খুঁজুন
রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১৩ আশ্বিন, ১৪৩২

ফরিদপুরের মধুমতি নদীতে এক মৎস্যজীবীর বৈঠার আঘাতে নিখোঁজ অপর মৎস্যজীবী 

তৈয়বুর রহমান কিশোর, বোয়ালমারী:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন, ২০২৫, ৩:২৬ পিএম
ফরিদপুরের মধুমতি নদীতে এক মৎস্যজীবীর বৈঠার আঘাতে নিখোঁজ অপর মৎস্যজীবী 

ফরিদপুরের মধুমতি নদীতে মাছ ধরার সময় শৌখিন খান (৩৮) নামে এক মৎস্যজীবী প্রতিপক্ষ মৎস্যজীবী জব্বার মোল্যার (৩৭) হাতে থাকা বৈঠার আঘাতে নিখোঁজ রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুপুর ২টা পর্যন্ত নদীতে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল অভিযান চালিয়েও নিখোঁজ মৎস্যজীবী শৌখিনের সন্ধান পাওয়া যায়নি বলে ঘটনাস্থল এলাকায় গিয়ে জানা গেছে।

এর আগে বুধবার (২৫ জুন) দিবাগত রাত ৩টার দিকে ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী ও মধুখালী উপজেলা এবং মাগুরা জেলার মহম্মদপুর সীমান্তে মধুমতি নদীতে এ ঘটনা ঘটে।

নিখোঁজ মৎস্যজীবী শোখিন খান মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার দীঘা ইউনিয়নের পাল্লা চরপাড়া গ্রামের ছাত্তার খানের ছেলে। সকাল থেকেই নিখোঁজের স্বজনরা ও এলাকাবাসী মধুমতি নদীর বোয়ালমারী উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের মাঝিপাড়া ঘাটে আহাজারি করতে দেখা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী, এলাকাবাসী ও নিখোঁজ মৎস্যজীবীর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনের ন্যায় মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার দীঘা ইউনিয়নের পাল্লা চরপাড়া গ্রামের ছাত্তার খানের ছেলে মৎস্যজীবী শোখিন খান ও ফরিদপুর জেলার নওপাড়া গ্রামের আহমদ শেখের ছেলে হুমায়ূন শেখ নৌকায় চায়না জাল নিয়ে বুধবার রাত ১০টার দিকে মাছ ধরতে বের হয়। একই সময়ে পাশেই মাছ ধরতেছিল ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার নওপাড়া গ্রামের ছলেমান মোল্লার ছেলে জব্বার মোল্লা (৩৮), রবিউল মোল্লা (৩০) ও একই গ্রামের নৌকা চালক ছলেমানের ছেলে সানি শেখ।
ওইদিন রাত পৌনে ৩টার দিকে বোয়ালমারী ও মধুখালী উপজেলার সীমান্তবর্তী চন্ডিবিলা মাঝিপাড়া ঘাট এলাকা দিয়ে মৎস্যজীবী শোখিন খান ও হুমায়ূন শেখ নৌকা নিয়ে ফিরছিলেন। এ সময় অপর মৎস্যজীবী জব্বার মোল্লা (৩৮) ও রবিউল মোল্লা (৩০) শৌখিনদের বলে, আমাদের জালের উপর আসলি কেন? ঘটনার সময় দুই মৎস্যজীবী পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে জব্বার মোল্লা শৌখিনের মাথায় বৈঠা দিয়ে আঘাত করলে নদীর পানিতে ডুবে যায়।

খবর পেয়ে ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চালিয়েও নিখোঁজ মৎস্যজীবীকে উদ্ধার করতে পারেনি। সকাল থেকেই নিখোঁজের স্বজনরা ও এলাকাবাসী মধুমতি নদীর বোয়ালমারী উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের মাঝিপাড়া ঘাটে আহাজারি করতে দেখা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও সৌখিনের সাথে থাকা অপর মৎস্যজীবী হুমায়ুন শেখ জানান, রবিউল ও জব্বারের পেতে রাখা কারেন্ট জালের উপর দিয়ে নৌকা চালানো হয়েছে দাবী করে জব্বার সৌখিনের মাথায় আঘাত করলে সে নদীর মধ্যে পড়ে যায়। তাৎক্ষণিক তাকে পাওয়া না গেলে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা এসে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত তার কোন সন্ধান মেলেনি।

