সালথায় ঘোষণা দিয়ে দুই ইউনিয়নবাসীর সংঘর্ষের প্রস্তুতি, ঠেকিয়ে দিল পুলিশ-সেনাবাহিনী
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৯:০৫ এএম

faridpur protidin
খেলাধুলার সময় ছবি তোলা নিয়ে স্কুল শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারামারিকে কেন্দ্র করে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার দুই ইউনিয়নের মানুষ ঘোষণা দিয়ে সংঘর্ষের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন।
এই উপলক্ষে রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া বাজারে ও যদুনন্দী ইউনিয়নের খারদিয়া এলাকায় অন্তত ১০ হাজার মানুষ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে জড়ো হন। তবে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ চেষ্টায় বিবাদমান বল্লভদী ও যদুনন্দী ইউনিয়নবাসী বড় ধরণের সহিংতার হাত থেকে রক্ষা পান। পরে দুই ইউনিয়নের বাসিন্দারাই ঘরে ফিরে যান।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ফুলবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে খেলাধুলা নিয়ে যদুনন্দী ইউনিয়নের খারদিয়া ও বল্লভদী ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া গ্রামের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারামারি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিবেশ শান্ত করে। তবে মারামারির বিষয়টি উভয় ইউনিয়নের বাসিন্দারা মেনে নিতে পারেনি। তাই ঘটনার পর থেকে উভয় ইউনিয়নবাসীর মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একপর্যায় রাতেই উভয় ইউনিয়নের নেতারা ঘোষণা দেন সংঘর্ষের।
ঘোষণা অনুযায়ী বল্লভদী ইউনিয়নের পক্ষে ফুলবাড়িয়া বাজারে অন্তত ৬-৭ হাজার লোক দেশীয় জড়ো হন, অন্যদিকে যদুনন্দী ইউনিয়নের পক্ষে খারদিয়া এলাকায় ২-৩ হাজার লোক জড়ো হন। এ সময় তারা দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র আশপাশে মজুদ করে রাখেন। খবর পেয়ে প্রথমে সালথা থানা পুলিশ ও পরে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে যৌথ চেষ্টা চালিয়ে পরিবেশ শান্ত করেন।
বল্লভদী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. খন্দকার সাইফুর রহমান শাহিন বলেন, খেলাধুলার সময় ছবি তোলা নিয়ে ফুলবাড়িয়া গ্রামের শিক্ষার্থীদের মারধর করে খারদিয়া গ্রামের শিক্ষার্থীরা। যদুনন্দী ইউনিয়নের খারদিয়া গ্রামটি অনেক বড়। ওরা অন্য ইউনিয়নের কাউকে মানুষই মনে করে না। তাই বাধ্য হয়ে আমাদের ইউনিয়নের লোকজন জড়ো হয়েছিল প্রতিবাদ করতে। তবে ইউএনও, ওসি, সেনাবাহিনী ও উপজেলা বিএনপির নেতাদের চেষ্টায় সংঘর্ষে জড়াতে পারেনি কেউ।
যদুনন্দী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. রফিক মোল্যা বলেন, ঘটনাটি মিমাংসার কথা হয়েছে। এলাকার পরিবেশ এখন শান্ত। তবে কি কারণে সংঘর্ষের এমন প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল, সে বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, শনিবার বিকেলে ফুলবাড়িয়া স্কুলে খেলার সময় ছবি তোলা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঝামেলা হয়। এ সময় খারদিয়া গ্রামের শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে ফুলবাড়িয়া গ্রামের শিক্ষার্থীদের মারধর করে। পরে বিষয়টি নিয়ে উভয় গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একপর্যায় ঘটনাটি ইউনিয়ন পর্যায় চলে যায়।
তিনি বলেন, আমরা গত রাতভর উভয় ইউনিয়নের নেতাদের সাথে কথা বলে শান্ত করার চেষ্টা করেছি। তারপরও রবিবার সকালে উভয় ইউনিয়নের অন্তত ১০ হাজার লোক সংঘর্ষের জন্য প্রস্তুতি নেয়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মিলে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়। এখন উভয় ইউনিয়নের পরিবেশ শান্ত রয়েছে।
সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, আমি খবর পেয়ে উভয় ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে ফোন দিয়েছি। চেয়ারম্যানরা আমাকে বলেছে, কোনোভাবেই আর কেউ যাতে সংঘর্ষে না জড়ায়, সে বিষয় তারাও চেষ্টা করছে।
আপনার মতামত লিখুন
Array