খুঁজুন
রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫, ৮ আষাঢ়, ১৪৩২

ফরিদপুরে বাবা-মায়ের সামনে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় মেয়ে নিহত, বাড়িঘর ভাঙচুর

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বুধবার, ১১ জুন, ২০২৫, ৭:৫১ এএম
ফরিদপুরে বাবা-মায়ের সামনে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় মেয়ে নিহত, বাড়িঘর ভাঙচুর

বাবা-মায়ের চোখের সামনে বখাটের মোটরসাইকেলের ধাক্কায় প্রাণ হারিয়েছে তাহমিদা আক্তার মিম (৭) নামে দ্বিতীয় শ্রেণির এক শিশু।

এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার (১০ জুন) সকালে তাহমিদা আক্তার মীম মারা গেছে।

নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী জানায়, সোমবার (৯ জুন) বিকেলে আলগী ইউনিয়নের নাওরা গ্রামে বাড়ির সামনে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল ছুলনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণির ছাত্রী তাহমিদা আক্তার মিম (৭)। এ সময় নাওড়া গ্রামের কাশেম মুন্সীর বখাটে ছেলে রবি মুন্সি বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে মীমকে ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। এ সময় গুরুতর আহত মীমকে বাবা-মা উদ্ধার করে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে এদিন রাতেই সেখান থেকে স্থানান্তর করে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার সকালে তাহমিদা আক্তার মীম মারা যায়। রাতে পারিবারিক কবর স্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

এদিকে মীম মারা যাওয়ার খবর গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে মিমের বাবা রিফাত আলীর দলের মাতবর সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালামের লোকজন মোটরসাইকেল চালক মিন্টুর বাড়িসহ তাদের দলের ১৫টি বাড়ি ভাঙচুর করেন। এসময় আহত হয়েছে ১০ জন।

এ ব্যাপারে ভাঙ্গা থানার এসআই রতন বলেন, ‘সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের সংবাদ পেয়ে ওসি স্যারসহ আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই। দুই পক্ষের লোকজন এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’

ফরিদপুরে পদ্মার বুকে বাদাম চাষ, বিঘায় আয় ৪০ হাজার

সিকদার সজল
প্রকাশিত: রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫, ১০:৩১ এএম
ফরিদপুরে পদ্মার বুকে বাদাম চাষ, বিঘায় আয় ৪০ হাজার

ফরিদপুরের পদ্মা চরে আবাদ হচ্ছে বাদাম। কিছুদিন পরই ফসল ঘরে তুলবেন চাষিরা। এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন বাদাম পরিচর্যায়। স্বল্পখরচে বেশি মুনাফা পাওয়ায় এই ফসল চাষে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন চরের কৃষকরা। চলতি বছর ১১৫ কোটি টাকা বাণিজ্যের আশা করছে কৃষি বিভাগ।

বহমান পদ্মায় বুকে জেগে উঠছে অসংখ্য বালুচর। এসব চরে বাদাম চাষে ভাগ্য ফেরাচ্ছেন কৃষকরা। বাদাম গাছের সবুজ পাতায় ছেয়ে গেছে ধূধূ বালু চর। কিছুদিন পরেই ঘরে তুলবেন ফসল।

 

এখন পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষকরা। তারা জানান, চরে বাদামের ভালো ফলন দেখা যাচ্ছে। গত বছর রাসেল ভাইপার সাপের আতঙ্কে জমি থেকে বাদাম তোলা যায়নি পর্যাপ্ত পরিমাণে। সেই ক্ষতি কাটিয়ে এবার বাম্পার ফলনের আশা রয়েছে।
 
চাষিরা জানান, প্রতি বিঘা জমিতে বাদাম আবাদ ও তোলায় খরচ ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি উৎপাদন ৬ থেকে ৮ মণ। প্রতি মণ ৫ হাজার টাকা হিসেব করলে আয় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। লাভের পরিমাণ বেশি হওয়ায় জেলায় অনেকে ঝুঁকছেন বাদাম চাষে।
 
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, অপ্রচলিত এই ফসল আবাদে তারা কৃষকদের সব ধরনের সহায়তা করা হচ্ছে। ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. শাহাদুজ্জামান বলেন, বাজারের বাজারমূল্য যথেষ্ট ভালো আছে। তাই এবার ১১০-১১৫ কোটি টাকার বাদাম উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে।
 
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, এ বছর জেলায় ৪ হাজার ৫৬৪ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হয়েছে। জেলায় এবার বাদামের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ হাজার ২২০ মেট্রিক টন।

ইতিহাসের এক নীরব সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ফরিদপুরের মথুরাপুর দেউল

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫, ১০:১৮ এএম
ইতিহাসের এক নীরব সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ফরিদপুরের মথুরাপুর দেউল

ইতিহাসের এক নীরব সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার গাজনা ইউনিয়নে মোঘল আমলে প্রতিষ্ঠিত ফরিদপুরের মথুরাপুর দেউল।

ষোড়শ শতাব্দীর শেষার্ধে নির্মিত এই দেউলটি শুধু স্থাপত্য নয়, বাংলার ঐতিহ্যবাহী শিল্প ও সংস্কৃতির এক অনন্য নিদর্শন হিসেবেও বিবেচিত। তবে কালের বিবর্তনে অযত্নে অবহেলায় পড়ে আছে স্থাপত্যটি।

