খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৩ পৌষ, ১৪৩২

ফরিদপুরে সাত বছরেও শেষ হয়নি একটি সেতুর কাজ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫, ২:০২ পিএম
ফরিদপুরে সাত বছরেও শেষ হয়নি একটি সেতুর কাজ

ফরিদপুরে পদ্মার শাখা নদীতে ৫৮০ মিটারের একটি সেতুর নির্মাণ কাজ গত সাত বছরেও শেষ হয়নি। সেতুর কাজের ধীরগতির কারণে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন দুই ইউনিয়নের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। তাই সেতু নির্মাণে ধীরগতিতে ক্ষুব্ধ পদ্মাপাড়ের বাসিন্দারা।

চলতি বছরের জুনেই এ কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রকৌশলী। এদিকে আরও ২ বছর সময় লাগবে বলে জানিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। 

স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ফরিদপুর জেলার সদর উপজেলার ভাজনডাঙ্গা ঘাট হতে গেন্দুমোল্লা হাট জিসি সড়ক ২০৮ মিটার চেইনেজে পদ্মা শাখা নদীর উপর ৫৫০ মিটার পিএসসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ সংশোধিত দৈর্ঘ্য ৫৮০ মিটারের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ‘জান্নাত কনস্ট্রাকশন’ নামের এক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সেতুর কাজ করছে। এর মাঝে রাজনৈতিক জটিলতায় সেতুর ঠিকাদার পরিবর্তন হয়েছে।

সেতুর কাজ বছরের পর বছর ঝুলে থাকায় তৈরি হয়েছে ভোগান্তি। ট্রলার বা ইঞ্জিনচালিত নৌকার ওপর নির্ভরশীল হয়ে আছে দুই ইউনিয়নের প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ।

বিশেষ করে শিশু, শিক্ষার্থী, রোগী ও কৃষকদের জন্য যোগাযোগ এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা। তাদের অভিযোগ, ঠিকাদার পরিবর্তন, দুর্নীতি আর দপ্তরের উদাসীনতায় এ দুর্দশা দীর্ঘায়িত হয়েছে।

স্থানীয় ডিক্রিরচর ইউনিয়নের একজন কৃষক বলেন, চরাঞ্চলের মানুষের নদী পারাপার ছাড়া কোনো স্থায়ী সড়ক নেই। বর্ষাকালে নদী গর্জে উঠায় ট্রলার চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়া নিত্য নৈমত্তিক ঘটনা। ঝড়-বৃষ্টিতে নৌ-পথে চলাচল করতে হয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। ফলে জরুরি চিকিৎসার জন্য সময়মতো হাসপাতালে পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। একই সঙ্গে এ দূরত্ব পাড়ি দিয়ে ফরিদপুর সদরে যাওয়া এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পৌঁছানোও অত্যন্ত কষ্টকর। ব্রিজ নির্মাণ দেখে আমরা চরের মানুষ স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলাম। কিন্তু সেটি আজ দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছে।

জান্নাত কনস্ট্রাকশন এর সাইট ম্যানেজার আবু হানিফ বলেন, যেসব কাজ বাকি আছে, তা শেষ করতে কমপক্ষে আরও দুই বছর সময় লাগবে। এছাড়া বর্ষা মৌসুম শুরু হয়ে যাওয়ায় দ্রুত কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না।

পদ্মার এ শাখা নদীর উপর নির্মাণাধীন সেতুর কাজের ধীরগতিতে নদীপাড়ের বাসিন্দাদের ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ কাজের মেয়াদ শেষ হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলা আর সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের আগ্রহ কম থাকায় দীর্ঘ সময়ক্ষেপণ হচ্ছে বলে দাবি করেন স্থানীয়রা।

ডিক্রিরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান মিন্টু বলেন, চরের কৃষক ফসল ঠিকই ফলায়, কিন্তু নদী পার করতে না পারায় শহরের বাজারে নিতে পারে না। এজন্য লোকসান গুনতে হয়। ব্রিজটির নির্মাণ শেষ করা জরুরি।

এলজিইডির ফরিদপুর সদর উপজেলার প্রকৌশলী দেবাশীষ বাকচী বলেন, বর্তমানে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাজের মেয়াদ চলতি বছরের জুন পর্যন্ত রয়েছে। সেতুর প্রায় ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। নদীতে পানি বাড়ছে, সময় মতো কাজ শেষ করা কঠিন হবে।

