খুঁজুন
বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২ পৌষ, ১৪৩২

টিউলিপের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কি হুমকিতে!

খাদেমুল ইসলাম
প্রকাশিত: বুধবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৩:৫৯ পিএম
টিউলিপের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কি হুমকিতে!

ব্রিটিশ আইনসভার সদস্য টিউলিপ সিদ্দিককে বাংলাদেশের একটি আদালতে দুই বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার মেয়ে তিনি।

সোমবার (০১ ডিসেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম তাকে সাজার এ রায় দেন।

বাংলাদেশে প্রভাবশালী কোনো দেশের জনপ্রতিনিধিকে তার পদে থাকাবস্থায় সাজা দেওয়ার ঘটনা নজিরবিহীন। ব্রিটিশ আইনসভার এই সদস্য তার অনুপস্থিতিতে বিচার ও আইনজীবী নিয়োগের সুযোগ চেয়ে আবেদন করেছিলেন। তবে তিনি সেই সুযোগ পাননি।

কেন তার পক্ষে আইনজীবী নিয়োগের সুযোগ দেওয়া হয়নি, সেই বিষয়ে বিচারক রায় প্রদানকালে ব্যাখ্যা দেন। রায়ের পর্যবেক্ষণে তিনি বলেন, এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড হয়— এমন কোনো ধারার অভিযোগ না থাকায় আসামিদের জন্য ডিফেন্স ল’ইয়ার নিয়োগ প্রদানের কোনো সুযোগ নেই। উচ্চ আদালতে একাধিক সিদ্ধান্ত রয়েছে যে, ফৌজদারি মামলার ক্ষেত্রে আদালতের শুনানির অধিকার দাবি করার আগে সংশ্লিষ্ট আসামিকে আগে বিচার প্রক্রিয়ায় নিজেকে আত্মসমর্পণ করতে হয় এবং পরে বিচার দাবি করতে হয়। অন্যথায় আসামি বিচারিক সুবিধা পেতে পারে না।

টিউলিপের বিরুদ্ধে দুদকের অভিযোগ, নিজের মাকে প্লট পাইয়ে দিতে তিনি তার বিশেষ ক্ষমতা ব্যবহার করে খালা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে তার ওপর চাপ প্রয়োগ ও প্রভাব বিস্তার করেন।

মামলা দায়েরের পর থেকেই টিউলিপ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেছিলেন, এই সমস্ত অভিযোগের মূলে রয়েছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব। সত্যিটা হলো, মুহাম্মদ ইউনূস ও আমার খালা শেখ হাসিনার মধ্যকার দ্বন্দ্বের বলি হচ্ছি আমি।

এর আগে যখন তার বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা সরকারের ঘনিষ্ঠজনের দেওয়া প্লট ব্যবহারের অভিযোগ এসেছিল, তখন তাকে ব্রিটিশ মন্ত্রিসভার সদস্য পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হয়েছিল।

এবার বাংলাদেশে সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার পর তার আইনসভার সদস্য থাকা বা ব্রিটেনে ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে প্রভাব পড়তে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন।

তবে এমপি হিসেবে কাজ চালিয়ে যেতে অসুবিধা হবে না বলেই মনে করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর চিফ সেক্রেটারি ড্যারেন জোন্স। তিনি বলেন, এটা ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমি মনে করি বাংলাদেশে যে বিচার হয়েছে, তিনি সেটার অংশ ছিলেন না। তিনি বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছেন। কিন্তু তাকে সুযোগ দেওয়া হয়নি। এই বিচার যতটা না আইনগত তার চেয়ে বেশি রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করেছে। টিউলিপ ইতোমধ্যেই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

তিনি আরও বলেন, এটি এমন সিদ্ধান্ত যা অন্য দেশে হয়েছে এবং বিদেশি একটি আদালত তাকে সাজা দিয়েছে। আমার মনে হয় না এতে নির্বাচনী এলাকার প্রতিনিধি হিসেবে টিউলিপের আইনসভায় প্রতিনিধিত্বটা বাধাগ্রস্ত হবে।

রাজধানীর পূর্বাচলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দ নেয়ার অভিযোগে হওয়া এই মামলায় টিউলিপ ছাড়াও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ৫ বছর ও টিউলিপের মা শেখ রেহানাকে ৭ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তাদের ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২)/পেনাল কোডের ১০৯ ধারায় এই সাজা দেওয়া হয়। আসামিদের এক লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত।

মামলার আরও ১৪ জন আসামিকে ৫ বছর করে কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সাজা দেওয়া হয়।

