খুঁজুন
বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৯ পৌষ, ১৪৩২

ফরিদপুরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র, পুলিশসহ আহত ২৩

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৫, ১০:১৯ পিএম
ফরিদপুরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র, পুলিশসহ আহত ২৩

ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এর ফলে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বোয়ালমারীর ওয়াপদার মোড় এলাকা। সংঘর্ষে তিন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২৩ জন আহত হয়েছেন।

শুক্রবার (০৭ নভেম্বর) বিকেলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষের সময় ওয়াপদার মোড়ের পাশে হারুণ শপিং কমপ্লেক্সে বিএনপির একটি পক্ষের কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। আগুন দেওয়া হয় ওই শপিং কমপ্লেক্সের সামনে থাকা অন্তত ১০টি মোটরসাইকেলে। এছাড়া আশেপাশের দোকানগুলিতে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়।

বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপি কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম ও বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শামসুদ্দীরন মিয়া ঝুনুর নেতৃত্বে বিভক্ত। এই দুই নেতাই আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বোয়ালমারী আলফাডাঙ্গা ও মধুখালী নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী। তবে দল এ আসনে দলীয় মনোনয়ন স্থগিত করে রেখেছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেলা তিনটার দিকে শামসুদ্দীর মিয়ার সমর্থকরা ওয়াপদার মোড় এলাকায় এবং নাসিরুলের সমর্থকরা প্রায় এক কিলোমিটার দূরে কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজ মোড় সমবেত হতে শুরু করেন। সমবেতদের হাতে বাঁশের লাঠির মাথায় ধানের শীষ বাধা ছিল।

বিকাল ৪টার দিকে নাসিরুলের পক্ষের লোকজন মিছিল নিয়ে ওয়াপদার মোড় এলাকার দিকে এগুতে থাকে। ওই সময় শামসুদ্দীনের সমর্থকরা কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজের দিকে এগুতে থাকে। বোয়ালমারী পৌরসভার সামনে এলে দুই পক্ষ পরস্পরের প্রতি ইট নিক্ষেপ করতে শুরু করে।

তবে নাসিরুলের সমর্থকরা সংখ্যায় বেশি হওয়ায় শামসুদ্দীনের সমর্থকরা পিছু হটে ওয়াপদার মোড়ে হারুণ শপিং কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থান নেয়।

এসময় বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর হাসান চৌধুরী, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শিব্বির আহমেদ ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান দুই পক্ষকে থামানোর চেষ্টা করেন। তবে নাসিরুল  ইসলামের সমর্থকদের হামলায় এক পর্যায়ে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

এর পর নাসিরুলের সমর্থকরা হারুণ শপিং কমপ্লেক্সে সামনে থাকা অন্তত ১০টি মোটরসাইলে আগুন ধরিয়ে দেয়। তারা ওই ভবনের নিচ তলায় অবস্থিত শামসুদ্দিন মিয়ার কার্যালয়ে ঢুকে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এছাড়া আশেপাশে বিভিন্ন দোকানে হামলা করে ভাঙচুর করে। এসময় হামলাকারীদের হাতে রামদা, চাইনিজ কুড়ালসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দেখা যায়।

বিকাল পাঁচটা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত নাসিরুলের সমর্থকদের হামলার সময় থানার পুলিশ সদস্যদের এক কোনে অবস্থান নিয়ে আত্মরক্ষা করতে দেখা যায়। দমকল বাহিনীর একটি গাড়ি আগুন নেভাতে এসে হামলার শিকার হয়।

শামসুদ্দীন মিয়া বলেন, “প্রশাসনকে জানিয়ে আমরা ওয়াপদার মোড়ে অনুষ্ঠান করছিলাম। এসময় নাসিরুলের লোকজন আওয়ামী লীগের লোকদের সঙ্গে নিয়ে অতর্কিতে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। তারা ১০টি মোটরসাইকেলে আগুন দিয়েছে, আমার কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে। আমার ১৫ জন সমর্থক আহত হয়েছেন। কার্যালয়ে থাকা বেগম খালেদা জিয়ার ছবি ভাঙচুর করেছে।”

খন্দকার নাসিরুল ইসলাম বলেন, “আমি ছিলাম মধুখালী। আমাদের লোকজনদের ওপর হামলা করেছে। একজনকে কুপিয়ে জখম করে। ওরা হারুন শপিং কমপ্লেক্সের উপরে উঠে আমার সমর্থদের ওপর ইট ছুড়ে মারলে চার-পাঁচজন কয়েকজন আহত হন। এতে জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে ওই শপিং কমপ্লেক্সে হামলা করে।”

বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে অবস্থান নেয়। সেনাবাহিনী আসার পর দমকল বাহিনী পুনরায় ঘটনাস্থলে এসে আগুন নেভায়। সেনাবাহিনী থাকার পরও দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনাকর অবস্থা বিরাজ করতে দেখা যায়।

বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে বলেন, “বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়েছে। এসময় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। তবে পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”

নায়ক রিয়াজের মৃত্যুর খবর নিয়ে যা জানা গেল

বিনোদন ডেস্ক:
প্রকাশিত: বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৪:৩৮ পিএম
নায়ক রিয়াজের মৃত্যুর খবর নিয়ে যা জানা গেল