এটি ফরিদপুর শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং আনুমানিক ষোড়শ শতাব্দীতে নির্মিত হয়েছিল। ফরিদপুরের ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের মধুখালী বাজার থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে মধুখালী-বালিয়াকান্দি আঞ্চলিক সড়কের পাশেই এর অবস্থান। রাস্তার বিপরীতে শান্তভাবে বয়ে চলেছে চন্দনা নদী। নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা এই মনোমুগ্ধকর দেউলটি দেখতে প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন পর্যটক ও ইতিহাসপ্রেমীরা। অথচ, পর্যটকদের জন্য নেই কোনো মৌলিক সুযোগ-সুবিধা। ফলে দর্শনার্থীদের মুখোমুখি হতে হয় নানারকম বিড়ম্বনার।

দেশের ইতিহাসে মোগল সাম্রাজ্যের যেসব স্মৃতি বিদ্যমান, তার মধ্যে এই দেউলটি অন্যতম। সরকারের উদাসীনতার কারণে দেউলটির ইতিহাস ধরে রাখতে নেয়া হয়নি কোনো ব্যবস্থা। কাগজে-কলমে ইতিহাসে থাকলেও বাস্তবিক অর্থে নেই কোনো সংরক্ষণের ব্যবস্থা।

সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ৪০ শতাংশ জায়গাজুড়ে বিস্তৃত প্রায় ৮০ ফুট উচ্চতার দেউলটির গায়ে খচিত টেরাকোটার চিত্রকর্ম ও স্থাপত্য শৈলী চোখ জুড়িয়ে যায়। প্রাচীন ইট ও চুন-সুরকির মিশ্রণে নির্মিত এই দেউলের দেয়ালে ফুটে উঠেছে হিন্দু পুরাণের রামায়ণ ও কৃষ্ণলীলা, গায়ক, নৃত্যশিল্পী, পবনপুত্র হনুমান ও যুদ্ধদৃশ্যের নিপুণ চিত্র। প্রতিটি কোণের মাঝে স্থাপন করা হয়েছে কৃত্তিম মুখাবয়ব, যা সেই যুগের শিল্পভাবনার পরিচায়ক।

দেউলটির একমাত্র প্রবেশপথটি দক্ষিণমুখী এবং এটি বারো কোণা বিশিষ্ট, যা বাংলার স্থাপত্যধারায় বিরল। রেখা প্রকৃতির এই দেউল বাংলায় নির্মিত একমাত্র এরকম কাঠামো বলেই প্রত্নতত্ত্ববিদদের কাছে এটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।

দেউলটি নিয়ে ইতিহাসবিদদের মধ্যে রয়েছে ভিন্নমত। এক সূত্রমতে, সংগ্রাম সিং নামক এক সেনাপতি এটি নির্মাণ করেন। ১৬৩৬ সালে ভূষণার জমিদার সত্রাজিতের মৃত্যুর পর সংগ্রাম সিং-কে এই অঞ্চলের রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠার পর তিনি মথুরাপুরে বসবাস শুরু করেন এবং এক স্থানীয়
বৈদ্য পরিবারের কন্যাকে বিবাহ করেন। ধারণা করা হচ্ছে, তারই উদ্যোগে এই দেউলটি নির্মিত হয়।

বৃহত্তর ফরিদপুরে বিএনপির সদস্য সংগ্রহ, নবায়ন কার্যক্রম শুরু

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫, ১০:১১ এএম
বৃহত্তর ফরিদপুরে বিএনপির সদস্য সংগ্রহ, নবায়ন কার্যক্রম শুরু

বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলে নতুন সদস্য সংগ্রহ ও পুরাতন সদস্যদের পদ নবায়নের সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করেছে বিএনপি। শনিবার বিকালে ফরিদপুরের অম্বিকা মেমোরিয়াল হলে ফরিদপুর বিভাগীয় বিএনপির আয়োজনে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন হয়।

এ সময় দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, কথিত স্বৈরাচারের দলের কাউকে বিএনপিতে ঢুকাবেন না।

তিনি আরো বলেন, আওয়ামীলীগ কখনোই আর বাংলাদেশের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হবে না। আর তাই আগামী দিনে শহীদ জিয়ার আদর্শের সৈনিক এবং তারেক জিয়ার নির্দেশেই বিএনপি গঠন করতে হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় বিএনপি’র ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ ইসলাম রিংকু বলেন, জিয়ার একজন আদর্শিক কর্মী হতে ন্যূনতম যোগ্যতা থাকতে হবে। এজন্য বিএনপি’র প্রতি আগ্রহ ও নীতি, আদর্শে বিশ্বাসীদের সদস্য বানাতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস-এর সঙ্গে তারেক জিয়ার বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের প্রধানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বসেছেন এরই ধারাবাহিকতায় তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা সাক্ষাৎ করেছেন, এটা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা, এটাকে ভিন্নভাবে দেখার সুযোগ নেই।

অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় বিএনপি’র ফরিদপুর বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাশুকুর রহমান মাশুক ও সেলিমুজ্জামান সেলিম, জেলা বিএনপির আহবায়ক সৈয়দ মোদারেছ আলী ঈসা ও সদস্য সচিব এ কেএম কিবরিয়া স্বপনসহ বৃহত্তর ফরিদপুরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বৃহত্তর ফরিদপুরে পাঁচ জেলার শত শত নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।