দেন, কোন কাজ হচ্ছে না। তবে ভবন ভেঙ্গে মানুষ না মরা পর্যন্ত কারোর টনক নড়বে না।

এ বিষয়ে সদরপুরের আকোটেরচর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আসলাম বেপারী বলেন, ‘এই চিকিৎসা কেন্দ্রটি শিশু, নারী ও সাধারণ জনগণের জন‍্য। বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কারণে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে। অতিদ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি। যাতে প্রাণহানির আগেই এই জনবহুল জনগোষ্ঠীর জন্য পুরাতন ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা সহ ভেঙ্গে শক্ত মজবুত ও বহুতল ভবনের কাজ শীগ্রই শুরু হয়।’

স্থানীয় রাহেলা, আসলাম, বকুল, নবীরণ বেগম জানান, ‘বৃষ্টির সময় ভবন থেকে পানি পড়ে, দেয়াল ভেঙে নিরাপত্তাহীনতার সৃষ্টি হচ্ছে। মাঝে মাঝে আকাশের পানিতে রোগীর বেডের জগ আর মগ ভরে যায়। যন্ত্রপাতির সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত জায়গার অভাব। বাথরুম, শৌচাগার ব্যবহারের অযোগ্য। সংস্কার বা নতুন ভবন হলে সেবার মান উন্নত হবে বলে আশা করেন তারা।’

এব্যাপারে সদরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মমিনুর রহমান জানান, ‘আকোটেরচর ইউনিয়নের স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। আমি পরিদর্শন করেছি। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভবনটি সংস্কারের প্রয়োজন। সব ডকুমেন্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জমা দিয়েছি। অনুমোদন পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নিব।

কচুলতায় জেগে উঠছে সম্ভাবনা, বদলাচ্ছে কৃষকের ভাগ্য

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১০:৫৭ এএম
কচুলতায় জেগে উঠছে সম্ভাবনা, বদলাচ্ছে কৃষকের ভাগ্য
কচুলতায় এসেছে কৃষকের ভাগ্য পরিবর্তনের বার্তা। দেড়শ বিঘা দিগন্তজুড়ে কচুর লতার সফল চাষ মৌলভীবাজার জেলায় সৃষ্টি করেছে নতুন সম্ভাবনা। তুলনামূলক কম খরচ, কম পরিশ্রম এবং বেশি লাভজনক হওয়ায় কচুর লতা চাষে এক ধরনের কৃষি বিপ্লব দেখা যাচ্ছে এ জেলায়।

জেলার বিভিন্ন উপজেলার কৃষকরা প্রচলিত অনেক ফসলের তুলনায় বেশি আয়ের আশায় কচুর লতি চাষে ঝুঁকছেন। স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি মৌলভীবাজার থেকে প্রতিদিনই লতি পাঠানো হচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় তিনশ হেক্টর জমিতে কচুর লতি চাষ হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার গিয়াসনগর, শ্রীমঙ্গল উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের যাত্রাপাশা এবং কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর গ্রামে।

গিয়াসনগর এলাকায় দেখা গেছে, পুরো গ্রামজুড়ে এখন বাণিজ্যিকভাবে লতি চাষ হচ্ছে। স্থানীয় কৃষকরা জানান, কয়েক বছর আগেও দুই-তিন বিঘা জমিতে বিচ্ছিন্নভাবে লতি চাষ হলেও বর্তমানে তা ব্যাপক বাণিজ্যিক রূপ নিয়েছে। শুধু গিয়াসনগর এলাকাতেই মৌসুমে প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে লতির চাষ হচ্ছে।

গিয়াসনগর গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান জানান, তিনি ২১ শতাংশ জমিতে লতিরাজ বারি কচু–১ রোপণ করেছেন। প্রায় এক মাস ধরে তিনি লতি তুলছেন। প্রতি সপ্তাহে ৭০ থেকে ৭৫ কেজি লতি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। মৌসুম যত এগোচ্ছে, দামও বাড়ছে। প্রায় ৩০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে তিনি দেড় থেকে দুই লাখ টাকা লাভের আশা করছেন।

