খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৩ পৌষ, ১৪৩২

ফরিদপুরে নিখোঁজ অটোরিক্সা চালক হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন, দুই আসামী গ্রেপ্তার

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১০:০৪ পিএম
ফরিদপুরে নিখোঁজ অটোরিক্সা চালক হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন, দুই আসামী গ্রেপ্তার
ফরিদপুর সদরে ফরহাদ প্রামানিক (২২) নামে এক অটোরিক্সা চালক হত্যাকান্ডের দুইদিনের মাথায় রহস্য উদঘাটনসহ ঘটনার সাথে জড়িত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত প্লাস্টিকের রশি ও অটোরিক্সাটি উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেসব্রিফিংয়ে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল।
এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি নিখোঁজ অটোরিক্সা চালকের লাশ উদ্ধার করে কোতয়ালী থানা পুলিশ।
এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) শৈলেন চাকমা ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন মিডিয়ার গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশের প্রেসব্রিফিং ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রাজবাড়ী জেলা সদরের পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের পাঁচুড়িয়া গ্রামের  ছাত্তার প্রামানিকের ছেলে ফরহাদ প্রামানিক (২২) গত বছরের প্রথমদিকে বিয়ে করে জেলার গোয়ালন্দ এলাকা দিয়ে রিক্সা চালাতে শুরু করেন। তিনি প্রতিদিনের ন্যায় অন্ত:স্বত্তা স্ত্রীকে রেখে গত ৩০ জানুয়ারি বিকেলে বাড়ি থেকে অটোরিক্সা নিয়ে বের হয়ে নিখোঁজ হন। রাতে বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের লোকজন ফোন দিলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরেরদিন শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সকালের দিকে ফোনটি খোলা পেয়ে নিহতের স্ত্রী ফোন দিলে ফোনটি রিসিভ করেন ফরিদপুর সদর উপজেলার ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের কাচারীটেকের এলাকার শেফালী বেগম নামে এক নারী। ফোনের সূত্র ধরে নিহতের পরিবারের লোকজন স্থানীয় মেম্বার রফিকুল ইসলামের যোগাযোগ করে পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থল এলাকায় আসেন। সেখানে স্থানীয় মেম্বার ও ফোনটি পাওয়া নারীকে সাথে নিয়ে ওই এলাকার কাচারীটেকের হাতেম মোল্যা পাড়া এলাকার একটি পুকুরপাড়ে নিহত ব্যক্তির পরনের প্যান্ট পাওয়া যায়। পুকুরের আশেপাশে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে কলাবাগানের ভিতর কলাপাতা দিয়ে ঢাকা অবস্থায় নিখোঁজ ব্যক্তির মরদেহটি ওইদিন ৩১ জানুয়ারি বিকেলে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
লাশ উদ্ধারের পরেরদিন শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) নিহতের বাবা ছাত্তার প্রমানিক বাদি হয়ে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের নামে হত্যা মামলা করেন। মামলার পরেই পুলিশের একটি চৌকস টিম তদন্ত কাজ শুরু করেন। পুলিশের সোর্স ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) ফরিদপুর সদরের ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের সাইজুদ্দিন মাতুব্বরপাড়া রেজাউল করিম মিন্টুর (৪২) ভাঙ্গারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হতে নিহতের চুরি হওয়া অটোরিক্সাটি ভাঙ্গা অবস্থায় এবং রিক্সার ৪টি ব্যাটারী উদ্ধার করে রেজাউল করিম মিন্টুকে পুলিশী হেফাজতে নেওয়া হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে হত্যাকান্ডের ১ নম্বর আসামী মো. সুমন শেখকে (২১) রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দঘাট এলাকা থেকে ওইদিন সন্ধ্যায় (রবিবার) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল জানান, অটোরিক্সা চালক ফরহাদ প্রমানিক হত্যাকান্ডে জড়িত মূল আসামি সুমন শেখ ও তার সহযোগি ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী রেজাউল করিম মিন্টুকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা তারা স্বীকার করে লোমহর্ষক ঘটনা বর্ণনা দেয়।
দুই আসামীর বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, রিক্সাটি চুরি করার জন্য ফরহাদ প্রামানিককে ভাড়ায় নেওয়ার কথা বলে  ঘটনাস্থলে (ফরিদপুর সদর উপজেলার ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের কাচারীটেকের হাতেম মোল্যা পাড়া এলাকার পুকুরপাড় এলাকা)
নিয়ে গলায় প্রাস্টিকের রশি পেচিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে হত্যা নিশ্চিত করে রিক্সা চুরি করে নিয়ে মামলার ২ নম্বর আসামী ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী রেজাউল করিম মিন্টুর কাছে ১১ হাজার টাকায় বিক্রি করে সুমন। এ ঘটনার সাথে জড়িত আরো আসামীদের গ্রেপ্তারে মামলার তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানান।
ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা  (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, অটোরিক্সা চালক ফরহাদ প্রমানিক হত্যাকান্ডের গ্রেপ্তারকৃত দুই আসামীকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালতে আসামীরা জবানবন্দি দিবে।
প্রসঙ্গত, ফরিদপুর জেলা সদরে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেই ফরহাদ প্রমানিকসহ ৪ চালককে হত্যা করে অটোরিক্সা ও ইজিবাইক চুরির ঘটনা ঘটে।