হঠাৎ করেই মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা রিয়াজ আহমেদের মৃত্যুর খবর। তবে এ নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য মেলেনি। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিরও এ বিষয়ে ধারণা নেই।

এ বিষয়ে জানতে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রিয়াজের ঘনিষ্ঠ একজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এমনটা হওয়ার কথা না। আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম। এমন কিছু হয়ে থাকলে এতক্ষণে তোলপাড় হয়ে যেত।’

৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকেই আত্মগোপনে চলে যান রিয়াজ। তার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির কেউই জানেন না। গুঞ্জন রয়েছে, পালিয়ে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। আবার কেউ বলছেন, দেশেই আছেন কোথাও। রিয়াজের ব্যবহৃত নম্বরটিও বন্ধ রয়েছে।

শেখ হাসিনার পতনের আগ পর্যন্ত কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বেশ সরব ছিলেন রিয়াজ। বেশ কয়েকবার তাকে শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী হতেও দেখা গেছে।

নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি থেকে টানা দুই যুগ রিয়াজ ছিলেন ঢালিউডের শীর্ষ জনপ্রিয় মুখ। ‘বাংলার নায়ক’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে নাম লেখান তিনি। এরপর একে একে অসংখ্য সুপারহিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন।

২০২২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর রিয়াজ অভিনীত সর্বশেষ ‘অপারেশন সুন্দরবন’ সিনেমাটি মুক্তি পায়। এরপর আর নতুন কাজে তার দেখা মেলেনি।

 

 

তথ্য সূত্র : জাগোনিউজ

ফরিদপুর সদর-৩ আসনে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী এডভোকেট মো. সরোয়ার হোসেন

মানিক কুমার দাস, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৪:২৭ পিএম
ফরিদপুর সদর-৩ আসনে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী এডভোকেট মো. সরোয়ার হোসেন

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর সদর-৩ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেলেন এডভোকেট মো. সরোয়ার হোসেন।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) তার পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ফরিদপুর জেলা নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়কারী খন্দকার ওহিদুজ্জামান।

মনোনয়নপত্র সংগ্রহকালে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কোতোয়ালি থানা শাখার সভাপতি হাফেজ আবু দাউদ, ফরিদপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ইয়াকুব আলী, জাতীয় শিক্ষক ফোরাম ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা ডা. আবু জাফর, পৌরসভা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আ. করিম, ইসলামী আন্দোলনের নেতা এমদাদুল হক টিটুসহ সংগঠনের অন্যান্য দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ।

এ সময় নেতারা বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ন্যায়ভিত্তিক সমাজ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। এডভোকেট মো. সরোয়ার হোসেন একজন সৎ, যোগ্য ও জনবান্ধব নেতা হিসেবে ফরিদপুর সদর-৩ আসনের জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হবেন বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এডভোকেট মো. সরোয়ার হোসেন বলেন, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন এবং ইসলামী মূল্যবোধভিত্তিক সমাজ গঠনে তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ফরিদপুর সদর-৩ আসনের সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা ও দোয়া কামনা করেন।

সদরপুরের চরাঞ্চলে দুর্যোগ সহনশীলতা জোরদারে ১৬ পরিবার পেল কাঠের নৌকা

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৪:১২ পিএম
সদরপুরের চরাঞ্চলে দুর্যোগ সহনশীলতা জোরদারে ১৬ পরিবার পেল কাঠের নৌকা

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার চরনাছিরপুর ও ঢেউখালী ইউনিয়নের পদ্মা ও আড়িয়াল খা নদীবেষ্টিত দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় বসবাসরত মানুষের দুর্যোগ সহনশীলতা বাড়াতে কাঠের তৈরি নৌকা বিতরণ করা হয়েছে।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে সদরপুর উপজেলা প্রশাসন চত্বরে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান উত্তরণ ও প্র্যাকটিক্যাল অ্যাকশন-এর সহযোগিতায় জুরিখ ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স প্রোগ্রাম-এর আওতায় এ নৌকা বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। এতে চরনাছিরপুর ও ঢেউখালী ইউনিয়নের মোট ১৬টি উপকারভোগী পরিবারের মাঝে কাঠের নৌকা বিতরণ করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে নৌকা বিতরণ করেন সদরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শরীফ শাওন। তিনি বলেন, “নদীবেষ্টিত ও দুর্যোগপ্রবণ চরাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের জীবন ও জীবিকা রক্ষায় এমন উদ্যোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নৌকা শুধু যাতায়াতের মাধ্যম নয়, দুর্যোগকালে এটি মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও বড় ভূমিকা রাখবে।”

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল আল-মামুন শাহ, সদরপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নুরুন্নাহার বেগম, উত্তরণ সংস্থার প্রতিনিধি মোছা. চামেলী আক্তার, প্রণব কুমার দাস ও আমির হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য, পদ্মা ও আড়িয়াল খা নদীর তীরবর্তী এসব চরাঞ্চলে প্রতি বছর বন্যা ও নদীভাঙনের ঝুঁকি থাকে। দুর্যোগ মোকাবিলায় নৌকা বিতরণ কার্যক্রম স্থানীয় মানুষের দৈনন্দিন জীবন ও জরুরি পরিস্থিতিতে বড় সহায়তা করবে বলে আশা প্রকাশ করেন আয়োজকরা।