একই গ্রামের কৃষক আবদুল আজিজ জানান, তিনি এক কিয়ার জমিতে লতি চাষ করেছেন এবং আরও জমিতে চারা রোপণের পরিকল্পনা করছেন। কৃষক মিলন, কাজিম ও আফাই মিয়াসহ অনেকেই বড় পরিসরে লতি চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।

কমলগঞ্জ উপজেলায় কচুর লতি চাষে সফল হয়েছেন বিমান বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রঞ্জন কুমার। উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের আদমপুর গ্রামে তার উদ্যোগে লতি চাষ ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তার দেখাদেখি স্থানীয় অন্যান্য কৃষকরাও লতি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

এ ছাড়া শ্রীমঙ্গল উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের যাত্রাপাশা গ্রামের এংরাজ মিয়া, রোকন মিয়া, আব্দুল মজিদ ও ইউনুস মিয়া বাণিজ্যিকভাবে কচুর লতি চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার পথ খুঁজে পেয়েছেন।

স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিরোজ কান্তি রায় বলেন, গিয়াসনগর গ্রামে লতি এখন একটি সমৃদ্ধ ফসলে পরিণত হয়েছে। চার-পাঁচ বছর আগে যেখানে দুই-তিন বিঘা জমিতে লতি চাষ হতো, এখন সেখানে মৌসুমে ১৫০ বিঘা জমিতে লতির আবাদ হচ্ছে। সারা বছর ৫০ থেকে ৭০ বিঘা জমিতে লতি চাষ হয়। লতি অত্যন্ত লাভজনক ফসল এবং এতে রোগবালাই তুলনামূলক কম। গ্রামটি যেন এখন ‘লতার গ্রাম’ হয়ে উঠছে।

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দিন বলেন, কচুর লতি এ অঞ্চলে একটি দীর্ঘমেয়াদি ও লাভজনক ফসল। অল্প খরচে কৃষকরা বেশি লাভবান হচ্ছেন। লতি চাষ সম্প্রসারণে কৃষি বিভাগ সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে।

সালথায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে কৃষকলীগ নেতা আটক

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৯:০৯ পিএম
সালথায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে কৃষকলীগ নেতা আটক

ফরিদপুরের সালথায় ওয়ারেন্টভুক্ত এক আসামীকে ধরতে গিয়ে খোরশেদ খান (৪৫) নামে এক কৃষক লীগ নেতার হামলার শিকার হয়েছেন পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক মুকুল। এ ঘটনায় ওই হামলাকারী কৃষকলীগ নেতাকে আটক করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৭ টার দিকে উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের আগুলদিয়া মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

খোরশেদ খান গট্টি ইউনিয়নের কৃষকলীগের সহ-সভাপতি ও ওই গ্রামের উচমান খানের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের আগুলদিয়া মোড় এলাকায় এক ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীকে ধরতে যায় একদল পুলিশ। এ সময় ওই আসামীকে ধরতে বাধা দেন কৃষক লীগ নেতা খোরশেদ খান। এক পর্যায়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক মুকুল আহত হন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবলু রহমান খান বলেন, ওয়ারেন্টভুক্ত এক আসামীকে ধরতে গেলে খোরশেদ খান বাধা প্রদান করেন এবং পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক মুকুল আহত হন। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

মহান বিজয় দিবসে চরভদ্রাসনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা

মুস্তাফিজুর রহমান শিমুল, চরভদ্রাসন:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৬:৩৩ পিএম
মহান বিজয় দিবসে চরভদ্রাসনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা

মহান বিজয় দিবসে ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে চরভদ্রাসন সরকারী কলেজ মাঠে এ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জালাল উদ্দিন।

সভার শুরুতে উপজেলার প্রায়াত মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

পরে ইউএনও জালাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) যায়েদ হোছাইন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুর রাজ্জাক, মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ ও মো. ফখরুজ্জামান প্রমুখ।