খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৩ পৌষ, ১৪৩২

সালথায় মাদক নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে যুবককে কুপিয়ে পায়ের পাঁচ আঙুল বিচ্ছিন্ন

সালথা প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৪:৩২ পিএম
সালথায় মাদক নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে যুবককে কুপিয়ে পায়ের পাঁচ আঙুল বিচ্ছিন্ন

ফরিদপুরের সালথায় মাদক নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে মো. বাচ্চু মাতুব্বর (৪০) নামে এক যুবককে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে তার পায়ের পাঁচটি আঙুল বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়াও তার শরীরের বিভিন্নস্থানে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। পরে গুরুত্বর আহত অবস্থায় বাচ্চুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বুধবার (০৩ সেপ্টেম্বর) সকালে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান।

এর আগে মঙ্গলবার (০২ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের বড়দিয়া বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত বাচ্চু বড়দিয়া এলাকার কাঁঠালবাড়িয়া গ্রামের মৃত ছত্তার মাতুব্বরের ছেলে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মাদকের টাকা ভাগাভাগী ও মাদক সেবন নিয়ে বাচ্চু মাতুব্বরের সাথে স্থানীয় বাবলু মাতুব্বরের বিরোধ চলছিল। তারা দুজনেই মাদকসেবী ও ব্যবসায়ী। এই বিরোধের জেরে আনুমানিক ৩ মাস আগে বাবলুকে মারধর করে বাচ্চু। ওই ঘটনার প্রতিশোধ নিতে মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে চাপাতি দিয়ে বাচ্চুকে এলোপাতাড়ি কোপায় বাবলু। এতে বাচ্চুর ডান পায়ের ৫টি আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ ছাড়াও তার শীরের বিভিন্নস্থানে কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে গুরুত্বর আহত অবস্থায় বাচ্চুকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, পূর্ববিরোধ ও মাদক নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে বাচ্চু নামে এক যুবককে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বাচ্চু কোপানোর ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

লোকগানের কিংবদন্তী শিল্পী হাজেরা বিবির স্মরণে

মফিজ ইমাম মিলন
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৫:৪২ পিএম
লোকগানের কিংবদন্তী শিল্পী হাজেরা বিবির স্মরণে

হাজেরা বিবি। তিনি শুধু লোকগানের জনপ্রিয় শিল্পী ছিলেন না। ছিলেন আধ্যাত্মিক জগতের এক অক্লান্ত পরিব্রাজক ও কৃতি সাধিকা। তাঁর সংগীত জীবনের সাফল্যগাথা কলমের আঁচড়ে হয়তো কাগজের বুকে এঁকে দেয়া যায়। কিন্তু তাঁর আধ্যাত্ম সাধনার নিরন্তর অন্তরজ্বালা ও ক্রমাগত দহন, সমাজের কাছ থেকে পাওয়া উপেক্ষা অবজ্ঞা, ভ্র-কুঞ্চন আর রক্তচক্ষুর আস্ফালনজাত বিষাদ ও ক্লান্তির কড়চা যথার্থভাবে পরিস্ফুটনের শক্তি আমার কলমে নেই।

মানবজীবনতো শুধুই ক্রমাগত ক্লেশ আর ক্ষরণের নয়। হাজেরা বিবিও একদিন জয় করেন জীবন ও সমাজের সমূহ উষ্মা ধারাবাহিক বিরূপতা ।

১৯৬০ সালে ফতেহ লোহানী পরিচালিত ‘ আসিয়া ‘ চলচ্চিত্রে প্রথম গান করেন তিনি। এর আগে রেডিও পাকিস্তান, পিটিভি, স্বাধীনতার পরে রেডিও বাংলাদেশ, বাংলাদেশ বেতার ও বিটিভির নিয়মিত শিল্পী ছিলেন। তবে তাঁর বেশি জনপ্রিয়তা ছিল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে পালাগান, বিচারগান, জারী ও মুর্শীদা গানের শিল্পী হিসেবে ।

হাজেরার প্রকৃত নাম ছিল ননীবালা। বাবা রাজকুমার ছিলেন পেশায় কাঠমিস্ত্রি। মা শ্যামাদাসী করতেন পুরোপুরি ঘরসংসারী। তাদের কয়েকটি সন্তান হয়ে মারা গেলে পরে ননীবালার ( হাজেরা) জন্ম হলে মানত অনুযায়ী কোলে কোলে বিয়ে দেন একই গ্রামের শিশু হিতিশের সাথে।

খুবই অল্প বয়সে একটি ছেলে হলে নাম রাখেন মন্টু। মন্টুর জন্মের কিছু দিন পরেই স্বামী হিতিশ মৃত্যু বরণ করেন। মন্টুও বেঁচে ছিল মাত্র ১১ মাস। এর কিছু দিন পরেই বাবা রাজকুমার, মা শ্যামাদাসীও পৃথিবী ছাড়েন। ফলে, সংসার নয় নিজের জীবনই দুর্বিষহ হয়ে ওঠে নিজের কাছে ।

স্বামী সন্তান বাবা-মা হারিয়ে আশ্রয় নেন মামা বাড়ি ফরিদপুরের ঈশান গোপালপুরে। এখানে সান্নিধ্য পান বনকু সাধুর। সাধু সনাতন ধর্মের অনেক তথ্য ও তত্ত্বকথা শিখিয়েছিলেন ননীবালাকে। যা পরবর্তীকালে বিচার গানে তুলে এনেছেন তিনি।

এমনই এক গানের অনুষ্ঠানে পরিচয় হয় কবি জসীম উদদীন এর সাথে। কবি তাঁর গান শুনে মুগ্ধ হন। ননীবালা কবিকে বাবা বলে সম্বোধন করেন। তাঁর কণ্ঠে কবি বিচার গানের ভবিষ্যৎ দেখতে পান। নিঃসঙ্গ জীবনে পথের অবসান ঘটাতে কবি পেশা হিসেবে গানকে বেছে নিতে উদ্বুদ্ধ করেন তাকে।