উদ্ধার কাজে অংশ নেওয়া ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি গনি আমিন জানান, আমরা ঘটনাস্থলে এসে জানতে পারি রাতে মাছ মারার সময় এক মৎস্যজীবী অপর মৎস্যজীবীকে আঘাত করলে একজন পানিতে পড়ে নিখোঁজ হন। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে নিখোঁজের সন্ধান পাওয়া যায়নি। অক্সিজেন শেষ হয়ে যাওয়ায় মাঝখানে অভিযান স্থগিত করা হয়। পরে পুনরায় উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়েছে। এখনো ওই ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছে।

ফরিদপুরে ও রাজবাড়ীতে পূজামন্ডপে র‍্যাবের বিশেষ নিরাপত্তা, গুজব নিয়ে হুশিয়ারি র‍্যাব কর্মকর্তার

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১১:২৭ পিএম
ফরিদপুরে ও রাজবাড়ীতে পূজামন্ডপে র‍্যাবের বিশেষ নিরাপত্তা, গুজব নিয়ে হুশিয়ারি র‍্যাব কর্মকর্তার

শারদীয়া দূর্গা পূজা ঘিরে র‍্যাব-১০ এর ফরিদপুর ক্যাম্পের আওতাধীন ফরিদপুর ও রাজবাড়ী জেলায় পূজামন্ডপগুলোতে সার্বিক নিরাপত্তা প্রদানের জন্য র‍্যাবের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে বিশেষ টিমসহ তিনস্তরের টিম মাঠে সক্রিয় রয়েছে বলে র‍্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকালে বিভিন্ন পূজামন্ডপ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি জানান ফরিদপুর ক্যাম্পের স্কোয়াড্রন লিডার তারিকুল ইসলাম।

বিকাল ৫ টার দিকে ফরিদপুর শহরের পশ্চিম খাবাসপুরের চৌধুরীপাড়া দূর্গা মন্দির পরিদর্শন করেন তিনি। এ সময় তিনি পূজা কমিটির নেতৃবৃন্দ ও পুরোহিতের সাথে কথা সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর নেন এবং পূজাকে কেন্দ্র করে গুজব নিয়ে কঠোর হুশিয়ারির কথা তুলে ধরেন।

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান- দুটি জেলায় সাড়ে ১২শ’য়ের অধিক পূজামন্ডপ রয়েছে। পূজামন্ডপে সার্বিক নিরাপত্তা প্রদানের জন্য র‍্যাবের তিন স্তরবিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যার মধ্যে বিশেষ টিমের পোশাকধারী সদস্যরা থাকবে, পাশাপাশি সাদা পোশাকে সিভিল টিম বিভিন্ন এলাকায় দায়িত্ব আছেন। এছাড়া র‍্যাব সদর দপ্তরের তত্ত্বাবধানে সাইবার মনিটরিং টিম রয়েছে।

এসব টিমকে ইতোমধ্যে দায়িত্ব বন্টন করে দেয়া হয়েছে এবং প্রতিটি থানায় সাদাপোশাকধারী ৩ সদস্যের টিম মোতায়েন থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এছাড়া তিন স্তরের টিম পৃথকভাবে অনন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সমন্বয় করে কাজ করবে এবং প্রয়োজনানুসারে ফোর্স বাড়ানো হবে বলেও তিনি জানান৷

এ সময় তিনি পূজাকে কেন্দ্র করে গুজব নিয়ে হুশিয়ারি উচ্চারণ করে সকলকে সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন- কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য গুজব ছড়ালে তাঁর বিরুদ্ধ কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাকে দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় আনা হবে। পাশাপাশি কেউ নাশকতা করার চেষ্টা করলে সাথে সাথে র‍্যাবকে জানানোর অনুরোধ জানান। এছাড়া প্রতিটি মন্ডপে সার্বক্ষণিক আলোর ব্যবস্থা, সিসিটিভি ক্যামেরা সচল ও রেকর্ড চালু রাখার নির্দেশ প্রদান করেন।

ফরিদপুরে অটোরিকশা চালক নিখোঁজ

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১০:১৯ পিএম
ফরিদপুরে অটোরিকশা চালক নিখোঁজ

ফরিদপুরে মো. রাকিব (২১) নামে এক অটোরিকশা চালক নিখোঁজ রয়েছেন। শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮ টার দিকে বের হয়ে আর বাড়ি ফেরেনি। নিখোঁজ রাকিব ফরিদপুর শহরতলীর ভাজনডাঙ্গা কালিবাড়ীমোড় এলাকার আব্দুল খালেকের ছেলে।

শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭ টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওই অটোরিকশা চালকের সন্ধান মিলেনি। এ ঘটনায় কোতয়ালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে নিখোঁজের পরিবার।

