খুঁজুন
শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১২ পৌষ, ১৪৩২

ফরিদপুর জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি মাহামুদুল হাসান

এন কে বি নয়ন, ফরিদপুর
প্রকাশিত: রবিবার, ১৫ জুন, ২০২৫, ১১:৩৮ পিএম
ফরিদপুর জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি মাহামুদুল হাসান

ফরিদপুর জেলার নয়টি উপজেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হয়েছেন মাহামুদুল হাসান। তিনি জেলার বোয়ালমারী থানার ওসি।

রবিবার (১৫ জুন) দুপুরে ফরিদপুর পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে মাসিক কল্যাণ ও অপরাধ পর্যালোচনা সভায় তাকে জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি নির্বাচন করা হয়। পরে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আব্দুল জলিল তাঁর হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন।

এ সময় ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. শামছুল আজম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আজমীর হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) মো. আসিফ ইকবাল, সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) মো. ইমরুল হাসান, ফরিদপুর পুলিশ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. সৈয়দ হাসানুল কবীর, ফরিদপুর পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মুহাম্মদ আব্দুল কায়ূম শেখ সহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জেলা পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, সামগ্রিক কর্মতৎপরতা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখতে অনন্য অবদান রাখায় মাহামুদুল হাসানকে শ্রেষ্ঠ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নির্বাচন করা হয়েছে। তাঁর এ সাফল্যে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহামুদুল হাসান বলেন, এই স্বীকৃতি আমার থানার প্রতিটি সদস্যের কঠোর পরিশ্রম ও আন্তরিকতার ফল। আমি সর্বদা চেষ্টা করেছি নিষ্ঠা, পেশাদারিত্ব এবং মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করতে। মাদক, সন্ত্রাস ও অপরাধ দমনে জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করে যাচ্ছি। ভবিষ্যতেও জনগণের আস্থা ও ভালোবাসা ধরে রাখতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখবো।

ভাঙ্গায় ট্রাক–অ্যাম্বুলেন্সের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৩, গুরুতর আহত ২

এন কে বি নয়ন, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১১:২৯ এএম
ভাঙ্গায় ট্রাক–অ্যাম্বুলেন্সের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৩, গুরুতর আহত ২

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় ট্রাক ও অ্যাম্বুলেন্সের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও দুইজন গুরুতর আহত হয়েছেন।

শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ভাঙ্গা–খুলনা মহাসড়কের মুনসরাবাদ এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। দুর্ঘটনার পর মহাসড়কে কিছু সময় যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়।

স্থানীয় ও ভাঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ভাঙ্গা থেকে খুলনাগামী একটি ট্রাকের সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি অ্যাম্বুলেন্সের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের তীব্রতায় অ্যাম্বুলেন্সটি দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হন এবং আরও দুইজন গুরুতর আহত হন।

খবর পেয়ে ভাঙ্গা হাইওয়ে থানা পুলিশ, স্থানীয় থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করে। আহতদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তবে তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতদের নাম–পরিচয় জানা যায়নি।

ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন জানান, দুর্ঘটনার পর পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রাথমিকভাবে হতাহতদের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

তিনি আরও জানান, দুর্ঘটনার পর কিছু সময় ভাঙ্গা–খুলনা মহাসড়কে যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হলেও বর্তমানে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

কনকনে শীতেও থামে না জীবনযুদ্ধ: ভোরের ফরিদপুরে মানুষের মানবিক গল্প

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৭:৫১ এএম
কনকনে শীতেও থামে না জীবনযুদ্ধ: ভোরের ফরিদপুরে মানুষের মানবিক গল্প

কুয়াশার চাদরে ঢাকা শহর তখনো পুরোপুরি জাগেনি। রাস্তার বাতিগুলোর আলো ম্লান, বাতাসে কনকনে শীত। তবুও জীবনের প্রয়োজনে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছেন অনেকেই। কেউ শ্রমের খোঁজে, কেউ জীবিকার তাগিদে, কেউ বা শুধু বেঁচে থাকার লড়াইয়ে।

ফরিদপুর শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ভোর পাঁচটা থেকেই জড়ো হতে থাকেন দিনমজুররা। পুরোনো চাদর গায়ে, কেউ কেউ আবার পলিথিনে নিজেকে জড়িয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকেন। কাজ মিলবে কি না—এই অনিশ্চয়তার মাঝেই কেটে যায় তাদের সকাল। কথা হয় রহিম মিয়ার সঙ্গে। বয়স পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই। বললেন,
“শীত তো আসে যায়, কিন্তু কাজ না থাকলে পেটের আগুন নেভাবো কীভাবে?”

