খুঁজুন
শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১২ পৌষ, ১৪৩২

ফরিদপুরে লোকসানের মুখে পেঁয়াজ চাষীরা, ন্যায্য মূল্য না পেয়ে হতাশ

মফিজুর রহমান শিপন, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০২৫, ১:৪০ পিএম
ফরিদপুরে লোকসানের মুখে পেঁয়াজ চাষীরা, ন্যায্য মূল্য না পেয়ে হতাশ

দেশের পেঁয়াজ উৎপাদরে দ্বিতীয় বৃহত্তর জেলা ফরিদপুর। এ জেলার চাষীরা বর্তমান পেঁয়াজের দরে লোকসানের মুখে পড়েছে। ফরিদপুরের বড় বড় বাজার গুলোতে পেঁয়াজের দর ১৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ১৭০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। চাষীদের দাবি, ২০০০ থেকে ২২০০ টাকা বিক্রি করতে পারলে তাদের লোকসানে পড়তে হতো না।

সরেজমিনে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার ঠেনঠেনিয়ার পেঁয়াজ বাজারে গিয়ে দেখা যায়- প্রকার ভেদে এই বাজারের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে পনেরশো থেকে সর্বোচ্চ ১৭০০ টাকায় মন প্রতি। বর্তমানে পেঁয়াজের দরের এমন চিত্র জেলা শহর ও আশে-পাশের বাজার গুলোতেও।

 

সালথার ঠেনঠেনিয়া পেঁয়াজের এই বাজারে সকাল ছয়টা থেকেই পেঁয়াজ চাষীরা কেউ ভ্যান যোগে, কেউ নসিমন, কেউ অটো, কেউবা বস্তা মাথায় করে, আবার কেউ ধামায় (ঝুড়ি) করে বাজারে তুলছে পেঁয়াজ। সেখানে স্থানীয় ব্যবসায়ীর পাশাপাশি দেশের দুর্দান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ীরাও বিক্রেতার কাছ থেকে দরদাম করে পেঁয়াজ সংগ্রহ করছে। ঠেনঠেনিয়া এই বাজারটি চলে দুপুর পর্যন্ত। সপ্তাহে রবি ও বুধবার বসে পেঁয়াজের হাট। প্রতি হাটে পেঁয়াজের দুই শতাধিক বড় ব্যবসায়ী আড়াইশো থেকে ৩০০ টন পেঁয়াজ ক্রয় করে দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহরে নিয়ে যায়।

সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম খান সোহাগ বলেন, ঠেনঠেনিয়া বাজারের প্রতি হাটে কোটি টাকার বেশি পেঁয়াজ ক্রয় বিক্রয় হয় । ঢাকা, চট্রগ্রাম, রবিশালসহ বেশ কয়েকটি বিভাগীয় শহরের পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা এখানে পেঁয়াজ কিনতে আসেন । যোগযোগ ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় সহজেই কৃষি পণ্যটি ক্রয় করে নিয়ে যেতে পারেন তারা।

এ দিকে পেঁয়াজ চাষীরা জানিয়েছেন, পেঁয়াজ উৎপাদনে তুলনামূলকভাবে ব্যয় বেড়েছে, কিন্তু সেই হারে দর বাড়েনি। এ মৌসুমে পেঁয়াজের আবাদও বেশি হয়েছে।

কথা হয় বাজারের পেঁয়াজ চাষী নিজাম উদ্দিন শেখ, আলমগির মোল্লা, ঈব্রাহিম মাতুব্বর, নিছার উদ্দিন খানের সঙ্গে । তারা সকলেই জানান, পেঁয়াজ যখন ঘরে তুলি সেই সময় দাম হাজারের কম ছিল। একটু ভাল দরের আশায় এতোদিন ঘরে সংগ্রহ করে রেখে ছিলাম । কিন্তু এখন যে দর বাজারে আছে তাতে পুঁজি টিকানো কষ্ট । তার ওপর আবার এতো দিনে পেঁয়াজের ঘাটতি হয়েছে ।

এই চাষীরা দাবি করেন, বাজারের আমরা যাদি দুই হাজার থেকে ২২শ টাকায় দর পেতাম তাহলে লোকসানে পড়তে হতো না।

এদিকে পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা বললেন, ফরিদপুরের যতগুলো পেঁয়াজের বাজার রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম সালথার ঠেনঠেনিয়ার বাজারটি। ঈদের পরেই হঠাৎ করে পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দর কিছুটা কমেছে বলে তাদের ধারণা।

পেঁয়াজ ব্যবসায়ী খোরশেদ মোল্লা জানান, এ বাজার থেকে প্রতি হাটে ৩০ থেকে ৪০ ট্রাক পেঁয়াজ দেশের বিভিন্ন জেলায় যায়। গড়ে এক কোটি টাকার বেশি পেঁয়াজ প্রতি হাটে ক্রয় বিক্রয় হয় ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শাহেদুজ্জামান বলেন, জেলার তিন প্রকারের পেঁয়াজের আবাদ হয়। এর মধ্যে শীতকালীন মুড়িকাটা পেঁয়াজ, হালি পেঁয়াজ এবং দানা পেঁয়াজ । এ তিন ধরনের পেঁয়াজের মধ্যে হালি পেঁয়াজ বেশি আবাদ হয় । এই মৌসুমে ফরিদপুরে ৩৮ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়। এ বারের উৎপাদনের হারও বেশ ভাল বলে জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।

ফরিদপুর জিলা স্কুলের ১৮৫ বর্ষপূর্তিতে হামলা, জেমসের কনসার্ট বাতিল; আহত ২৫

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১:০০ এএম
ফরিদপুর জিলা স্কুলের ১৮৫ বর্ষপূর্তিতে হামলা, জেমসের কনসার্ট বাতিল; আহত ২৫