নিখোঁজের পরিবার ও থানায় করা জিডি সূত্রে জানা যায়, রাকিব শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮ টার দিকে ভাড়া করা ব্যাটারী চালিত অটোরিকশা নিয়ে ভাজনডাঙ্গা কালীবাড়ী মোড়ের নিজ বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। এছাড়া আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে খোঁজাখুজি করেও সন্ধান মিলেনি রাকিবের। নিখোঁজের পর থেকে উদ্ধিগ্নে রয়েছে পরিবার। রাকিবের পরনে জিন্সের প্যান্ট ও গায়ে ফুলহাতা ছাপা শার্ট রয়েছে।

ফরিদপুরপর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে নিখোঁজের পরিবার। পুলিশ রাকিবের সন্ধানে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে।

 

সালথায় দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ঘরে ঘরে চলছে নাড়ু তৈরির কাজ 

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৪:৪৩ পিএম
সালথায় দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ঘরে ঘরে চলছে নাড়ু তৈরির কাজ 

আগামীকাল ২৮ সেপ্টেম্বর শুরু হবে বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। বাড়ি বাড়ি এখন সাজসজ্জার পাশাপাশি নাড়ু, মোয়া ও মুড়কি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন সনাতনী গৃহবধূরা। একদিকে রান্নাঘরে উৎসবের পদ তৈরির কোলাহল, অন্যদিকে রং-তুলির আঁচড়ে দেবী দুর্গাকে জীবন্ত করে তোলার চেষ্টা করছেন কারিগররা।

হিন্দু ধর্মাবলীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। তাইতো প্রতিটি মন্ডপে এ উৎসবের আয়োজন চলছে পুরোদমে। আর দুর্গাপূজার প্রধান আর্কষণ গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী মজাদার খাবার নাড়ু, মোয়া ও মুড়কি। পূজার সময় আত্মীয়-স্বজন বাড়িতে বেড়াতে এলে তাদের আপ্যায়নের জন্য খেতে দেওয়া হয় সুস্বাদু নাড়ু, মোয়া ও মুরকি। পূজা আসতে আর একদিন বাকি। এজন্য বাড়ির বউ-ঝিদের দম ফেলানোর সময় নেই এখন। তাইতো কেনা-কাটা ও ধোঁয়া-মোছার সাথে নাড়ু বানানোর কাজও চলছে খুব জোরে সরে।

কথা হয় সালথার গৃহীনি বিনা রানীর সাথে। সে বলেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে আমরা প্রতিবছর অনেক ধরণের নাড়ু-বরি তৈরি করি। এর মধ্যে রয়েছে, তিলের নাড়ু, নারিকেলের নাড়ু, দুধের নাড়ু, গঙ্গাজলির নাড়ু, খই, মুড়কি, মুড়ির মোয়া, চানাচুরের মোয়া, ভেটের খইয়ের মোয়াসহ বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরি করে থাকি।

আরেক গৃহীনি দুর্গা রানী বলেন, তিলের নাড়ু তৈরির জন্য প্রয়োজন তিল, গুড়, ঘি, জল ও খোসা ছারানো বাদামভাজা। প্রথমে তিল হালকা ভেজে নিতে হবে। এরপর চুলায় জল ও গুড় দিতে হবে। মিশ্রণ ঘন আঠালো হয়ে এলে তিল ও বাদাম দিয়ে ঘন ঘন নাড়তে হবে। একটু নেড়েচেড়ে নামিয়ে গোল গোল করে বানিয়ে ফেলতে হবে তিলের নাড়ু। প্রতিটি নাড়ু বানানোর সুবিধার জন্য হাতে ঘি বা তেল মেখে নিলে ভালো হয়। এতে নাড়ু বানানোর সময় হাতে আঠা ভাব লাগবে না।

সনাতন ধর্মাবলম্বী নারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নারকেলের নাড়ু তৈরির জন্য প্রয়োজন কুড়ানো নারকেল, গুড় ও এলাচগুঁড়া। প্রথমে কুড়ানো নারকেল ও গুড় একসঙ্গে মিশিয়ে বাদামি রং না হওয়া পর্যন্ত ভাজতে হবে। পরে এলাচগুঁড়া মেশাতে হবে। ভাজা হয়ে গেলে কড়াই চুলা থেকে নামিয়ে গরম থাকতে থাকতে নারকেলের খামি হাতে নিয়ে গোল গোল করে নাড়ু তৈরি করতে হবে।