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার পরিত্যক্ত জমি এখন দৃষ্টিনন্দন খেলার মাঠ

মিয়া রাকিবুল, আলফাডাঙ্গা:
প্রকাশিত: বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৯:৩৪ পিএম
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার পরিত্যক্ত জমি এখন দৃষ্টিনন্দন খেলার মাঠ

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে যাত্রা শুরু হলো একটি নিজস্ব ও সুপরিসর খেলার মাঠের।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবসের বর্ণিল অনুষ্ঠানমালা প্রদর্শনের মাধ্যমে নবনির্মিত এই দৃষ্টিনন্দন মাঠটির আনুষ্ঠানিক পথচলা শুরু হয়েছে।

এতদিন উপজেলা প্রশাসনের জাতীয় দিবসের মূল অনুষ্ঠানগুলো পরিষদের বাইরে স্থানীয় আরিফুজ্জামান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হতো। এবারই প্রথম উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে নিজস্ব মাঠে বিজয় দিবস উদযাপিত হলো।

​উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, পরিষদের পুরাতন ভবনের পেছনে বিশাল একখণ্ড নিচু জমি দীর্ঘকাল ধরে পরিত্যক্ত ও অকেঁজো অবস্থায় পড়েছিল। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল হক এই স্থানটিকে ভরাট করে একটি আধুনিক মাঠে রূপান্তরের উদ্যোগ নেন এবং স্থানীয় সমাজ সেবকদের সহযোগিতার আহ্বান জানান। ​ইউএনও’র সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে তরুণ সমাজসেবক তাজমিনউর রহমান তুহিন মাঠটি তৈরির দায়িত্ব নেন। তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিদ্যাধর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মরহুম আলহাজ্ব আলী আহমেদ মৃধার ছেলে। তুহিন হযরত শাহ্ জালাল মৎস্য এ্যান্ড ডেইরি ফার্মের স্বত্বাধিকারী ও লেবাজ সোয়েটার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান।

​ব্যক্তিগত অর্থায়ন ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রায় এক মাস সময় ধরে বিপুল পরিমাণ মাটি ভরাট করে জায়গাটিকে একটি আধুনিক ও সমতল খেলার মাঠে রূপান্তর করেন তুহিন। তার এই নিঃস্বার্থ অবদানের ফলে বর্তমানে মাঠটি সবুজ ঘাসে আচ্ছাদিত এক মনোরম স্থানে পরিণত হয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর এই মাঠেই অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে কুচকাওয়াজ ও ক্রীড়া অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।

​নতুন মাঠে প্রথম অনুষ্ঠান সফল হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তাজমিনউর রহমান তুহিন বলেন, ‘তৎকালীন ইউএনও রফিকুল হকের অনুপ্রেরণায় আমরা কাজটি শুরু করি। আজ যখন দেখলাম এই সুন্দর মাঠে জাতি শ্রদ্ধাভরে বিজয় দিবস উদযাপন করছে, তখন মনটা ভরে গেল। এটি আলফাডাঙ্গাবাসীর জন্য একটি স্থায়ী মিলনকেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে।’

​এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে আলফাডাঙ্গা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মনিরুল হক সিকদার বলেন, ‘এটি আলফাডাঙ্গাবাসীর জন্য একটি বড় প্রাপ্তি। উপজেলা পরিষদের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এমন একটি মাঠের অভাবে জাতীয় অনুষ্ঠান আয়োজনে যে সীমাবদ্ধতা ছিল, তা দূর হলো। সমাজসেবক তুহিনের মতো তরুণরা এগিয়ে এলে সমাজের আমূল পরিবর্তন সম্ভব।’

​উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও স্থানীয় সুধীজন মনে করছেন, এই মাঠটি শুধু খেলাধুলা নয়, বরং বছরজুড়ে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সরকারি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি পালনের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হবে।

সদরপুরে অভিযানের দ্বিতীয় দিনেও ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণ করল প্রশাসন

শিশির খাঁন, সদরপুর:
প্রকাশিত: বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৮:৪৬ পিএম
সদরপুরে অভিযানের দ্বিতীয় দিনেও ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণ করল প্রশাসন

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তফসিল ঘোষণা করার পর নির্বাচন কমিশন সকল প্রকার রাজনৈতিক ব্যানার ফেস্টুন ও পোস্টার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের নির্দেশনা দেন। গত শনিবার রাত নয় টায় ৪৮ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও নেতাকর্মীরা ব্যানার ফেস্টুন ও পোস্টার অপসারণ করেননি তারা। সেই নির্দেশনা না শুনায় ফেস্টুন অপসারণ করেছে প্রশাসন।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকালে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাত আনজুম পিয়ার নেতৃত্বে উপজেলা প্রশাসন ব্যানার ফেস্টুন এবং পোস্টার অপসারণ অভিযান শুরু করেন।

অভিযানের দ্বিতীয় দিনে সদরপুর বাজার, কৃষ্ণপুর মোড় ও থানার মোড় এলাকায় অপসারণ করেন। এ সময় ভূমি অফিসের কর্মচারী সহ গ্রাম পুলিশের সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

সদরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিফাত আনজুম পিয়া বলেন, রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন এবং পোস্টার অপসারণ করেন নাই বিধায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অপসারণ অভিযান শুরু করেছি।

তিনি আরও বলেন, ফরিদপুর-৪ নির্বাচনী এলাকার সম্ভাব্য সকল প্রার্থীর সব ধরণের পোস্টার, ব্যানার, দেয়াল লিখন, বিলবোর্ড , গেইট, তোরণ বা ঘের, প্যান্ডেল ও আলোকসজ্জা ইত্যাদি প্রচার সামগ্রী নিজ খরচে/দায়িত্বে অপসারণ করার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।

বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশনের জন্য ফরিদপুর থেকে ঢাকায় পাঠানো হলো ২৪ রোগী

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৭:১৮ পিএম
বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশনের জন্য ফরিদপুর থেকে ঢাকায় পাঠানো হলো ২৪ রোগী

ফরিদপুর-৪ সংসদীয় আসনের আওতাধীন সদরপুর উপজেলা থেকে ২৪ জন অসহায় ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী রোগীকে বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশনের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়।

এর আগে দুই ধাপে সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলায় বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। প্রথম ধাপে সদরপুর উপজেলায় ৩৫ জন এবং দ্বিতীয় ধাপে চরভদ্রাসন উপজেলায় ২৮ জন রোগীর চোখের ছানি অপারেশন (লেন্সসহ) সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছিল।

এই পুরো কার্যক্রমের সার্বিক ব্যবস্থাপনা, তদারকি ও দেখভাল করছেন ফরিদপুর-৪ আসনের ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থী এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম খান বাবুল।

জানা গেছে, চোখের চিকিৎসার পাশাপাশি তিনি এর আগেও একাধিকবার ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প (ওষুধসহ) এবং ফ্রি চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্পের আয়োজন করেছেন। এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে সাধারণ ও দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা সেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন তিনি।

এ বিষয়ে শহিদুল ইসলাম খান বাবুল জানান, মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার অংশ হিসেবেই এসব মানবিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের সেবামূলক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।