শহরের অলিগলিতে ভ্যানগাড়ি নিয়ে বের হন কয়েকজন সবজি বিক্রেতা। শীতের সকালে বিক্রি কম, তবুও থেমে থাকলে সংসার চলবে না। গৃহবধূরা ভোরেই বাজারে যাচ্ছেন—কম দামে সবজি কেনার আশায়। কেউ কেউ সন্তানকে স্কুলে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন, শীতের মধ্যেই ইউনিফর্ম গায়ে চাপিয়ে।

কুমার নদের পাড়ে বসে থাকা কয়েকজন বৃদ্ধের চোখে ভিন্ন এক গল্প। কারও ছেলে শহরের বাইরে, কারও সন্তান বিদেশে। শীতের সকালে নদীর ধারে বসে রোদ ওঠার অপেক্ষায় থাকেন তারা। একজন বৃদ্ধ ধীরে বললেন,
“রোদ উঠলে শরীর একটু ভালো লাগে, মনটাও।”

শহরের হাসপাতাল চত্বরে ভোরেই দেখা মেলে রোগীর স্বজনদের। কেউ কম্বল পেতে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়েছেন। ঠান্ডা মেঝেতে বসে চা খাচ্ছেন একজন মা—ভেতরে তার অসুস্থ সন্তান। তার চোখে ক্লান্তি, তবুও আশার আলো নিভে যায়নি।

এই শহরে শীত কেবল তাপমাত্রা নয়, শীত যেন জীবনের কঠিন বাস্তবতা। তবুও মানুষ থেমে থাকে না। কেউ হাল ছাড়ে না। প্রতিটি সকালই নতুন করে লড়াই শুরু করার সাহস এনে দেয়।

ফরিদপুরের এই ভোরগুলো হয়তো খুব জাঁকজমকপূর্ণ নয়, কিন্তু এখানেই লুকিয়ে আছে মানুষের অদম্য জীবনচর্চা, সংগ্রাম আর মানবিকতার নীরব গল্প।

ফরিদপুর জিলা স্কুলের ১৮৫ বর্ষপূর্তিতে হামলা, জেমসের কনসার্ট বাতিল; আহত ২৫

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১:০০ এএম
ফরিদপুর জিলা স্কুলের ১৮৫ বর্ষপূর্তিতে হামলা, জেমসের কনসার্ট বাতিল; আহত ২৫

ফরিদপুর জিলা স্কুলের গৌরবময় ১৮৫ বর্ষপূর্তি ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের সমাপনী দিনে দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড তারকা জেমস (নগর বাউল)-এর বহুল প্রতীক্ষিত সংগীতানুষ্ঠান হামলার ঘটনায় পণ্ড হয়ে গেছে। এ ঘটনায় অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে জিলা স্কুলের ১৫ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন।

শুক্রবার (২৫) রাত সাড়ে ৯টার দিকে স্কুল চত্বরে নগর বাউলের সংগীত পরিবেশনের কথা ছিল। তবে অনুষ্ঠান শুরুর ঠিক আগ মুহূর্তে বহিরাগতদের অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশে বাধা দিলে একদল বিক্ষুব্ধ ব্যক্তি ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে মঞ্চ দখলের চেষ্টা চালায়। এতে মুহূর্তেই অনুষ্ঠানস্থলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

জিলা স্কুলের শিক্ষার্থীরা সংঘবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুললে বিক্ষুব্ধরা সরে যেতে বাধ্য হয়। তবে এরই মধ্যে ইটের আঘাতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ও দর্শক আহত হন।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে রাত ১০টার দিকে আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক মুস্তাফিজুর রহমান শামীম মঞ্চ থেকে ঘোষণা দেন— উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় জেলা প্রশাসকের নির্দেশে জেমসের সংগীতানুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে।

বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের প্রচার ও মিডিয়া উপ-কমিটির আহ্বায়ক রাজীবুল হাসান খান বলেন,“জেমসের অনুষ্ঠান সফল করতে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু হঠাৎ কেন, কী কারণে এবং কারা হামলা চালাল—তা বুঝে উঠতে পারিনি। ইটের আঘাতে আমাদের জিলা স্কুলের কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় জেলা প্রশাসনের নির্দেশে অনুষ্ঠানটি বাতিল করতে বাধ্য হয়েছি।”

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে দুই দিনব্যাপী ১৮৫ বর্ষপূর্তি ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। শুক্রবার রাতে র‌্যাফেল ড্র, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং নির্ধারিত ব্যান্ড সংগীত শিল্পী জেমসের পরিবেশনার মধ্য দিয়ে বর্ণাঢ্য এ আয়োজনের সমাপ্তি হওয়ার কথা ছিল।

ঐতিহাসিক ফরিদপুর জিলা স্কুল ব্রিটিশ শাসনামলে সরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হাতেগোনা কয়েকটি বিদ্যালয়ের একটি। ১৮৪০ সালে যাত্রা শুরু করা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘ ১৮৫ বছর ধরে এ অঞ্চলের শিক্ষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, আন্দোলন ও সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।