ফরিদপুর জিলা স্কুলের গৌরবময় ১৮৫ বর্ষপূর্তি ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের সমাপনী দিনে দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড তারকা জেমস (নগর বাউল)-এর বহুল প্রতীক্ষিত সংগীতানুষ্ঠান হামলার ঘটনায় পণ্ড হয়ে গেছে। এ ঘটনায় অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে জিলা স্কুলের ১৫ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন।

শুক্রবার (২৫) রাত সাড়ে ৯টার দিকে স্কুল চত্বরে নগর বাউলের সংগীত পরিবেশনের কথা ছিল। তবে অনুষ্ঠান শুরুর ঠিক আগ মুহূর্তে বহিরাগতদের অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশে বাধা দিলে একদল বিক্ষুব্ধ ব্যক্তি ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে মঞ্চ দখলের চেষ্টা চালায়। এতে মুহূর্তেই অনুষ্ঠানস্থলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

জিলা স্কুলের শিক্ষার্থীরা সংঘবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুললে বিক্ষুব্ধরা সরে যেতে বাধ্য হয়। তবে এরই মধ্যে ইটের আঘাতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ও দর্শক আহত হন।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে রাত ১০টার দিকে আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক মুস্তাফিজুর রহমান শামীম মঞ্চ থেকে ঘোষণা দেন— উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় জেলা প্রশাসকের নির্দেশে জেমসের সংগীতানুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে।

বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের প্রচার ও মিডিয়া উপ-কমিটির আহ্বায়ক রাজীবুল হাসান খান বলেন,“জেমসের অনুষ্ঠান সফল করতে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু হঠাৎ কেন, কী কারণে এবং কারা হামলা চালাল—তা বুঝে উঠতে পারিনি। ইটের আঘাতে আমাদের জিলা স্কুলের কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় জেলা প্রশাসনের নির্দেশে অনুষ্ঠানটি বাতিল করতে বাধ্য হয়েছি।”

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে দুই দিনব্যাপী ১৮৫ বর্ষপূর্তি ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। শুক্রবার রাতে র‌্যাফেল ড্র, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং নির্ধারিত ব্যান্ড সংগীত শিল্পী জেমসের পরিবেশনার মধ্য দিয়ে বর্ণাঢ্য এ আয়োজনের সমাপ্তি হওয়ার কথা ছিল।

ঐতিহাসিক ফরিদপুর জিলা স্কুল ব্রিটিশ শাসনামলে সরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হাতেগোনা কয়েকটি বিদ্যালয়ের একটি। ১৮৪০ সালে যাত্রা শুরু করা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘ ১৮৫ বছর ধরে এ অঞ্চলের শিক্ষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, আন্দোলন ও সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।

সদরপুরের যৌথবাহিনীর অভিযান, অস্ত্র-গুলি ও ইয়াবাসহ একজন গ্রেপ্তার

শিশির খাঁন, সদরপুর:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১১:২৫ পিএম
সদরপুরের যৌথবাহিনীর অভিযান, অস্ত্র-গুলি ও ইয়াবাসহ একজন গ্রেপ্তার

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর এলাকায় যৌথবাহিনীর অভিযানে দেশীয় অস্ত্র, গুলি ও বিপুল পরিমাণ মাদকসহ একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকালে সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চর কৃষ্ণপুর এলাকার নিজ বাড়ি থেকে মো. শেখ সাদি (৩৫) নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি একই এলাকার মৃত আঃ কাদের শেখের ছেলে।

পুলিশ ও সেনাবাহিনী সূত্রে জানা যায়, সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার বিকালে যৌথবাহিনী কৃষ্ণপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে শেখ সাদির কাছ থেকে তিনটি দেশীয় অস্ত্র, দুই রাউন্ড গুলি, একটি খেলনা পিস্তল এবং ৪২০টি ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।

সূত্র আরও জানায়, গ্রেপ্তার শেখ সাদি একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী এবং তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। অভিযানের সময় গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি মসজিদের মাইকে মাইকিং করে স্থানীয় লোকজন জড়ো করে মব সৃষ্টির চেষ্টা করেন। তবে যৌথবাহিনীর তৎপরতায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডিয়ার একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তারকৃতকে সদরপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। অপরাধ ও সন্ত্রাস দমনে সেনাবাহিনী সর্বদা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কেউ যদি মাদক, অস্ত্র বা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে কোনো তথ্য জানতে পারেন, তাহলে নিকটস্থ সেনাক্যাম্প বা থানাকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।

সালথায় অপারেশন ডেভিল হান্টে কৃষকলীগ নেতা গ্রেপ্তার

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১১:০৯ পিএম
সালথায় অপারেশন ডেভিল হান্টে কৃষকলীগ নেতা গ্রেপ্তার

ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২ নামের বিশেষ অভিযানে মো. আব্দুর রহিম মাতুব্বর (৫৫) নামে এক কৃষকলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের মিনাজদিয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার আব্দুর রহিম মাতুব্বর মিনাজদিয়া গ্রামের মৃত জয়নুদ্দিন মাতুব্বরের ছেলে। তিনি সালথা উপজেলা কৃষকলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।

সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বাবলুর রহমান খান জানান, এলাকায় নাশকতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগের প্রেক্ষিতে অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২ এর আওতায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানের অংশ হিসেবে কৃষকলীগ নেতা আব্দুর রহিম মাতুব্বরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃত আসামির বিরুদ্ধে বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে দায়ের করা একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাকে আদালতে পাঠানো হবে।

পুলিশ জানায়, এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এ ধরনের বিশেষ অভিযান অব্যাহত থাকবে।