ননীবালার এভিডেভিড করে নাম রাখা হয় হাজেরা। কবির নিজের ধর্মপুত্র আজাহার মন্ডলের সাথে বিয়ে দেন তাকে। আজাহার মন্ডলেরও ছিল গান-বাজনা পেশা। শুরু হয় হাজেরা বিবি নামে এক গায়িকার নতুন জীবন সতীনের সংসারে।

লোকগানের শিল্পী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন হাজেরা। কবি জসীম উদদীন তাঁকে অলইন্ডিয়া রেডিওতে গান গাইবার ব্যবস্থা করে দেন। ঢাকার রমনা পার্কের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও তাকে দিয়ে গান গাইয়েছিলেন।

গান গাইবার অপরাধে হাজেরাকে এক ঘরে করা হয়েছিল গ্রাম্য শালিসিতে। আগে হিন্দু ছিল সে অভিযোগে ‘৭১ সালে তাঁর বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। স্বামী অজানা রোগে অন্ধত্ব বরণ করে ও মারা যায়। অসহায় হাজেরা গানের দলের দোহার মনিরুদ্দিন ফকিরের আশ্রয় নেন। গ্রামের মানুষ তাদের বিয়ে দিয়ে দেন। এ স্বামীও অন্ধ হয়ে রোগে ভুগে মৃত্যুবরণ করেন।

জীবনের শেষ প্রান্তে এসে দুঃখ-কষ্ট অভাব অভিযোগে হিমসিম খেতে থাকেন। কণ্ঠ ভেঙে গিয়েছিল। গান গাওয়া বন্ধ হয়ে যায় ।

হাজেরা বিবি সারাজীবন লোকসংস্কৃতির মাধ্যমে মানুষের সেবা ও আনন্দ দিলেও তাঁর ব্যক্তি জীবন ছিল ভাঙা-গড়া বিরহ-বিচ্ছেদ দুঃখ কষ্টে ভরা। তাকে দেখতে চিত্রশিল্পী আনোয়ার হোসেন, পরিচালক খান আতাউর রহমান, সুরকার আজাদ রহমান, নন্দিত কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ এসেছেন ফরিদপুরে।

২০০৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর লোক গানের কিংবদন্তি শিল্পী হাজেরা পৃথিবী ছেড়েছেন শতবছর বয়সে।

 

লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক, ফরিদপুর। 

ফরিদপুরে শুরু হয়েছে প্রবাসী মেলা ও জব ফেয়ার ‌

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৫:০৭ পিএম
ফরিদপুরে শুরু হয়েছে প্রবাসী মেলা ও জব ফেয়ার ‌

ফরিদপুরে শুরু হয়েছে‌‌ আশ্বাস প্রকল্প ও এসডিএস এর সহযোগিতায় প্রবাসী মেলা ও জব ফেয়ার।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) ‌ সকাল ৯ টার দিকে এর উদ্বোধন করেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. কামরুল হাসান মোল্লা।

ফরিদপুর জেলা প্রশাসন ‌এবং জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক ‌অভিবাসী দিবস ‌ও প্রবাসী দিবস উপলক্ষে এ মেলা ও জব ফেয়ারের আয়োজন করা হয়। এতে মোট ২৫টি স্টল অংশগ্রহণ করে।

এ সময় ‌সঠিক ‌‌নিয়ম অনুযায়ী এবং বৈধভাবে‌ বিদেশে কর্মী প্রেরণের ‌ উপর গুরুত্ব দেয়া হয়। এক্ষেত্রে ‌ সরকার ‌ বৈধভাবে বিদেশ গমনেচ্ছুদের ‌সব রকম সহায়তা প্রদান করবেন বলে ‌জানানো হয়।

এদিকে, মেলায় ‌ অংশগ্রহণকারী সটল মালিকেরা জানান, ‌ এ মেলা থেকে ‌‌ বিদেশে যাওয়ার সঠিক নিয়মকানুন মেনে ‌ লোকজন বিদেশে যাবে ‌‌ এবং তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবেন।

এসময় নির্ধারিত সাংস্কৃতিক মঞ্চে জনসচেতনমূলক বিভিন্ন কর্মকান্ডের অংশ হিসেবে গান ও পথ নাটক অনুষ্ঠিত হয়। এতে শিল্পীরা ‌জনসাধারণকে সচেতন করে তুলতে ‌ তাদের বিভিন্ন পরিবেশন উপস্থাপন করেন।

ফরিদপুরে কলাবাগানে পড়েছিল অটোরিকশা চালকের লাশ

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৩:২০ পিএম
ফরিদপুরে কলাবাগানে পড়েছিল অটোরিকশা চালকের লাশ

ফরিদপুরে একটি কলাবাগান থেকে টিপু সুলতান (৪০) নামে এক অটোরিকশা চালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে ফরিদপুর সদর উপজেলার ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের একটি কলাবাগান থেকে ওই অটোরিকশা চালকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহত টিপু সুলতান একই এলাকার মৃত জায়েদ আলী শেখের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টার মধ্যে যে কোনো এক সময় ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে সজল মিয়ার পুকুরপাড় সংলগ্ন ইলিয়াস শেখের কলাবাগানের ভেতরে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা টিপু সুলতানকে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে যায়।

অতঃপর ভোরে ইলিয়াস শেখ কলাবাগানে পানি দিতে এসে একটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়দের জানান। পরে এলাকাবাসী থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আজমীর হোসেন ‘ফরিদপুর প্রতিদিন‘কে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।