প্রসঙ্গত, ফরিদপুর শহরের সঙ্গে দুর্গম চরের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতেই পদ্মার শাখা নদীর উপর সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি বিভাগ। ২০১৮ সালে প্র্রায় ৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। তবে সে সময়ের  ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাফিয়া কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী আলোচিত দুই হাজার কোটি টাকার মানিলন্ডারিং মামলায় অন্যতম আসামি রুবেল-বরকত নানান দুর্নীতির অভিযোগে মামলার আসামি হলে ২০২০ সালে তারা পালিয়ে গেলে কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

এরপর ২০২২ সালে আবার নতুনভাবে সেতুটি নির্মাণের কার্যাদেশ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফরিদপুর জান্নাত কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। কিন্তু ৬ বছর পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি সেতুর নির্মান কাজ। কয়েক দফা মেয়াদ বাড়িয়ে এখনো প্রায় ৪০  শতাংশ কাজ বাকি রয়েছে।

পদ্মাপাড়ের বাসিন্দারা দ্রুত সেতুর কাজ শেষ করে চলাচলের উপযোগী করার দাবি জানিয়েছেন।

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার পরিত্যক্ত জমি এখন দৃষ্টিনন্দন খেলার মাঠ

মিয়া রাকিবুল, আলফাডাঙ্গা:
প্রকাশিত: বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৯:৩৪ পিএম
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার পরিত্যক্ত জমি এখন দৃষ্টিনন্দন খেলার মাঠ

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে যাত্রা শুরু হলো একটি নিজস্ব ও সুপরিসর খেলার মাঠের।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবসের বর্ণিল অনুষ্ঠানমালা প্রদর্শনের মাধ্যমে নবনির্মিত এই দৃষ্টিনন্দন মাঠটির আনুষ্ঠানিক পথচলা শুরু হয়েছে।

এতদিন উপজেলা প্রশাসনের জাতীয় দিবসের মূল অনুষ্ঠানগুলো পরিষদের বাইরে স্থানীয় আরিফুজ্জামান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হতো। এবারই প্রথম উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে নিজস্ব মাঠে বিজয় দিবস উদযাপিত হলো।

​উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, পরিষদের পুরাতন ভবনের পেছনে বিশাল একখণ্ড নিচু জমি দীর্ঘকাল ধরে পরিত্যক্ত ও অকেঁজো অবস্থায় পড়েছিল। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল হক এই স্থানটিকে ভরাট করে একটি আধুনিক মাঠে রূপান্তরের উদ্যোগ নেন এবং স্থানীয় সমাজ সেবকদের সহযোগিতার আহ্বান জানান। ​ইউএনও’র সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে তরুণ সমাজসেবক তাজমিনউর রহমান তুহিন মাঠটি তৈরির দায়িত্ব নেন। তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিদ্যাধর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মরহুম আলহাজ্ব আলী আহমেদ মৃধার ছেলে। তুহিন হযরত শাহ্ জালাল মৎস্য এ্যান্ড ডেইরি ফার্মের স্বত্বাধিকারী ও লেবাজ সোয়েটার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান।

​ব্যক্তিগত অর্থায়ন ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রায় এক মাস সময় ধরে বিপুল পরিমাণ মাটি ভরাট করে জায়গাটিকে একটি আধুনিক ও সমতল খেলার মাঠে রূপান্তর করেন তুহিন। তার এই নিঃস্বার্থ অবদানের ফলে বর্তমানে মাঠটি সবুজ ঘাসে আচ্ছাদিত এক মনোরম স্থানে পরিণত হয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর এই মাঠেই অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে কুচকাওয়াজ ও ক্রীড়া অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।

​নতুন মাঠে প্রথম অনুষ্ঠান সফল হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তাজমিনউর রহমান তুহিন বলেন, ‘তৎকালীন ইউএনও রফিকুল হকের অনুপ্রেরণায় আমরা কাজটি শুরু করি। আজ যখন দেখলাম এই সুন্দর মাঠে জাতি শ্রদ্ধাভরে বিজয় দিবস উদযাপন করছে, তখন মনটা ভরে গেল। এটি আলফাডাঙ্গাবাসীর জন্য একটি স্থায়ী মিলনকেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে।’

​এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে আলফাডাঙ্গা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মনিরুল হক সিকদার বলেন, ‘এটি আলফাডাঙ্গাবাসীর জন্য একটি বড় প্রাপ্তি। উপজেলা পরিষদের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এমন একটি মাঠের অভাবে জাতীয় অনুষ্ঠান আয়োজনে যে সীমাবদ্ধতা ছিল, তা দূর হলো। সমাজসেবক তুহিনের মতো তরুণরা এগিয়ে এলে সমাজের আমূল পরিবর্তন সম্ভব।’

​উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও স্থানীয় সুধীজন মনে করছেন, এই মাঠটি শুধু খেলাধুলা নয়, বরং বছরজুড়ে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সরকারি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি পালনের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হবে।

সদরপুরে অভিযানের দ্বিতীয় দিনেও ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণ করল প্রশাসন

শিশির খাঁন, সদরপুর:
প্রকাশিত: বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৮:৪৬ পিএম
সদরপুরে অভিযানের দ্বিতীয় দিনেও ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণ করল প্রশাসন

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তফসিল ঘোষণা করার পর নির্বাচন কমিশন সকল প্রকার রাজনৈতিক ব্যানার ফেস্টুন ও পোস্টার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের নির্দেশনা দেন। গত শনিবার রাত নয় টায় ৪৮ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও নেতাকর্মীরা ব্যানার ফেস্টুন ও পোস্টার অপসারণ করেননি তারা। সেই নির্দেশনা না শুনায় ফেস্টুন অপসারণ করেছে প্রশাসন।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকালে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাত আনজুম পিয়ার নেতৃত্বে উপজেলা প্রশাসন ব্যানার ফেস্টুন এবং পোস্টার অপসারণ অভিযান শুরু করেন।

অভিযানের দ্বিতীয় দিনে সদরপুর বাজার, কৃষ্ণপুর মোড় ও থানার মোড় এলাকায় অপসারণ করেন। এ সময় ভূমি অফিসের কর্মচারী সহ গ্রাম পুলিশের সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

সদরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিফাত আনজুম পিয়া বলেন, রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন এবং পোস্টার অপসারণ করেন নাই বিধায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অপসারণ অভিযান শুরু করেছি।

তিনি আরও বলেন, ফরিদপুর-৪ নির্বাচনী এলাকার সম্ভাব্য সকল প্রার্থীর সব ধরণের পোস্টার, ব্যানার, দেয়াল লিখন, বিলবোর্ড , গেইট, তোরণ বা ঘের, প্যান্ডেল ও আলোকসজ্জা ইত্যাদি প্রচার সামগ্রী নিজ খরচে/দায়িত্বে অপসারণ করার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।

বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশনের জন্য ফরিদপুর থেকে ঢাকায় পাঠানো হলো ২৪ রোগী

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৭:১৮ পিএম
বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশনের জন্য ফরিদপুর থেকে ঢাকায় পাঠানো হলো ২৪ রোগী

ফরিদপুর-৪ সংসদীয় আসনের আওতাধীন সদরপুর উপজেলা থেকে ২৪ জন অসহায় ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী রোগীকে বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশনের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়।

এর আগে দুই ধাপে সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলায় বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। প্রথম ধাপে সদরপুর উপজেলায় ৩৫ জন এবং দ্বিতীয় ধাপে চরভদ্রাসন উপজেলায় ২৮ জন রোগীর চোখের ছানি অপারেশন (লেন্সসহ) সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছিল।

এই পুরো কার্যক্রমের সার্বিক ব্যবস্থাপনা, তদারকি ও দেখভাল করছেন ফরিদপুর-৪ আসনের ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থী এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম খান বাবুল।

জানা গেছে, চোখের চিকিৎসার পাশাপাশি তিনি এর আগেও একাধিকবার ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প (ওষুধসহ) এবং ফ্রি চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্পের আয়োজন করেছেন। এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে সাধারণ ও দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা সেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন তিনি।

এ বিষয়ে শহিদুল ইসলাম খান বাবুল জানান, মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার অংশ হিসেবেই এসব মানবিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের সেবামূলক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।