আসামিদের মধ্যে শুধু রাজউকের সাবেক সদস্য (স্টেট ও ভূমি) খুরশীদ আলম বিচার চলাকালে আত্মসমর্পণ করেন। শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও তার মেয়ে ব্রিটিশ এসপি টিউলিপ সিদ্দিকসহ বাকি আসামিরা পলাতক। পলাতক আসামিদের কোনো আইনজীবী ছিলেন না।

সাজাপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন—জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউক-এর সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।

এর গত ২৫ নভেম্বর মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন ধার্য ছিল। সেদিন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বিচারক রায়ের জন্য আজকের দিন করেন আদালত।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, শেখ রেহানার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি মামলা দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন। তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ ১৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া।

গত ৩১ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। বিচার চলাকালে এই মামলায় ৩২ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।

প্লট বরাদ্দের দুর্নীতির অভিযোগে গত জানুয়ারিতে পৃথক ৬ মামলা করে দুদক। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল), বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও অপর মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকসহ আরও অনেককে আসামি করা হয়। সবগুলো মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকাকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। তারা বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও অসৎ উদ্দেশ্যে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নং রাস্তার ৬টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

সালথায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে কৃষকলীগ নেতা আটক

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৯:০৯ পিএম
সালথায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে কৃষকলীগ নেতা আটক

ফরিদপুরের সালথায় ওয়ারেন্টভুক্ত এক আসামীকে ধরতে গিয়ে খোরশেদ খান (৪৫) নামে এক কৃষক লীগ নেতার হামলার শিকার হয়েছেন পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক মুকুল। এ ঘটনায় ওই হামলাকারী কৃষকলীগ নেতাকে আটক করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৭ টার দিকে উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের আগুলদিয়া মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

খোরশেদ খান গট্টি ইউনিয়নের কৃষকলীগের সহ-সভাপতি ও ওই গ্রামের উচমান খানের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের আগুলদিয়া মোড় এলাকায় এক ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীকে ধরতে যায় একদল পুলিশ। এ সময় ওই আসামীকে ধরতে বাধা দেন কৃষক লীগ নেতা খোরশেদ খান। এক পর্যায়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক মুকুল আহত হন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবলু রহমান খান বলেন, ওয়ারেন্টভুক্ত এক আসামীকে ধরতে গেলে খোরশেদ খান বাধা প্রদান করেন এবং পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক মুকুল আহত হন। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

মহান বিজয় দিবসে চরভদ্রাসনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা

মুস্তাফিজুর রহমান শিমুল, চরভদ্রাসন:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৬:৩৩ পিএম
মহান বিজয় দিবসে চরভদ্রাসনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা

মহান বিজয় দিবসে ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে চরভদ্রাসন সরকারী কলেজ মাঠে এ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জালাল উদ্দিন।

সভার শুরুতে উপজেলার প্রায়াত মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

পরে ইউএনও জালাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) যায়েদ হোছাইন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুর রাজ্জাক, মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ ও মো. ফখরুজ্জামান প্রমুখ।

মধুখালীতে গড়াই সেতুর নবনির্মিত ডিজিটাল টোল ঘরের উদ্বোধন

মো. ইনামুল খন্দকার, মধুখালী:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৬:১৩ পিএম
মধুখালীতে গড়াই সেতুর নবনির্মিত ডিজিটাল টোল ঘরের উদ্বোধন

ফরিদপুরের মধুখালীর কামারখালীতে গড়াই সেতুর নবনির্মিত টোল ঘরের শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে নবনির্মিত ডিজিটাল এ টোল ঘর উদ্বোধন করেন সড়ক ও জনপথের (সওজ) গোপালগঞ্জ অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. সাদিকুল ইসলাম।

এসময় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- টোলের ইজাদার প্রতিষ্ঠান ও লোকমান হোসেন খান টেডার্সের স্বত্বাধিকার এবং পান্না গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আলহাজ্ব লোকমান হোসেন খান।

অন্যান্যর মধ্যে এাময় উপস্থিত ছিলেন- পান্না গ্রুপের পরিচালক আরিয়ান খান, মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফকির তাইজুর রহমান, পান্না গ্রুপের জিএম (প্রশাসন) শেখ মো. আবুল কালাম, মধুখালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ সতেজ, টোলের ম্যানেজার মো. মিজানুর রহমান সহ সাংবাদিক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

এসময় সড়ক ও জনপথের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সাদেকুল ইসলাম বলেন, টোল ঘরের কারণে অতিরিক্ত যানজট যেন সৃষ্টি না হয়, এতে জনগণের দুর্ভোগ হয়। সেদিকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখার জন্য ইজারাদার প্রতিষ্ঠানকে অনুরোধ করেন।

একই সময় মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফকির তাইজুর রহমান বলেন, টোল ঘর এলাকার যেকোনো প্রকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রশাসন সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।